প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার আসলে সাহিত্য প্রেমিকরা একটু নড়েচড়ে বসেন। পেশাদার বা সৌখিন সাহিত্য চর্চাকারীরা শুরু করেন নানা দেশের সাহিত্যিকদের খোঁজ খবর। কেননা এই দিন সকল গোপনীয়তার অবসান ঘটিয়ে প্রকাশ করা হয় সাহিত্যে নোবেল পাওয়া মানুষটির নাম।
কে পাচ্ছেন ২০১৪ সালে সাহিত্যে নোবেল?
এ প্রশ্নের উত্তরে সম্ভাব্য তালিকার প্রথমে চলে আসে কেনিয়ার সাহিত্যিক Ngugi Wa Thiong'o এর নাম। সম্প্রতি লন্ডনের দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকায় কেনিয়ার নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গোর নোবেল প্রাইজ পাওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

কেনিয়ার জনপ্রিয় এই সাহিত্যিকের রচিত বইগুলো সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুণ http://www.ngugiwathiongo.com/bio/bio-home.htm
তালিকার ২য় স্থানে আছেন জাপানী সাহিত্যিক Haruki Murakami

গত বছর তাঁর নাম শোনা গেলেও মূলত তিনি আলোচনায় এসেছিলেন ২০১২ সালে। ওই সময় মুরাকামি হেরেছিলেন চীনা ঔপন্যাসিক মো ইয়ানের কাছে, যাঁর লেখা বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আমেরিকার পাঠকদের কাছে তিনি একটি পরিচিত নাম। পক্ষান্তরে মুরাকামি আমেরিকার পাঠকদের সঙ্গে কম পরিচিত। কিন্তু এই দুই বছরে এ বিষয়ে মুরাকামির অগ্রগতি ঘটেছে অনেকখানি। তবে সেই অগ্রগতির সম্ভাবনা কতটুকু, তা একমাত্র সময় বলে দিতে পারে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনার কথা প্রকাশিত হয়েছে।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন Svetlana Aleksijevitj
ইউক্রেনের একজন সাংবাদিক এবং জনপ্রিয় লেখিকা

আরবি সাহিত্যির জনপ্রিয় কবি সিরিয়ার অ্যাডোনিস (আলী আহমদ সাঈদ) আছেন এবারের তালিকায়। ২০১১ সালে তিনি জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ গ্যেটে সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৪৮ সাল থেকে তিনি অ্যাডোনিস নামে পরিচিত হওয়া শুরু করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। ১৯৫৪ সালের পর সিরীয় সোশ্যালিস্ট ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য হোন। সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ায় তিনি ৬ মাসের কারাভোগ করেন। ১৯৭৩ সালে কাদিস ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭০-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত "ইউনিভার্সিটি অব লেবাননে"আরবি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আবার ১৯৭৬ সালে দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপকও ছিলেন।
মরমীবাদ তার কবিতা দর্শনের অন্যতম আকর্ষণ।
আলবেনিয়ার সাহিত্যিক ইসমাইল কাদেরের গত বছরেও আলোচনার র্শীষে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর ভাগ্যে জোটেনি নোবেল প্রাইজ। এবছরেও তাঁর নাম উচ্চারিত হচ্ছে বেশ জোরেসোরে।

গতবারের মতো এবারও আমেরিকার করম্যাক ম্যাকার্থি, থমাস পিনচন ও জয়েস ক্যারোল ওটসের নাম শোনা যাচ্ছে। উপন্যাস, ট্রাভেলগ, কাব্যগ্রন্থ, আত্মজীবনী মিলিয়ে প্রায় দেড়শতাধিক বইয়ের লেখক দক্ষিণ কোরিয়ার কো উন কে স্মরণ করেছেন অনেকে। অপরদিকে সোমালিয়ার নুরুদ্দিন ফারাহ, ইসরায়েলের লেখক অ্যামোজ ওজের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। পর্তুগিজ লেখক অ্যান্তোনিও লোবো অ্যান্তোনাসকে নিয়ে প্রত্যাশা রয়েছে সে দেশের মানুষের।
পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত আমেরিকার ঔপন্যাসিক রিচার্ড ফোর্ড, স্পেনের ঔপন্যাসিক, অনুবাদক ও কলামিস্ট জেভিয়ার মারিয়াস এবং নরওয়ের নাট্যকার জন ওলাভ ফসির মধ্যে কেউ একজন পুরস্কারটা পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

মার্কিন লেখক রিচার্ড ফোর্ড ২০১৩ সালের ফ্রান্সের বিখ্যাত ফেমিনা পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় এবছর নোবেল পেয়ে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। 'প্যারালাল স্টোরিজ' খ্যাত হাঙ্গেরির পিটার নাদাস ও চিনের বেই দাও- উভয়েরই সম্ভাবনা আছে বেশ।


উমবার্তো একো ইতালিয়ান ঔপন্যাসিক, দার্শনিক ও সমালোচক। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য নেইম অব দ্য রোজ’-এ বলেছেন—‘আমরা বইয়ের জন্য বেঁচে থাকি।’ এই ঔপন্যাসিক ইতালির একটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিওটিকসের সাইন অ্যান্ড সিম্বল স্টাডি অধ্যাপক। বেশ কয়েক বছর ধরে নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাবিত হয়ে আসছে। এ বছরও নামটি বেশ আলোচিত। তাঁর তৃতীয় উপন্যাস ‘দ্য আইল্যান্ড অব দ্য ডে বিফোর’
হয়তো কোন একদিন এমনই সৌভাগ্যের দিন চলে আসতে পারে আমাদেরও। সামু ব্লগে লেখালেখি করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা লেখক-লেখিকাদের কেউ কেউ চলে আসতে পারেন নোবেল পাওয়ার সম্ভাব্য আলোচনায়। সেদিনও সামু ব্লগের সেইসব ভাগ্যবান মানুষদের নিয়ে নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনার গল্পটা আমিই লিখবো।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



