আদিবাসী হল আদিকাল হতে কোন দেশে কোন জাতি বাস করলে পরবর্র্তিতে অন্য কোন নতুন জাতি এলে পূর্বের জাতিরা আদিবাসী হিসেবে পরিগনিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দটা ইছ্ছাকৃত ভাবে ভুল জায়গায় ভুল ভাবে প্রয়োগ করা হছ্ছে।কেননা বাংলাদেশে বাস্তবে কোন আদিবাসী নাই। এক শ্রেণীর পাহাড়ী ও এক শ্রেণীর এনজিওরা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরকে আদিবাসী হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ।তারা নিজেদেরকে বাংগালী বলে পরিচয়ও দেয়না।তারা দেশে বিদেশে নিজেদের আদিবাসী(?) পরিচয় দিয়ে আমাদের বাংগালী জাতিদের এদেশে অত্যাচারী ও দখলদার হিসেবে পরিচিতি করাতে চাছ্ছে যা স্বাধীন বাংগালী জাতি হিসেবে আমদের প্রাপ্য নয়। তারা মোটেই আদিবাসী নয় তারা হল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী।নৃতত্ত্বে আদিবাসী বলতে যা বোঝায় সে অর্থে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নাই।প্রধানত আদিবাসী বলতে বোঝায় অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার আদিবাসীদের।যারা আজ ইউরোপ থেকে আসা সাদা মানুষদরে অত্যাচারে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। বাংলাদেশের মুল জনগোষ্টি সেই অর্থে কাউকে বিতারিত করে এই দেশে বসবাস করেনি।অতি প্রাচীন কাল থেকেই এই দেশে বর্তমান মুল জন গোষ্ঠি বাংগালীরা তাদের উন্নত সভ্যতা ও সংস্কৃতি নিয়ে বসবাস করছে।আর যাদেরকে আদিবাসী(?) হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য তথাকথিত গোষ্ঠি উঠে পড়ে লেগেছে তারা মাত্র কয়েকশ বছর আগে ও এই দেশে ছিলই না। তাদের পূর্ব পুরুষরা কয়েকশ বছর আগে থেকে পর্যায়ক্রমে এই দেশে আসে।ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা তাদের আদমশুমারীর বিবরনে এদের উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করে।জাতি আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য হল জাতির থাকে উন্নত রাজনৈতিক সংগঠন যারা দেশ শাসন করার মত যোগ্যতা সম্পন্ন।তারা গড়ে তোলে রাষ্ট্র ব্যাবস্থা, প্রশাসন ও ভূমি আইন।তারা রাষ্ট্র পরিচালিত করে দলিল দস্তাবেজের মাধ্যেমে।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সেরকম কিছু থাকেনা। তারা বাস করে ছোট ছোট দল ভুক্ত হয়ে।তারা প্রধানত পরিচালিত হয় তাদের গোত্র প্রধান বা সর্দারের নির্দেশে।প্রত্যক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংষ্কৃতিকে আলাদা ভাবে পালন করে।ইংরেজরা যখন তাদেরকে উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয় তখন তাদের জীবন ছিল যথেষ্ঠ আদিম প্রকৃতির।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবাই এক মানব গোষ্ঠি নয় এবং বাংলাদেশে তারা এক জাযগায় বসবাস করে না।সাওতালরা বসবাস করে উত্তরান্চলে, গারোরা বাস করে উত্তর পূর্বান্চলে ও চাকমা ও মারমারা বাস করে দক্ষিন-পূর্বান্চলে।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা বালাদেশে সংখ্যায়ও নগন্য। সাওতালদের নৃতাত্বিক ভাবে প্রটো-অষ্ট্রেলয়েড মানব শাখায় ধরা হয়।এদের দৈহিক অষ্ট্রেলিয় আদিবাসীদের সাথে মিলে যায়।সাওতালরা বাংলাদেশে এসেছে ভারতের নাগপুর থেকে।ওরা ভারতের ছোট নাগপুর অরণ্য বাস করত।ইংরেজ আমলে নীল কুঠির সাহেবেরা নীল চাষ করার জন্য তাদের নিয়ে আসে তখনকার বাংলাদেশের উত্তরান্চলে।এদের গায়ের রং ঘোর কৃষ্ণ বর্ণ, দৈহিক আকৃতি খর্বকায়,মাথার চুল তরংগাকৃতি।মাথা লম্বাটে ধরনের।চোয়াল উচু নয় ।নাকের অগ্রভাগ চওড়া ও মাংসল।
চাকমা ,মারমা(মগ),ত্রিপুরা প্রভৃতি মন্গোলীয় মানব শাখা ভুক্ত। চাকমা মারমারা এদেশে এসেছে বেশিদিন হয়নি ।চাকমা রাংগামাটি এসেছে ১৭৩৭ সালের দিকে।মারমারা (মগ) অষ্টাদশ শতাব্দির শেষ ভাগে ।ব্রম্ম ও আরকান রাজ্যর যুদ্ধের সময়।এদের মাথার চুল সাধারনত সোজা ও খরখরে প্রকৃতির এদের গন্ডদেশের হাড় বিশেষ ভাবএ উচু তাই এদের মুখমন্ডল দেখে মনে হয় সমতল।এদের চোখের উপরের পাতায় এক ধরনের ভাজ থাকে বিধায় এদের চোখ ছোট মনে হয় এদের নাক সাধারনত চ্যাপ্টা হয়।মুখে দাড়ি গোফ তেমন একটা দেখা যায় না।এর মধ্যে ত্রিপুরাদের মাথার খুলির আকৃতি কিছুটা লম্বাটে হয় চাকমা ও মারমাদের মাথার আকৃতি হয় গোল।ময়মনসিংহের গারোরাও চাকমাদের মতই।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা সবাই এক ভাষায় কথা বলে না।সাওতালদের ভাষা কোল বা মুন্ডা পরিবার ভুক্ত।ত্রিপুরা, চাকমা ও মারমাদের ভাষা চৈনিক পরিবার পরিবারভুক্ত।মারমারা যে ভাষায় কথা বলে তা বর্মি ভাষার উপভাষা।চাকমারা তাদের নিজস্ব ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।তারা এখন কথা বলে চট্টগ্রামের আন্চলিক বাংলা ধারায় চাকমারা সাহিত্য চর্চা করে বাংলা ভাষায়।অথচ চাকমারা সবচেয়ে গলা উচু করে বলে দাবি করে আমরা আদিবাসী এবং এরাই বিদেশের মাটিতে বাংগালী জাতির বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালাছ্ছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে চাকমারাই রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বেশি নিয়েছে কিংবা পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার শিক্ষাবৃত্তির বলতে গেলে ৯৯ শতাংশই চাকমাদের দখলে। আর এগুলোর বেশির ভাগ হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে, যোগ্যতার মাপকাঠিতে হয়েছে খুব কম।চাকমারা নিজেদের বৌদ্ধ বলে দাবি করলেও মনোভাবের দিক হতে হিন্দুভাবাপন্ন।মারমা বৌদ্ধ ধর্মের সব নিয়ম কানুন মেনে চলে।চাকমাদের সাথে মারমাদের কোন সদ্ভাব নাই।তারা এক জাতি অন্য জাতিকে সহ্য করতে পারেনা।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আলাদা কোন স্বিকৃতি দেওয়া হয়নি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




