(এক)
আল্লাহর বান্দা
আজ আছে কাল নেই, সামান্য মানুষ
কত কি যে মনে করে নিজেকে! অথচ
ছোট দেহে গুনে খাট, নিতান্ত অলস
সৃষ্টিকূল সেরা জীব, ভাবেনা বাস্তব!
কে কখন চলে যাবে, পাবেনা সময়
বিন্দুমাত্র; সে ভাবনা মনের গভীরে
কারো নেই।অনাচারে যা খুশি সকল
করে চলে অহর্নিশ, রিপুর তাড়নে।
নাস্তিকের দল ভাবে, বেশতো ভালই
‘খাও দাও ফুর্তি কর’-কি বুদ্ধি মাথায়!
ভাবনাটা ভুল হলে, কেমন কি হবে?
আল্লাহর বান্দা থাকে সত্যের সন্ধানে,
তা’ না হয় সত্যের কি গরজ পড়েছে
এমনিতে ধরা দিবে? ভাব হে মানুষ!
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(দুই)
আল্লাহতে চিরন্তন শান্তি
জড়ায়ে কঞ্চির দেহ লতা বেয়ে উঠে
লিক লিকে ডগা খোঁজে অবলম্বন কোন,
মায়া হয় দেখে উহা। চাষী দৃষ্টি পড়ে,
বাকশূণ্য প্রাণী পরে। কি কর্তব্য বুঝে!
মাচানের সমারোহ ছোঁপ জ্বাল কত
গড়ে উঠে ক্ষেত জুড়ে।সবুজের দলে
ফুলে ফুলে ভরে যায়।বাতাসের দোলে
দলে দলে তরকারী, ঝুলে ঝুলে থাকে!
রাহমান রাহীমের এসকল দান
বিশ্বাসীর মনে আনে শুকরিয়া।আর
অবিশ্বাসী মনে করে, প্রকৃতির শোভা!
ধারণায় তারা সব সত্য ভোলা মনে
আস্ফালন করে নিত্য।মু’মিনের চিত্ত
আল্লাহতে খুঁজে ফিরে চিরন্তন শান্তি।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(তিন)
কবি কাজী নজরুল ইসলাম
অন্যায়ের প্রতিবাদে অনন্য।প্রকাশে
হীরকের মত ধার ভাষার গর্জন
ধ্বনিময় সাহিত্যের বিরল দৃষ্টান্ত,
কোথাওকি আছে আর দ্বিতীয় এমন?
প্রজ্জ্বলিত অগ্নিরূপ দ্রোহের অনলে
প্রকম্পিত অত্যাচারী।অগ্নির বীণার
ঝঙ্কারের সাথে বাজে বিষের বাঁশির
সূরলয়, নজরুল এমনি স্বপ্নীল।
মানুষের ভগবান খোদার আসন
কেড়েনেয়া শয়তান, কবির ‘বিদ্রোহী’
কবিতায় হেয়নস্তা, সালাম এ দ্রোহে।
বিস্ময়ের এক নাম উন্নত শীরের
‘নজরুল ইসলাম’। গান ও গজলে
বুলবুল খ্যাত তিনি, স্মরণে অম্লান।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার তিন তিন
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(চার)
কবি কাজী নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম সাহিত্য ভান্ডারে
ঢেলেছেন ঢের বেশী।পেলেন সামান্য
খরচার অনুদান। ভাবেনা এসব
অকৃতজ্ঞ জনতার কৃপণ অন্তর।
আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা একান্ত
কবি যেন ক্ষমাপান।তিনিতো মহান
দয়াময়, ইচ্ছে হলে করেন যা খুশি
হে আল্লাহ, এ কামনা মঞ্জুর করেন।
ইসলামী সাহিত্যের উচ্ছাসে কবির
কতজন হয়েছেন সফল জীবনে
পথ পেয়ে, বিপথের সরায়ে আঁধার।
ভুলত্রুটি যত আছে কবির বেলায়
ক্ষমা যেন করে সব আল্লাহ মহান
নেক কাজ যদি হয় ভুলের মাসুল।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার তিন তিন
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(পাঁচ)
রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর
সাহিত্যের সুষমায় রবীন্দ্রনাথের
শিল্পায়ীত সৃষ্টি সব।ঝিলম তীরেতে
বলাকার রূপ দেখি।কি চিত্র নির্মম
অসহায় ফটিকের, দূর্বার চরিত্র!
