(এক)
তোমার মায়াবী চোখে প্রেমের সমূদ্র
উথাল পাথাল ঢেউ; কূলেতে আছড়ে
পড়েই আবার ফিরে অকূলে হারায়;
নিরন্ত নয়ন তলে রূপের আলেখ্য।
নাসিকা কপাল গাল নিখুঁত গড়নে
অনন্যা হয়েছ তুমি গুণেতে জ্ঞানেতে।
রূপালী দাঁতের দোলা নির্ঝর কথন
নিরন্ত শুনায় নেই ক্লান্তির কারণ।
পছন্দ সকল দিকে সে অর্থে আকৃষ্ট
দেখেছি দীঘল চুল কি কৃষ্ণ বরণ
ভদ্রতা মেশানো হাসি ব্যঞ্জনা মিশানো।
প্রেয়সী তোমায় পেলে সঙ্গিনী রূপেতে
রবেনা অপূর্ণ আশা মনের ভিতর
হৃদয়ে রইবে তুমি রাণীর মতন।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রা বর্ণঃ তিন তিন দুই তিন তিন (৮+৬)
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দশপদী কবিতার সনেট রিমেইক। মূল কবিতা-
টানা টানা মায়া চোখ ঠোঁট দুটি লাল
নেই খুঁত নাকে তার নিখুঁত কপাল।
অপরূপ গালে হাঁসে অপরূপ হাসি
দেখে মন বলে প্রিয়া তোরে ভালবাসি।
ঝক ঝকে দাঁত মুখে ঝর ঝরে কথা
শুনে তাই চারদিকে নামে নিরবতা।
সুগঠিত দেহ তনু বড় কালো চুল
একি নারী নাকি কোন বাগানের ফুল।
নূপুর পায়েতে বাজে হাঁটে হেলে দুলে
তারে দেখে সব কিছু গেছি আমি ভুলে।
মানস মনেতে সদা ছবি তার আঁকি
যত আঁকি তত যেন থেকে যায় বাঁকী।
অবশেষে আঁকা ছেড়ে ভালবেসে ভাবি
এ হৃদয়ে তুমি ছাড়া নেই কারো দাবী।
কবিতাটির ছড়া রূপ-
টানা টানা মায়া চোখ
ঠোঁট দুটি লাল।
নেই খুঁত নাকে তার
নিখুঁত কপাল।
অপরূপ গালে হাঁসে
অপরূপ হাসি।
দেখে মন বলে প্রিয়া
তোরে ভালবাসি।
ঝক ঝকে দাঁত মুখে
ঝর ঝরে কথা।
শুনে তাই চারদিকে
নামে নিরবতা।
সুগঠিত দেহ তনু
বড় কালো চুল।
একি নারী নাকি
কোন বাগানের ফুল।
নূপুর পায়েতে বাজে
হাঁটে হেলে দুলে।
তারে দেখে সব কিছু
গেছি আমি ভুলে।
মানস মনেতে সদা
ছবি তার আঁকি।
যত আঁকি তত যেন
থেকে যায় বাঁকী।
অবশেষে আঁকা ছেড়ে
ভালবেসে ভাবি।
এ হৃদয়ে তুমি ছাড়া
নেই কারো দাবী।
(দুই)
দুঃস্বপ্ন
আমাদের নাওখানি সাগরের জলে
ভেসে চলে ক্রমাগত।আকাশ-পাতাল
ঢেউ উঠে ক্রমাগত পর্বত প্রমাণ,
নাওখানি দুলে দুলে উঠে আর নামে।
আরোহিরা বিভৎস দৃশ্য অবলোকে
আল্লাহু আল্লাহু করে, জীবনের আশা
নেই বুঝি কোন আর।মরি কিবা বাঁচি
পরপারে যেতে গুনি অপেক্ষা প্রহর।
শিশুরা ক্রন্দন রোলে করে চিৎকার
বিকৃত ভয়ার্ত মুখে।ভাবি মনে শেষে
তার চেয়ে তুফানের চিত্র দেখা ভাল।
হঠাৎ দৃষ্টির তলে সকলি উধাও
নেই নাও নেই নদী।খাটে শুয়ে আছি
প্রেয়সি আমার সাথে জড়ানো সজ্জায়।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দশপদী কবিতার সনেট রিমেইক। মূল কবিতা-
আমাদের নাওখানি সাগরের জলে
পর্বত প্রমাণ ঢেউ উঠে ক্রমাগত,
নাওখানি উঠে নামে আকাশ-পাতাল
হৃদপিন্ড ধুপধাপ মরি কিবা বাঁচি।
আরোহিরা বিভৎস দৃশ্য অবলোকে
বিকৃত ভয়ার্ত মুখে করে চিৎকার
মনে হলো শেষ বুঝি জীবনের বেলা
তার চেয়ে তুফানের চিত্র দেখা ভাল।
ক্ষণে ক্ষণে আঁকা বাঁকা বিদ্যুৎ চমক
মন্দ নয় শেষ স্মৃতি অন্তিম কালের।
হঠাৎ দৃষ্টির তলে সকলি উধাও
কেটেগেল নিতান্ত এ মরনের ভয়।
দেখি আমি চুপচাপ খাটে শুয়ে আছি
প্রেয়সি সাথেই আছে জড়িয়ে সজ্জায়।
(তিন)
হতাশ জীবন
হৃদয়ের অগ্নিগিরি জ্বলে অনিবার
দূরত্বে তোমায় রেখে।হে প্রিয়া আমার
দৈনন্দিন ভালবাসা অর্পণ অভাবে
নষ্ট হয় একে একে; অফুরান ক্ষতি।
প্রাপিকার প্রাপ্য আমি পৌঁছেদিতে তারে
অপারগ হয়ে কাঁদি। অপচয় রোধ
তাহলে কিভাবে করি? দাও উপদেশ!
