somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভিরিভিউ: মনপুরা

২৭ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সিনেমাহলে মুক্তি পেলেও সুযোগ না থাকার কারণে দেখা হয়নি। তাই অরিজিন্যাল ডিভিডি বের হওয়ার পর দেখতে বসলাম আলোচিত চলচ্চিত্র ‘মনপুরা’। গভীর রাতে প্রভাবশালী গাজীর মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে হালিম একটা খুন করে ফেলে। গাজী সাহেবের ছেলেকে রক্ষা করতে স্ত্রীর পরামর্শে বাড়ির এতিম কাজের ছেলে সোনাইকে মনপুরা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয় যাতে সবাই সোনাইকে দোষী ভাবে। সোনাই আর গ্রামে ফিরতে পারে না। মনপুরাতে সোনাইয়ের দেখা হয় পরীর সাথে-গড়ে উঠে দু’জনের মধ্যে ভালবাসা। কিন্তু গাজী সাহেবের সন্তান বাৎসল্য এবং পরীর বাবার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাড়ায়। সোনাই ও পরী কি পারবে সেই বাধা অতিক্রম করতে?

কাহিনীতে কোন জটিলতা নেই। বহুবার দেখা, বহুবার জানা একটি গল্প। তাহলে ছবিটির বিশেষত্ব কি? খুব সহজভাবে বললে বিশেষত্ব হচ্ছে ছবিটির ‘মেকিং’। পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম ছবিটি চমৎকারভাবে তৈরি করেছেন। এই চমৎকারের মধ্যে রয়েছে -লোকেশন, সিনেমাটোগ্রাফি, অভিনয় এবং মিউজিক। আউটডোর লোকেশনের চিত্র পুরো পর্দা জুড়ে মায়াবী পরিবেশ তৈরি করে। ছবির অর্ধেক গল্প পরিচালক শুধুমাত্র তার লোকেশন দিয়েই দর্শকদের বলে দিতে পেরেছেন। কামরুল হাসান খসরুর চিত্রগ্রহন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সেরা সিনেমাটোগ্রাফির একটি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যারা আমাদের চলচ্চিত্রের প্রিন্ট বিশ্বমানের নয় মর্মে অনুযোগ করেন এটা দেখে আশাকরি তাদের ভুল ভাঙবে।





অভিনয় শিল্পীরা সবাই প্রতিষ্ঠিত। সহজ- সরল যুবক সোনাই চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী ছিলেন একদম পারফেক্ট। গাজীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডাকসাইটে অভিনেতা মামুনুর রশীদ। তার চরিত্রটা কিছু ক্ষেত্রে ছিল কনফিউজিং। ভাল আর মন্দ মানুষের কনট্রাস্ট অনেকক্ষেত্রে লাগসই হয়নি। ডিমান্ডিং কিছু দৃশ্যে তাকে মনে হয়েছে নিরুত্তাপ। এছাড়া গাজীর একটি নামাযের দৃশ্যায়নেও অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। পরিচালক আরো একটু মনোযোগী হতে পারতেন এই চরিত্রের প্রতি। নায়িকা পরী চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনেকাংশে নতুন ফারহানা মিলি। তার নির্মল সৌন্দর্য ছবির কাহিনীর সাথে একাকার হয়ে গেছে। অন্যান্যরা অভিনয়ে ছিলেন যথাযথ।









ছবিতে অনেকদৃশ্য ছিল যেখানে সুযোগ ছিল লাউড হওয়ার। বিশেষত একটি খুন আর একটি আত্মহত্যার দৃশ্য মেইনস্ট্রিমের পরিচালকরা পেলে হয়তো পর্দাকে যাত্রার মঞ্চ বানিয়ে ফেলতেন। কিন্তু পরিচালক সযত্নে সেটা পরিহার করেছেন। আর এখানেই তার স্বাতন্ত্র্যতা রক্ষা করতে পেরেছেন।

সংগীত পরিচালক অর্ণব গল্পের সাথে মিল রেখেই মিউজিক করেছেন। মমতাজ তার ক্যারিয়ারের সেরা একটি গান এই ছবিতে গাইতে পেরেছেন। যদিও গানগুলোর সম্পূর্ণ অংশ ছবিতে ব্যবহৃত হয়নি। তবে এতে ছবির ধারাবাহিকতা বিঘ্ন হয়নি। এছাড়া শুধুমাত্র হারমোনিয়াম দিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছবির সাথে দর্শকদের সহজে রিলেট করতে সহায়তা করেছে।

অডিও লিংক:

আগে যদি জানতাম রে বন্ধু - মমতাজ
আমার সোনার ময়না পাখি - অর্ণব
নিথুয়া পাথারে -কৃষ্ণকলি ও চঞ্চল চৌধুরী
সোনার পালঙ্কের ঘরে - চন্দনা মজুমদার ও কৃষ্ণকলি
সোনাই হায় হায় রে - ফজলুর রহমান বাবু

এই ছবি দেখে পরিচালকের প্রতি প্রত্যাশা বেড়ে গেল কয়েকগুন। আর এ জন্যই হয়তো অভিনেতা-নির্মাতা আফজাল হোসেন পত্রিকায় লিখেছেন তিনি ‘ঈর্ষান্বিত’!

ছবিটি ঈদের দিন বেলা একটা ৩০ মিনিটে চ্যানেল আইতে দেখাবে। আর বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা পরিহার করতে চাইলে ডিভিডি’ই ভরসা।


সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৪
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×