হৈমন্তী ও মৃন্ময়ীর আলোক আঁধার
কাহিনির গভীরতা পাঠক হৃদয়ে
সযতনে চিত্রয়িত বিরহ মিলন
রবীন্দ্রের কারুকাজ খচিত বিস্ময়।
বিচরণে বাদ নেই এ কবি গুরুর
সাহিত্যের কোন শাখা, কি গল্প কবিতা
সমাদৃত উপন্যাস গানের ধারায়।
আমাদের ভাগ্য ভাল পেয়েছি এমন
গুণীজন, নক্ষত্রের আলোক উদ্ভাস,
রতনের রাজি মাঝে অমূল্য রতন।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার তিন তিন
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(ছয়)
হিন্দু ও দুর্গা দেবী
হিন্দুর বিশ্বাসে দুর্গা দশভুজা দেবী
সমগ্র জগত জুড়ে। প্রতিষ্ঠায় ন্যায়,
কৃতীত্ব অসুর বধে। ভক্তের মঙ্গল
বিধানে আসেন দেবী শরতের কালে।
গণেশ কার্তিক লক্ষ্মী সরস্বতী শিব
স্বামী ও সন্তান নিয়ে কৈলাশেতে বাস
সকল দেবতা-দেবী পরিবারে সব,
পূজা ও পার্বণে তারা স্মরণীয় হয়।
দুর্গার প্রকৃত কথা ভক্ত দল প্রতি,
অসুর বিনাশ কর! উল্টা যদি হয়
ভক্তই অসুর, তবে কি উপায় হবে?
ধরায় দেবীর প্রতি অনুগত দলে
খলের আশ্রয় নেই,এসকল জন
নিরন্ত আঁধার যাত্রী, দেবী শত্রু এরা।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণ বিন্যাসঃ তিন তিন দুই চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্র কবিতাটি হিন্দু ভক্তদের অনুরোধে লেখা, তবে খেয়াল রেখেছি যেন আমার বিশ্বাস লংঘন না হয়।
(সাত)
কবি নাঈম জাহাঙ্গীর নয়নের কবিতার সনেট রিমেইক
আশায় উদাস চোখ ভরা গাঙ্গে ফিরে
গুনিয়া নদীর ঢেউ, ভাঙ্গা মনে ক্লান্তি,
অপেক্ষা ক্লান্তির শেষে শান্ত সন্ধা নামে,
গোধুলী রাঙ্গানো হৃদে বাজে কত সুর ।
প্রীতির মায়ার নৃত্যে গুন গুন গান,
মনের আরাধ্য প্রেম বানে ভেসে যায়
হে প্রিয়, অভাগী মনে পাবে কিহে ঠাঁই?
বিরহী ভাবনা অশ্রু নদী পাড়ে ঝরে।
সুরুজ চাঁদের আলো বসন্তের বায়
অঝোর ধারায় ঝরে, মন-প্রাণ ভরে,
ফুলের সুঘ্রাণ স্নাত মানুষের প্রীতি,
যখন কাষ্ঠের মতো পুড়ে হয় ছাঁই,
তখন স্বার্থক হয়ে ভালবাসা কারো,
মনের মানুষ আসে বিশ্বাসের ঘরে।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ তিন তিন দুই চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
কবি নাঈম জাহাঙ্গিরের কবিতা-
মনের মানুষ আসবে ফিরে
কি আশায় উদাস দুচোখ, ভরা গাঙ্গে
কার প্রতীক্ষা, ঢেউ গুনিয়া মন ভাঙে-
রৌদ্র দুপুর শান্ত বিকেল সন্ধ্যা সাজে?