অথচ এ প্রেম দেয়া অন্যে অসম্ভব।
পিনপিনে ব্যাথা করে মস্তকে অসহ্য
অনবরত এমন তাতে বেদনা-বিঁধুর
আঁখি টলমল করে; হতাশ জীবন।
নিজের সম্মুখ দিয়ে লস হয়ে যায়
লাভ গুলো একে একে।সিক্ত হয়ে আসে
নয়ন দু’কোনে জমে বিন্দু বিন্দু অশ্রু।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দশপদী কবিতার সনেট রিমেইক। মূল কবিতা-
হৃদয়ে উম্মত্ত এক অগ্নিগিরি জ্বলে
দূরত্বে তোমায় রেখে হে প্রিয়া আমার।
দৈনন্দিন ভালবাসা নষ্ট হয়ে যায়
প্রাপীকার প্রাপ্য তারে অর্পণ অভাবে।
এমন পদার্থ এটি ফ্রিজেও থাকেনা
তরতাজা ফ্রেসবস্তু। অপারগ আমি
অন্যকরে সমর্পণে, সেটা অসম্ভব।
তাহলে কিভাবে হবে অপচয় রোধ?
ঝিমধরা মস্তকেতে পিনপিনে ব্যাখা
লাভগুলো একে একে লস হয়ে যায়।
বেদনা বিঁধুর আঁখি সিক্ত হয়ে আসে,
নয়ন দু’কোণে জমে বিন্দু বিন্দু জল
হস্তের রুমাল আঁটি বাঁধ ভাঙ্গা স্রোতে
নিপূণ নিরবে মুছি অনাহুত কান্না।
(চার)
প্রিয়ার স্মৃতি
তোমার মায়ার মুখ স্মৃতির পাতায়
ভেসেউঠে।ক্রমাগত শুনি যেন ধ্বনি
মধুময় সম্ভাসন তোমার কন্ঠের
কোন দূর লোক হতে অন্তর জুড়ানো।
প্রীতিবাণী মোহমায়া, জীবন বেলার
সাগর সৈকত তীরে মৃদুমন্দ বায়
পরান শীতল করে, প্রাণ উচাটন
সে স্মৃতির অণুকণা সকল সময়।
চঞ্চলা প্রিয়তমার আদর সোহাগ
যেন কোন ফুলমালা সুঘ্রাণ ছড়ায়
অন্তরের অন্তপুরে; বিবশ ভাবনা।
চক্রবাঁকে ঢেউখেলে চিত্র কথা গুলো
আন্দোলীত হয়ে ভোর বায় যেন
নিয়ত করছে যেন শীতল পরাণ।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দশপদী কবিতার সনেট রিমেইক। মূল কবিতা-
মায়ামুখ ভেসেআসে হৃদয় পাতায়
অশ্রুজলে ক্রমাগত তোমার কথার
কানে বাজে শুনি যেন মধুর স্বরের
লিখিআমি স্মৃতিরেণু অঝোর ধারায়।
প্রীতিবাণী মোহমায়া অন্তর জ্বালায়
দুষ্টপ্রিয়া মিষ্টিপ্রিয়া আদর আমায়
দিয়ে তুমি কেড়েনিলে কোমল প্রীতির
ফুলমালা, কুলবালা প্রেম পারিজাত।
পুস্পশোভা দু’টিগালে কেমন এমন
ফুটেহাঁসি দেখি আমি মাতাল সাগর
চক্রবাকে ঘুরে ঘুরে ঢেউখেলে যায়।
প্রেমানলে দিবানিশি কঠিন পাষান
পেয়ে আমি তোরো হীরা মানিক আমার
ধন্যহল বড়বেশী জীবন পরাণ।
(পাঁচ)
প্রেয়সীর প্রীতি প্রশ্রয় ভুলে যাওয়া ও প্রীতি কাম্য
প্রেয়সীর পক্ষ থেকে ভালবাসা প্রাপ্তি
উপভোগ্য জোছনায় ফুলবনে থেকে
বিচরণ প্রিয়াসনে অতঃপর তার
সনে পাশাপশি বসে খোশগল্প তুল্য।
প্রিয়ার প্রশ্রয় যেন সাগরের ঢেউ
কুলে আছড়ে পড়েই ফিরে আসে ফিরে
সাগরের বুক চিরে কি স্বাধীণতার
উদ্ভ্রান্ত জীবন যাত্রা, অফুরান মোহে।
সেই প্রিয়া ভুলে গেলে বেদনার নীল
স্রোত নেয় চির চেনা জীবন ভাসিয়ে
অর্থহীন করে দিয়ে সমগ্র জীবন।
প্রীতি হোক জীবনের স্বচ্চ সরোবর
ফুলদল সুঘ্রাণেতে ভরপুর খুশি
বসন্তের ফুরফুরে বায়ুর প্রবাহ।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৮