আমার জন্মের পর যে বিশ্বাসের দলিল হাতে পাই তা হলো ইসলাম। ইসলাম একটি ধর্মের নাম। এ ধর্মের অনুসারীরা এটাকে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্ভুল জীবন ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পছন্দ করে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীর ঔরসজাত হয়ে আমি ছোটবেলা থেকে ইসলাম ধর্ম বিষয়ে জ্ঞানলাভ করার সুযোগ বেশি পেয়েছি যা অন্য ধর্ম নিয়ে পারিনি। এই লেখাটা ইসলাম ধর্মের আলোকেই লেখা। তবে উপাসনার ভিন্নতা থাকলেও নিয়ন্ত্রন তন্ত্রে সব ধর্মের প্রকাশই প্রায়ই একই রকম।
সমাজে বসবাস করার জন্য নারী এবং পুরুষের সম্পর্ককে একটি সামাজিক রূপ দিতে হয়। তা দেয়ার জন্য প্রয়োজন একটি দৃশ্যমান বন্ধন সূত্রতা। এই সূত্রতার সামাজিক প্রকাশ বিয়ে। আমরা আধুনিক হতে হতে অনেককাল আগ থেকেই বিবাহপূর্ব সহনীয় সম্পর্কেও অভ্যস্থ হয়ে গেছি। যাকে আমরা প্রচলিত অর্থে প্রেমের সম্পর্ক বলে থাকি। শাব্দিক বা আক্ষরিক অর্থে প্রেমের ব্যপ্তি বা শক্তি অনেক সমৃদ্ধ। বিবাহ বা বিবাহপূর্ব সম্পর্ক যাই বলি না কেন, পক্ষ কিন্তু দুইটা। নারী এবং পুরুষ। নারী এবং পুরুষের এই সম্পর্কে যৌনতার শক্তিশালী অবস্থান অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভারসাম্যহীন হলেও উভয় পক্ষের জন্যই লোভনী এবং সুখকর হয়ে থাকে। তবে সে সুখ যে ভারসাম্যহীন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইসলামের আলোকে নারী এবং পুরুষের সহাস্থানের বাস্তবিক বিধান ও প্র্যাকটিকাল আচার দেখলেই বোঝা যাবে এ ধরনের সম্পর্কের গাঢ়তা, স্থায়িত্ব এবং প্রেমজ অস্তিত্ব কতটুকু সুখকর।
ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে করতে গেলে একটি মেয়ে পর্যাপ্ত যাচাই বাচাই করে তার কাংখিত পুরুষ বেছে নিতে পারে না। বাছাই পক্রিয়ায় একটি মেয়েকে যে যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হয়, (যেমন- পুরুষটির আকার-আকৃতি, রুচি, চলন-বলন, মনস্তাত্বিক-দর্শনভিত্তিক বৈশিষ্ট এবং সর্বোপরি যৌন বিষয়াদি) তা রাখার বিষয়ে ইসলামের কঠোরতা খুবই নির্মম। এক্ষেত্রে নারীকে দেখতে হয় প্রস্তাবিত পুরুষটির আর্থিক সঙ্গতি এবং পুরুষ দেখে ওই নারীর শারীরীক গড়ন (অর্থাৎ সে কতটুকু খেলতে পারবে)। অথচ এটিই পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু এর বেশি যাওয়ার আগে একজন নারীকে “একাকী নির্জন স্থানে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের অবস্থান নিষিদ্ধ করে রাখার কারণ ও নাবালিকা কর্তৃক সাবালকের দেহ দর্শনে ধর্মীয় নিষেধ”র থাপ্পড় খেতে হয়।
সবকিছুর আগে ইসলাম নারীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রেখেছে কথিত আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ম কানুন দিয়ে। ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কোরআনে নারী এবং এতিম বিষয়ক সূরা আন্নিসার এমন কতো আয়াতে নারীর প্রতি রয়েছে অমানবিক হুঁশিয়ারি। বিশেষভাবে নারী ও এতিমের সূরায় বারবার পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষনা করা হয়েছে। পুরুষ কর্তৃক নারীকে পরিচালনার নামে কঠোরভারে নিয়ন্ত্রনের এই দলিলে নারীর মনস্তাত্বিক অস্তিত্বের কোন স্বীকৃতি নেই। “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতিম মেয়েদের ব্যাপারে সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনপুত হয়- দুই, তিন কিংবা চারজন পর্যন্ত। কিন্তু যদি আশংকা কর