somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। ।। অনুগল্প: প্রেমালিঙ্গম ।। ।।

২১ শে মে, ২০১২ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আঁচল উঠিয়ে নিল কান্তা! দীর্ঘ সময় পাড়ি দেয়া প্রেমরূপ আজ অদৃশ্য হবে।

-এবেলা তবে পথ ছাড়ি; নিবাস তুমি বাটিতে যাও
চোখ দু’খানা তারা করে দিয়ে রইল দাড়ায়ে নিবাস; মনঘরে তখনও পাকানো ঢেউ; কেন তবে মিছি মিছি ভালোবাসা! কেন তবে কাছে আসা। অন্ধের মতো পাথরকে বন্ধু ভাবতে যদিও দোষের কিছু নেই তবুও কি আর পাথরকে গলায় বাধা যায়?

গল্পটার শুরু নাইবা হলো জানা; কেননা এ কাহিনীর নেই যতি চিহ্নের ঠিক-ঠিকানা।
নিবাস; বনগাঁয়ে যার বাস। দিন কেটে হেলায়-ফেলায়, রাতটা কাটে ভাবনার বাসে চড়ে; প্রহর শেষে একটু থামে সেই ভাবনারা। একটু ঘুমোয়, একটু জিরোয়; সকাল হতেই আবার তার যাত্রা শুরু।
কাটছিল দিন এভাবেই।

কান্তা।
নিধিরাম এর পোষ্য কন্যা। হোক সে পোষ্য। যেন প্রান। যেন প্রকৃতির দান। নিধিরাম কান্তা বলতে অজ্ঞান!
বয়সের নায়ে ভেসে ভেসে শেষে কুড়ি পেড়িয়ে তেইশে রাখলে পা। গা ছমছম করা দুপুরে একদিন ভোমর কানে কানে বলে গেল এইবার তবে মন মেশাও আর কারো মনের সাগরে। কান্তা অতশত ভাবে না; এটুকু বুঝে যায় সে, একদিন কারো হাত ধরতে হবে কারো ঘরে যেতে হবে, না হলে সে আর মেয়ে কেন?
একদিন বর্ষা পেড়িয়ে গেলে বাংলা একাডেমী থেকে ফেরার পথে নিবাসের সাথে দেখা। সে দেখাটা অবশ্যি একটা ছাতাকে কেন্দ্র করেই। হঠাৎ বৃষ্টিতে আধভেজা নিবাস দাড়িয়ে ছিল গেটের পাশেই ছাতার জন্য বাড়ি যেতে পারছে না। পকেটে টাকা নেই তাই কোন চক্রযানেই সে উঠতে পারছেনা। কান্তা’র সই নিশি এসে বললো কান্তা তোর নীল ছাতাটা দে,তো-
তারপর সেই ছাতা নিয়েই নিবাসের বাড়ি ফেরা।

ফেরত ছাতার কথা ধরে এভাবেই পরিচয় পর্ব। এরপর রমনা কালিমন্দিরের গেটের পাশে বসে ভালোবাসাবাসি শুরু। নিবাস কিংবা কান্তা দুটো প্রাণীই যেন এক ছাঁচে গড়া। বিশ্বাস ওদের সুউচ্চ শিখরে যেন গেছে পৌছে, শুধু নির্মল বিশুদ্ধ ভালোবাসা দুজনে দুজনায় গায়ে চাদরের মতো যেন লেপ্টে থাকে। কিন্তু ঈশ্বরের খেলা সে যে এক মস্ত বড় ঘোরপাক নদী।
নির্মল ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখতে তার কি ঠেকা পড়েছে? তাই কিভাবে সেটা মিশে যাবে সামাজিক যাতাকলে তারই একটা আয়োজন যেন চলে গোপনে গোপনে।

চাল-চুলোহীন নিবাস তার যে নেই আবাস। যে পথে পড়েনা ফুল সে পথেই তার বাস। কোনক্রমে স্নাতকোত্তর শেষ হলো কিন্তু কর্মখালী কোন প্রতিষ্ঠানে সে ঠায় পায়নি এখনও। প্রশ্ন চারপাশে, কেন তবে ভালোবাসলি? জানিস নে এ ভালোবাসার ভবিষ্যত যে অন্ধকার। ঘর ছেড়ে কি কান্তা তোর সাথে তবে গাছতলায় কাটাবে? এত কিছু ভেবে ভালোবাসলে তো আর কামহীন প্রেম হবেনা তাহলে তো হিসেব কষে শরীরবৃত্তেই ঘুড়ে শেষে থেমে যাবে ভালোবাসার কাঠি। তবুও এ ছন্নছাড়া জীবনে প্রেম চলে না। মস্ত বড় বোকা না হলে কি আর সোনার জীবন ধ্বংসের জন্য মাতে প্রেমালিঙ্গমে।

দিন যেন ফুরায় সময়কে কাল স্বাক্ষী করে। শেষ দেখায় কান্তা বললো নিবাস,
আগুনে একবার হাত দিয়ে ফেলেছো, পুরোপুরো পুড়ে যাওয়া না পর্যন্ত হাত সরিয়ে নিও না তাহলে সারাজীবন সেই যন্ত্রণায় জ্বলে যাবে তার’চে ভেবে নাও প্রেম মরে যাচ্ছে না সেটা জ্বলছে প্রদীপের মতো। তুমি যেন অন্ধ এক অনুভূতি শূণ্য মানুষ। আজ হতে সব কিছুতেই তোমার সহ্য ক্ষমতা বেড়ে যাক। মুখের ভাষা থাকার চেয়ে যদি না থাকতো তবে উন্মাদ হয়ে ঘুড়ে বেড়ানো যেত নিবিঘ্নে তাতে দহনটা সাতকাহনের জন্ম দিতো না। নিবাস সানাইয়ের প্রিয় সুর সোনার আগেই পা তুলে নিল।

এরপর কেটে গেল একযুগ.............

এখনো পতি দেবতাটির বুকে মাথা রেখে কান্তা চোখ ভরে জল ফেলে নিবাসের জন্য। আহ প্রেম!
এত যন্ত্রনা।
এতো সুখের মাঝেও কোথায় যেন কিসের কমতি।
কেথায় সে মুখ নিবাসের।
আর ওদিকে একযুগ ধরেই নিবাস যে কোথায় হারিয়েছে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো ফুলহীন পথে। নয়তো ভাষাহীন রথে এমনি কোথাও হয়তো আজ নিবাসের বাস হয়েছে?




১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×