গোধূলি রাঙা হৃদয় কোণে সুর বাজে-
যার মায়ায়, নৃত্যে হিয়া কোন'সে গানে
ক্লান্ত বদন, ভাসো সদা'য় প্রেমো-বানে?
শ্রাবণ ভারী নয়ন ঝরে নদী-পাঁড়ে,
বাঁধবে নাকি ভালোবাসা'য়, স্বপ্ন বাড়ে?
আকাশ জোড়া চন্দ্রসূর্য নিয়ম করে-
জোছনা রোদে মুগ্ধ মানুষ প্রয়োজনে।
গোলাপ বকুল গন্ধে সদা মুগ্ধ করে;
কাষ্ঠ দেখো পরোপকার করছে পুড়ে।
ভালোবাসা রইবে না কভু অবিশ্বাসে,
বিশ্বাসে মনের মানুষ আসবে ফিরে।
(আট)
কবি নাঈম জাহাঙ্গীর নয়নের ‘লগ্ন’ কবিতার সনেটে রূপায়ন
গা-জুড়াতে ঘাটে বসি, কলসিটি কাঁখে
নদী ঘাটে আসে কন্যা, সখিগন সনে
হাস্য মুখ, যেন কোন, ঝর্ণা জলে ধোয়া
মধুময় কথামালা মুগ্ধ করে মন।
হে নয়ন, এ লগ্ন এ বসন্তের বায়
দেখ দেখি মৌন-নদ কল কল বহে,
কন্যা যায় টলমলে কচি-কাঁচা দেহ
সে দিকেই চেয়ে আছে, দুরাচার এক!
কি সুন্দরী! যৌবনেতে দেহখানি ভরা,
কূ-দৃষ্টির ঘেরা টোপ তারে ঘিরে ধরে
কন্যা দেহে অপলক, অনা সৃষ্টি কত!
ওরে বেটা শয়তান, অসভ্যের গুরু!
বিনাশিতে এ জীবন ওরে কেরে তুই?
জেনে রাখ, এ আমার জীবনের সব।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
কবি নাঈম জাহাঙ্গীর নয়নের ‘লগ্ন’ -
নদী-ঘাটে ভর দুপুরে কলসি কাঁখে,
জল আনিতে যাও কন্যা সখির সনে।
হাস্য-উজ্জল মুখটি যেনো ঝর্ণা ঝরে,
মিষ্টি মধুর কথায় যেনো মুক্তা পড়ে ;
মৌন-নদে বইছে পানি কল কলিয়ে।
অঙ্গ ভরা যৌবন যেন-দোলে বাতাসে,
প্রেমো হাওয়া লাগলো বুঝি এ-বসন্তে;
বিস্ময়েতে উদাস দেখা, দুচোখ মোহে।
প্রিয় মুখ দেখে আমার হৃদয় নাচে,
বন্ধু ছাড়া কাঙ্ক্ষিত এই সুখ-বসন্তে;
হিজল ডালে কোকিল ডাকে দূর-বনে,
বিরহে দাহ প্রহর গুলো, মন ফাগুনে।
হৃদয় পোড়া কভু কি আর থামে জলে,
লগ্ন বুঝি মন ভাসাতে প্রেমের বানে।
বিঃদ্রঃ লগ্ন কবিতাও চতুর্দশপদী।
(নয়)
কবি খলিল মাহমুদ (সোনাবীজ অথবা ধুলোবালি ছাঁই )
হে খলিল মাহমুদ গবেষণা লয়ে
সনেটের, আপনাকে সুনির্মল দেখি।
উপদেশ গুলো দেখি মুক্তা রাশি যেন
প্রতিপদে, ঝলমলে রতনের রাজি।
অবলোকে বাড়ে বেলা, মনে হয় কত
সোনাবীজ!অথবা কি ধুলোবালি ছাই
উড়ে উড়ে মনি মুক্তা কপালেতে মিলে,
আপনার উপদেশে, আনন্দীত মন।
কত সুখ ব্যঞ্জনায় চারদিকে আলো,
কেটে যায় একে একে হতাশার মেঘ
অরুণের প্রখরতা প্রতাশিত হয়ে
চার দিক আলো করে প্রশান্তির ঘোরে।
মনে হয় পৌঁছে গেছি সনেটের নীড়ে,
হে শিক্ষক ধন্যবাদ, সাফল্যের সিড়ি!
