somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতার বয়স হয়েছে অভিজ্ঞতা হয় নি

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বয়স পঞ্চাশে ছুই ছুই করছে। বাংলাদেশ এখন পূর্ণ যুবক। বয়সে শক্তিতে অভিজ্ঞতায় তাই পৃথিবীর যেকোন দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে চলার শক্তি অর্জন করেছে।


কতটা স্বাধীনতা অজর্ন আমরা করতে পেরেছি? শুধু স্বাধীন একটি ভূখন্ডই কি স্বাধীনতা? গত ৪৭ বছর ধরেই আমরা এখনো কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুজে পাচ্ছি না। তাই একই প্রশ্ন আবারো করছি। জনে জনে খুজে বেড়াচ্ছি। বিভ্রান্তির শিখলে আটকে পড়ে আছি। এতো অর্জন এতো সম্মান কোথায় যেন বন্ধী রয়ে গেল আজো।

উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে এই দেশে আমাদের মেধাবী সন্তানেরা তাদের উপযুগী কর্মস্থল পাচ্ছে না। আমরা খুব দ্রুতই সরকারের সমালোচনা করি। অবশ্য সরকারের সমালোচনাকে আমি স্বাধীন দেশের ভালো একটু গুণ হিসেবেই দেখী। কিন্তু সরকার সরকারের জায়গায় , এই দেশ আমাদের অর্জন। মেধাবীরা কেন এই দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেবে? এই কয় দিন আগে আমার এক বন্ধু (বি.সি.এস ক্যাডার) আফসুস করে বলছিল - নিজের মেধার সবোর্চ্চ দিতে পারার মতো ক্ষেত্র কোথায়? নতুন কোন আইডিয়া নিয়ে আসতে চাইলে সিনিয়ররা সেটাকে ডেভলাপ করতে দিচ্ছেন না। কাজে গতি বাড়লে আর দুর্নীতি বন্ধ হলে একটি গোষ্ঠী চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে। যেদেশে কাজ করার মত সুযোগ নাই সেদেশে পড়ে থেকে কি লাভ? তাই সে বি.সি.এস ক্যাডার হওয়া সত্ত্বেও বিদেশে যাওয়ার চিন্তা করছে। আরো বেশী টাকার লোভে নয়। নিজের মেধাকে কাজে লাগানোর জন্য।

আমাদের একটি জাতীয় সঙ্গীত রয়েছে। আমরা আকুল হয়ে সেই আমাদের কণ্ঠে গেয়ে উঠি সে সঙ্গীত। আবার এই দেশেরই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না। জাতীয় সঙ্গীতকে তারা মনে করে গান! জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা আসলে একটি পরিচয়কে অস্বীকার করা। যা অস্বীকার করা মানে লাখো শহীদের রক্তে রাঙ্গানো এই জন্মভূমিকে অস্বীকার করা। পিতা কিংবা মাতাকে অস্বীকার করা সন্তানের কি কোন আলাদা পরিচয় থাকে?

বিশ্বাস করুন, এই দেশের তরু লতায় মিশে আছে শহীদের রক্ত। রক্তের ঋণ কি এতো সহজে শেষ হয়? জন্মান্তর শুধু বয়ে বেড়ায়। পিতা থেকে সন্তান, সেই সন্তানের সন্তান এবং তারো সন্তান। কি আমরা শক্তি পাই? সেই শক্তিতে আজো রক্ত মিশে আছে। মা'দের অশ্রু তুমি কোন প্রতিদানে শোধ করতে পারবে? সে অশ্রু কখনো শুকায় না। সময়ের সাথে সাথে শুধু শক্তিতে সঞ্চারিত হয়।

যে বোনের ইজ্জ্বতের উপর দাড়িয়ে আছে আমাদের স্বাধীনতা তারে আমরা কিভাবে হেলা করি। কিভাবে তুচ্ছ করি? তার আত্নত্যাগ ভুলে আমরা এই দেশের কথা না ভেবে কিভাবে থাকতে পারি। আমাদেরও একটি দেশ আছে। আমাদের একটি আলাদা পরিচয় আছে , আছে অর্জন। আছে বির্সজন। মা বোনদের চিৎকার কি কানে বাজে না? শুনা যায় না দোয়েলের শিস?

অনেকেই আজকের সকালের এক যোগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করছে। ছোট করছে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতকে! তুচ্ছ করছে স্বদেশকে। সরকার যদি একযোগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আয়োজন করে ভুল করে তবে আমরা সেই আয়োজনের সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু তাই বলে সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে যেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা না হয়। এই পতাকা আমরাই বয়ে বেড়াতে হবে। সবার উপরে তুলে রাখতে হবে।

কি এমন ক্ষতি যদি একদিন আমরা সমবেত সুরে গেয়ে উঠি - আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালোবাসি। আমাদের এই স্বদেশকে ভালোবেসে আমরা আমাদের জরুরী কাজকে একদিনের জন্য বন্ধ করে রাখতে পারি না? তবে একটু কি ভেবে দেখব, যারা স্ত্রী সন্তান রেখে যুদ্ধে চলে গিয়েছিল তাদের কথা? বেচে থাকাই যদি সব হতো তবে তারা ইন্ডিয়ায় পালিয়ে গিয়ে বেচে থাকতে পারত। যদি মাথা উচু করে বেচে থাকতে না পারো তবে কি লাভ সে বেচে থাকায়?

আমাদেরই প্রতিবাদহীনতা বার বার এই দেশে অপশক্তিতে জাগিয়ে দেয়ার রসদ জুগিয়েছে। স্বাধীনতার বয়স তো অনেক হলো। এখনো যদি আমরা অভিজ্ঞতায় আর দক্ষতায় নিজেদের প্রজ্ঞাবান করে না তুলি তবে এই দেশের বার্ধক্য আসতে দেরী নেই। তখন চামচিকাও আমাদের দেখে হাসবে। আর তখন বুঝব, স্বাধীনতা আসলে কতটা আমাদের প্রয়োজন। আমাদের এই একযোগে গেয়ে উঠা কণ্ঠই রোধ করুক সকল অপশক্তি। হায়েনারা জানুক, এই দেশে বীরের সন্তানেরা আরো শক্তিমান। বাংলাদেশ এগিয়ে চলুক। স্রষ্টা আমাদের স্বাধীনতাকে অমর অক্ষয় রাখুক।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×