একটি বিশাল দলের নেত্রীর ভাঙাচুড়া হেডঅফিসের সামনে দাঁড়িয়ে যে বিক্ষুব্ধ বক্তব্য দিয়েছেন অনেকেরই তাতে চুলকানীর শেষ নাই।
অনেকেই জানতে চেয়েছেন খালেদা জিয়ার অবস্থান শাহবাগের স্পষ্টত পক্ষে না কেন।
এর কারন হিসেবে আমার যা মনে হয় ...
সাধারন জনগনের মধ্যে গনজাগরন এখন আর নিরপেক্ষ আছে কিনা সেটা নিয়ে অবশ্যই সন্দেহ আছে।
কথা হল গন জাগরন কি জিনিস?
গনজাগরন হচ্ছে সত্যিকারের জনতার জাগরন। যেখানে দেশের প্রধান জনসমর্থিত দলটিই তাদের নিরপেক্ষ মনে করে না সেখানে এটা নিরপেক্ষ গন জাগরন হয় কিভাবে?
যেখানে সরকারের প্রধান শরীক দল এই জাগরনের বিপক্ষে, সেখানে এটা নিরপেক্ষ গন জাগরন হয় কিভাবে?
এই শরীককে তো সরকার এখোনো তাদের সঙ্গে রেখেছে। শাহবাগীদের মতে , যদি খালেদা দোষি হন, তবে কেন এরশাদঘটিত কারনে সরকারও দোষী হবেন না? এরশাদ এর দল তো এই সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তারা তো খালেদার এক ডিগ্রি উপরে আছেন এই শাহবাগ বিরোধীতায়।
এখন জনমনে যে প্রশ্নগুলো তা একটু খতিয়ে দেখতে তো দোষ নাই।
প্রথম থেকেই জনগন , এমন কি কাদের সিদ্দিকীও এই প্রশ্ন করেছেন যে শাহবাগে হালুয়া রুটি কোথা থেকে আসে ।
আপনারা আরো মাথা খাটিয়ে ভাবতে গেলে দেখবেন , সরকারী বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে , ব্যক্তিগত গানম্যান নিয়ে , কোথাও কোনো আন্দোলন হয়েছে? কোথায় এটা শুনেছেন বলেন।
খুব সিম্পলি কেন আমরা শেয়ার মার্কেটে যে এক কোটি মানুষ পথে বসলো তার বিরুদ্ধে এক হতে পারলেন না? তারা তো কেউ যুদ্ধাপরাধী ছিল না?
দেশের তেল গ্যাস রক্ষার জন্য যে আন্দোলন হল তখন কেন এই শাহবাগেই বর্তমান উদ্যোক্তাদের পিটানো হলো?
জামাত নিষিদ্ধের হরতালে সরকারই নিজে থেকে রাস্তা বন্ধ করে দিল, কিন্তু তেল এর দাম বৃদ্ধির হরতালে একই সংগঠনকে কেন দাঁড়াতেই দিল না সরকার??
আমরা যুদ্ধাপরাধীদের যেহেতু সত্যিই বিচার চাই তবে কেন সরকারের দুরভিসন্ধিগুলো ধরতে পারছি না?
সরকারের তো টু থার্ড এরও বেশি মেজরিটি আছে। তারা কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের একটা স্থায়ী সমাধান করে না ? একটা নিরপেক্ষ ট্রাইবুনাল করে দিক, ও শক্তিশালি স্থায়ী বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দিক। যাতে ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক তারা এ বিচারটি চালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
আর বড় বড় জাতীয় রাজাকার, এই যে গো আজম বা মুজাহিদ , নিজামীদের কাতারে যে সাঈদীকে ধরা হল, এসব বড় রাজাকারদের আগেই সাইদীর ফাসির আদেশ হয়ে গেল , এই সুযোগটি নিয়ে ছাগুর দল বড় বড় কথা বলতে পারলো সে রকম যাতে না হয় সেজন্য বিচার বিভাগীয় স্বাধীন কমিশন কাজ করবে সেই ব্যবস্থা করে দিক।
প্রয়োজনে এজন্য একটা সায়ত্বশাষিত ইনষ্টিটিউশন করে দিক। যাতে তারা আজীবন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
তাহলেই তো আর এইসব দাবির মধ্যে রাজনীতি থাকে না।
এখন আওয়ামী লীগ দেখাতে চাচ্ছে যে শুধু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেই এই মানবতা বিরোধীদের বিচার সম্ভব। কিন্তু কথাটি সর্বৈব মিথ্যা। তারা চাইলে সরকারে যে ই আসুক এ বিচার হবেই। এটা নিয়া রাজনীতি করার আসলে তো কোনো সুযোগ নাই।
আর বিএনপি এখন নির্বাচনী জোট হিসেবে রাজাকার প্রভাবিত একটি দলকে সাথে রাখছে, যাদের আগে আওয়ামী লীগও সাথে রেখেছিল। বিষয়টি আসলেই সমান সমান। এখানে না বুঝে মাথায় বাধিয়ে ঠ্যালার মত কিছু নাই।
জামাত স্রেফ বিএনপির নির্বাচনী জোট। যদি জামাতকে সরকার নিষিদ্ধ করতে পারে তবে তো আর জোট থাকে না।
আর বিএনপির বাক্সেও সেই ভোটগুলা অটোমেটিক যাবে। সুতরাং তাদেও খুশি হওয়ারই কথা।
কিন্তু সরকার কেন বিষয়টি পার্লামেন্টে পাঁচ মিনিটে নিস্পত্তি না করে দুই বছরের জন্য আদালতের ঘাড়ে পেন্ডিং করে দিল?
এখন কলিজায় হাত দিয়ে বলেন, আন্দোলনটা কি সরকারের বিরুদ্ধে হওয়ার কথা ছিল না?
কেন হল না?
এর কারন , সরকার না চাইলে এই আন্দোলনটা দুই মিনিটও থাকে কিনা সন্দেহ। তেল গ্যাস বাহিনীর মতোই অবস্থা হবে তখন।
এখন আমার কথাগুলো স্বীকার করা না করা আপনাদের মর্জি।
অনেকের খালেদার কথা শুনলেই চুলকানী ওঠে। তারা কেউ এই পোষ্টটি পড়ে থাকলে চুলকানো শুরু করে দেন। আর যুক্তিগুলোকে অথর্ব প্রমানের জন্য ও খালেদার বক্তব্যটি যে মিথ্যা তা প্রমানের জন্য লেগে যান।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