যে, তাদের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের স্বত্বাধীন ক্রীতদাসীকে। এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার সম্ভাবনা অধিক (সুরা আন্নিসা- আয়াত-৪)”। প্রথমেই বলি এই আয়াতের আগের এবং পরের ক’টি আয়াত কয়েকবার পড়ার পরও এর কথার বুনন অতটা শক্তিশালী বলে মনে হয় না। আয়াতের “কিন্তু যদি আশংকা কর যে, তাদের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের স্বত্বাধীন ক্রীতদাসীকে” এই অংশটাকে পরিপূর্ণ মনে হয়নি। প্রথমের “ তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনপুত হয়- দুই, তিন কিংবা চারজন পর্যন্ত” এবং শেষের দিকে “ক্রীতদাসী” বাক্য ও শব্দ দুটিতে চরম অবমাননাকর দৃশ্যের অবতারনা হয়েছে। এই সূরাটির পূর্ণাঙ্গ পাঠ শেষে দেখা যাবে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ পুরুষরা ভাগ করে নিবে। বিয়ে করার সময় তা থেকে কিছু অংশ দিয়ে একজন নারীকে কিনে নেবে। আবার দেনমোহরের এই প্রকাশকে দুর্নীতিগ্রস্থ করতে নারী কর্তৃক মওকূফেরও ইঙ্গিত দিয়েছে। এখনতো ভালো ঘরনীর প্রথম বৈশিষ্টই হচ্ছে স্বামীকে দেনমোহরের টাকা মওকূফ করে দেয়া। আমরা যে দৃষ্টিতে আমাদের মা’কে দেখি, সেই দৃষ্টিতে আমাদের মা অবশ্যই আমদের বাবার সঙ্গে সম্পর্কের পরিপূরক। কিন্তু যখন আমাদের সম্পদশালী বাবার দুই, তিন অথবা চারজন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণের বৈধতা ইসলাম দেয় তখন আমাদের মায়ের অবস্থান নিশ্চয় অতটা সুখকর নয়। যাবতীয় সম্পদ কুক্ষিগত করে নারীকে বিবাহপূর্ব বা সামগ্রিক সম্পদ বঞ্চিত করে অত:পর তাকে দয়াবশত পুরুষ কর্তৃক ভিন্ন রমনীর সাথে ভাগাভাগি অবস্থান বা ক্রীতদাসীর নিশ্চয়তায় কোন যুক্তিযুক্ত মর্যাদা দান করা হয়েছে? ইসলাম স্বীকৃত প্রথম নারী বা তারও পরে বিবি খাদিজা, আয়েশা, ফাতেমাসহ অন্যান্য নবী ঘনিষ্ঠ রমনীগণের ধারাবাহিকতায় আমার মাও বিশ্বাস করতে শিখেছে যে, পতি সেবার মাঝে স্বর্গলাভের বোনাস পয়েন্ট নিহিত।
সুরা আন্নিসায় নারী অবমাননার আরেকটি আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারে। “আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর অর্থও দিয়ে থাক তবুও তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ তর না। তোমরা কি তা গ্রহণ করবে মিথ্যা, অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপাচারের মাধ্যমে? (সুরা আন্নিসা- আয়াত-২০)”। এখানেও সমস্ত সম্পত্তিতে পুরুষের দাপট ঘোষনা এবং নারী জীবনকে অর্থ দিয়ে বেচা কেনার বৈধতা দেয়া হয়েছে।
শুরুতেই ইসলাম কর্তৃক নারীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রেখেছে। বিবাহের পরও কিভাবে নারীকে অবস্থানগতভাবে পতিত করা যায়, সে বিষয়ে কোরআন এবং হাদীসে পুরুষের পক্ষে চওড়া পথ দেখানো আছে। সে পথে নারী দেহের কোমলতা, উষ্ণতা এবং বিশেষত স্তন, নিতম্ব, যৌনাঙ্গের বিশেষ আয়েসের সুযোগ নিয়ে পুরুষের বীর্যক্ষেপনের সুড়ঙ্গ অথবা তৎসম্পর্কীয় সুখের নিশ্চিন্ত আবাস বানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নারীর ভিন্নপথ অবলম্বলনের সুযোগ না দেয়ার জন্য জন্মলব্ধ বিশ্বাসের দুর্বলতায় তাকে বুঝানো হয়েছে - “তোমাদেরকে পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম বুদ্ধি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।” এখানে সূরা আন্নিসার একটি আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারে। “পুরুষেরা নারীর উপর কর্তৃত্বশীল, কারণ আল্লাহ তাদের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে। সুতরাং পূণ্যবতী নারীরা অনুগত হয় এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে তার (নিজ দেহ) হিফাজত করে আল্লাহর হিফাজত অনুসারে। স্ত্রীদের মধ্যে তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের একাকীনী ত্যাগ কর তাদের শয্যায়, শেষে তাদের প্রহার কর। এত যদি তারা তোমাদের বাধ্য হয়ে যায় তবে তাদের ব্যাপারে অন্য কোন পথ (তালাক) তালাশ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ আল্লাহ উচ্চ মর্যাদাশীল, মহান। (সুরা আন্নিসা, আয়াত-৩৪)”। এখানে প্রথমেই পুরুষেরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করার যুক্তিতে তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করার বিষয়টি খুবই হাস্যকর। ধর্মগ্রন্থে পুরুষের সম নারীকে অর্থ উপার্যনের বৈধতা প্রদান না করার বিষয়টিই একধরনের মনস্তাত্বিক মার। এই আয়াতাংশ পড়ার পর ইসলাম বিশ্বাসী একজন নারী সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অর্থ উপার্যনে যাবেন না। কারণ অর্থ উপার্জন এবং ব্যয়ে পুরুষের একক অধিকার স্রষ্টা প্রদত্ত। পরের অংশে এসে ধারাবাহিকভাবেই নারীদেহকে একটি সংবেদনশীল স্থানে রূপান্তরিত করে তার হেফাজতের কথা বলা হচ্ছে। এখানের মতো পুরো কোরআনের নারী বিষয়ক আয়াতগুলোতে অর্থ=নারী, ক্রীতদাসী=নারী, নিয়ন্ত্রন=নারী, স্বর্গসুখ=নারী ইত্যাদি রূপে প্রকাশ করা হয়েছে। নারীর পাশে অবস্থানকৃত শব্দসমূহের ঐরূপ অবস্থান অবশ্যই দৃষ্টিকটু। অত:পর সংসার জীবনে নারীর নিয়ন্ত্রন বিষয়ে এসে শাস্তি স্বরূপ সদুপোদেশ পরবর্তী একাকী শয্যাবস্থানে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে। এখানে এসেই যায়গামতো কোপ মারা হয়েছে। “পুরুষ ব্যতিত নারীর বসবাস কষ্টসাধ্য” এবং “শাস্তি স্বরূপ” এমন ভাব প্রকাশ করার জন্যই এই কথাগুলোর সৃষ্টি। কিন্তু এখানে যদি অন্য কোন শাস্তির বিধান রাখা হতো, (যেমন- ঘরের আলো নিভিয়ে রাখা, একসাথে বসে খাদ্যগ্রহণে বিরত থাকা ইদ্যাদি) তবে নারী সেভাবেই অভ্যস্ত হতো এবং ঐধরনের ক্রিয়ালাপে ভয় পেতো। এখানে নারীকে পুরুষ নির্ভরশীলতার আওতায় আনা হয়েছে খুবই নোংরাভাবে। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী রমনীগণের দীর্ঘ পাঠসূত্রতা এবং ব্যাখ্যাসূত্রে শ্রবন পরবর্তী মান্যতার ধারাবাহিকতায় একাকী শয্যাগমন হেতু যৌনসুখ বঞ্চিত হওয়ার দৃশ্যপটে পুরুষের বীর্যে নারীর জন্ম স্বার্থকতার যে চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে তাতে করে সংসারে আমাদের মা কখনোই বাবার পরিপূরক নয় বরং অনেকগুলো যোগানের মধ্যে একটি যোগান হতে পারে। আয়াতটির শেষ পর্যায়ে এসে পুরুষের পক্ষে অর্থদানের বিনিময়ে বিচ্ছেদের পথ খোলা রাখা হয়েছে। ধর্ম বিধানে এই বিচ্ছেদের পথ খোলা রাখাকে একধরনের স্বাধীনতা বলা হচ্ছে, যদিও তা পুরোপুরিই পুরুষের পক্ষে। একজন নারীকে অর্থ উপার্জনের বৈধতা না দেয়া, (এখানে এসে বর্তমানে কিছু কিছু আলেম অর্থ উপার্জনের বৈধতার কথা বলে থাকেন। যেমন খাদিজার ব্যবসার কথা টানেন। কিন্তু যখন এই আয়াতের প্রয়োজনীয়তার কথা টানা হয় তখন আল্লাহর উপর দায়ভার দিয়ে ক্ষান্ত হন) পুরোপুরি পুরুষের কর্তৃত্বে রেখে, সামগ্রিক সহাবস্থানে পুরুষের রতিসুখ অথবা ভোজন প্রণালীর কারিগর বানিয়ে তারপর আবার অবাধ্যতার সূত্রতায় অর্থ মাধ্যমে ত্যাগী হতে নারীকেই বাধ্য করা হচ্ছে। নির্মমতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আর কি হতে পারে?
