somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকা ভ্রমণ......

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুই.

আগে ভিজিটর টিকেট কেটে যাত্রীর সাথে আসা আত্মীয় স্বজনরা চেক ইন পর্যন্ত যেতে পারত । ওই সময় এটা বন্ধ ছিল, এখন আবার চালু হয়েছে কিনা জানিনা। কয়েকজন বিদেশী দেশের নানা জায়গায় মারা যাওয়ার কারণে বাড়তি সতর্কতা । আমি আর তাশফিক ভাই লাইনে দাঁড়ানো। নিরাপত্তা কর্মী পাসপোর্ট, ভিসা চেক করে করে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকাচ্ছে। তাশফিক ভাই সামনে ব্যাগের ট্রলি নিয়ে আর আমি পেছনে হ্যান্ডব্যাগ আর পাসপোর্ট নিয়ে। তাশফিক ভাই এগিয়ে গেল, আমি পেছন থেকে পাসপোর্ট বের করে এগিয়ে দিলাম, নিরাপত্তা কর্মী পাসপোর্ট দেখে ভেতরে যেতে বলল। এবার আমি আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ভেতরে ঢুকতে যাচ্ছি সে আমাকে আটকিয়ে আবার পাসপোর্ট দেখতে চাইল । আমি দেখালাম, আমিও ভেতরে ঢুকে পড়লাম। একটা পাসপোর্ট দিয়ে আমরা দুইজনেই ঢুকে পড়লাম ভেতরে, তার ভুলের সুযোগ নিয়ে। কিছুদুর আগাতেই অবশ্য আরেক জায়গায় চেকিংয়ে ধরা পড়ে গেলাম। বলল শুধু যাত্রীকে যেতে হবে, আর ভয় দেখালো এভাবে ঢুকে যাওয়া বেআইনি, জেল জরিমানা হয়ে যেতে পারে। একটু ভয় পেয়েছিলামও। আমি আগে কখনো দেশের বাইরে যাইনি জন্য তাশফিক ভাই চাচ্ছিল আমাকে অন্তন চেক-ইন পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসতে। অগত্যা আমি একাই এগিয়ে গেলাম সামনে।

চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের কাউন্টার খুঁজছি এমন সময় প্রায় আমার বয়সী এক ছেলে আমার দিকে এগিয়ে এল। ইমিগ্রেশনের ফর্ম ফিল-আপ করে দেওয়ার জন্য খুব করে অনুরোধ করল । আমি নিজেও আগে কখনো করিনি। ফর্মটা একনজর দেখে নিয়ে বললাম, আমি বলে দেই কোথায় কি লিখতে হবে আপনি লিখে নেন। সে বলল সে ইংরেজি লিখতে পারেনা। বললাম আপনি কোথায় যাবেন, বলল মালয়শিয়া যাবে, স্টুডেন্ট ভিসায়। আমি যারপরনাই অবাক হলাম, সে ইংরেজি লিখতে পারেনা, স্টুডেন্ট ভিসায় যাচ্ছে দেশের বাইরে। এভাবে কত লোক দুই নম্বরি উপায়ে যে দেশের বাইরে যাচ্ছে তার হিসাব নাই। পড়ার কথা বলে সে যাচ্ছে ওখানে কাজ করতে। এসবের কারণেই বাংলাদেশী কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে বাইরের দেশগুলো । সারা বিশ্বে আমাদের নিয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা জন্ম নিচ্ছে। ছেলেটাকে ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে ছুটলাম এয়ারলাইন্সের কাউন্টারে। ওখানে চেক ইন করলাম। ঢাকা থেকে চায়না পর্যন্ত টিকেট দিল, বাকিটা চায়না থেকে দেবে বলে দিল, ওখানকার কাউন্টারে যোগাযোগ করলে থাকার হোটেল ব্যবস্থা করে দিবে এটাও বলল।টিকেট নিয়ে ইমিগ্রাশনের লাইনে দাঁড়ালাম ।

ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পাসপোর্ট দিলাম। কিছুক্ষণ পরে প্রশ্ন করল, 'কোথায় যাবেন?' । বললাম আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো। সে বলল সানফ্রান্সিসকো বানান করেন । আমি কিছুটা অবাক হয়ে ইংরেজিতে বানান করলাম। সে কিছুক্ষণ কম্পিউটারে গুঁতাগুঁতি করে বলল, ' সানফ্রান্সিসকো তো খুঁজে পাচ্ছিনা সফটওয়ারে, নিউ ইয়র্ক দিলে হবে? ' বললাম সান ফ্রান্সিসকো থেকে নিঊ ইয়র্ক অনেক দূরে, আপনি তাহলে ক্যালিফোর্নিয়া দেন। সে আবার বলল ক্যালিফোর্নিয়া বানান করেন। আমার মেজাজটা একটু খারাপ হয়ে গেল। বললাম ভাই আমি বুয়েট থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাশ করেছি, আমি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার, আপনি আমাকে বানান করতে বলছেন ? সে পরে আমাকে যেটা বলল তাতে আমার একটু হাসিও পেল আবার অবাকও হলাম। সে নিজেই বানান জানেনা তাই আমার কাছে শুনে শুনে কম্পিঊটারে টাইপ করছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের পুলিশ, তাও আবার ইমিগ্রেশন ডেস্কে বসা। এদের কারণে অনেক লোক অনেক ভোগান্তিতে পড়েছে বলেও শুনেছি । শিক্ষিত পুলিশের কি এতই অভাব? অন্য দেশের সাথে তুলনা করলে আমাদের এই জায়গা গুলোতে প্রচুর উন্নতি করতে হবে এখনো। একজন যাত্রীর ক্ষেত্রেই ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে দিচ্ছে। কম্পিঊটারেও এরা দক্ষ না, সরকার কি এদের দক্ষ করে তারপর ওখানে বসাতে পারে না?


ইমিগ্রেশন পার হয়ে ওয়েটিং লবিতে কিছুক্ষণ বসলাম, একটু পরেই ঘোষণা করল কত নম্বর গেটে যেতে হবে, চলে গেলাম প্রায় সাথে সাথেই , চেকিংয়ের পরে অপেক্ষা করতে করতে আকাশ পাতাল সব ভাবছিলাম। কি বলব প্রেজেন্টেশনে রিহার্সাল করলাম কয়েকবার। একটু পরেই বিমানে ওঠার জন্য বলল। উঠে বসলাম। বিমান ভ্রমণ আগেও করেছি বিধায় তেমন কিছুই মনে হল না। যথাসময়ে টেকঅফ করল। কিছুক্ষণ পরেই বিমানবালারা খাবারের পসরা সাজিয়ে হাজির হল। সবারই নাক চ্যাপ্টা আর চোখ ছোট হলেও কয়েকজন দেখলাম বেশ সুন্দরী। খাবার খেয়ে লম্বা এক ঘুম দিলাম, যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন অবতরণ করছি চায়নার গুয়াংজু বিমানবন্দরে।.......... (চলবে)

প্রথম পর্ব- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৮
১০টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×