somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজাকারমুক্ত ব্লগ বনাম A-TEAM

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ব্লগিং করি আজ ৬ মাস ১ সপ্তাহ। ছোটকাল থেকেই লেখালেখির অভ্যেস। এক বড়ভাই আমার লেখালেখিগুলো জমা রাখার জন্য ব্লগিং করার পরামর্শ দেন। সেই থেকে শুরু। প্রথমেই ব্লগিং সম্বন্ধে আমার অনেক উঁচু ধারনা ছিলো। কারণ শিক্ষিত লোকেরাই ব্লগিং করার সুযোগ পায়। সুতরাং এখানে অন্তত নোংরামি থাকবে না। অপরদিকে ব্লগের পরিবেশ ধর্মান্ধমুক্ত হবে হবে বলে বিশ্বাস ছিলো। কিন্তু এখানে আসার পর দেখি নোংরামি এবং র্ধমান্ধ মৌলাবাদ উভয়ই খুব শক্ত অবস্থানে আছে।

আমি যখন ব্লগে আসি তখন এক্সিমো এবং রাশেদভাইয়ের ব্যান নিয়ে ব্লগ খুব উত্তপ্ত। আমি পরিচিত কয়েকজন ব্লগার থেকে বিষয়টির খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম রাজাকার ব্লগাররা এখানে খুব সক্রিয়। তাদেরকে হটানোর জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে উনারা ব্যান হোন। শুনে আমিও প্রতিবাদ করি। এরই মাধ্যমে সম্পৃক্ত হয়ে গেলাম রাজাকার মুক্ত ব্লগ আন্দোলনে। প্রথম প্রথম দু'একটি ধর্মান্ধতা বিষয়ক লেখা দিই। পরে ভাবলাম এভাবে চলবে না। কিন্তু কিভাবে চলবে? যেভাবে আমার বেশিরভাগ পূর্বসূরীরা চালাচ্ছে, সেখানে শুধু গালিবাজি ছাড়া আর কিছুই নেই। এভাবে চলবে না। আমি কয়েকজন পূর্বসূরীর ধারা বহন করে তথ্যভিত্তিক লেখা দিতে থাকি। এবং এ লেখাগুলোর মাধ্যমেই আমি ব্লগে ব্যাপক পরিচিতি পাই। পরে আবার ভাবলাম বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু লেখা দিই।

আমার অনেক আগে থেকেই ব্লগে A-TEAM নামের একটি গ্রুপের অবস্থান। তাদের কার্যকলাপ দেখে প্রথমে কিছুই বুঝিনি। পরে সহ ব্লগারদের সাহায্য নিয়ে বুঝার চেষ্টা করি। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানলাভ করি। কিন্তু তাদের কর্মপন্থা আমার পছন্দ হয়নি। কারণ তারা জামাতী চেতনাধারীদের চাইতেও নিকৃষ্ট হয়ে জামাতী চেতনা নির্মূল করতে চায়। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। পুরো ব্লগঝুড়ে অশ্লীলতা আর গালাগালির ছড়াছড়ি, যাকে তাকে অপমান করার মাধ্যমেই তাদের প্রয়াস নিহিত ছিলো। তাদের পুরো সক্রিয়তা ছিলো কিছু সদস্য কেন্দ্রিক। তার বাইরে তারা কাউকে সাপোর্ট দিতো না। হতাশায় ভুগে আমি সাধারণ ব্লগারদের সাপোর্ট নিয়ে "ব্লগ আদালত" এর প্রস্তাব করি। যার মডারেটর হিসেবে অমি রহমান পিয়ালকে আহবান করি। কিন্তু অবিস্বাশ্যভাবে তিনি বিনয়ের সাথে নাকচ করে দেন। তবুও আমি সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এমনকি তা মাইনুল গংদের খুব বিচলিত করতে শুরু করে। আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে অনেক জামাতী ব্লগার পোস্ট দিয়ে আবাল বনে গিয়ে ব্লগ ছেড়েছে। কিন্তু আমি A-TEAM ব্লগারদের কোন সাপোর্ট পাইনি।