যৌনতার বিষয়ে নারীর অবস্থানের বর্ণনায় কিছু হাদিসের দিকে নজর বুলায়-
১// “দীর্ঘ ভ্রমন শেষে ঘরে ফিরলে (পুরুষ) নারী তার যৌনকেশ সেভ করে রাখবে। (সহিহ বুখারী ৭খন্ড, বই নং- ৬২, হাদিস নং-১৭৩)”। এখানে যৌনকেশ সেভ করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক, যা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। নারী তার যৌনকেশ সেভ করার বিষয়েও স্বাধীনতা রাখে না।
২// সহিহ বুখারী ৭খন্ড, বই নং- ৩৮, ১৭৩ নং হাদিসে জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত- “আমি নবিজীর সাথে অভিযান থেকে ফিরছিলাম, আমার উটটি ছিলো রুগ্ন, ধীরগতি সম্পন্ন এবং সবার পেছনে। আমরা যখন মদিনার নিকটবর্তী তখন আমি তাড়াতাড়ি আমার বাড়ির পথ ধরছিলাম। নবীজী বললেন কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম- একজন বিধবাকে বিয়ে করেছি। শুনে তিনি বললেন- একজন কুমারী বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তোমরা একে অপরের সাথে খেলতে পারতে”। এটি নিয়ে আমি ব্যাখ্যায় যেতে ঘৃন্যবোধ করছি। কারণ আমার মা, বোন এবং প্রেয়সীসহ শ্রদ্ধাশীল অনেক মানুষই নারীর অন্তর্ভূক্ত।
৩// পুরুষের যৌন লালসাজনিত পাপ থেকে মুক্তির জন্য নারীর বাধ্যতার বিষয়ে একটি হাদিস উল্লেখ করছি। “নবীজী রাস্তায় একজন রূপসী নারীর সাক্ষাত পেলেন এবং সাথে সাথে স্ত্রী জয়নবের কাছে গেলেন। জয়নব তখন একটি চামড়া ট্যান করছিলেন। সঙ্গম শেষে নবীজী এলেন এবং বললেন- সাক্ষাত শয়তান নারী রূপে আমার সামনে এলো। সুতরাং তোমরা কেউ যদি এরূপ রমনীর সামনে পড়ো তবে সাথে সাথে স্ত্রীর কাছে যাবে এবং বীজ ক্ষেপন করবে। এভাবেই যৌণ মন্ত্রনা থেকে নিভৃতি পাওয়া সম্ভব। (সহীহ মুসলিম বই নং ৮, হাদিস নং ৩২৪০”)। পাঠক, নিশ্চয় সঙ্গম একটি দীর্ঘ বিষয়। মিলনপূর্ব রতিক্রিয়ার বিষয়টি তারই প্রমান। মুহম্মদ যখন জয়নবের কাছে যায় তখন জয়নব মোটেও সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত ছিলো না। কারণ সে তখন চামড়া ট্যান করছিলো। অপরদিকে মুহম্মদ তখন বীর্যস্থলনের চরম মূহুর্তে অবস্থান করছিলেন। এমতাবস্থায় খুবই সংক্ষেপে মুহম্মদ তার ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেখানে জয়নবের চাহিদার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কোয়র্টার সেকেন্ড সময়ও ছিলো না বললেই চলে।
৪// যৌন তৃপ্তির বিষয়ে পুরুষের স্বেচ্চারিতার স্বীকৃতির নগ্নতা দেখি এবার। “সহীহ মুসলিম ৮ নং বই’র, ৩২৪০ নং হাদিসে উবে ইবনে কাব’র বর্ণনায়- আমি একজন লোক সম্পর্কে নবীজীকে জিজ্ঞেস করি, লোকটি তার স্ত্রীর চরম তৃপ্তির আগেই সঙ্গম শেষ করে উঠে পড়তো। এ বিষয়ে আপনার মত কি? জবাবে নবীজী বললেন, তার স্ত্রীর উচিত যৌনাঙ্গ থেকে নি:সৃত রস ধুয়ে ফেলা এবং অযু করে নামাজ আদায় করা।” ছি: কি বিশ্রী যৌনাচারের চর্চা ইসলামে!!
পুরো কোরআন এবং হাদিসের খন্ডগুলো ভ্রমণ করলে এমন হাজারো নোংরা, নির্মম কথা আমাদের শুনতে হবে। ইসলামের যারা ধর্ম বিশারদ (ইসলাম বিশ্বাসী) তারা কখনোই এগুলো নিয়ে আলোচনা করেন না। বরঙ নিজে নিজে পড়ে স্বীয় স্ত্রীর উপর তার প্রয়োগেই ব্যস্ত থাকেন। নিজ কন্যাদিগকের প্রতিও তারা একই মনোভাব পোষন করে।
আমার জন্মের পর যে বিশ্বাসের দলিল হাতে পাই তা হলো ইসলাম। ইসলাম একটি ধর্মের নাম। এ ধর্মের অনুসারীরা এটাকে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্ভুল জীবন ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পছন্দ করে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীর ঔরসজাত হয়ে আমি ছোটবেলা থেকে ইসলাম ধর্ম বিষয়ে জ্ঞানলাভ করার সুযোগ বেশি পেয়েছি যা অন্য ধর্ম নিয়ে পারিনি। এই লেখাটা ইসলাম ধর্মের আলোকেই লেখা। তবে উপাসনার ভিন্নতা থাকলেও নিয়ন্ত্রন তন্ত্রে সব ধর্মের প্রকাশই প্রায়ই একই রকম।
সমাজে বসবাস করার জন্য নারী এবং পুরুষের সম্পর্ককে একটি সামাজিক রূপ দিতে হয়। তা দেয়ার জন্য প্রয়োজন একটি দৃশ্যমান বন্ধন সূত্রতা। এই সূত্রতার সামাজিক প্রকাশ বিয়ে। আমরা আধুনিক হতে হতে অনেককাল আগ থেকেই বিবাহপূর্ব সহনীয় সম্পর্কেও অভ্যস্থ হয়ে গেছি। যাকে আমরা প্রচলিত অর্থে প্রেমের সম্পর্ক বলে থাকি। শাব্দিক বা আক্ষরিক অর্থে প্রেমের ব্যপ্তি বা শক্তি অনেক সমৃদ্ধ। বিবাহ বা বিবাহপূর্ব সম্পর্ক যাই বলি না কেন, পক্ষ কিন্তু দুইটা। নারী এবং পুরুষ। নারী এবং পুরুষের এই সম্পর্কে যৌনতার শক্তিশালী অবস্থান অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভারসাম্যহীন হলেও উভয় পক্ষের জন্যই লোভনী এবং সুখকর হয়ে থাকে। তবে সে সুখ যে ভারসাম্যহীন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইসলামের আলোকে নারী এবং পুরুষের সহাস্থানের বাস্তবিক বিধান ও প্র্যাকটিকাল আচার দেখলেই বোঝা যাবে এ ধরনের সম্পর্কের গাঢ়তা, স্থায়িত্ব এবং প্রেমজ অস্তিত্ব কতটুকু সুখকর।
ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে করতে গেলে একটি মেয়ে পর্যাপ্ত যাচাই বাচাই করে তার কাংখিত পুরুষ বেছে নিতে পারে না। বাছাই পক্রিয়ায় একটি মেয়েকে যে যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হয়, (যেমন- পুরুষটির আকার-আকৃতি, রুচি, চলন-বলন, মনস্তাত্বিক-দর্শনভিত্তিক বৈশিষ্ট এবং সর্বোপরি যৌন বিষয়াদি) তা রাখার বিষয়ে ইসলামের কঠোরতা খুবই নির্মম। এক্ষেত্রে নারীকে দেখতে হয় প্রস্তাবিত পুরুষটির আর্থিক সঙ্গতি এবং পুরুষ দেখে ওই নারীর শারীরীক গড়ন (অর্থাৎ সে কতটুকু খেলতে পারবে)। অথচ এটিই পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু এর বেশি যাওয়ার আগে একজন নারীকে “একাকী নির্জন স্থানে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের অবস্থান নিষিদ্ধ করে রাখার কারণ ও নাবালিকা কর্তৃক সাবালকের দেহ দর্শনে ধর্মীয় নিষেধ”র থাপ্পড় খেতে হয়।
সবকিছুর আগে ইসলাম নারীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রেখেছে কথিত আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ম কানুন দিয়ে। ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কোরআনে নারী এবং এতিম বিষয়ক সূরা আন্নিসার এমন কতো আয়াতে নারীর প্রতি রয়েছে অমানবিক হুঁশিয়ারি। বিশেষভাবে নারী ও এতিমের সূরায় বারবার পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষনা করা হয়েছে। পুরুষ কর্তৃক নারীকে পরিচালনার নামে কঠোরভারে নিয়ন্ত্রনের এই দলিলে নারীর মনস্তাত্বিক অস্তিত্বের কোন স্বীকৃতি নেই। “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতিম মেয়েদের ব্যাপারে সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনপুত হয়- দুই, তিন কিংবা চারজন পর্যন্ত। কিন্তু যদি আশংকা কর যে, তাদের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের স্বত্বাধীন ক্রীতদাসীকে। এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার সম্ভাবনা অধিক (সুরা আন্নিসা- আয়াত-৪)”। প্রথমেই বলি এই আয়াতের আগের এবং পরের ক’টি আয়াত কয়েকবার পড়ার পরও এর কথার বুনন অতটা শক্তিশালী বলে মনে হয় না। আয়াতের “কিন্তু যদি আশংকা কর যে, তাদের মধ্যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের স্বত্বাধীন ক্রীতদাসীকে” এই অংশটাকে পরিপূর্ণ মনে হয়নি। প্রথমের “ তবে বিয়ে করে নাও অন্য নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের মনপুত হয়- দুই, তিন কিংবা চারজন পর্যন্ত” এবং শেষের দিকে “ক্রীতদাসী” বাক্য ও শব্দ দুটিতে চরম অবমাননাকর দৃশ্যের অবতারনা হয়েছে। এই সূরাটির পূর্ণাঙ্গ পাঠ শেষে দেখা যাবে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ পুরুষরা ভাগ করে নিবে। বিয়ে করার সময় তা থেকে কিছু অংশ দিয়ে একজন নারীকে কিনে নেবে। আবার দেনমোহরের এই প্রকাশকে দুর্নীতিগ্রস্থ করতে নারী কর্তৃক মওকূফেরও ইঙ্গিত দিয়েছে। এখনতো ভালো ঘরনীর প্রথম বৈশিষ্টই হচ্ছে স্বামীকে দেনমোহরের টাকা মওকূফ করে দেয়া। আমরা যে দৃষ্টিতে আমাদের মা’কে দেখি, সেই দৃষ্টিতে আমাদের মা অবশ্যই আমদের বাবার সঙ্গে সম্পর্কের পরিপূরক। কিন্তু যখন আমাদের সম্পদশালী বাবার দুই, তিন অথবা চারজন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণের বৈধতা ইসলাম দেয় তখন আমাদের মায়ের অবস্থান নিশ্চয় অতটা সুখকর নয়। যাবতীয় সম্পদ কুক্ষিগত করে নারীকে বিবাহপূর্ব বা সামগ্রিক সম্পদ বঞ্চিত করে অত:পর তাকে দয়াবশত পুরুষ কর্তৃক ভিন্ন রমনীর সাথে ভাগাভাগি অবস্থান বা ক্রীতদাসীর নিশ্চয়তায় কোন যুক্তিযুক্ত মর্যাদা দান করা হয়েছে? ইসলাম স্বীকৃত প্রথম নারী বা তারও পরে বিবি খাদিজা, আয়েশা, ফাতেমাসহ অন্যান্য নবী ঘনিষ্ঠ রমনীগণের ধারাবাহিকতায় আমার মাও বিশ্বাস করতে শিখেছে যে, পতি সেবার মাঝে স্বর্গলাভের বোনাস পয়েন্ট নিহিত।
সুরা আন্নিসায় নারী অবমাননার আরেকটি আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারে। “আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর অর্থও দিয়ে থাক তবুও তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ তর না। তোমরা কি তা গ্রহণ করবে মিথ্যা, অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপাচারের মাধ্যমে? (সুরা আন্নিসা- আয়াত-২০)”। এখানেও সমস্ত সম্পত্তিতে পুরুষের দাপট ঘোষনা এবং নারী জীবনকে অর্থ দিয়ে বেচা কেনার বৈধতা দেয়া হয়েছে।
শুরুতেই ইসলাম কর্তৃক নারীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে রেখেছে। বিবাহের পরও কিভাবে নারীকে অবস্থানগতভাবে পতিত করা যায়, সে বিষয়ে কোরআন এবং হাদীসে পুরুষের পক্ষে চওড়া পথ দেখানো আছে। সে পথে নারী দেহের কোমলতা, উষ্ণতা এবং বিশেষত স্তন, নিতম্ব, যৌনাঙ্গের বিশেষ আয়েসের সুযোগ নিয়ে পুরুষের বীর্যক্ষেপনের সুড়ঙ্গ অথবা তৎসম্পর্কীয় সুখের নিশ্চিন্ত আবাস বানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নারীর ভিন্নপথ অবলম্বলনের সুযোগ না দেয়ার জন্য জন্মলব্ধ বিশ্বাসের দুর্বলতায় তাকে বুঝানো হয়েছে - “তোমাদেরকে পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম বুদ্ধি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।” এখানে সূরা আন্নিসার একটি আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারে। “পুরুষেরা নারীর উপর কর্তৃত্বশীল, কারণ আল্লাহ তাদের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে। সুতরাং পূণ্যবতী নারীরা অনুগত হয় এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে তার (নিজ দেহ) হিফাজত করে আল্লাহর হিফাজত অনুসারে। স্ত্রীদের মধ্যে তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের একাকীনী ত্যাগ কর তাদের শয্যায়, শেষে তাদের প্রহার কর। এত যদি তারা তোমাদের বাধ্য হয়ে যায় তবে তাদের ব্যাপারে অন্য কোন পথ (তালাক) তালাশ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ আল্লাহ উচ্চ মর্যাদাশীল, মহান। (সুরা আন্নিসা, আয়াত-৩৪)”। এখানে প্রথমেই পুরুষেরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করার যুক্তিতে তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করার বিষয়টি খুবই হাস্যকর। ধর্মগ্রন্থে পুরুষের সম নারীকে অর্থ উপার্যনের বৈধতা প্রদান না করার বিষয়টিই একধরনের মনস্তাত্বিক মার। এই আয়াতাংশ পড়ার পর ইসলাম বিশ্বাসী একজন নারী সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অর্থ উপার্যনে যাবেন না। কারণ অর্থ উপার্জন এবং ব্যয়ে পুরুষের একক অধিকার স্রষ্টা প্রদত্ত। পরের অংশে এসে ধারাবাহিকভাবেই নারীদেহকে একটি সংবেদনশীল স্থানে রূপান্তরিত করে তার হেফাজতের কথা বলা হচ্ছে। এখানের মতো পুরো কোরআনের নারী বিষয়ক আয়াতগুলোতে অর্থ=নারী, ক্রীতদাসী=নারী, নিয়ন্ত্রন=নারী, স্বর্গসুখ=নারী ইত্যাদি রূপে প্রকাশ করা হয়েছে। নারীর পাশে অবস্থানকৃত শব্দসমূহের ঐরূপ অবস্থান অবশ্যই দৃষ্টিকটু। অত:পর সংসার জীবনে নারীর নিয়ন্ত্রন বিষয়ে এসে শাস্তি স্বরূপ সদুপোদেশ পরবর্তী একাকী শয্যাবস্থানে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে। এখানে এসেই যায়গামতো কোপ মারা হয়েছে। “পুরুষ ব্যতিত নারীর বসবাস কষ্টসাধ্য” এবং “শাস্তি স্বরূপ” এমন ভাব প্রকাশ করার জন্যই এই কথাগুলোর সৃষ্টি। কিন্তু এখানে যদি অন্য কোন শাস্তির বিধান রাখা হতো, (যেমন- ঘরের আলো নিভিয়ে রাখা, একসাথে বসে খাদ্যগ্রহণে বিরত থাকা ইদ্যাদি) তবে নারী সেভাবেই অভ্যস্ত হতো এবং ঐধরনের ক্রিয়ালাপে ভয় পেতো। এখানে নারীকে পুরুষ নির্ভরশীলতার আওতায় আনা হয়েছে খুবই নোংরাভাবে। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী রমনীগণের দীর্ঘ পাঠসূত্রতা এবং ব্যাখ্যাসূত্রে শ্রবন পরবর্তী মান্যতার ধারাবাহিকতায় একাকী শয্যাগমন হেতু যৌনসুখ বঞ্চিত হওয়ার দৃশ্যপটে পুরুষের বীর্যে নারীর জন্ম স্বার্থকতার যে চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে তাতে করে সংসারে আমাদের মা কখনোই বাবার পরিপূরক নয় বরং অনেকগুলো যোগানের মধ্যে একটি যোগান হতে পারে। আয়াতটির শেষ পর্যায়ে এসে পুরুষের পক্ষে অর্থদানের বিনিময়ে বিচ্ছেদের পথ খোলা রাখা হয়েছে। ধর্ম বিধানে এই বিচ্ছেদের পথ খোলা রাখাকে একধরনের স্বাধীনতা বলা হচ্ছে, যদিও তা পুরোপুরিই পুরুষের পক্ষে। একজন নারীকে অর্থ উপার্জনের বৈধতা না দেয়া, (এখানে এসে বর্তমানে কিছু কিছু আলেম অর্থ উপার্জনের বৈধতার কথা বলে থাকেন। যেমন খাদিজার ব্যবসার কথা টানেন। কিন্তু যখন এই আয়াতের প্রয়োজনীয়তার কথা টানা হয় তখন আল্লাহর উপর দায়ভার দিয়ে ক্ষান্ত হন) পুরোপুরি পুরুষের কর্তৃত্বে রেখে, সামগ্রিক সহাবস্থানে পুরুষের রতিসুখ অথবা ভোজন প্রণালীর কারিগর বানিয়ে তারপর আবার অবাধ্যতার সূত্রতায় অর্থ মাধ্যমে ত্যাগী হতে নারীকেই বাধ্য করা হচ্ছে। নির্মমতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আর কি হতে পারে?
