somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদিবাসী পরিচয়ে এরা কি চায় ?

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদিবাসী হল আদিকাল হতে কোন দেশে কোন জাতি বাস করলে পরবর্র্তিতে অন্য কোন নতুন জাতি এলে পূর্বের জাতিরা আদিবাসী হিসেবে পরিগনিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দটা ইছ্ছাকৃত ভাবে ভুল জায়গায় ভুল ভাবে প্রয়োগ করা হছ্ছে।কেননা বাংলাদেশে বাস্তবে কোন আদিবাসী নাই। এক শ্রেণীর পাহাড়ী ও এক শ্রেণীর এনজিওরা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরকে আদিবাসী হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ।তারা নিজেদেরকে বাংগালী বলে পরিচয়ও দেয়না।তারা দেশে বিদেশে নিজেদের আদিবাসী(?) পরিচয় দিয়ে আমাদের বাংগালী জাতিদের এদেশে অত্যাচারী ও দখলদার হিসেবে পরিচিতি করাতে চাছ্ছে যা স্বাধীন বাংগালী জাতি হিসেবে আমদের প্রাপ্য নয়। তারা মোটেই আদিবাসী নয় তারা হল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী।নৃতত্ত্বে আদিবাসী বলতে যা বোঝায় সে অর্থে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নাই।প্রধানত আদিবাসী বলতে বোঝায় অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার আদিবাসীদের।যারা আজ ইউরোপ থেকে আসা সাদা মানুষদরে অত্যাচারে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। বাংলাদেশের মুল জনগোষ্টি সেই অর্থে কাউকে বিতারিত করে এই দেশে বসবাস করেনি।অতি প্রাচীন কাল থেকেই এই দেশে বর্তমান মুল জন গোষ্ঠি বাংগালীরা তাদের উন্নত সভ্যতা ও সংস্কৃতি নিয়ে বসবাস করছে।আর যাদেরকে আদিবাসী(?) হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য তথাকথিত গোষ্ঠি উঠে পড়ে লেগেছে তারা মাত্র কয়েকশ বছর আগে ও এই দেশে ছিলই না। তাদের পূর্ব পুরুষরা কয়েকশ বছর আগে থেকে পর্যায়ক্রমে এই দেশে আসে।ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা তাদের আদমশুমারীর বিবরনে এদের উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করে।জাতি আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য হল জাতির থাকে উন্নত রাজনৈতিক সংগঠন যারা দেশ শাসন করার মত যোগ্যতা সম্পন্ন।তারা গড়ে তোলে রাষ্ট্র ব্যাবস্থা, প্রশাসন ও ভূমি আইন।তারা রাষ্ট্র পরিচালিত করে দলিল দস্তাবেজের মাধ্যেমে।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সেরকম কিছু থাকেনা। তারা বাস করে ছোট ছোট দল ভুক্ত হয়ে।তারা প্রধানত পরিচালিত হয় তাদের গোত্র প্রধান বা সর্দারের নির্দেশে।প্রত্যক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংষ্কৃতিকে আলাদা ভাবে পালন করে।ইংরেজরা যখন তাদেরকে উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয় তখন তাদের জীবন ছিল যথেষ্ঠ আদিম প্রকৃতির।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবাই এক মানব গোষ্ঠি নয় এবং বাংলাদেশে তারা এক জাযগায় বসবাস করে না।সাওতালরা বসবাস করে উত্তরান্চলে, গারোরা বাস করে উত্তর পূর্বান্চলে ও চাকমা ও মারমারা বাস করে দক্ষিন-পূর্বান্চলে।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা বালাদেশে সংখ্যায়ও নগন্য। সাওতালদের নৃতাত্বিক ভাবে প্রটো-অষ্ট্রেলয়েড মানব শাখায় ধরা হয়।এদের দৈহিক অষ্ট্রেলিয় আদিবাসীদের সাথে মিলে যায়।সাওতালরা বাংলাদেশে এসেছে ভারতের নাগপুর থেকে।ওরা ভারতের ছোট নাগপুর অরণ্য বাস করত।ইংরেজ আমলে নীল কুঠির সাহেবেরা নীল চাষ করার জন্য তাদের নিয়ে আসে তখনকার বাংলাদেশের উত্তরান্চলে।এদের গায়ের রং ঘোর কৃষ্ণ বর্ণ, দৈহিক আকৃতি খর্বকায়,মাথার চুল তরংগাকৃতি।মাথা লম্বাটে ধরনের।চোয়াল উচু নয় ।নাকের অগ্রভাগ চওড়া ও মাংসল।
চাকমা ,মারমা(মগ),ত্রিপুরা প্রভৃতি মন্গোলীয় মানব শাখা ভুক্ত। চাকমা মারমারা এদেশে এসেছে বেশিদিন হয়নি ।চাকমা রাংগামাটি এসেছে ১৭৩৭ সালের দিকে।মারমারা (মগ) অষ্টাদশ শতাব্দির শেষ ভাগে ।ব্রম্ম ও আরকান রাজ্যর যুদ্ধের সময়।এদের মাথার চুল সাধারনত সোজা ও খরখরে প্রকৃতির এদের গন্ডদেশের হাড় বিশেষ ভাবএ উচু তাই এদের মুখমন্ডল দেখে মনে হয় সমতল।এদের চোখের উপরের পাতায় এক ধরনের ভাজ থাকে বিধায় এদের চোখ ছোট মনে হয় এদের নাক সাধারনত চ্যাপ্টা হয়।মুখে দাড়ি গোফ তেমন একটা দেখা যায় না।এর মধ্যে ত্রিপুরাদের মাথার খুলির আকৃতি কিছুটা লম্বাটে হয় চাকমা ও মারমাদের মাথার আকৃতি হয় গোল।ময়মনসিংহের গারোরাও চাকমাদের মতই।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা সবাই এক ভাষায় কথা বলে না।সাওতালদের ভাষা কোল বা মুন্ডা পরিবার ভুক্ত।ত্রিপুরা, চাকমা ও মারমাদের ভাষা চৈনিক পরিবার পরিবারভুক্ত।মারমারা যে ভাষায় কথা বলে তা বর্মি ভাষার উপভাষা।চাকমারা তাদের নিজস্ব ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।তারা এখন কথা বলে চট্টগ্রামের আন্চলিক বাংলা ধারায় চাকমারা সাহিত্য চর্চা করে বাংলা ভাষায়।অথচ চাকমারা সবচেয়ে গলা উচু করে বলে দাবি করে আমরা আদিবাসী এবং এরাই বিদেশের মাটিতে বাংগালী জাতির বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালাছ্ছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে চাকমারাই রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বেশি নিয়েছে কিংবা পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার শিক্ষাবৃত্তির বলতে গেলে ৯৯ শতাংশই চাকমাদের দখলে। আর এগুলোর বেশির ভাগ হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে, যোগ্যতার মাপকাঠিতে হয়েছে খুব কম।চাকমারা নিজেদের বৌদ্ধ বলে দাবি করলেও মনোভাবের দিক হতে হিন্দুভাবাপন্ন।মারমা বৌদ্ধ ধর্মের সব নিয়ম কানুন মেনে চলে।চাকমাদের সাথে মারমাদের কোন সদ্ভাব নাই।তারা এক জাতি অন্য জাতিকে সহ্য করতে পারেনা।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আলাদা কোন স্বিকৃতি দেওয়া হয়নি।
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×