{{{আমার কম্পিউটারে বা মোবাইলে কোনো সমস্যায় পড়লে যে সবসময়েই পরিত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় সেই নাহিদ আনোয়ার ভাইকে এই লেখাটা প্রেজেন্ট করছি।}}}
যাদের কাছে সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই তারা স্ক্রল করে নিচের দিকে নেমে বোল্ড হরফে লেখা অংশটুকু পড়ে নিলেই হবে।
((((((( ছবিগুলোকে বড় করে দেখতে ছবির উপরে ক্লিক করলেই হবে।))))))
মাউস দিয়ে Ok বাটনে ক্লিক করেই হায় হায় করে উঠলাম। হায় হায় এ কি করলাম। কিন্তু ততক্ষণে যা সর্বনাশ হবার হয়ে গেছে। আমার ১ টিবি এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভের ৬০০ জিবি ডাটা শেষ। সব ফর্মাট করে ফেলেছি। কি ছিল না তাতে ! আমার এত দিনের কালেকশান গান, সিনেমা , আমার মেয়েদের জন্মের পর প্রথম নেওয়া ফটো ,ওদের অন্নপ্রাশনেরর ছবি,আমার বিয়ের ছবি—ওঃ সব শেষ।
চোখে অন্ধকার , মনে অন্ধকার। ইতিমধ্যে আমার স্ত্রী স্বাতী রাতের খাবার খাওয়ার জন্যে ডাকতে এলো। অহেতুক ওর উপরে মেজাজ দিয়ে উঠলাম। ও কিছু না বলে নিচে চলে গেল।
কি অপূরনীয় ক্ষতি করলাম তা আমি ছাড়া আর কেউ বুঝবে না ; বোঝা সম্ভবও নয়।
নেট সার্চ দিয়ে বেশ কিছু রিকোভার টুলস বের করলাম। ডাউনলোড করলাম।অধিকাংশই কোনো কাজের নয়। সব দেখি নামেই রিকোভার টুলস। একটা সফটওয়্যারে দেখলাম রিকোভার করে দিচ্ছে হুবহু যে নামে ফাইল গুলো ছিল সেই নামে। আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম। ঘন্টা তিনেক পরে রিকোভার শেষ হলো। মেয়েদের অন্নপ্রাশনের ছবিগুলো খুলতে লাগলাম। হায় হায়, সবই তো করাপ্টেড দেখায়। ভিডিও গুলোর রিকোভার সাইজ ঠিক দেখায় কিন্তু প্লে করলে চলে না। একেবারে ফেড-আপ হয়ে গেলাম।
এমন সময়ে দুষ্টু-মিষ্টির সাড়া পেলাম। একটু বিরক্তও হলাম । নিশ্চয়ই ওর মা ডাকতে পাঠিয়েছে খেতে যাবার জন্য।
মিষ্টি বললো-কি হয়েছে বাবা ? ওই রকম মুখ গোমড়া করে বসে আছ কেন ?
সব বললাম।মিষ্টি বললো-বাবা তুমি সব বিষয়েই ওভার রি-অ্যাক্ট কর। এত টেনশনের কি আছে !
দুষ্টু মিষ্টিকে ধমক দিয়ে উঠলো -দেখতেই পাচ্ছিস বাবার মন খারাপ।তুই যখন সমাধানটা জানিস তখন সেটা বলে দেনা। অতকথার দরকার কী ?
বাবাকে কেউ কিছু বলবে এটা দুষ্টু সহ্যই করতে পারেনা।
মিষ্টি রেগে গিয়ে হয়তো কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু নিজেকে সামলে নিল।
তারপর বললো- দেখ এই রিকোভার করাটা এমন কিছু ব্যাপারই না।এর জন্য Photorec নামের একটা ওপেনসোর্স সফটওয়্যার আছে। এটাতে যে রিকোভার হবেই সেটার আগে প্রমাণ দিই। তোমার হার্ড ড্রাইভ যেহেতু অনেক বড় , তাই সেটা রিকোভার হতে অনেকটা সময় লাগবে। আমি তোমার পেনড্রাইভ দিয়ে প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি।
আমি তোমার এই পেনড্রাইভটা ওপেন করছি। দেখে নাও এই ফাইল গুলো আছে।
আমি এবার এটা ফরম্যাট করে দিচ্ছি।
এবার এখান থেকে Photorece / Testdisk সফটওয়্যারটি ডাউনলোড কর।
7zip বা Winrar দিয়ে এক্সার্ট কর।
এক্সার্ট করার পর Testdisk নামের একটি ফোল্ডার দেখতে পাবে।
ফোল্ডারটি ওপেন কর।
নিচের দিকে দেখ Photorec নামের এই আইকন আছে।
এরপরে ডাবল ক্লিক কর।
এই দেখ সফটওয়্যারটা ওপেন হয়েছে।
এখানে দেখ তোমার ড্রাইভগুলো দেখাচ্ছে।
এখানথেকে তোমার যে ড্রাইভের ডাটা রিকোভার করতে চাও সেটা আপ-ডাউন অ্যারো কি দিয়ে উঠিয়ে বা নামিয়ে সিলেক্ট কর।
