somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে আসুন শিলং চেরাপুঞ্জি ~ পর্ব - ১

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একবার যখন সিলেটের জাফলং এ বেড়াতে গিয়েছিলাম পাথর মিশ্রিত পানিতে হাটতে হাটতে পাশের পাহাড় দেখছিলাম অপূর্ব সুন্দর লাগছিল । হঠাৎ দূরে দেখি দুইটি পাহাড়ের মিলন ঘটিয়েছে একটি সুন্দর ব্রিজ, ঠিক তখনই একজন বাঙ্গালী মানুষ আমাকে বলল ভাইয়া আর সামনে এগুবেন না কারন সামনে ইন্ডিয়া ! শুনে তো আমি থ ! এত সুন্দর একটি জায়গা সেটা কেন যে ভারতে পড়লো খুব আফসোস হচ্ছিল । আর তখন থেকেই মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিলাম ওই ব্রিজে আমি যাবোই ।


ছবিতে যে জায়গাটাটি দেখছেন এই সেই দুইটি পাহাড়ের মিলনস্থল ব্রিজ যেটা ভারতের মধ্যে পড়েছে আর দেখে আমার শুধু আফসোস হচ্ছিল ইস আমরা যদি আর ১ কিঃমিঃ জায়গা বেশী পেতাম তাহলে ওই জায়গাটা আমাদের হতো ।
আর সেই জিদ থেকেই ঢাকা এসে শুরু করলাম গবেষণা কিভাবে কি উপায়ে ওখানে যাওয়া যাবে । ওই জায়গার পাশে ভারতের কোন জায়গা কি কি আছে দর্শনীয় সাত দিনের মধ্যে সব ডাটা রেডী । আমার ভ্রমণ বন্ধু ইসমাইল কে বললাম সব এবং সে শুনে সাথে সাথে রাজী সুতরাং শুরু করে দিলাম ওখানে যাবার জন্য সকল প্রসেসিং ।
যাক আমার এই ভ্রমণ কাহিনী ব্যপক বড়-সড় তাই মনে হয় কয়েক পর্ব লেগে যাবে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে । তো শুরু করা যাক সেই অসম্ভব রুপময় ও অপার সৌন্দর্য ভরা জায়গা “ শিলং – চেরাপুঞ্জি” ভ্রমণ ।
যেতে হলে যা যা লাগবে –
১। আপনাকে একজন প্রকৃতি প্রেমী হতে হবে ।
২। আপনার একটি বৈধ এবং মেয়াদ সম্পন্ন বাংলাদেশের পাসপোর্ট বই থাকা লাগবে ।
৩। ভারত ভ্রমণের ভিসা থাকা লাগবে ।
৪। মিনিমাম ৫ দিনের ট্যুর ।
গুরুত্ত পূর্ণ বিষয়াদি –
•ভিসা ফরম পূরণ করার সময় পোর্ট হবে – “দাওকি বর্ডার” আর যেটা বাংলাদেশের তামাবিল বর্ডার ।
•যাবার পূর্বে অবশ্যই ঢাকা অথবা সিলেট সোনালী ব্যাংক থেকে “ভ্রমণ ভাতা” জমা দিয়ে রিসিট সাথে রাখতে হবে, এটা ছাড়া কোন ভাবেই বাংলাদেশ বর্ডার ভারত প্রবেশের অনুমতি দিবে না, যত কিছুই করা হোক না কেন । আমরা এটার চরম ভুক্তভুগী সুতরাং সবাই সচেতন থাকবেন এই ব্যপারটাতে ।
১ম দিন ঃ

যাক বর্ডার ফর্মালিটি শেষ করে আমরা ৩ বন্ধু যখন ভারতে প্রবেশ করলাম তখন প্রায় শেষ বিকেল , একেবারেই সুপ্ত এবং খুবই নিরিবিলি একটু ভয় ভয় করছিল আমাদের । যাক একটু হেটে সামনে গেলেই ছোট্ট একটি বাজার পাওয়া যাবে সেখানে গিয়েই মিলল একটি ট্যক্সি তবে ভাড়া একটু বেশী নিয়েছিল যেটা আমরা আশে পাশের দোকান এবং মানুষ জন আমাদেরকে বলেছিল । ভাড়া -১৫০০-২০০০ রুপী গন্তব্য শিলং , প্রায় ৬০-৬৫ কিঃমিঃ । এই বাজারে আমরা একজন মহিলার কাছ থেকে কিছু বাংলা টাকাকে রুপী করিয়ে নিয়েছিলাম । যাক সাথে কিছু খাবার দাবার নিয়ে শুরু হল যাত্রা, যেতেই চোখে পড়লো সেই অসম্ভব সুন্দর দুইটি পাহাড়ের মিলনস্থল ব্রিজ । ওখানে মুলত গাড়ী থামানো নিষেধ আমরা তো নাছোড় বান্দা ওখানে গাড়ি তো থামালাম ই সাথে সাথে অনেক ছবি ও তুললাম । আর ওখান থেকে আমার বাংলাদেশ কে দেখলাম যার জন্য মনটা কাঁদতে লাগলো।