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(দশ)
কবি খলিল মাহমুদ (সোনাবীজ অথবা ধুলোবালি ছাঁই )
হে খলিল মাহমুদ সাহিত্যের নীড়ে
প্রতিভাত প্রতি দিন, আপনাকে দেখি
যেন কোন পূর্ণচাঁদ! উর্ধ্বে তোলে শীর
এ জমিনে সোনাবীজ, ছায়া দেয় কত!
বন্ধনের বাহু মুক্ত ধুলোবালি ছাঁই
উড়ে চলে আকাশেতে অজানায় যায়
আধারের তলে মিশে। সেথা ফুটে আলো,
মনে লাগে কত ভাল, কি চমক প্রাণে!
সাহিত্যের ওহে সেরা গল্পকার কবি,
নিবন্ধতে অনুপম প্রকাশিতে প্রিয়
অনুভূতি! যেথা পাই আন্তরিক সব
অনুসঙ্গ! আরো কত মন্তব্যের কথা।
এ সামান্য উপহার পরে নিন তবে
শ্রদ্ধা ভরা ফুল মালা, মন শান্তি হোক!
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(এগার)
আহমেদ জি এস ও দেবলীনা
স্যার, আমি দেবলীনা, আপনার লীনা
মনোযোগ দিয়ে পড়ি আপনার সব
কবিতার গুষ্ঠি-জ্ঞাতি। পড়ে থাকি আমি
আপনার কবিতায়, কি কারণ হলে?
‘হাতি উড়ে আকাশেতে’ মজাদার কথা!
মধুখেকো মাছি আসে কবিতার ঘ্রাণে!
কবিতার রাজ্য জয়ী বীর এক দেখে
ক্ষণে ক্ষণে নিত্য আমি বিমোহীত হই।
জিজ্ঞাসিত হয়ে আমি ভাবছি কি বলি?
অজানার কত কথা জেনে হই প্রীত
আপনার কবিতায় সজিবতা আছে!
আহমেদ জি এস হে কবিতায় প্রাণ
থাকে যার অফুরান, যাদু করে পাঠে,
দেবলীনা এটুকুই জানে সদা স্যার।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ নেই
# মাত্রা বর্ণঃ চার চার চার দুই
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(বার)
কবি সুমন কর ও কবিতা ‘তুমি’
এবঙ্গ গৌরব কবি অনন্য সম্পদ
ওবঙ্গে সমান দীপ্ত কি স্নিগ্ধ অপার!
কাব্যতে সুমন করে বলব কি আর
কবিতা ‘তুমি’তে সেটা প্রকট যে পাই।
প্রেয়সি বিহীন ক্ষতে কেমন বিপদ
কেমন সে তারে বিনা জীবন অসার
জীবনে কতটা কার দখল প্রিয়ার
‘তুমি’তে তা’করে পাঠ আকুল সবাই।
ছন্দের অমৃত ভরা কাব্যের এ ছবি
হবেনা পাঠক মন কখনো বিস্মৃত
কবিতা ছুঁয়েছে মন যেমন হে কবি
সাহিত্য ভাস্কর দীপ্তি আকাশ বিস্তৃত।
ছন্দের এধারা যেন কভু না শুকায়
একবি এমন থাক এবঙ্গ তা’চায়।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# অন্তমিলঃ কখখগ কখখগ ঘঙঘঙ চচ
# মাত্রা বর্ণ বিন্যাসঃ তিন তিন দুই তিন তিন
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০১