somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পীর সাহেব দেওয়ানবাগী ও তাঁর কিছু ঝাকানাকা ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড :-/

১৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাম মাহবুব এ খোদা। সর্বস্তরে দেওয়ানবাগী নামে পরিচিত। জন্ম ২৭ শে অগ্রহায়ন ১৩৫৬ বাংলা মোতাবেক ১৪ ই ডিসেম্বর ১৯৪৯ ইংরেজী। জন্মস্থান ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে। পিতা সৈয়দ আব্দুর রশিদ সরদার। মাতা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ। নিজ এলাকার তাল শহর কারিমীয়া আলীয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজেল পর্যন্ত পরাশুনা করে ছাত্রজীবনের ইতি টানে। ১৯৭১ সালে দেওয়ানবাগী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতার পর তাঁর ৩ নং সেক্টরের কমান্ডার শফিউল্লাহ সাহেবের সুপারিশে সেনাবাহিনীর ১৫ নং বেঙ্গল রেজিমেন্টে ইমামতির চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরীর হাতে বাইয়াত গ্রহন করেন। পড়ে স্বীয় মুর্শিদের কন্যা হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন। এ সুবাদে শশুরের কাছ থেকে খিলাফত লাভ করেন। এর কিছুদিন পর নারায়নগঞ্জের দেওয়ানবাগ নামক স্থানে আস্তানা গঠন করেন এবং নিজেকে “সুফী সম্রাট” হিসেবে পরিচয় দিয়ে শোহরত লাভ করতে থাকেন। এরপর তিনি মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগ ঢাকা-১০০০ তে “বাবে রহমত” নামে আরেকটি দরবান স্থাপন করেন। এখান থেকে তাঁর তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশে বাবে রহমত মূখপত্র “আত্মার বাণী” সহ বেশ কয়েকটি মাসিক পত্রিকা ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

এক নজরে দেওয়ানবাগীর কিছু আকিদা ও উক্তি সমূহঃ

“আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।” –সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ২৩

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন “শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।

“দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন।” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।

“আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম। ক’দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল। নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।” –সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা।

“কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা।” –আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০

“জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল।” –সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১

“সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুভে সাদেক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারি আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয়না।” –সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃঃ ৯

“মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কে পুলসিরাত বলা হয়।” –সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০

“ আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখ বলা হয়।” –আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪

দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন। অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করে্ন ।
দরুদে মাহদীঃ

“আল্লাহুম্মা ছাল্লী আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আ’লা ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। ”

ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসুল (সাঃ) কে দেখেছি।

দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বপ্ন দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন,
“ আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থান জুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ওই বাগানে আমি একা একা হেটে বেড়াচ্ছি। হঠাত বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্বারা স্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণ ফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকালেন। মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল (সাঃ) সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল(সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে আমার সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ” –সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ “রাসূল স. সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।

ভন্ড দেওয়ানবাগী সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়াঃ

ক. দেওয়ানবাগের পীর নিতান্তই গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট।

খ. ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহন করাতো দূরের কথা, এর সাহায্য সহযোগিতা করা, সান্নিধ্যে উঠা-বসাীবং তাঁর সাথে কোন রকম সংশ্রব রাখা হারাম।

গ. আর তাঁর অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
(১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং। )

এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম বাধার সম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এরকম আরও হাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যা তিনি প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫০
৬৫টি মন্তব্য ৬০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×