somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলমান বলে কি আমি আমার জবাব দিবো না.............???

০৯ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক জনসভায় একবার একটি কথা বলেছিলেন, আমাকে কেউ চড় দিলে আমি আরেক গাল পাতিয়া দিব না। কারণ আমি খ্রিস্টান নই, আমি মুসলমান।

কিন্তু বর্তমানে ব্লগে চলছে ইসলাম বিরোধিতা সহ্য করার নামে চড় হজম করার হিড়িক। কুরআন শরীফের বরাত দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, অমুসলিমরা ব্লগে ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে যা খুশি তাই বলে গেলেও তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কোনরূপ বিরোধিতা করা যাবে না। ইসলাম আমাদের মহান হওয়ার শিক্ষা দেয়, সত্য কথা। কিন্তু পড়ে পড়ে মার খাওয়ার শিক্ষা দেয় না।

কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, অমুসলিমদের উপাস্যকে গালি না দিতে, তারপরও কিন্তু লাত মানাতের নাম ধরে সরাসরি বলা হয়েছে এগুলোর উপাসনা না করতে। এখন বিষয় হলো বাস্তব কোন চরিত্রকে গালি দেয়াটা সার্থক, অবাস্তব চরিত্র কিংবা মাটির পুতুলকে গালি দেয়াটা নিরর্থক। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, মুসলমানরা হিন্দু দেবতাদের গালি দেয় না। তারা কেবল তাদের মূর্খতাকে কটাক্ষ করে মাত্র। কিন্তু তাও সীমার মধ্যে থাকে।


পৃথিবীতে বর্তমানে ধর্মমতের নামে দুটি মত প্রচলিত, ইব্রাহিমী ধর্ম এবং মুশরিক বা প্যাগানধর্ম। ইব্রাহিমী ধর্মপালনকারীদের কুরআন শরীফে আহলে কিতাব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তথা মুসলিম ইহুদি খৃস্টান এরা। আর হিন্দু বৌদ্ধ আফ্রিকার জংলী ধর্ম হাওয়াইয়ের ভুডু ধর্ম হল প্যাগান ধর্ম। ইব্রাহিমী ধর্মগুলোর সাথে প্যাগান ধর্মের মূল পার্থক্য হল প্যাগান ধর্মে মূর্তিপুজা করা হয়। আরেকটি বড় পার্থক্য, প্যাগান ধর্মগুলোর সাথে কালো জাদু চর্চার খুব ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে ইব্রাহিমী ধর্মগুলোতে এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড। খোদাতাআলার নিকট ইব্রাহিমীরা মাথা নত করে, মুশরিকরা মাথা নত করে শয়তানী শক্তির নিকট।

ভারতবর্ষের ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই, মুসলিম নৃপতিরা সুফীসাধক ওলীআল্লাহগণের সহায়তা ব্যতীত হিন্দু রাজাদের সরাতে পারেন নি। কারণ হিন্দু রাজাদের ছিল তান্ত্রিক, কালীসাধক তথা কালো জাদু চর্চাকারী শয়তানী শক্তির উপাসকদের দল। আজমীরের খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে পৃথ্বিরাজ যখন সৈন্য পাঠিয়েও আজমীর শহর থেকে সরাতে পারল না, তখন সে তৎকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ তান্ত্রিক রামদেব, অজয় পালকে প্রেরণ করেছিল। তারা দুজনই পরবর্তীতে মুসলমান হন। এবং খাজা সাহেবের কারণেই পরবর্তীতে ভারতে মহান বাদশাহ শিহাবুদ্দিন ঘোরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইসলামের শাসন কায়েম করতে সক্ষম হন।

শুধু আজমীর শরীফ নয়, আমাদের সিলেটে হযরত শাহজালাল রহমাতুল্লাহি আলাইহিকেও প্রতিহত করতে হয়েছে হিন্দু রাজা গৌরগোবিন্দের জাদুশক্তির বিরুদ্ধে। মোটকথা ভারতবর্ষে ইসলামের আবাদের পিছনে তান্ত্রিক জাদুকর, কালীসাধক, যোগীদের পরাজয়ের কাহিনী ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে। শুধু তরবারির জোরে ভারতবর্ষে ইসলাম কায়েম হয় নি, সুফীদের আত্মিক শক্তির দ্বারা তান্ত্রিকতাকে দমন করাটাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

