somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতিপ্রাকৃত

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাত কয়টা বাজে এখন? আড়াইটে-তিনটে? খোলা জানালার কাছে চেয়ারে বসে আছি। বাইরে তীব্র শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন রাত। টুপ টুপ করে শিশির ঝরে পড়ছে গাছের পাতায়। ঘরে কোন আলো নেই, সব লাইট অফ করা। অন্ধকারে বসে আছি আমি একা। জীবনের প্রায় সব আলোই যেহেতু নিভে গেছে তখন আর কৃত্রিম আলোর কী প্রয়োজন? খোলা জানালাপথে একমনে চেয়ে থেকে ভাবনার সাগরে ডুবে আছি। শীতের রাতের এই প্রহরে হয়ত কেউ জেগে নেই। সম্ভবত আমিই একমাত্র প্রাণী ঘুম যার চোখ থেকে সর্বদা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। চোখ বুজে আবারও ভাবনার সাগরে ডুবে গেলাম।

কী করছে এখন ও? নিশ্চিন্ত মনে উষ্ণতার সাথে পাশের মানুষটিকে জড়িয়ে ধরে পরম সুখে ঘুমুচ্ছে? কারো জন্য ভাবনার কোন দায়বদ্ধতা নেই, নেই কোন পিছুটান? পিছুটান থাকবেই বা কীভাবে? হাসিমুখে আরেকজনের বাহুডোরে বাঁধা পড়ে নিজেই যে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছে। হয়ত এটাই সে চাইত সবসময়। আমাদের মাঝে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তা এক নিমিষেই এভাবে ধুলোয় মিশে যাবে সেটা আমার কল্পনাতেও ছিল না কিন্তু ও নিশ্চয়ই মনে মনে এমনই ভেবে রেখেছিল। অথচ আমি কি বোকা ছিলাম! ঘুণাক্ষরেও ওর মনের আসল কথাটা জানতে পারিনি! আমার সাথে এভাবে লুকোচুরি খেলে ও নিশ্চয়ই খুব আনন্দ পেত! আর আমি ওর এই লুকোচুরিকেই আমার পরম প্রাপ্তি ধরে নিয়ে সুখস্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকতাম! ওর চোখের তারায় সবসময় দুষ্টুমি খেলা করত! ওর অনিন্দ্যসুন্দর মুখটাকে আমার মনের ক্যানভাসে সযত্নে বাঁধিয়ে রেখেছিলাম সারাটি জীবনের জন্য। কোনদিন ওই মুখটাকে স্মৃতির পাতা থেকে মুছে ফেলার কথা কল্পনাতেও আনিনি। অথচ আজ আমিই সেই মুখটাকে চিরতরে মুছে ফেলতে চাইছি! চেষ্টা করছি ওর সব স্মৃতিকে মনের ক্যানভাস থেকে চেঁছে তুলে ফেলতে!

শীতের এই কুয়াশাচ্ছন্ন রাতের অন্ধকারে নিজের ফেলে আসা অতীতকে হাতড়ে বেড়াচ্ছি কীসের নেশায়? আমি জানি না। জানি না কেন ওর কথা ভেবে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি প্রতিনিয়ত! তবে কি ওকে এখনও মনের গহীন কোণে সযতনে রেখে দিয়েছি? কেন ওর চেহারাটা বারবার মনের জানালাপথে উঁকি দিয়ে যায়? কেন শতচেষ্টা করেও ওর স্মৃতিগুলোকে নিজের মন থেকে তাড়াতে পারি না? কেন ও এভাবে আমাকে অসহনীয় যন্ত্রণায় বিদ্ধ করছে? মনকে চোখ ঠারতে গিয়ে আরো বেশী কষ্ট বুকে জমা হচ্ছে। চোখ থেকে ঘুম পালিয়েছে অনেক আগেই। এখন শুধু স্মৃতিচারণার তীরগুলো আঘাতে আঘাতে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে।

হঠাৎ দরজায় করাঘাতের শব্দে চমকে উঠলাম! কে যেন দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে! এতরাতে কে আমার কাছে আসতে পারে ভেবে পেলাম না! একটু ইতস্ততঃ করে চেয়ার থেকে উঠে পড়লাম। হয়ত কেউ কোন জরুরী প্রয়োজনে অথবা ছোটখাট বিপদে পড়ে অথবা নেহাত ঠেকায় পড়ে এই অসামাজিক আর সমাজ থেকে বিমুখ উজবুকটার কাছে কোন ছোটখাট উপকার বা সাহায্য চাইতে এসেছে! সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে গিয়ে দরজার কী হোলে চোখ রাখলাম। ছোট্ট ফুটোয় চোখ রেখে আরেকবার ভীষণভাবে চমকে উঠলাম! স্তম্ভিত বিস্ময়ে কিছুক্ষণের জন্য স্থবির হয়ে গেলাম! যার চেহারা দেখলাম তাকে আমি দেখব বলে স্বপ্নেও কল্পনা করিনি! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল! দরজার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে আমার.....

চলবে।

ছবিঃ গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:২২
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×