somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কে পাচ্ছেন সাহিত্যে নোবেল ২০১৪

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার আসলে সাহিত্য প্রেমিকরা একটু নড়েচড়ে বসেন। পেশাদার বা সৌখিন সাহিত্য চর্চাকারীরা শুরু করেন নানা দেশের সাহিত্যিকদের খোঁজ খবর। কেননা এই দিন সকল গোপনীয়তার অবসান ঘটিয়ে প্রকাশ করা হয় সাহিত্যে নোবেল পাওয়া মানুষটির নাম।

কে পাচ্ছেন ২০১৪ সালে সাহিত্যে নোবেল?

এ প্রশ্নের উত্তরে সম্ভাব্য তালিকার প্রথমে চলে আসে কেনিয়ার সাহিত্যিক Ngugi Wa Thiong'o এর নাম। সম্প্রতি লন্ডনের দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকায় কেনিয়ার নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গোর নোবেল প্রাইজ পাওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

১৯৩৮ সালে কেনিয়ায় জন্ম নেয়া সাহিত্যিক নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গো বর্তমানে University of California র ইংরেজি সাহিত্যের একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক। তিনি কেনিয়ার সমাজের অসাম্য নিয়ে লিখিত Ngaahika Ndeenda (I Will Marry When I Want) নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর নগুগিকে যখন আটক করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়, তখন তিনি কারা অভ্যন্তরে টয়লেট পেপারে লিখেছিলেন উপন্যাস Caitani Mutharabaini (Devil on the Cross), আর এই উপন্যাসটি নোবেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাঁকে এগিয়ে রাখছে। যদিও সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় হলে তাঁর নাম শোনা যায় বেশ জোরেসরে। ২০১০ সাল থেকেই তিনি নোবেল কমিটির চুড়ান্ত তালিকায় উঠে আসলেও শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি নোবেল পাওয়ার সম্মান।
কেনিয়ার জনপ্রিয় এই সাহিত্যিকের রচিত বইগুলো সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুণ http://www.ngugiwathiongo.com/bio/bio-home.htm
তালিকার ২য় স্থানে আছেন জাপানী সাহিত্যিক Haruki Murakami


গত বছর তাঁর নাম শোনা গেলেও মূলত তিনি আলোচনায় এসেছিলেন ২০১২ সালে। ওই সময় মুরাকামি হেরেছিলেন চীনা ঔপন্যাসিক মো ইয়ানের কাছে, যাঁর লেখা বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আমেরিকার পাঠকদের কাছে তিনি একটি পরিচিত নাম। পক্ষান্তরে মুরাকামি আমেরিকার পাঠকদের সঙ্গে কম পরিচিত। কিন্তু এই দুই বছরে এ বিষয়ে মুরাকামির অগ্রগতি ঘটেছে অনেকখানি। তবে সেই অগ্রগতির সম্ভাবনা কতটুকু, তা একমাত্র সময় বলে দিতে পারে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনার কথা প্রকাশিত হয়েছে।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন Svetlana Aleksijevitj
ইউক্রেনের একজন সাংবাদিক এবং জনপ্রিয় লেখিকা

Svetlana Aleksijevitj এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রাশিয়া ও আফগান যুদ্ধের ওপর রচিত তাঁর একটি আলোচিত বইয়ের নাম হলো The Boys in Zinc. দীর্ঘ চার বছর আফগান সীমান্তে অবস্থান করে তিনি এই বইটি রচনার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। সেভেতলানা এলেক্সিয়েভিচ এর নাম এবারই প্রথম এসেছে সাহিত্যে নোবেল প্রদানের সম্ভাব্য তালিকায়।
আরবি সাহিত্যির জনপ্রিয় কবি সিরিয়ার অ্যাডোনিস (আলী আহমদ সাঈদ) আছেন এবারের তালিকায়। ২০১১ সালে তিনি জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ গ্যেটে সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।

