শাশ্বত সত্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্র। ১৯৯৮ সালে পায়ের ব্যাথা থেকে তার অসুস্থতার শুরু। দেশে অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থতার কোন লক্ষণ না দেখা গেলে ১৯৯৯ সালে তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তাররা তাকে তিনমাস পরপর কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এভাবে ২০০১ সাল পর্যন্ত কলকাতা যাওয়া আসা করতে হয় শাশ্বতকে নিয়ে হয়। মাত্র ৬ মাস পড়াশুনা করে অসুস্থ শাশ্বত সেবছর ৩.৫ জিপিএ পেয়ে এসএসসি পাশ করে। ২০০৩ সালে তার এইচএসসি পাশ করার কথা থাকলেও শাশ্বত তা পারেনি। তখন অসুস্থ হয়ে সে বিছানাগত। সেসময় তার নতুন রোগ দেখা দেয় পেটে। কোন কিছুই খেতে পারতোনা শাশ্বত। শুধু যেটুকু বার্লি খেতো তা খাবার ৫ মিনিটের মধ্যে বমি হয়ে বেরিয়ে আসতো। তাই আবার কলকাতা যেতে হয় তাকে। ডাক্তাররা জানান, তার ক্রনিক ডিওডেনাম আলসার হয়েছে তার। ভেলর হাসপাতালের চিকিৎসকরা শনাক্ত করেন তার গলব্লাডারে স্টোন হয়েছে। সেই সঙ্গে হাড়ের সমস্যা তো রয়েছেই।
২০০৪ সালে শাশ্বতকে আবার নিয়ে যাওয়া ভেলরে। ডাক্তাররা জানান যে, তার Ankilosing spondylitis রোগ হয়েছে যা Seronegative rheunatoid arthritis এবং Seronegative spondilo arthopedy রোগের আরও ভয়ংকর রূপ। এ সময় ডাক্তাররা মত প্রকাশ করেন যে, বাম পায়ের হিট জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে এবং প্রত্যেকটি জয়েন্ট আস্তে আস্তে নষ্টের দিকে এগোচ্ছে। যদি না তাকে ৪টি বিশেষ ইনজেকশন অতিসত্ত্বর না দেয়া হয় তাহলে তার দেহের অন্যান্য হাড়ের জয়েন্টও নষ্ট হয়ে যাবে। এই ৪টি বিশেষ ইনজেকশন তাকে নিতে হবে ১ সপ্তাহ পর পর ৪ সপ্তাহে চারটি। ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন প্রত্যেকটি ইনজেকশনের দাম ইন্ডিয়ান ২ লাখ রূপি যা বাংলাদেশী টাকার ৪ লাখ টাকা। মোট দরকার ১৬ লাখ টাকা। ডাক্তাররা আরোও বলেন এ রোগের কারণ অজানা এবং আরোও বলেন ধারণা করা হয় যে, HLA ও B-27 নামক এন্টিবডি তার শরীরে তৈরী হয় যা শরীরের ভেতর থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রতিটি হাড়ের জয়েন্টে আক্রমণ করে। প্রতিটি হাড়ের জয়েন্টে থাকে Synovial gell। এই এন্টিবড়ি সেই Synovial gell কে শুকিয়ে দেয় বা নষ্ট করে দেয়। Synovial gell এর কাজ হলো হাড়ের জয়েন্টগুলো যাতে সহজে নড়াচড়া করতে পারে। সেজন্য এটি দুই জয়েন্টের মাঝখানে থাকে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের কথিত ইনজেকশনগুলো HLA ও B-27 কর্তৃক Synovial gell কে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাবে। ডাক্তার বলেন যে, হিপ জয়েন্ট বা অসি'সন্ধি নষ্ট হয়ে গেলে সেটি পরিবর্তন করা যাবে কিন' হাতের হাতের আঙ্গুলের জয়েন্ট যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা আর পরিবর্তন করা যাবে না। ইনজেকশগুলো নিলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই তার সবকিছু রক্ষা পাবে।
কিন্তু প্রায় দু’বছর যাবৎ তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। তার বাম পা ও মেরুদন্ড বেঁকে গিয়েছে। সে একটি স্ক্রাচ্ নিয়ে চলাচল করে যা ডাক্তার কর্তৃক একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু তার পড়াশুনার প্রতি প্রবল ইচ্ছা ও আগ্রহের কারণে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যেও মাত্র আড়াই মাস পড়াশুনা করেই ২০০৭ সালে ৩.১০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়।
স্কুল শিক্ষক বাবার পক্ষে শাশ্বতের জন্য ১৬ লাখ টাকা জোগানো সম্ভব নয়। কিন্তু মাত্র ১৬ লাখ টাকার জন্য আমরা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা পরিবার মেধাবী শাশ্বত সত্যকে হারাতে চাইনা। ওর জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। আসুন না, আমাদের সঙ্গে হাত বাড়িয়ে শাশ্বত সত্য'র চিকিৎসার টাকাটা জোগাড় করে ফেলি। কী পারবো না আমরা?
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট:
০১.'শাশ্বত চিকিৎসা সহায়তা' অ্যাকাউন্ট নং-৩৪২৬০৪৯৮, অগ্রণী ব্যাংক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
০২.‘Saswota Chikitsa-Sohayota’ AC no: 135-101-33705, Dutch-Bangla Bank Limited.
(২৭ মে ২০০৮ তারিখে এই ব্লগে প্রকাশিত)
শাশ্বত সত্যকে বাঁচাতে চাই আমরা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই
দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।
সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন
রম্য : মদ্যপান !
প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে
সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন
= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=
এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।
বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন
Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই
শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন