somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভবিষ্যত প্রজন্ম কি ‍‍‌‌"আওয়ামী লীগ " শব্দটিকে গালী হিসেবে ব্যবহার করবে??

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও তার পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের দেশের জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাদের সেই জনপ্রিয়তায় দ্রুতই ভাটা পড়ে।
ঐতিহ্যবাহী এই দলটির নানান কারনে বার বার জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেও তা বেশিদিন ধরে রাখতে পারে না। এদেশে আওয়ামী লীগের সাথে পাল্লা দিয়ে যে অন্য জনপ্রিয় দলটি রাজনীতি করে তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু বার বার এ ঘটনা ঘটেনি। সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনেও বিএনপি ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর এর পূর্বে জিয়া পরবর্তী সময়ে বিএনপির জনপ্রিয়তা কখোনোই কমেনি। এমনকি বিএনপি যে ৯৬ এর নির্বাচনে জিততে পারেনি সেখানেও তাদের প্রাপ্ত আসন ছিল ১১৫ টির বেশি।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা হারানোতে আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই।

আমার শিরোনামে অনেকেরই ইতিমধ্যেই ভুরু কুঁচকে গেছে তা আমি জানি। এই প্রসঙ্গে বলি, এই আওয়ামী লীগ এত জনপ্রিয়তা নিয়ে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শুরু করলেও ৭৫ পরবর্তী সময়ে কিন্তু তা ধরে রাখতে পারে নি। সত্যি বলতে কি রক্ষী বাহিনীর বর্ননাতীত নৃশংস অত্যাচার ও সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি , দুর্ভিক্ষ ইত্যদি তখনকার আওয়ামী লীগকে এক প্রায় শেষ করে দেয়।

বঙ্গবন্ধুর চাটুকাররা সেই সময়ও তাকে বুঝতে দেয়নি যে দেশের প্রকৃত অবস্থা কি। আওয়ামী লীগে আর যেসবের অভাবই হোক না কেন, চাটুকারের কখোনো কোনো অভাব হয় নি।
তারপরেও বঙ্গবন্ধু কিছুটা খোলসমুক্ত হতে পেরেছিলেন। তিনি মুখ ফুটে বলতে পেরেছিলেন, আওয়ামী লীগ চোরের দল , চাটার দল। তিনি আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত করেছিলেন । আর আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত করে বাকশাল গঠনকে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

আর সেববের ফলাফল কি হয়েছিল তা তো সবারই জানা। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ নামটিকে এদেশের মানুষ স্রেফ গালি হিসেবেই ব্যবহার করেছে।
এসবের ধারাবাহিকতায় ৯৬ এর আওয়ামী সরকারও যথষ্টে অজনপ্রিয় হয়ে পরিত্যাজ্য হয়েছিল। সেই সরকারের সময়ও তারা জুজুর রাজনীতি অব্যহত রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার। বিরোধী দলের যে কোনো দাবি বা কর্মসূচীকেই তারা বলতো এসব বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বাঁাচানোর ষড়যন্ত্র।

এসবের পরিনতি কি হয়েছে তা তো আমরা সবাই জানি। তবে মজার বিষয় হলো পরে বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের কিন্তু ছেড়ে দেয়নি।

এখোনো এই দলটি একইভাবে জুজুর ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করছে। বিগত চারটি বছর তারা শুধু এই যুদ্ধাপরাধী আর তাদের এক সময়কার সহযোগী জামাত , জামাত করতে করতে কাটিয়ে দিল।

বঙ্গবন্ধুর প্রথম সরকারের সময় যেমন আওয়ামী লীগের পাপের বোঝা এতই ভারী হয়ে গিয়েছিল যে সেই আওয়ামী লীগ বিলুপ্তকরন প্রকৃয়াকে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব আখ্যা দিতে হয়েছে।
একই ভাবে আজ শাহবাগ আন্দোলনকেও দ্বিতীয় বিপ্লব খেতাব দিতে শুরু করেছে কেউ কেউ। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনগুলি এতই অজনপ্রিয় যে তারা ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে মুখ রক্ষার আশায় শাহবাগের বগলে চেপে বসে আছে।


আর ঘটনাপ্রবাহে দেখা যায় তখনকার আওয়ামী লীগ জাসদের নামে রাজনৈতিক মামলা ও ক্রস ফায়ার দিয়ে যে রেকর্ড করেছিল বর্তমান আওয়ামী লীগ তাকে বহু আগেই ছাপিয়ে গেছে।
ফলাফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। মুলত এখন আওয়ামী লীগের দেশব্যপী জনপ্রিয়তা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে কম।
প্রধান বিরোধী দলের সাথে সেই জনপ্রিয়তার পার্থক্যটা সরকার বান্ধব প্রথম আলো ১০ শতাংশ দেখালেও প্রকৃত পার্থক্য তার অনেক বেশি বলেই অনেকে মনে করেন।
এখন মুলত আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচিী হয়ে গেছে ঢাকা কেন্দ্রীক। ঢাকার বাইরে পুরো বাংলাদেশে এই দলটি আসলে দাঁড়াতে পারছে না।
আর তাদের রাজনৈতিক মিত্র বাম দলগুলোর নেতাদের তো কোনো কালেই তাদের স্ত্রীরাও ভোট দেন নি। সুতরাং এভাবে আর শেষ রক্ষা হওয়ার কথা নয়।

আওয়ামী সরকার এখন তাদের সকল অন্যায় ঢাকার জন্য বিগত জোট সরকারের শরনাপন্ন হচ্ছে। চাটুকার আওয়ামী বুদ্ধিজীবির দল সরকারের সকল অন্যায়ের সমর্থন দিতে গিয়ে বিএনপি সরকারের সময়কার একই ধরনের অন্যায় কি কি হয়েছিল তা উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই বুদ্ধিজীবিরা এটা কখোনোই ভাবছে না যে এই আওয়ামী লীগকে তো মানুষ বিগত বিএনপি যে যে অন্যায় করেছিল তার পুনরাবৃত্তি করতে ক্ষমতায় বসায় নি। বরং সেগুলো না করার মুচলেকা দিয়েই তো তারা ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং এসব বুদ্ধিজীবিদের দেয়া আপাত বৈধতা ভোটের রাজনীতিতে ধোপে টিকবে না।

সরকারের হাতে কিছুটা সময় বোধহয় এখেনো আছে। যদি খুব দ্রুত তারা পুরোপুরি গনতানি্ত্রক, ও জনগনকে দেয়া ওয়াদা অনুযায়ী কর্মকান্ড শুরু না করে, যদি তারা একই ভাবে দমন , পীড়ন আর ক্ষমতায় থাকার জন্য গোয়ার্তুমী করতে থাকে সেক্ষেত্রে পরবর্তী প্রজন্ম যদি আবারো আওয়ামী লীগ শব্দটিকে গালি হিসেবে ব্যবহার করে তখন সাধারন জনগণকে কি দোষ দেয়া যাবে???
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×