তিনি ১৯৩০ সালে সিরিয়ার এক পার্বত্যাঞ্চলীয় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালে সিরিয়ায় ইসরাইল আগ্রাসন চালালে অ্যাডোনিস ফ্রান্সে চলে আসেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশ্বসাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ এই কবি নাম নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের জন্য উচ্চারিত হচ্ছে।
১৯৪৮ সাল থেকে তিনি অ্যাডোনিস নামে পরিচিত হওয়া শুরু করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। ১৯৫৪ সালের পর সিরীয় সোশ্যালিস্ট ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য হোন। সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ায় তিনি ৬ মাসের কারাভোগ করেন। ১৯৭৩ সালে কাদিস ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭০-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত "ইউনিভার্সিটি অব লেবাননে"আরবি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আবার ১৯৭৬ সালে দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপকও ছিলেন।
মরমীবাদ তার কবিতা দর্শনের অন্যতম আকর্ষণ।
আলবেনিয়ার সাহিত্যিক ইসমাইল কাদেরের গত বছরেও আলোচনার র্শীষে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর ভাগ্যে জোটেনি নোবেল প্রাইজ। এবছরেও তাঁর নাম উচ্চারিত হচ্ছে বেশ জোরেসোরে।

নোবেল বাজিকররা ইসমাইল কাদেরকে সম্ভাব্য তালিকার চতূর্থ স্থানে রেখেছেন ।
গতবারের মতো এবারও আমেরিকার করম্যাক ম্যাকার্থি, থমাস পিনচন ও জয়েস ক্যারোল ওটসের নাম শোনা যাচ্ছে। উপন্যাস, ট্রাভেলগ, কাব্যগ্রন্থ, আত্মজীবনী মিলিয়ে প্রায় দেড়শতাধিক বইয়ের লেখক দক্ষিণ কোরিয়ার কো উন কে স্মরণ করেছেন অনেকে। অপরদিকে সোমালিয়ার নুরুদ্দিন ফারাহ, ইসরায়েলের লেখক অ্যামোজ ওজের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। পর্তুগিজ লেখক অ্যান্তোনিও লোবো অ্যান্তোনাসকে নিয়ে প্রত্যাশা রয়েছে সে দেশের মানুষের।
পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত আমেরিকার ঔপন্যাসিক রিচার্ড ফোর্ড, স্পেনের ঔপন্যাসিক, অনুবাদক ও কলামিস্ট জেভিয়ার মারিয়াস এবং নরওয়ের নাট্যকার জন ওলাভ ফসির মধ্যে কেউ একজন পুরস্কারটা পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।


মার্কিন লেখক রিচার্ড ফোর্ড ২০১৩ সালের ফ্রান্সের বিখ্যাত ফেমিনা পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় এবছর নোবেল পেয়ে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। 'প্যারালাল স্টোরিজ' খ্যাত হাঙ্গেরির পিটার নাদাস ও চিনের বেই দাও- উভয়েরই সম্ভাবনা আছে বেশ।

হাঙ্গেরির সাহিত্যিক Péter Nádas এর সম্ভাবনার বিষয়টি উচ্চারিত হচ্ছে সে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে। অপরদিকে আমেরিকার ঔপন্যাসিক ডন ডেলিলো এবং ইতালির উমবার্তো একো পিছিয়ে থাকলেও তাদের কেউ একজন পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন বলে দাবি করেছে ইতালিবাসী।


উমবার্তো একো ইতালিয়ান ঔপন্যাসিক, দার্শনিক ও সমালোচক। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য নেইম অব দ্য রোজ’-এ বলেছেন—‘আমরা বইয়ের জন্য বেঁচে থাকি।’ এই ঔপন্যাসিক ইতালির একটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিওটিকসের সাইন অ্যান্ড সিম্বল স্টাডি অধ্যাপক। বেশ কয়েক বছর ধরে নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাবিত হয়ে আসছে। এ বছরও নামটি বেশ আলোচিত। তাঁর তৃতীয় উপন্যাস ‘দ্য আইল্যান্ড অব দ্য ডে বিফোর’
হয়তো কোন একদিন এমনই সৌভাগ্যের দিন চলে আসতে পারে আমাদেরও। সামু ব্লগে লেখালেখি করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা লেখক-লেখিকাদের কেউ কেউ চলে আসতে পারেন নোবেল পাওয়ার সম্ভাব্য আলোচনায়। সেদিনও সামু ব্লগের সেইসব ভাগ্যবান মানুষদের নিয়ে নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনার গল্পটা আমিই লিখবো।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×