বর্ডার পার হবার সেই মুহূর্ত


ভারতে প্রবেশ করলাম আমরা


সেই সপ্নের ব্রিজের কাছাকাছি আসতে পেরে আমি খুবই উতফুল্লিত !!


চান্সে ব্রিজের সাথে আমার ছবিটা ও দিয়া দিলাম B-);):D
যাক আবার শুরু করলাম যাত্রা ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলো দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের গাড়ী... আঁকা বাকা পথ যেন আর শেষ হয় না যেতে যেতে আরো ২ বার গাড়ী থমিয়ে চা খেলাম, হাল্কা হাল্কা শীত শীত লাগছিল আর তখন বাংলাদেশে অসহনীয় গরম পড়ছে। যাক অবশেষে রাত ৯ টায় আমরা শিলং শহরে এসে পৌঁছালাম । যেন সপ্নের এক সিটি, চারিদিকে আলো ঝলমল ব্যস্ত এক শহর । আশে পাশে সব পরিচিত ব্র্যন্ডের অপরিচিত সব শো-রুম, ভালোই লাগল । এখন চিন্তা হচ্ছে থাকবো কোথায় ? যাক যার কেউ নেই তার সৃষ্টি কর্তা আছেন এই ভাবছি আর হাটছি হটাত শিলং স্কয়ার এর পাশে রাস্তা থেকে ঠিক একটু নিচের দিকে মানে আন্ডারগ্রাউন্ডের দিকে একটি হোটেলের সাইন বোর্ড দেখে আমি এগিয়ে গেলাম আর আমার ২ বন্ধুকে বললাম তোরা দাড়া আমি কথা বলে আসি । যাক প্রথম দেখাতেই ছোট খাট মানের এটা হোটেল নাম “ পাইন ভিঊ হোটেল” অসম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি হোটেল, একদম রাস্তার পাশে হোটেল টি, মালিকের বয়স ৩০-৩২ হবে আমাকে দেখেই প্রথমে প্রনাম দিয়ে বলল “ বোল আপকো কেয়া চায়িহে” আমি বললাম “আই নিড এ রুম ফর ৩ পার্সন” সে বলল আছে আগে রুম দেখুন আমি হোটেল টি ওপেন করেছি মাত্র ৭ দিন হল, হোটেলে মাত্র ৫ টি রুম আছে , রুম গুলো সুন্দর খুব কালার ফুল , প্রতি রুমে এল সি ডি টিভি, টেলিফোন এবং ইন্টারনেট ওয়াই ফাই এর ব্যবস্থা রয়েছে যাক দর দাম করে রুমটি আমরা ১৩০০ রুপিতে প্রতিদিনের জন্য ভাড়া করে ফেলি । যাক মাল সামান নিয়ে উঠে গেলাম রুমে, তারপর ফ্রেশ হয়ে বাইরে গেলাম রাতের খাবার খেলাম ৩২০ রুপিতে ৩ জন ( ভাত,মাংস, সব্জি , ডাল) তারপর ১২ টা বিয়ার নিয়ে সোজা হোটেলে । রাতে বিয়ার খাবার সময় হোটেল মালিক আমাদের রুমে এল অনেকক্ষন বসে গল্প করলাম এবং তার সাথে বন্ধুর মত মিশে গেলাম অবশেষে রাত ৩ টা পর্যন্ত ৩ জন মিলে সব গুলো বিয়ার গিলে দিলাম সেরাম এক ঘুম... এক ঘুমে সকাল ...

বাকি অংশ পরের পর্বে পাবেন ।

ছবি গুলো আমাদের নিজেদের ক্যামেরা তে তোলা , সাথে আমাদের ছবি গুলো থাকাতে আমি দুঃখিত । :((


১৬টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×