somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ আসলে চালায় কে?

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা হলো মন্ত্রীপরিষদ শাসিত গণপ্রজাতন্ত্র। আর প্রজাতন্ত্রের সংগা অনুযায়ী জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এবং দেশ চালায় জনপ্রতিনিধি। দারুণ সিস্টেম কিন্তু কাগজে-কলমে। আমার বয়স বেশি না, কিছুদিন আগেই মাত্র ২০ বছর হলো। আমি কোন বিজ্ঞ ব্যাক্তিও নই তবে আমার ক্ষুদ্র জীবনের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে একটি জিনিস লক্ষ্য করলাম যে আসলে আমাদের দেশটি পরিচালনা করে মাত্র চার শ্রেণীর মানুষ। এরা হলো সেনা কর্মকর্তা (পদে আসীন বা অবসরপ্রাপ্ত), বিশিষ্ট(?) ব্যবসায়ী, আইনজীবি ও আমলা। এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন যে এ বলে কী রাজনীতিবিদরা গেল কই? এর উত্তরও অতি সহজ। রাজনীতিবিদ আসলে কারা? সুযোগ বুঝে প্রভাবশালী যে কেউ এই টাইটেল নিয়ে নিতে পারে। যদি আমরা রাজনৈতিক দলের সদস্যদের দিকে নজর দেই তাহলে দেখতে পাবো তাদের প্রায় সবাই বড়সড় ব্যবসা পরিচালনা করেন। ব্যবসা করা তো দোষের না। কিন্তু কথা হলো সৎ ব্যবসায়ীরা কি রাজনীতিতে নাম লেখান? আর আমাদের রাজনীতিবিদরা যত বড়লোক এত বড়লোক তো সৎ ব্যবসায়ী সারা জীবনেও হতে পারবেন না। সরকারি ও বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা হলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। চাকরী জীবনে হাজারো সুযোগ সুবিধা ভোগ করে অবসর গ্রহণের আগ দিয়ে বড়সড় ব্যবসায়ীদের সাথে দোস্তি করে অল্প দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যায় এই শ্রেণীটির। এদের যখন বুড়ো বয়সে আরও সুবিধা গ্রহণের খায়েস হয় তখন এরা যোগ দেন রাজনীতিতে। দলগুলোও সামরিক বাহিনীকে খুশি রাখতে এদের ফুলের মালা গলায় দিয়ে বরণ করে নেয়। সামরিকের পর এবার আসে আইনজীবী। ওনারা তো বাদশা। আমাদের বিশিষ্ট আইনজীবীরা সবাই প্রধান দুই দলের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠেন। তারা যেমন যখন তখন রাজনৈতিক বক্তব্য দেন তেমনি নিজের দলের আমলে সুবিধাজনক গদিতে বসে পড়েন। সবই সিস্টেমে ও সুন্দর ফরম্যাটে চলে। এবার আসি আমলা আংকেলদের কাছে। বড়সড় আমলা হতে রাজনৈতিক সিল-ছাপ্পড় অপরিহার্য। রাজনৈতিক হাত না থাকলে বুড়ো বয়সে খুব বেশি হলে ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে অবসর নিতে হবে। নিজের দলের লোককে পদোন্নতি দিয়ে জায়গা মতো বসিয়ে দিয়ে এরা সরকারি দলের সুনজরে চলে আসে। সেই সাথে চলে ঘুষ বাণিজ্য ও অবৈধ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ। সামরিক আংকেলরাও এক্ষেত্রে কম যান না। প্রতিরক্ষা বাহিনীর দরপত্রের আহ্ববান তো প্রতিদিনই সংবাদপত্রে আসে। সেখান থেকে ভালো এমাউন্ট কামিয়ে নেয়। আর বন্দর, বর্ডার এগুলো তো আছেই। উনাদের খুশি রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুদান ও নানাবিধ সুযোগ সুবিধা হাসিমুখেই গ্রহণ করেন। উনাদের লেনদেন আমলাদের চেয়েও বড়। কিন্তু ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে হয় বলে জনগণ টের পায় না। গাল খায় শুধু আমলারা। যাই হোক, উপরের চার শ্রেণীর একটি কমন পরিচয় হলো এরা শেষমেষ সবাই ব্যবসায়ী। অতঃপর রাজনীতিবিদ।

আমরা আজ ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। দরদাম সব নির্ভর করে তাদের মর্জির ওপর। ১৫টাকায় কিনে ২৫ টাকায় বেঁচে এক রাতে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নেয় এরা। মন্ত্রী এমপিরাও সব এদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আর অশিক্ষিত জনগণ একের পর এক সন্তান জন্ম দিতে থাকে আর সেই সন্তানদের এনে দেয় বাঘের গুহার সামনে। না পারে তাদের ভরণপোষণ করতে না পারে তাদের কোন চাহিদা মেটাতে। মাঝখান থেকে তারা এদেরকে হায়েনা রূপী ব্যবসায়ীদের সামনে ঠেলে দেয়। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দাম নির্ধারণ করে আর এই আমজনতা পেটের ক্ষুধা ও অন্যান্য চাহিদা মেটাতে সেই দাম দিয়েই তা কিনতে বাধ্য থাকে। তারাও মূর্খের মত আরও কতগুলো মুখের জন্ম দিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার পথ সুগম করে তোলে। জনগণ আজ ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। তারা তাদের চাহিদা মেটাতে ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত দামে পণ্য কিনতে যেমন বাধ্য তেমনি তাদের অফার করা বেতনের চাকরি করতেও বাধ্য। কী আর করা, পেট তো মানে না। অর্থনীতির ভাষায় একটা কথা আছে না যে চাহিদা বাড়লে যোগাণ কমে আর পণ্যের মূল্যও বেড়ে যায়। আমরা এখন সেই ফাঁদে আটকে পড়েছি। আর ঐ চার শ্রেণীর মানুষ (সবাই না) তা দর্শক সারিতে বসে দেখতে দেখতে ব্ল্যাক কফি পান করছে! সব কিছুর ফরম্যাট রেডি, এখন তো শুধু লাভ আর লাভ। আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে!!
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×