somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

িসয়াদ বস
চিন্তাহীনভাবে বাঁধাধরা কিছু ধারণা যা সর্ব ক্ষেত্রে সঠিক নয়, যেমনঃ পুলিশ মানেই ঘুসখোর নয় রাজনীতিবিদ মানেই ব্যাবসায়ী নয় মন্ত্রী মানেই চোর নয় বিএনপি সমর্থক মানেই রাজাকারের দোসর নয় আওয়ামীলীগ মানেই ভারতের দালাল নয় হিন্দু মানেই এক পা ভারতে নয় দাড়ি টুপি মানেই জ

সুমির দুঃসাহসে ভীত ওয়ালমার্ট!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুমি আবেদীনকে দেখে অনেকটা দৌড়ে পালান ওয়ালমার্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বোর্ডের অপর এক কর্মকর্তাও তাকে দরজায় দেখতে পেয়ে দ্রুত ভিতরে ঢুকে পড়েন। বলা যায় সুমি আবেদীনের দুঃসাহসী অভিযানে ভীত হয়ে পড়েছে ওয়ালমার্ট।

বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর অপর পৃষ্ঠে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশে এসে এক আহত শ্রমিক ওয়ালমার্টের মতো একটি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের এভাবে ভয় দেখাতে পেরেছেন তা অবিশ্বাস্য। তাজরীন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ভয়াবহ আগুনের সেই রাতে সাততলা ভবনের চার তলার জানালা ভেঙ্গে লাফিয়ে পড়ে প্রাণে বেঁচেছিলেন সুমি আবেদিন। তবে এতে তার একটি পা ও একটি হাত ভেঙ্গে যায়। সেই ভাঙ্গা হাত-পা নিয়েই তাজরীনেরসহ বাংলাদেশের হাজার হাজার গার্মেন্ট কারখানায় লাখ লাখ শ্রমিকের প্রতিনিধি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ২৪ বছর বয়সী সুমি আবেদীন। তার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশের শ্রমিক নেত্রী কল্পনা আক্তার। এই তুই সাহসী তরুণী ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এরপর গেছেন আরকানসাসে ওয়ালমার্টের গ্লোবাল হেডকোয়ার্টাসে। সেখানে ওয়ালমার্টের কর্মকর্তারা ভয়েই মুখ দেখাননি সুমি ও কল্পনা আক্তারকে।

ঘটনাটিকে এভাবেই ব্যাখ্যা দিচ্ছে সামঅবআস নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি শ্রমিক অধিকার সংগঠন। সামঅবআস’র কর্মকর্তা রব ওহল বাংলানিউজকে বর্ণনা করলেন সেই দিনের ঘটনা।

রব ওহল জানান, সেদিন সামঅবআস-এর ১ লাখ ১৪ হাজার সদস্যের সই করা একটি আবেদন নিয়ে সুমি আবেদীন ও কল্পনা আক্তারের নেতৃত্বে ওয়ালমার্ট হেডকোয়ার্টারে যান তারা।

তিনি বলেন, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেকটা পথ পাড়ি দিয়ে সুমি ও কল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। তাদের দাবি নিরাপদ কর্মস্থল ও তাজরীনে হতাহতদের যথার্থ ক্ষতিপূরণ। তাজরীনের অগ্নিদুর্ঘটনায় হতাহতদের দায়িত্ব ওয়ালমার্টকে নিতে হবে কারণ সেরাতে ওয়ালমার্টের জন্যই কাপড় বানাচ্ছিলেন তাজরীনের শ্রমিকরা। এই যুক্তি নিয়ে যখন দুই বাংলাদেশি তরুণী সুমি ও কল্পনা গিয়ে দাঁড়ালেন ওয়ালমার্টের দরজায় তখন তাদের মুখের উপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির কর্তা ব্যক্তিরা অনেকটা ভয়ে পালিয়ে যান।

সুমি ও কল্পনার সঙ্গেই ছিলেন রব ওহল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সামঅবআস’র ১ লাখ ১৪ হাজার সদস্যের সই করা দরখাস্ত নিয়ে আমরা ওয়ালমার্টে যাই। সেখানে আমরা যখন কারখানার পাশের রাস্তাধরে হাটছিলাম তখই নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের আটকে দেয়। আমরা এসময় ওয়ালমার্টের গ্লোবাল সোর্সিং বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট টিম ইয়াটস্কোকে দেখতে পাই। তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি দ্রুত দৌড়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন। আর আরনে সরেনসেনের সঙ্গেও আমাদের দেখা হয়নি। কারণ তিনি দরজা পর্যন্ত এগিয়ে এসে আমাদের দেখতে পেয়েই দ্রুত ভিতরে নিজেকে লুকিয়ে ফেলেন।