আমি তোমার Sony- র পেনড্রাইভ যেটা কিছুক্ষণ আগে ফরম্যাট করে দিলাম সেটাকে সেটাকে সিলেক্ট করলাম। এবার ডাউন অ্যারো কি দিয়ে Proceed অপসনে নামিয়ে Enter প্রেস কর।
আমি পুরো পেনড্রাইভের ডাটা রিকোভার করতে চাই বলে Whole disk অপসান সিলেক্ট করেছি। এভার ডাউন অ্যারো কি দিয়ে Search অপসনে এনে Enter প্রেস কর।
এবার নিচের অপসন আসবে। তোমার ড্রাইভ যদি লিনাক্সের হয় তাহলে প্রথম অপসন ext2 বা ext3 সিলেক্ট কর।
আর যদি Fat বা NTFS হয় তাহলে দ্বিতীয় অপসন Other সিলেক্ট কর এবং Enter প্রেস কর।
এবার নিচের উইন্ডো আসবে। এখানে প্রথম অপসনটিকে সিলেক্ট করে c প্রেস কর।
ফাইল রিকোভার হওয়া আরম্ভ করবে। কতক্ষণ লাগবে তাও এখানে দেখতে পাবে।
ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা কর। এটা পেনড্রাইভ বলে এবং কম ডাটা রিকোভার হবে বলে তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।কিন্তু তোমার ৬০০ জিবি ডাটা রিকোভার হতে কিন্তু বেশ ভালোই সময় লাগবে।
রিকোভার শেষ হলে এই রকম মেসেজ দেবে।
এবার তুমি যে ফোল্ডারে Photorec এই সফটওয়্যারটা রেখেছিলে সেটাকে আবার ওপেন কর।ওর মধ্যে দেখ Recup_dir 1 নামের একটি ফোল্ডার রয়েছে।আমি ওটাকে খুলছি। েেএখানে অল্প ডাটা রিকোভার হয়েছে বলে একটা ফোল্ডার রয়েছে যদি বেশি ডাটা রিকোভার হয় তবে Recup_dir 1, Recup_dir 2, Recup_dir 3, Recup_dir 4.... নামে পরপর অনেক ফোল্ডার পাবে।
এই দেখ সেই সেই ফাইলগুলো। অসুবিধা শুধু একটাই সেটা হল তুমি আগের নামে এই ফাইলগুলোকে পাবেনা। রিকোভার হওয়া নামে পাবে।
আরো একটা মজার ব্যাপার দেখ –এখানে আমি যে ফাইলগুলো ফর্ম্যাট করে ডিলিট করেছিলাম।সেগুলো বাদেও দেখ আরো কিছু ফাইল রয়েছে যেগুলো তুমি হয়তো আগে ডিলিট করেছিলে।
আমি একটা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেললাম।
মনে মনে ভাবলাম আজ আর এটাতে হাত দেব না। কালকে দেব।
দুষ্টু একটু ম্লান হেসে বলল-বাবা, এখন মন ভালো হয়েছে তো ? এবার নিচে গিয়ে খেয়ে নাও।
বুঝতে পারলাম নিজের টেনশনের জন্য আমার পরিবারকে আমি আঘাত দিয়ে ফেলেছি। এটা আমার উচিত হয়নি। কারন কোনোরকম সহায্য বা সমবেদনা যদি পাওয়ার সুযোগ থাকে তাহলে নিজের পরিবারের কাছ থেকেই তা সবার আগে পাওয়া যেতে পারে।
নিচে খেতে বসে দেখি দুষ্টু মিষ্টির মা তখনো মুখ গম্ভীর করে আছে।
বললাম- -শুনছো।
আমাকে তরকারি দিতে দিতে আমার দিকে না তাকিয়েই দুষ্টু-মিষ্টির মা উত্তর দিলো--বলো
বুঝলাম অভিমান কাটেনি।
অপরাধীর মতো মুখ করেই বললাম- সরি , S O R R Y
………..
***************************************************
**************************************************
হয়তো আপনার কাজে লাগতে পারে
দুষ্টু মিষ্টি সংবাদ : : Transcend এর পেনড্রাইভ ডেড হয়ে গেছে ? NO চিন্তা Do ফূর্তি
***************************************************
***************************************************
সবাই ভালো থাকবেন।
রাগে থাকুন, রাগিয়ে রাখুন।
রঙে থাকুন, রাঙিয়ে রাখুন।
***************************************************
আমাকে সর্বক্ষণের জন্যে পাবেন এখানে http://www.techspate.com
ফেসবুকে আমার ঠিকানায় যেতে এখানে ক্লিক করুন
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৩