ছেলেদের যে কারনে আক্রমনাত্বক ভাব, অতিপ্রবৃত্তি, শক্তি, সাহস প্রকাশ পায় তার জন্য মূলতঃ দায়ী testosterone hormone যা নারী দেহে কম মাত্রায় থাকে। আবার নারীর কোমলতা, লাবন্য, এগুলো হয়ে থাকে estrogen নামক hormone এর কারনে। একজন মেয়ের শরীরে অতিমাত্রায় testosterone hormone প্রবেশ করে দিয়ে দাড়ি মোচ গজিয়ে দিলে তার দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না।
সুতরাং আল্লাহ এ সমস্ত কিছু অনর্থক সৃষ্টি করেন নি। বরং এ গুলোর অপচ্য় করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ পুরুষকে বলেছেন তোমার aggression, libido (জৈবিক চাহিদা), power এ গুলো কে control কর। তেমনি নারীকে বলেছেন তোমার beauty, glamour, attraction কে যেখানে সেখানে ব্যবহার কোর না। আল্লাহর এই আদেশ নিষেধ মেনে চলার মধ্যেই দুনিয়া এবং আখিরাতে মঙ্গল আর না মানলেই যত বিশৃঙ্খলা।
দ্বিতীয়তঃ হিজাব কে এইটা মনে না করা যে একজন নারীর জন্য অবমাননাকর বস্তু। বরং নারীর সম্মান দামী জিনিষ বলেই তাকে যত্রতত্র ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। সোনার জিনিষ তো মানুষ যত্ন করে রক্ষা করে, লোহার জন্য অত যত্নের প্রয়োজন পড়ে না।
তৃতীয়তঃ হিজাব বা পর্দা কি রকম ভাবে তারও কিছু নিয়ম কানুন আছে। শুধু একটা বোরখা ই হিজাব নয় যেমনটা আমরা অধিকাংশই মনে করে থাকি। এটা যদি decorative হয় অর্থাৎ নিজেই ঝলমলে হয়, তাহলে কিন্তু হিজাবের আসল উদ্দেশ্যটাই পালন হয় না।
চতুর্থতঃ হিজাব করা বা আল্লাহর যে কোন হুকুম মানা দরকার শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করবার উদ্দেশ্য নিয়েই। লোকে ভাল বলুক কি খারাপ বলুক। হিজাব যদি নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপনের জন্যই হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহর কাছ থেকে এর প্রতিদান পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ ! আল্লাহ অংশী স্থাপন থেকে মুক্ত। কেউ যদি কোন আমলের মধ্যে অন্য কাউকে সন্তুষ্টি ও উদ্দেশ্য বানায় তো আল্লাহ কেয়ামতের দিনে তার কাছ থেকেই ঐ আমলের বদলা নিতে বলবেন। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। তবে কোন আমল না ছাড়া বা ফরজ হুকুম নিয়ত কবে শুদ্ধ হবে এই অপেক্ষায় না থাকা কিন্তু বিষয়টা বোঝা এবং নিয়ত কে বারবার যাচাই করা জরুরী।
প্রতিটা আমলেই আখিরাতে প্রতিদান ছাড়াও দুনিয়ারও অনেক মঙ্গল নিহিত। যেমন নামাযের মধ্যে সুস্বাস্থ্য ও নিহিত আছে। কিন্তু নামাজ এই কারনে পড়া উচিৎ নয় যে ব্যায়াম হোল, কিছু সওয়াব ও মিললো। রোজা, হজ্ব এগুলোতে ও একই ব্যাপার। বরং আমি দুনিয়ার লাভ পাই না পাই আল্লাহর হুকুম ; এটাই মানার জন্য যথেষ্ট। যদি আল্লাহ বা রাসুলের মাধ্যমে কিছু দুনিয়ার লাভ পাওয়ার ওয়াদা থাকে ( যেমন হিজাবের ক্ষেত্রে নির্যাতিত না হওয়ার কথা বলা আছে ) তবে ভিন্ন কথা। কিন্তু সেই ক্ষেত্রেও আল্লাহর হুকুম কে সর্বাগ্রে না রাখলে পরিস্থিতি বুঝে আমল করা হবে। যেমন কোন জায়গায় যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে তাহলে কি হিজাব করা ছেড়ে দেবে ?
শাসকের ভয়ে আল্লাহর হুকুম মানাও একই ব্যাপার। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা তো নিয়ন্ত্রন করতে পারে অল্প কিছু বেয়াড়া মানুষ কে যখন বাকীরা সবাই মেনে চলছে নিজের গরজে। যেমন ৯৯% মহিলা পর্দা করছে ১% হয়তো নিজের খেয়াল খুশী মতন চলতে চাইছে তখন তাদের মানতে বাধ্য করার জন্য। কিন্তু ইসলামী শাসক থাকুক না থাকুক ইসলামী আইন তো আছে, আল্লাহ তো সর্বত্র বিরাজমান। নিজেই নিজের উপর ইসলামী হুকুমত চালাই না কেন ? দেখা যাবে অধিকাংশ হুকুমই মানতে পারছি। সুতরাং আল্লাহর হুকুম মানার জন্য কোন শাসকের শক্তি প্রয়োগের অপেক্ষায় না থেকে বরং আল্লাহর বড়ত্ব, আল্লাহর হুকুমের মাহাত্ত্ব, আখিরাতের পুরষ্কারের আশা, আল্লাহর আযাবের ভয় সামনে রাখি। দেখবেন আমল করা সহজ হয়ে গিয়েছে। তবে আল্লাহই আমল করার তওফিকদাতা।
( লেখাটি প্রথমে হিজাব নিয়ে সম্প্রতি যে পোষ্ট টি এসেছে তাতে খানিক টা লিখেছিলাম পরে আরো কিছু কথা আলোচনার জন্য আলাদা পোষ্ট করলাম। )
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




