পড়াশুনা আর কাজের ব্যস্ততার চাপে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। অনেক দিন থেকেই ভাবছি একটু সুযোগ পেলেই কোথাও ঘুরতে যাবো। আমি থাকি টরন্টো শহরের ব্যস্ত এলাকা ডাউন টাউনে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার 'দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া' লাইনের মতোই হঠাৎ মনে পড়ে গেল, আমার বাসার একদম কাছের দর্শনীয় একটি স্থান, যার নাম অনেকের মুখে অনেকবার শুনেছি, যেখানে যাবো যাবো করেও যাওয়া হয় নাই, আজকে সেই স্থান দিয়েই আমার সামারের ঘোরাঘুরিটা শুরু করতে হবে। জায়গাটার নাম হলো রয়্যাল ওন্টারিও মিউজিয়াম , সংক্ষেপে ROM. পাঠক, চলুন তাহলে আমার কাঁচা হাতের তোলা ছবিতে ঘুরে আসি ROM থেকে।
সকাল সাড়ে দশটার দিকে 'সেন্ট জর্জ' সাবওয়ে স্টেশন থেকে বের হয়ে ব্লুর স্ট্রীটে উঠতেই চোখে পড়লো রয়্যাল ওন্টারিও মিউজিয়ামের অদ্ভূত রকম বিল্ডিংটি। আজ যেহেতু বৃহষ্পতিবার (১৭ জুলাই), তাই মনে হয় ভিড়টা একটু কম। টিকিট কাটার লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় ৭০ ডলার দিয়ে টরন্টো সিটি পাস কিনে নিলাম একটা। এই সিটি পাস দিয়ে আমি এবার টরন্টো শহরের ৫ টি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান দেখতে পাবো: ROM, ক্যাসালোমা, টরন্টো চিড়িয়াখানা, সি.এন. টাওয়ার এবং ওন্টারিও সাইন্স সেন্টার। শর্ত হলো, যেদিন প্রথম এই পাসটি ব্যবহার করবো, সেদিন থেকে ৯ দিন পর্যন্ত পাসটি ভ্যালিড থাকবে। পাস কেনার উদ্দেশ্য হলো, ওই ৫ টি যায়গায় পাস ছাড়া পৃথকভাবে গেলে খরচ বেশি পড়ে। তবে উল্লেখিত ৫টি জায়গার প্রায় সবগুলোতেই এই সিটি পাস ’জেনারেল অ্যাডমিশন’ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ, অতিরিক্ত কিছু দেখতে গেলে অতিরিক্ত ডলার গুণতে হবে। যেমন ROM এর ’ফরবিডেন সিটি’ -তে ঢোকার জন্যে অতিরিক্ত ১১ ডলার দিতে হলো।
টরন্টো সিটি পাস
'ফরবিডেন সিট'’ -তে ছবি তোলা নিষেধ বলে রিস্ক নিয়ে কোন ছবি তুললাম না। এবার চলুন শুরু থেকে দেখি ROM –এর বাইরে থেকে ভেতর পর্যন্ত কি কি ভেল্কি আছে।
ROM-এর বাইরে থেকে তোলা ছবি:
১.
২.
৩.
এবার ROM-এর ভেতরে ঢুকে পড়লাম:
১.
২.
৩.
৪.
৫.
৬.
ROM-এর ভেতরের ছয় মিলিয়নের ওপরে বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখার জন্যে আটটি সেন্টার অব ডিসকভারি রয়েছে: আ্যানশিয়েন্ট কালচার, বায়োডাইভার্সিটি, কনটেমপোরারি কালচার, কানাডা, আর্থ অ্যাণ্ড সাইন্স, ফসিলস অ্যাণ্ড ইভোল্যুশন, টেক্সটাইল অ্যাণ্ড ফ্যাশন এবং ওয়ার্ল্ড আর্ট অ্যাণ্ড কালচার। বর্ণনার সুবিধার্থে আমি আমার ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলোকে নিজের মতো ক্যাটাগরাইজেশন করে দিলাম।
প্রথমেই চাইনিজ অ্যানশিয়েন্ট কালচার:
১.
২.
৩.
৪.
৫.
৬.
৭.
৮.
৯.
১০.
১১.
১২.
চীনের পূরাকীর্তির ঠিক পরেই রয়েছে প্রাচীন কোরিয়ার কিছু নিদর্শন:
১.
২.
৩.
৪.
৫.
চৈনিক পূরাকীর্তির আরও কিছু ছবি:
১.
২.
৩.
৪.
৫.
৬.
৭.
এখন চলুন অ্যানিমেল সেকশন থেকে ঘুরে আসা যাক। জীবন্ত পশুপাখিকে ধরে প্রিজার্ভ করে রেখেছে এখানে।
১.
২.
৩.
এটা উটপাখির ডিম
৪.
৫.
৬.
৭.
৮.
৯.
১০.
১১.
১২.
১৩.
১৪.
বাচ্চাদের জন্যে এই মিউজিয়ামটি অনেক বেশি শিক্ষণীয়। টরন্টোতে স্কুল থেকে বাচ্চাদেরকে ফ্রি পাস দেওয়া হয় যেন তারা দলবেঁধে আসতে পারে অসাধারণ সুন্দর এই জাদুঘরে।
১.
২.
৩.
মিশরীয় সভ্যতার পাশেই রয়েছে প্রাচীন গ্রীসের সব দুর্দান্ত স্মৃতি চিহ্ন:
এবার প্রাচীন গ্রীসের কিছু পূরাকীর্তির ছবি:
১.
২.
৩.
৪.
এবার আর্ট গ্যালারী ঢুকলাম:
১.
২.
ফ্লোরের ছবি
এই গ্যালারীরর শুধু একপাশের ছবিগুলো দিলাম। (একসাথে এত বেশি ছবি সামুতে দেওয়া যাবে কিনা, আমি সন্দিহান।)
১.
২.
৩.
৪.
৫.
৬.
৭.
৮.
৯.
এই বেঞ্চটাতে বসে পাশের সুইচ টিপলে ভয়েসে রেকডকৃত ইতিহাস শুনতে পাবেন।
এখন চলুন কানাডিয়ান নেটিভদের জীবনযাত্রার উপর কিছু ছবি দেখি:
১.
এই ধরণের নৌকা তারা ব্যবহার করতো
২.
প্রচণ্ড শীতে এই ভাল্লুকের মতো ড্রেস তারা পড়তো
৩.
তাদের ব্যবহৃত জিনিস
৪.
৫.
এখন আমরা যাব প্রাচীন মিশরের গ্যালারীতে। জীবনে প্রথম কাছ থেকে মিশরীয় 'মমি' দেখে আমি আসলেই খুব 'এক্সাইটেড'।
১.
২.
এইটা একটা বিড়ালের 'মমি'
৩.
বিড়ালের মমিটা আরেকটু কাছ থেকে
৪.
লাশ বহনের জন্যে খাটিয়া
৫.
পশুপাখির মমি
এইবার দিলাম আসল মানুষের মমি:
মমিগুলো দেখে আমার একটু একটু ভয় লাগছিল
ঘুরতে ঘুরতে ঘড়িতে সময় দেখি প্রায় ৩ টা বাজে। বাসায় যাবার সময় হয়ে এলো। মিউজিয়াম থেকে বের হবার সময় দেখি ওদের একটা স্যুভেনির দোকান। ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারলামনা:
১.
এই দোকান থেকে জিনিস কিনতে হলে নির্ঘাত মিলিওনিয়ার হতে হবে। আগুন দাম সব জিনিসপত্রের
২.
৩.
৪.
৫.
৬.
৭.
৮.
৯.
পুনশ্চ: সময়াভাবে সবগুলো ছবির ক্যাপশন দেওয়া আপাতত: সম্ভব হলোনা। ধীরে ধীরে সেটা করার চেষ্টা করবো। সবাইকে শুভেচ্ছা।