somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবী মুহাম্মদের সাথে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও ইসলামের অজানা তথ্য।

১০ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইসলামের নবী মুহাম্মদ এর শিশু তিনটি পুত্র এবং চারটি কন্যা ছিল। দাসী মারিয়া আল-কিবতিয়া এক পুত্র জন্ম দেন এছাড়াও মুহাম্মদের প্রথম স্ত্রী খাদিজা বিনত খয়ল্লিদ বাকি সন্তান জন্মদেন। নবী মুহাম্মাদ তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপটেও অনেক স্ত্রী অনুরাগী ও সন্তান বৎসল ছিলেন।নবী মুহাম্মাদ ছিলেন খাদিজার তৃতীয় স্বামী। ইব্রাহীমের মাতাকে তিনি বিবাহ করেননি।

মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন নবীর ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন, আল্লাহ নবী মুহাম্মদের পালিত পুত্রের সাবেক স্ত্রীর সাথে তালাক হওয়ার পর নবী যখন তাকে বিবাহ করতে লজ্জা পাচ্ছিলেন, তখন তার লজ্জা ভেংগে আল্লাহ পাক সয়ং নবী মহাম্মাদ এবং জয়নাবের বিয়ে পরিয়ে দেন। (সুরা আহজাবঃ আয়াত ৩৭, আল কুরান)

এছাড়া যখন জয়নাবের সাবেক স্বামী যায়েদকে যায়েদ বিন মুহাম্মদ ডাকা হত, যয়নাবের স্বামী হিসেবে নবী মুহাম্মাদ বিব্রত বোধ করতেন, তখন আল্লাহ পাক আয়াত নাজীল করেন যায়েদ কে এখন থেকে মুহাম্মাদের পুত্র বলে ডাকা যাবেনা। (সুরা আহজাব আয়াতঃ ৪০, আল কুরান)। সকলেই তখন তাকে যায়েদ বিন হারেসা ডাকতে শুরু করলেন।

আল্লাহ পাক নবী মুহাম্মদ এর ব্যক্তিগত জীবনের ছোট ছোট বিষয়ে আয়াত নাজীল করেছেন যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, এতে পরিস্কার হবে নবী মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌ তায়ালার নিকট কত প্রিয় ছিলেন।

আমরা একটু এক নজরে দেখে নেই নবী মুহাম্মাদের সন্তানদের নাম। তারপর আলোচনায় ফিরে যাচ্ছি।

নবী মুহাম্মদের সন্তান হলেন ঃ

১.ফাতেমা বিন মুহাম্মদ

২.রুকাইয়া বিন মুহাম্মদ

৩.জয়নব বিন মুহাম্মদ

৪.উম্মুল কুলসুম বিন মুহাম্মদ

৫.ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মদ

৬.আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ

৭.কাসিম ইবনে মুহাম্মদ


নবী মুহাম্মদের ঘটনা বহুল নবুয়ত জীবনের প্রথম দশ বছর মক্কা বিজয়ের আগে আল্লাহ পাক সবর করার নির্দেশ দিয়েছেন, আর শেষ ১৩ বছর বেশ শক্তিমত্তার সাথে কাফের দের মোকাবেলা ও হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া নানা যুদ্ধজয়ে আল্লাহ পাকের গায়েবি মদদ ছিল বলে ধারনা করা হয়।

এছাড়া তিনি দাসী মারিয়া কিবতিয়ার ঘরে বেশী রাত কাটাতেন বলে, আয়েশা ও হাফসা রুষ্ট হন, তারপর তিনি দাসী মারিয়া কিবতিয়ার ঘরে যাওয়া বন্ধ করে দেয়াতে আল্লাহ মনঃক্ষুণ্ণ হন এবং আয়াত নাজীল করেন
"হে নবী! আল্লাহ্ আপনার জন্য যা বৈধ করেছেন আপনি তা নিষিদ্ধ করছেন কেন? আপনি আপনার স্ত্রীদের সস্তুষ্টি চাচ্ছেন; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" (সুরা আল তাহরীম আয়াত ১, আল কুরান)। অতঃপর তিনি আবার দাসী মারিয়া কিবতিয়ার ঘরে গেলেন।

