পৃথিবীর ইতিহাস বদলে দেয়া "ফরাসি বিপ্লব"
১৮ মার্চ, ২০১৬- ১৪৫ তম প্যারী কমিউন বিপ্লব দিবস।
বিপ্লব ছাড়া কোনদিন অধিকার আদায় করা যায়না , পৃথিবীর ইতিহাস তাই বলে । আমার দৃস্টিকোন থেকে ফরাসি বিপ্লবের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।
প্রেরণার বাতিঘর, শোষিতের হাতিয়ার ফরাসি বিপ্লব:
ফরাসি বিপ্লবের সূচনা ১৪ জুলাই ১৭৮৯ ধরা হলেও তা ধাপে ধাপে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এগিয়েছে। বাস্তিলের পতন, সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারের ঘোষণা ইত্যাদি ধাপ পেরিয়ে বিপ্লব এগিয়ে গেল প্রজাতন্ত্র ঘোষণার স্তরে। ১৭৯১ সালের ১০ আগস্ট প্যারিসের সংগ্রামী জনতা রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে রাজপ্রাসাদ দখল করে নেয়।
বিলুপ্ত হয় ঐতিহ্যগতভাবে চলে আসা অভিজাত, ক্যাথলিক সম্প্রদায় এবং সামন্তবাদী সমাজ ব্যবস্থার। এ বিপ্লব ফ্রান্সের গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা ও সাম্যের আদর্শে দেশের জনগণসহ সারাবিশ্বকে উদ্বুদ্ধ করেছে। আজও সারা বিশ্বময় শোষণের বিরুদ্ধে ফরাসি বিপ্লব একটি জাগ্রত চেতনা।
বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্স
ফরাসি বিপ্লবের পূর্বেকার অবস্থাকে তিনভাবে দেখানো যেতে পারে।
১. আর্থিক দৈন্যদশা
২. রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
৩. তৃতীয় সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের শপথ।
এ দিকগুলোর বর্ণনা ইতোমধ্যেই আমরা আলোচনা করেছি। মূলত দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অসাম্য, অনাচারপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শোষিত ও নিপীড়িত ফরাসি জনগণের মনে যে বিক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছিল তা ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে।
ফরাসি বিপ্লব ও এর দর্শন
ফরাসি বিপ্লব সংঘঠিত হবার ক্ষেত্রে ফরাসি দার্শনিক ও সাহিত্যিকদের অসামান্য অবদান রয়েছে। রুশো, ভলটেয়ার, মন্টেস্কুদের হৃদয়স্পর্শী বক্তব্যগুলো ঐ সময় সবাইকে আকৃষ্ট করেছিল। ফলে লক্ষ লক্ষ শোষিত ও নিপীড়িত নর-নারীর কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বে’র স্লোগান। এসব দার্শনিকরা বলেন, ‘রাজা জনসাধারণের মতানুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা না করলে তাকে পদচ্যুত করার অধিকার জনগণের রয়েছে। আবার রুশোর দর্শনে বলা হয়, মানুষ স্বাধীন সত্তা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু সর্বত্র সে শৃঙ্খলিত’। এ সমস্ত বাণীগুলো ফরাসি বিপ্লবের দর্শন হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। অনুপ্রেরণা দিয়েছে বিপ্লবী জনতাকে।
ফরাসি বিপ্লবের কারণ
একটি বিপ্লব কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা কারণে সংগঠিত হতে পারেনা। বরং একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়। ফরাসী বিপ্লবও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তৎকালীন ফ্রান্সের অন্যতম সমস্যা ছিল খাদ্যসংকট তথা অর্থনৈতিক সংকট। উপরন্তু বিপ্লবের অল্প কিছুপূর্বে দুর্ভিক্ষ এবং অর্থনৈতিক সংকট ইউরোপের প্রায় সবগুলো দেশেই মারাত্মক আকার ধারণ করে। ফলে বৈদেশিক সাহায্য থেকেও বঞ্চিত এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ফ্রান্সের রাজতান্ত্রিক সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার প্রজ্জ্বলিত শিখা
ফরাসি বিপ্লবের ঢেউ বাংলাদেশ ছুয়া যায়
পরামর্শ বা উপদেশের জন্য: https://www.facebook.com/skmizan অথবা https://twitter.com/skmizan
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৮