ব্লগটির উদ্দেশ্য একটাই, কিছু গাধাদের চোখে অঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য যে তারা কত গাধা।
Allah Ke Bande
আল্লাহ্ কে বান্দে
এটা একটা বলিউড মুভি। ফেসবুকের এমন কেউ নেই যে এই মুভি সম্পর্কে নেতিবাচক একটা পোস্ট পড়েনি। যেখানে লিখা ছিলো "মুসলিম হলে শেয়ার করুন। এই মুভিটাই রাসূল (সাঃ) এর চরিত্রে অভিনয় করা হয়েছে। আমাদের ধর্মকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। আল্লাহ্'র নামের সাথে নেংটা মেয়েদের ছবি পোস্টারে দেওয়া হয়েছে। আপনারা প্রতিবাদ গড়ে তুলুন।"
যতদূর জানি এই পোস্টটি প্রথম বাশেরকেল্লায় প্রকাশ করা হয় এবং তারপর থেকে লক্ষ লক্ষ বার শেয়ার করা হয়.....
বিতর্কিত ব্যপারে আমার ইন্টারেস্ট একটু বেশিই। তাই আজ এই মুভিই দেখতে বসলাম। দেখতে লেগেই আমি হতবাক!!!!!!
যে কেউ হতবাক হয়ে যাবে। কেন?? তাহলে মুভির কাহিনী টা শুনুন.....
মুভির কাহিনী শুরু হয় দুটো পথশিশুকে নিয়ে। যার একজনের মায়ের চিকিৎসার জন্য সোনার দোকানে চুরি করে পালানোর সময় সামহাউ একজনের উপর গুলি করে। তার জন্য দুজনের জেল হয়ে যায়।। জেলের নোংরা পরিবেশে বড় হয়ে বেড়িয়ে আসার পর তারা বাচ্চাদের নিয়ে একটা ক্রাইম গ্যাং বানায়। তারা সেই শহরে বিভিন্ন ক্রাইম করতে থাকে।। গ্যাংয়ে-গ্যাংয়ে লড়াই, পুলিশে-গ্যাংয়ে লড়াই চলতে থাকে। অবশেষে দুই জনের মধ্যে একজন মারা যায় আর একজন সঠিক পথে ফিরে আসে......
এই হলো মুভির কাহিনী।।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে.....
আল্লাহ্'র নামের সাথে কোথায় নেংটা মেয়ের ছবি?? যেখানে মুভিতে মাত্র একটা মেয়ে চরিত্র তাও আবার দুই মিনিটের। পুরো মুভিতে একটা খারাপ দৃশ্য নেই সেখানে পোস্টারে কিভাবে নেংটা মেয়ের ছবি আসবে??
যেখানে মুভির সাথে কোন ধর্মের কোন সম্পর্কই নেই সেখানে কিভাবে কেউ বলতে পারে যে রাসূল (সাঃ) চরিত্র দেখানো হয়েছে।। কিসের ভিত্তিতেই বা বলা হয়েছে এই মুভির মাধ্যমে ধর্মে আঘাত করা হয়েছে?? আর কিসের জন্যই বা প্রতিবাদ করতে বলা হয়েছে??
উত্তর খুবই সোজা। এক শ্রেণীগত মানুষ সবসময় চেষ্টা করে মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে।। মানুষে-মানুষে, ধর্মে-ধর্মে, দেশে-দেশে ক্যাচার তৈরি করাই এদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।। কিন্তু যারা এটা অন্ধের মত শেয়ার করলো তাদের আমরা কি বলতে পারি?? ডাম্ব?? জানতাম মানুষ অনেক ডাম্বিশ হতে পারে, কিন্তু তার একটা লিমিট থাকে। কিন্ত না, আমি ভুল ছিলাম। মানুষের ডাম্বিশ হওয়ার কোন লিমিট নেই।। আনলিমিটেড প্যাকেজে মানুষ ডাম্ব হতে পারে.....
যারা এই ধরনের পোস্ট লিখছে সমাজে ফিৎনা তৈরি করার জন্য তাদের বলতে চাই, আপনারা পোস্টেই বলেন "মুসলিম হলে শেয়ার করুন"। একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন তো আপনি নিজে কতটা মুসলিম। যদি মুসলিম হতেন তবে মিথ্যা ছড়িয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারতেন না।। আল্লাহ্ কে ভয় করুন। হাশরের দিন জবাব দিতে পারবেন না যদি আপনার জন্য একটি নিরপরাধ মানুষের ক্ষতি হয়।।
আল্লাহ্ বলেন, "ফিতনা-ফাসাদ হত্যার চেয়েও জঘন্য।" - (সূরা আল্-বাকারা : ১৯১)
"তোমরা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা করবে না, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।' - (আল্-কাসাস : ৭৭)
একে তো আপনি জঘন্য খারাপ কাজ করছেন তার উপর ইসলাম কে ব্যবহার করে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। আল্লাহ্'র নাম দিয়ে মিথ্যা বলছেন।। কত্তবড় পাপ হচ্ছে একবার ভেবেছেন?? তাহলে একবার চিন্তা করুন আপনার উদ্দেশ্য কতটা খারাপ। যদি সত্যিই আল্লাহ্'র রাস্তায় থাকেন তবে সত্য বলুন। সত্যের পথে চলুন। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে জয় করা যায় না।।।।
আর যেই গাধারা অন্ধের মত কিছু না যাচাই করেই এসব গুজব ছড়িয়েই যায় তাদের প্রতি কিছুই বলার নেই। কারন আপনারা এতই ডাম্বো যে এসব মাথায় ঢুকবেই না.... শুধু করুনা হয় আপনাদের প্রতি যে আল্লাহ্ তায়ালা আপনাদের মাথায় বুদ্ধি নামক বস্তু না দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছে।। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। কেন জানেন তো?? কারন আল্লাহ্ মানুষের মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান দিয়েছেন। মানুষ হতে হলে মানুষের সেইসব বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় যা আপনাদের মধ্যে নেই... সুতরাং আপনাদের কাছে কিছু আশা করাও অরণ্যে রোদনের সমতুল্য।।।
আর সাধারণ পাবলিককে একটা কথায় বলবো, গুজবে কান দেবেন না। যদি দরকার হয় সহজ ইন্টার্নেটের যুগে একটু গুগল করেই নিন। কারন বঙ্গালী গুজব ছড়ানোর ওস্তাদ।
সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ্ সবাইকে হেদায়েত দান করুক....
- Sakhawat Hossain Sonnet
23-11-2014

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



