রঘুনন্দন হিল ফরেস্টের অংশবিশেষ নিয়ে বনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত সাতটা ছড়ার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে “ সাতছড়ি ন্যাশনাল পার্ক ”। ১৯১৪ সালে রঘুনন্দন হিল ফরেস্টকে রিজার্ভ ফরেস্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ, ১৯৭৩ বলে ২০০৫ সালে প্রায় ৬০০ একর জায়গা নিয়ে ন্যাশনাল পার্ক গঠিত হয়। জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ এই পার্কে রয়েছে ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী।
পার্কটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানায় অবস্হিত। ঢাকা থেকে উত্তর-পূর্বে ১৩০ কি.মি দূরত্বে পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্হিত। পার্কের পশ্চিমে সাতছড়ি টি এস্টেট, পূর্বে চাকলাপুঞ্জি টি এস্টেট এবং উত্তর-দক্ষিণে রয়েছে রঘুনন্দন হিল ফরেস্টের বনায়ন।
পর্যটকদের জন্য নিসর্গ কর্মসূচীর আওতায় ৩টি ট্রেইল তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
আধা ঘন্টার ট্রেইল: ১ কি.মি দৈর্ঘ্যের এই ট্রেইল ধরে বনের মধ্যে অবস্হিত একমাত্র গ্রাম টিপরা পাড়াতে যাওয়া যায়।
এক ঘন্টার ট্রেইল: বৈচিত্রময় বনের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী/উদ্ভিদ দেখতে চাইলে এই ট্রেইল ধরে এগিয়ে যাওয়া উচিত। আমার এই ট্রেইলে সাতছড়ি দেখা হয়েছে।
তিন ঘন্টার ট্রেইল: ৬ কি.মি দৈর্ঘ্যের এই ট্রেইল ধরে এগুলে পেয়ে যাবেন আগরের বন। পাখি প্রেমীদের জন্য এই ট্রেইল আদর্শ।
উদ্ভিদের মধ্যে গর্জন, কড়ই, চাঁপালিশ, শিমুল, বনবড়ই, হাড়গোজা, বহেড়া, হরিতকী, শেওড়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। প্রাণীদের মধ্যে গন্ধগোকুল, উল্লুক, উল্টালেজী বানর, লজ্জাবতী বানর, মায়া হরিণ, মেছোবিড়াল, গুই সাপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
যাত্রা হলো শুরু
গাছ পড়ে আছে ট্রেইলের উপর
মাথার উপর প্রকৃতির ছাতা
গহিন অরণ্য
নতুন লাগানো আগর গাছ
বট বৃক্ষ
আমি বনফুল গো
বাঁশের বাগান
বনের বাসিন্দা
বিখ্যাত বেত গাছ। বেত দিয়ে সিলেট অঞ্চলে তৈরি হয় আকর্ষণীয় আসবাবপত্র
বনের সৌন্দর্য
সাত ছড়ার একছড়া। পানি শুকিয়ে বালুমহালে রূপ নিয়েছে। বর্ষাকালে পানি ধারণ করে।
পর্যটকদের পায়ে চলা পথে কাঠের সেতু
বনে নয় মহাসড়কে দেখা মিললো হিংস্র শক্তিশালী উল্টালেজী বানরের
যারা ঢাকা থেকে আসতে চান:
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের মাধবপুর থানার সায়হাম চত্বরে এসে হাতের ডান দিকে মোড় নিয়ে পার্কে আসতে হবে। সড়কপথে ঢাকা থেকে ২.৫-৩ ঘন্টা লাগবে। তথ্য কেন্দ্র থেকে গাইড পাবেন। ট্রেইল অনুযায়ী গাইড ফি যথাক্রমে ২০০/-, ৩০০/- ও ৫০০/- টাকা। যদিও অফিস চত্বরে ম্যাপ দেয়া আছে, তবুও গাইড নেয়া উচিত। কারণ শুরুতে ট্রেইল বিষয়ে নির্দেশনা থাকলেও বনের মধ্যে কোথাও এই বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া নেই। ফলে বনের মধ্যে পথ ভুল করার সম্ভাবনা রয়ে যায়
আসার পূর্বে রেঞ্জার জনাব মোঃ লিয়াকত আলী মোল্লা’র (মোবাঃ ০১১৯০৭৮৯১৭৬ ) সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া ঢাকায় আগারগাঁও’এর বন সংরক্ষক ও প্রকল্প পরিচালকের (ফোন -০২৯৮৮৬২৮২ ) সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। মাধবপুরের তেলিয়াপাড়ায় ইকোকটেজে থাকতে পারবেন জানুয়ারী ২০১০ পর। কটেজের নির্মাণ কাজ চলছে। এইমুহূর্তে আমজনতার থাকার কোন ব্যবস্হা নেই। তবে যোগাযোগ ব্যবস্হা ভাল থাকার কারণে আপনি পার্ক পরিদর্শন করে দিনেই ঢাকা ফেরত যেতে পারবেন। তো চলে আসুন সুযোগ করে সাতছড়িতে। আর আবিষ্কার করুন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য।
পরিবেশ বান্ধব তথ্যকেন্দ্র
নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার। পার্ক সম্পর্কে ধারণা দেয়া এবং পরিবেশের গুরুত্ব দর্শনার্থীদের আত্মস্হ করানোর প্রচেষ্টা।
সামনে রয়েছে পাম ট্রি। সংখ্যায় প্রায় ৩ হাজার। সরকার পাম থেকে তেল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
রঙিন ইউক্যালিপটাস
ফসিলে রুপান্তরিত গাছ
সড়কের একাংশ
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৪