আয়েশা যখন মরুভূমিতে বানুল মুস্তালিক যুদ্ধ তে যাওয়ার পথে সোনার হার হারিয়ে ফেলেন সোনার হার খুজতে গিয়ে কাফেলার সাথে যেতে পারেননি, কিছুক্ষণ পর হার খুজে পেয়ে তিনি কাফেলা খোজার চেষ্টা না করে মরুভুমিতেই ঘুমিয়ে যান। ঘটনাচক্রে একজন ঘুমকাতুরে সাহাবি সাওয়াফ বিন মুয়াত্তাল ভুল বশত ঘুমিয়ে থাকেন ঠিক ঐ যায়গায় এবং তিনিও কাফেলার সাথে যেতে পারেননি, তারা মরুভুমিতে একাকী থেকে যান। পরবর্তীতে কাফেলার সাথে যোগ দিলে আব্দুল্লা ইবনে উবাই এর নেতৃত্বদানে সহ অন্যরা কুৎসা রটাতে থাকে, ইবনে উবাই ক্ষমতা বান হওয়ায় অন্যদের বেত্রাঘাত করা হয়, উবাইকে ছেড়ে দেয়া হয় এতে উমার রুষ্ট হন।

আলী আয়েশার তালাক ও বিচার চান, তবে আয়েশাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিলেও পরবর্তীতে আল্লাহ অহী পাঠান সুরা নুরে(আয়াত ১১ -২০) আয়শা নির্দোষ শিকার তা জানিয়ে দেন। এই ঘটনার রেশে নবী মুহাম্মাদের ইন্তেকালের পর আলী ও আয়েশার মধ্যে যুদ্ধ হয় যা প্রথম ফিতনা বা উটের যুদ্ধ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে আলী ও আয়েশা দুজনেই আততায়ীর হাতে নিহত হন।

(আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আম্মার (রাঃ) কূফার (মাসজিদের) মিম্বরে দাঁড়ালেন এবং তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) - ও তাঁর সফরের কথা উল্লেখ্য করলেন। এরপর তিনি বললেন, তিনি (‘আয়িশাহ (রাঃ)) দুনিয়া ও আখিরাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পত্নী। কিন্তু বর্তমানে তোমরা তাঁকে নিয়ে ভীষণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬২০)
সহিহ বুখারি।)

আয়েশা ছিলেন এক তেজস্বী মহিয়সী নারী, তিনি খেলাফতের মসনদে বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি।

মুহাম্মাদের চাচা আবু লাহােবর পাপী স্ত্রী কবলেলন, ‘আমরা আশা
করিছ তোমার ভেতেরর শয়তান তোমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।’ সেটি ছিল বাণী নাজেল বিঘ্ন হবার সময়কালীন ঘটনা। সে-সময়
নবী এতটাই নিরাশ আর বিপর্যস্থ ছিলেন যে, পাহাড় চূড়া থেকে আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছিলেন।
ধারণা করা হয় ওহী নাজিলে বিঘ্ন ঘটেছিল, তখন আল্লাহ সুরা দোহা নাজিল করেন।

শপথ পূর্বাহ্নের, [ সুরা দুহা ৯৩:১ ]

শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়, [ সুরা দুহা ৯৩:২ ]

আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি। [ সুরা দুহা ৯৩:৩ ]

যখন নবীকে বলা হচ্ছে আপনী যা শোনাচ্ছেন তা প্রাচীন উপকথা, তাওরাত ও ইনজিলের থেকে নেয়া, আমরা আগে থেকেই জানি, আল্লাহ অহী পাঠালেন, সুরা ফুরকান ঃ

৪.) যারা নবীর কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তারা বলে, এ ফুরকান একটি মনগড়া জিনিস, যাকে এ ব্যক্তি নিজেই তৈরি করেছে এবং অপর কিছু লোক তার এ কাজে তাকে সাহায্য করেছে। বড়ই জুলুম ও ডাহা মিথ্যায় তারা এসে পৌঁছেছে।



৫.) বলে, এসব পুরাতন লোকদের লেখা জিনিস- যেগুলো এ ব্যক্তি লিখিয়ে নিয়েছে এবং তা তাকে সকাল-সাঁঝে শুনানো হয়।

উম্মে শারিক যখন নবি মুহাম্মাদের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন , আয়েশার প্রবল বাধায় সুরা আহজাবের আয়াত নাজিল হয়। (আহজাব ৫১-৫২) যে মুমিন নারী নবীর নিকট নিজেকে সমর্পণ করে তাকে ভোগ করা নবীর জন্য বৈধ।

মহীয়সী নারী আয়েশা বলেন, (সহী বুখারী ভলিউম ৭ বুক ৬২ নাম্বার ৪৮)," হে নবী আপনার ইচ্ছা পূর্ণ করতে আল্লাহর একদমই দেরী হয় না"।

আল্লাহপাক এমন অনেক কাজেই নবী মুহাম্মাদের সাথে ছিলেন, এবং ওহী নাজিল হয়েছে। আমাদের সবাইকে আল্লাহ পাক উত্তম বুঝ দান করুন। আমিন।



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:১৪
৪১টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×