যৌনতার বিষয়ে নারীর অবস্থানের বর্ণনায় কিছু হাদিসের দিকে নজর বুলায়-
১// “দীর্ঘ ভ্রমন শেষে ঘরে ফিরলে (পুরুষ) নারী তার যৌনকেশ সেভ করে রাখবে। (সহিহ বুখারী ৭খন্ড, বই নং- ৬২, হাদিস নং-১৭৩)”। এখানে যৌনকেশ সেভ করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক, যা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। নারী তার যৌনকেশ সেভ করার বিষয়েও স্বাধীনতা রাখে না।
২// সহিহ বুখারী ৭খন্ড, বই নং- ৩৮, ১৭৩ নং হাদিসে জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত- “আমি নবিজীর সাথে অভিযান থেকে ফিরছিলাম, আমার উটটি ছিলো রুগ্ন, ধীরগতি সম্পন্ন এবং সবার পেছনে। আমরা যখন মদিনার নিকটবর্তী তখন আমি তাড়াতাড়ি আমার বাড়ির পথ ধরছিলাম। নবীজী বললেন কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম- একজন বিধবাকে বিয়ে করেছি। শুনে তিনি বললেন- একজন কুমারী বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তোমরা একে অপরের সাথে খেলতে পারতে”। এটি নিয়ে আমি ব্যাখ্যায় যেতে ঘৃন্যবোধ করছি। কারণ আমার মা, বোন এবং প্রেয়সীসহ শ্রদ্ধাশীল অনেক মানুষই নারীর অন্তর্ভূক্ত।
৩// পুরুষের যৌন লালসাজনিত পাপ থেকে মুক্তির জন্য নারীর বাধ্যতার বিষয়ে একটি হাদিস উল্লেখ করছি। “নবীজী রাস্তায় একজন রূপসী নারীর সাক্ষাত পেলেন এবং সাথে সাথে স্ত্রী জয়নবের কাছে গেলেন। জয়নব তখন একটি চামড়া ট্যান করছিলেন। সঙ্গম শেষে নবীজী এলেন এবং বললেন- সাক্ষাত শয়তান নারী রূপে আমার সামনে এলো। সুতরাং তোমরা কেউ যদি এরূপ রমনীর সামনে পড়ো তবে সাথে সাথে স্ত্রীর কাছে যাবে এবং বীজ ক্ষেপন করবে। এভাবেই যৌণ মন্ত্রনা থেকে নিভৃতি পাওয়া সম্ভব। (সহীহ মুসলিম বই নং ৮, হাদিস নং ৩২৪০”)। পাঠক, নিশ্চয় সঙ্গম একটি দীর্ঘ বিষয়। মিলনপূর্ব রতিক্রিয়ার বিষয়টি তারই প্রমান। মুহম্মদ যখন জয়নবের কাছে যায় তখন জয়নব মোটেও সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত ছিলো না। কারণ সে তখন চামড়া ট্যান করছিলো। অপরদিকে মুহম্মদ তখন বীর্যস্থলনের চরম মূহুর্তে অবস্থান করছিলেন। এমতাবস্থায় খুবই সংক্ষেপে মুহম্মদ তার ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেখানে জয়নবের চাহিদার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কোয়র্টার সেকেন্ড সময়ও ছিলো না বললেই চলে।
৪// যৌন তৃপ্তির বিষয়ে পুরুষের স্বেচ্চারিতার স্বীকৃতির নগ্নতা দেখি এবার। “সহীহ মুসলিম ৮ নং বই’র, ৩২৪০ নং হাদিসে উবে ইবনে কাব’র বর্ণনায়- আমি একজন লোক সম্পর্কে নবীজীকে জিজ্ঞেস করি, লোকটি তার স্ত্রীর চরম তৃপ্তির আগেই সঙ্গম শেষ করে উঠে পড়তো। এ বিষয়ে আপনার মত কি? জবাবে নবীজী বললেন, তার স্ত্রীর উচিত যৌনাঙ্গ থেকে নি:সৃত রস ধুয়ে ফেলা এবং অযু করে নামাজ আদায় করা।” ছি: কি বিশ্রী যৌনাচারের চর্চা ইসলামে!!
পুরো কোরআন এবং হাদিসের খন্ডগুলো ভ্রমণ করলে এমন হাজারো নোংরা, নির্মম কথা আমাদের শুনতে হবে। ইসলামের যারা ধর্ম বিশারদ (ইসলাম বিশ্বাসী) তারা কখনোই এগুলো নিয়ে আলোচনা করেন না। বরঙ নিজে নিজে পড়ে স্বীয় স্ত্রীর উপর তার প্রয়োগেই ব্যস্ত থাকেন। নিজ কন্যাদিগকের প্রতিও তারা একই মনোভাব পোষন করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