আধুনিক যুগে যে এর প্রভাব একদমই নেই তা নয়। তন্ত্র হলো শাক্তদের সাধনার বিষয়। বাঙালি হিন্দুদের দূর্গাপুজা হলো একটি তান্ত্রিক আচার। দূর্গাপুজায় বেশ্যার দরজার মাটি দিয়ে মূর্তি তৈরী করা হয়। বৈষ্ণবরা প্রণয়ন করেছে দেহতত্ত্ব, যাতে নারীর মাসিকের রক্ত থেকে শুরু করে মলমূত্র বীর্য পান করাটাও তাদের জন্য আবশ্যক। ভারতের মন্দিরগুলোতে দেবদাসীর নামে বেশ্যাবৃত্তি বৈধ। এ সবকিছুর পেছনে রয়েছে তাদের শয়তানী শক্তির সাধনার বিষয়টি। শয়তান কিন্তু জানে সে নরকের আগুনে জ্বলবে। হিন্দু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের গেরুয়া পোষাক পরার কারণটি কি জানেন? তাদের মৃত্যুর পর তাদের চিতায় পোড়ানো হয়। তারা গেরুয়া তথা আগুনের রঙওয়ালা পোষাক পরে তাদের মৃত্যুর কথা স্মরণ করার জন্য। কালো জাদুবিদ্যার একটি বিশেষ দিক হলো, সাধককে অস্বাভাবিকতার চরম স্তরে পৌঁছতে হয়। রক্ত মলমূত্র থেকে শুরু করে শশ্মানের গলিত লাশ পর্যন্ত একজন তান্ত্রিককে ভক্ষণ করতে হয়। সাধারণ হিন্দুদের মধ্যেও এর প্রভাব রয়েছে। একজন হিন্দু আর যাই হোক গোমূত্র সে অবশ্যই পান করে। শিবলিঙ্গ পুজার সময় তাতে পানি ঢালাকে হিন্দু মেয়েরা কি বলে জানেন? বলে বাবার মাথায় জল ঢালা!(দেবীকে মা ডাকে সুতরাং দেবতারা অবশ্যই বাবা) যে লিঙ্গের নিকট তারা স্বামীর যৌনশক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করে, তাকে বাবা ডাকাটা চরম রুচিবিকৃতির পরিচয় দেয়।


ইসলাম আসার আগে আরবের মূর্খতার যুগে ঠিক এরকম একটি ধর্মই সেখানে প্রচলিত ছিল। কুরআন শরীফে তাকে স্রেফ মূর্খতা বলেই অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বেশকিছু ব্লগার আছেন, যারা মনে করেন হিন্দুধর্ম অন্যান্য ধর্মের মতোই সৎপথে চলার, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার শিক্ষা দেয়। কারণ তারা নিজেরা মুসলমান, নিজেরা ইব্রাহিমী ধর্মের প্রাসাদে বসবাস করেন। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে অন্যেরটা বিচার করতে গেলে প্রায়ই ভুল হয়। প্রথমআলোতে গত পুজার সিজনে মার্ডার ছবির পরিচালক অনুরাগ বসু আর এদেশের অপু বিশ্বাসের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল। অনুরাগ বসু স্পষ্ট বলেছিল, আমাদের কাজ ছিল কোন সুন্দরী মেয়ে মন্ডপে এলে তাকে টিজ করা। অপু বিশ্বাসের কাহিনীও একই। হয়তো অনেকেই জানেন যে, ভার্সিটি এলাকায় তথা ঢাকা ভার্সিটি বুয়েটে পুজার সিজনে ছেলেদের যেসব হলে মন্ডপ হয় সেসব হলে মেয়েদের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকে। আমি নিজে আমার ফ্রেন্ডকে তার বান্ধবীসহ যেতে দেখেছি, অনেকেই যায়। এতগুলো রুম, তাতে বিছানা পাতা। খালি চেহারা দেখার জন্য তো তারা তাদের বান্ধবীদের আনে না। হিন্দুরা রাজা বিক্রমাদিত্যকে খুবই শ্রদ্ধা করে। তারই সভাকবি কালিদাস, তার লেখায় বিক্রমাদিত্যের বেশ্যাগমনের কথা সে উল্লেখ করেছে। নিশ্চয়ই হিন্দুদের নিকট বেশ্যাগমন পাপ বলে গণ্য হলে কালিদাস তার রাজার বেশ্যাগমনের কথা উল্লেখ করত না। আইয়ামে জাহেলিয়াতের সাথে কি এগুলো মিলে যাচ্ছে না? কুরআন শরীফে কি মুসলমানদের জাহেলিয়াতের ধর্মকে শ্রদ্ধা করার নির্দেশ দেয়া আছে? অবশ্যই নয়। কারণ খোদায়ী শক্তির সাথে শয়তানী শক্তির যে বিরোধ, তা চিরন্তন।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×