ক্রিং ক্রিং, ক্রিং ক্রিং
আমিঃ হ্যালো
অপর প্রান্তঃ হ্যালো দোস্ত, কই তুই।
আমিঃ এ্যা!! কে??
অপর প্রান্তঃ আমি মইনুল, মানে বাবু।
আমিঃ বাবু!! পেটলা বাবু???
বাবুঃ যা বেটা। এখন বড় হইছি, এখনো যদি তোরা এইসব কস। আইচ্ছা তুই কই?কি করস?
আমিঃ আইফেল টাওয়ারের উপরে, পা ঝুলিয়ে চা আর বিড়ি খাইতাছি।
বাবুঃ ফাজলামি করস।
আমিঃ শুরুটা করছে কে? তুই ল্যান্ড ফোনে কল দিয়া জিজ্ঞাস করস আমি কই!!!
বাবুঃ হে হে। (বিদঘুটে হাসির শব্দ)তোরে ল্যান্ড ফোন কলকরছি, যাতে শিউর হইতাম পারি তুই কই আছস। মোবাইলে কল দিলে তো কবি এই জায়গা-ঐজায়গা।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে বল ফোন দিসিস ক্যান?
বাবুঃ হে হে (আবারো বিদঘুটে হাসির শব্দ) দোস্ত আইজ একটা বিশেষ দিন, তাই ভাবলাম তোর সাথে দেখা করি। পার্টি টার্টি দিবিনা??
আমিঃ পার্টি??? ক্যান ?
বাবুঃ হে হে (আবারো গা জলানো বিদঘুটে হাসির শব্দ) মজা লইসা না "হাউ*র নাতি।এমন ভাব করতাছস যেন কিছুই জানোস না। এই দিনে তুই প্রথম প্রেমের প্রপস পাইছিলি। আমি তো সাথেই ছিলাম। ইশ!!! শশি মাইয়াডা ভালাই আছিল।
আমিঃ হারামজাদা।
বাবুঃ গালি দেস ক্যা?? আমি যখন ছ্যাকা কাইছিলাম তখন তো সবাই মিলে “বিশ্ব ছ্যাকা দিবস” পালন করছিলা মনে নাই?
(আমি ফাটাবেলুনের মত চুপসিয়ে গেলাম।)
আমিঃ ইয়ে মানে আজকে এক সুন্দরি রমনির সাথে আমার ডিনারে যাওয়ার কথা।
বাবুঃ হা হা (এবার পিত্তি জ্বলানো ওট্রহাসি) এই সব পুরানো ট্রিক্স বাদ দাও মামু।
আমিঃ সত্যি, কসম। ঐযে বায়িং হাউজ মেয়ের কথা বলছিনা? উনার সাথে যাব।
বাবুঃ জানি জানি, এবং এটাও জানি যে তুই যাবি না।
আমিঃ তরে কইছে ক্যাডা??
বাবুঃ কে আর কইব, “মালেকা হামিরা’র” হাজবেন্ড মানে তোর “দুলাভাই” কইছে। দোস্ত একটা হাছা কথা ক তো? তুই নাকি কার প্রেমে পড়ছস??
আমিঃ প্রেমে!!!!! আমি!!!! বুঝলাম বিয়ের পর তোর মাথা পুরাটাই গেছে।
বাবুঃ দুলাভাই তো কইল, তোদের "সাথের" কোন মেয়েরে নাকি তুই পছন্দ করছস।
আমিঃ ইয়ে মানে ঠিক তা না, এক বড় ভাই টাইপের বন্ধু কইল “উনার” কথা। আর দেখলাম ভালই। আমি যে রকম চাই সে রকমই।
বাবুঃ একদম “শাবানা” টাইপের মেয়ে?
আমিঃ হুম
বাবুঃ মারহাবা মারহাবা। দোস্ত আজই বিয়া কইরা ফালা।
আমিঃ ফালাইয়া দিমু????? বিয়া করলে আবার ফেলে দিমু ক্যান???
বাবুঃ (আবারো হাসির শব্দ।) না কইছিলাম কি, আজ এই দিনেই বিয়াটা করলে ভালাই হইত। মেয়েরে কল দে।
আমিঃ হা হা (এবার আমার হাসার পালা) দোস্ত, দুনিয়াটা কি তোর আর আমার মত “ এত সহজ”।
বাবুঃ মাইয়ার বাসা কই??
আমিঃ তোদের এলাকায়, এবং সম্ভাবত তুই চিনস। তোদের বন্ধুদের অনেকেই চিনে (রহস্য জনক হাসি দিলাম)
বাবুঃ কস্কি তুই?? নাম কি????
আমিঃ বলা জাইব না। তয় এবার ফোন রাখি। কাজ আছে, তুই কই?
বাবুঃ তোর অফিসের নিচে, মানে স্টারের সামনে। তুই চলে আয়।
আমিঃ (দির্ঘশ্বাস ছেড়ে) থাক আইতাছি।
কইজান??? কাহিনি আভিতাক বাকি হে মেরা দোস্ত। । । ।
দুই ফ্রেন্ড মিলে ৫প্লেট কাচ্চি আর দুইটা রেজালার “উত্তম ব্যাবহার” করে রাস্তায় নামলাম।
বাবুঃ দোস্ত, এইবার চা সিগেরেটের বিলটা না হয় আমিই দেই, তুই না করিস না।
আমিঃ “না” কোরব ক্যান? তোর মত “খাটাশ” যে এই “সামান্য” বিল দিতে চাইসস এতেই আমি মুগ্ধ।
বাবুঃ হে হে। দোস্ত, তুই যে আমরে খাওয়াইলি একথা কি ফেবুতে লিখবি? তোর তো অভ্যাস খারাপ, কিছু হইলেই ফেবুতে “স্টাটস” দেস।
আমিঃ দিলে সমস্যা কি?
বাবুঃ দিস না, তোর ভাবী আবার তোর পোস্ট মজা কইরা পড়ে। আমি যে কাচ্চি খাইছি এটা শুনলে আমারে আস্তা রাখব না।
আমিঃ তইলে খাস ক্যা?
বাবুঃ কি করুম দোস্ত। বউ আমারে কিছু খেতে দেয় না। সারাদিন কয় আমি নাকি “জল হস্তীর” মত ফুলতাছি। সকালে ২পিস রুটি আর রাতে ২ পিস শুকনা রুটি দেয়। রাস্তার বা বাহিরের কিছু খেতে দেয় না।
আমিঃ কস্কি বাবু??
বাবুঃ আর কি কই। বেতনের টাকা পুরাটাই সে নিয়ে যায়। সাথে বাড়ী ভাড়াও সে ঊঠায়। আমার কাছে কোনো টাকা থাকে না। আর সারাদিন শাক সব্জি-ভেজিটেবল রান্না করে। দোস্ত তুই ক, আমাদের মত ভোজন রসিক’রা কি এই “ঘাস পাতা” খাইতে পারে।
পাক্কা ২ মিনিট নিরবে বিড়ি টানলাম।
বাবুঃ তোরে একটা কথা কই দোস্ত, আমার কথাটা রাখিস।
কোনো দিন বিয়া করিস না। করছস তো মরছস। জীবনটা পুরা ডাইল বানাইয়া ফেলবে। সেটা “শাবানা” হোক আর “শ্রীদেবি” হোক। নিজের স্বাধিনতা বলতে কিছু থাকবে না।
অতপর ছোটবেলার দুই বন্ধু গলা জরিয়ে ধরে বিড়ি টানতে টানতে এই সিধ্যান্তে উপনিত হলাম যে,
বিয়া করা ভাল না। খাল কেটে কুমির আনা উচিৎ না। যেই হালায় বিয়া করছে, সেই হালাই মরছে (প্রমানিত)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



