ভাবনার ভেলায় ভেসে মন চলে ছুটে চলতে থাকে দুর্নিবার বেগে।যেন প্রমত্ত কোন নদীর ভাটির দিকে ছুটে চলা কোন ডিঙি নৌকা।আর ভাবনার সাগর তাকে দেয় নতুন ভাবনার রসদ। সবচেয়ে বড় রসদ মন নিজেই। আমি ভেবে চলি মনকে নিয়ে।আমার মনের অস্তিত্বের সন্ধান করি।কোথায় আমার মনের বাস কিংবা এই আমিটাই বা কে।উত্তর খোজার চেষ্টা করি।আমার হাত আমার পা আমার চোখ আমার হৃদয় এসবই আমার কিন্তু যার সেই আমির বাস কোথায়।সেই আমি আমার সত্তাকে খোজ করি।একজন মানুষ আর একটি মৃত দেহের পার্থক্য এই সত্তায়।মৃতের মাঝে তার আপন সত্তা থাকে না তাই তো সে শুধুই লাশ।কিন্তু কী সেই জিনিস মানুষ আর লাশের পার্থক্য কারী। এর উত্তর হলো সেই "আমি"। আমার মাঝে যখন আর আমি থাকব না তখনই আমি লাশ শুধুই মৃতদেহ যাকে মানুষ নিশ্চিহ্ণ করে দেয় কেউ আগুনে কেউ মাটিতে। এই আমির আমি বাদে বাকি সবই হারিয়ে যায় পৃ্থিবীর বুক থেকে কিন্তু সেই আমিটা কোথায় হারায়?সে কী ফিরে যায় সেই অন্ধকারে যার বুক থেকে সে উঠে এসেছে।কিংবা আমি কি শুধুই অন্ধকার হতে উঠা আসা একজন?অন্ধকারের সন্তান নিকশ আধার থেকে আসে আলোর পৃথিবীতে, আবার নিজের অধিকারের কায়া প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দিয়ে সে কী তার উৎস ঘোর অমানিশায় ফিরে যায়?
এই আমি র সন্ধান করি আর উপলদ্ধি করার চেষ্টা করি এই আমির পার করা জীবনের।যেই জীবনের সন্ধান করে গেছেন মানিক,জীবনানন্দ সুধীন্দ্রনাথরা কিংবা যেই জীবনকে আজাদ সাহেব বলে গেছেন ঝিনুকের মুক্তা ফলানোর উপমা দিয়ে এক নিরর্থক ব্যর্থ করুণ প্রয়াস।এই জীবনের আসলেই কী কোন চরম সার্থকতা আছে?আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান এর কোন সমাধান দিতে পারে না শুধু আমার প্রিয় লেখক কবি দের বোধ গুলোকে সে ছুতে চায়।আমার প্রিয় মানিকের দিবারাত্রির কাব্য উপন্যাসটি আমাকে তরুণ মানিকের অদ্ভুত দর্শন শিখিয়েছে।সেটা হলো আমাদের জীবনটা আসলে একটা ভান। জীবনের চরম অর্থ তার নিরর্থকতায়।আর সে বড়ই ভয়ার্ত আমাদের কাছে।তাইতো আমরা তাকে ভুলতে ভান করে চলি সারাটা জীবন শুধুই আপাত অর্থপুর্ন ছোট ছোট নিরর্থ কাজের মধ্যে।এই জীবনের চরম কোন সার্থকতা বোধ করি নেই।আছে শুধু নিরর্থকতার অসীম সাগরে ক্ষুদ্র সার্থকতার সন্ধান করা।
অর্থহীন এই জীবনকে অর্থবহ করার প্রয়াস আমিও চালিয়ে যাই শুধু অন্যসবার মত অন্ধকার আর নিরর্থকতা আমার কাছে ভয় হিসাবে আসে না ।অন্ধকার জননী আর আর নিত্যসহচর অর্থহীনতাকে সাথে করেই আমি ঝিনুকের মত নিজের ত্যাগের মাধ্যমে নিরর্থক মুক্তা ফলাতে চাই ।