ওয়ালমার্টের এই আচরণকে নিতান্তই ভিতুর আচরণ বলে মত দিয়েছেন রব ওহল।

রব বলেন, সুমি আবেদিন সেরাতে যেভাবে বেঁচে যান তার বর্ণনা আমরা তার মুখেই শুনেছি। সুমি জানিয়েছেন তিনি বাঁচার জন্য নয় ¯্রফে তার দেহটি যাতে পুড়ে ছাই হয়ে না যায় সেই ভাবনা থেকেই লাফ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বেঁচে যান তবে একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে ফেলেন। তবে সুমি বাঁচলেও বাঁচতে পারেননি তার সহকর্মী ১১২ জন শ্রমিক।

রব বাংলানিউজকে বলেন, সুমির এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর, ওয়ালমার্টের সহযোগি প্রতিষ্ঠান, ওয়্যারহাউজগুলোর শ্রমিক এবং আরকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি তৈরি করেছে। কেবল ওয়ালমার্টের কর্তাব্যক্তিরা এতে বিচলিত নন, বা বিচলিত হতে চাননি।

তিনি আরও বলেন, সুমি আবেদীন যখন আরকানসাসে ওয়ার্কার জাস্টিস সেন্টারে বসে একদল অভিবাসী পোল্ট্রি শ্রমিকের উদ্দেশ্যে তার মর্মান্তিক কাহিনীর বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন শ্রমিকরা এতটাই ব্যাথিত হয়ে পড়েন যে তাদের মধ্যে কেউ একজন তার হ্যাটটি খুলে তার মধ্যে সুমির চিকিৎসার জন্য সহায়তা তুলতে উদ্যোগী হন। তখনই এই হ্যাটের মধ্যে ২০০ ডলার জমা পড়ে। শ্রমিকরা এই সময় বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রতি সংহতিও প্রকাশ করে ভবিষ্যতেও তাদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সোচ্চার থাকবেন বলে জানান।

সুমি ও কল্পনারা এরপর আরকানসাসে ওয়ালমার্টের একটি স্টোরেও যান। সুমি আসলে দেখতে চেয়েছিলেন পৃথিবীর অপর পীঠ থেকে তাদের হাতে বানানো কাপড়গুলো এখানে কিভাবে বিক্রি হয়, কারা সেগুলো কেনেন।

রব ওহল বলেন, আরকানসাসের রজারে আমরা যখন ওয়ালমার্টের একটি স্টোরে ঢুকি তখন স্টোর ম্যানেজার সুমির কাহিনী শুনে নির্বাক হয়ে যান।

রব বলেন, ওয়ালমার্টের কর্তা ব্যক্তিরা সুমির কথা না শুনে বরং দৌড়বে কিংবা পালাবে এমন ঘটনা মোটেই বিষ্ময়ের নয়। তবে মানবতার এতটুকু বোধও যার মধ্যে বর্তমান রয়েছে সেই প্রশ্ন তুলবে ওয়ালমার্ট কেনো ওই ফ্যাক্টরির পুড়ে যাওয়া শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে না?

ওয়ালমার্ট অবশ্য কোনো ক্ষতিপূরণ দিতেই রাজি নয়। বরং তারা বাংলাদেশের অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

এসব সিদ্ধান্ত নিলেও ওয়ালমার্ট যে আজ ভীত হয়ে পড়েছে তা নিশ্চিত করেছে তার আচরণ। তবে প্রতিষ্ঠানটির ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে যাতে তারা কখনোই তাদের পণ্য তৈরি করে যেসব শ্রমিক তাদের প্রতি দায়িত্বশীলতা ভুলতে না পারে, বলেন রব ওহল।

২০১২ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে বাংলাদেশে ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় তাজরীন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগে। সে রাতে আগুনে পুড়ে ও সুমির মতো লাফ দিয়ে পড়ে মারা যায় মোট ১১২ জন শ্রমিক। এই শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতেই এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করছেন সুমি আবেদীন ও কল্পনা আক্তার।

লিঙ্ক
২০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×