আসলে A-TEAM চায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ব্লগকে তাদের ভাড়ামোর খোয়াড়ে পরিণত করতে। আলতু ফালতু পোস্ট দিয়ে ব্লগের পাতাকে আবর্জনায় ভরাতে। আমি মনে করি এটিমের ব্লগাররা যেভাবে গালিগালাজ করে ব্লগের শান্তমনা ব্লগারদেরকে ধর্ষন করে তা কোনভাবেই জামাতিদের চাইতে কম নয়। গালাগালি করে যদি এসব কিছুর সমাধান করা যেতো তবে চে গুয়েভারা, মাও সেতুং, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হুগো শ্যাভেজরা জন্ম না নিয়ে বিশ্ব গালিবাজরাই প্রগতিশীলতার নেতৃত্ব দিতো। যেমন করে বুশ, ব্লেয়াররা িকছু একটার নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ব্লগে এর বাইরেও কিছু অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। এটিমের বাইরে আরেক ব্লগার লোকালটক (নার্ভাস নাইন্টিজ) ফিরে দেখা একাত্তরের মতো সমৃদ্ধ ই-বুকের প্রকাশে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু আদৌ তা ভালো কাজ করার প্রয়াসে নয়। স্রেফ বাহবা কুড়ানোর জন্য। যেখানে কাজ করেছে তীব্র অহমিকা। সেই ব্যক্তিই কিছুদিন আগে কবি এবং কবিতাকে কেন্দ্র করে ব্লগে চরম অস্থিরতা নিয়ে এসেছেন। আমিতো মনে করি A-TEAM মেম্বারদের কিছু লেখার চাইতে মেহেদীর কবিতা আরো শ্রুতি মধুর।

A-TEAM এর ওপর ক্ষোভের কারণে এখন আর রাজাকার বিরোধী লেখা লিখি না। কারণ তারাই যেন ব্লগ রক্ষা আর দেশ রক্ষার দ্বায়িত্ব ইজারা নিয়ে নিয়েছেন। আমরা তাদের দয়ার ওপর এখানে থাকবো! আমার খুব হাসি পায় যখন সাধারণ ব্লগারদের কাছ থেকে অসম বিরক্তি নিয়ে A-TEAM মেম্বাররা নিজেদেরকে বীরশ্রেষ্ঠ বানানোর স্বপ্ন দেখে। বাংলাদেশের মুক্তিবাহীনীর বীরশ্রেষ্ঠরা বীরশ্যেষ্ঠ হওয়ার স্বপ্ন দেখে যুদ্ধ করেনি। যুদ্ধের পর আমরাই তাদেরকে শ্রেষ্ঠবীরের খেতাব দিয়েছে। তারা স্রেফ দেশের জন্য কাজ করেছে। সে কাজ করার প্রয়াসে আপামর জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ততাকেই প্রাধান্য দিয়েছিলো। অথচ A-TEAM মেম্বাররা সাধারণ ব্লগারদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই তাদের "মিশন গালাগালি" দুর্বার গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে তাদের গালাগালির মোক্ষম জবাব দিতে জামাতি ব্লগাররা একের পর এক নিক খুলে যাচ্ছে।

A-TEAM আর জামাতিদের অত্যাচারে ব্লগ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সৃজনশীল অনেক ব্লগার। এ চলে যাওয়াতে A-TEAM বা জামাতীদের কিচ্ছুই আসছে যাচ্ছে না। কারণ তাতে করে তাদের উগ্রতা আরো বেশি করে ফলাও করা যাবে। ফকিরে ফকিরে মারামারি করে মসজিদবাড়ি ধোলা হওয়ার মতো A-TEAM আর জামাতিদের লড়াইয়ে অনেক সক্রিয় ব্লগার নিষ্ক্রিয় হতে যাচ্ছে। কারণ গালাগালি কোন বিপ্লবের সহায়ক নয়।

এ লেখার জবাবে যে আমারো কেপি টেষ্ট করা হবে না তার কোন গ্যারন্টি নাই। তবুও দিলাম। একটা ঘেন্না জমে গেছে মনের ভেতর আজ তা ছুড়ে ফেলে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৯
১১৯টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×