somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসংগঃ নাস্তিক ব্যক্তির জানাযা...

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

*** মডারেটরের প্রতি অনুরোধ রইল, আমার এই পোস্টটিকে সরিয়ে না ফেলার। এই পোস্টে কাউকে কটাক্ষ করা হচ্ছে না, বরং মুসলমানদের জন্য কিছু ফিকহি মাসয়ালা শেখার সুযোগ রয়েছে।

প্রথমেই গতকালকের ঘটে যাওয়া ব্লগার থাবা বাবা হত্যা কান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করছি। কোন যৌক্তিক দাবীতে আন্দোলন করলে এবং তার সাথে মতে মিল না থাকলে তাকে মেরে ফেলতে হবে, সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় !! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী আস্তিক, নাস্তিক সকলেরই দাবী। আমিতো বলি, শুধু এই পাচ-ছয়জন কেন? একাত্তরের সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে হবে। শুধু পাচ-ছয় জনের ফাসী দিয়ে এই বিচার সমাপ্ত হলে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রইবে।

এখন প্রসংগ হল, ব্লগার থাবা বাবা একজন আত্মস্বীকৃত নাস্তিক ছিলেন। আল্লাহ এবং তার প্রেরিত রাসূল (সঃ) কে নিয়ে তার বেশ কিছু কুরুচীপূর্ণ লেখা তার মৃত্যুর পরে সামনে চলে এসেছে। এর আগে আমি ওনাকে চিনতামই না। যাহোক, ব্লগে বিভিন্ন ধরণের আলোচনা দেখতে পাচ্ছি। তার নামাযে জানাযা নিয়েও কথা হচ্ছে। আমাদের জানা প্রয়োজন, এ ব্যাপারে আল্লাহ এবং রাসূল(সঃ) এর সুন্নাহ কি।

যারা মুসলমান এবং আল্লাহর হুকুম এবং রাসূল(সঃ) এর সুন্নাহ মোতাবেক নিজের জীবনকে পরিচালনা করেন, তাদের একজন অবিশ্বাসী'র ব্যাপারে আল্লাহ এবং তার রাসূল(সঃ) নির্দেশনা মেনে চলতেই হবে, এখানে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই। নইলে আল্লাহর মনোনীত দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে। যেসব নাস্তিক ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন তাদের জন্য তো আর কিছু করার নেই, তবে যারা বেচে আছেন, তাদের হেদায়েতের জন্য আমরা সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করি।

নাস্তিক ব্যক্তির জন্য দোয়া করা বা জানাযা নামাজ পড়ার ব্যাপারে islamqa সাইটে শাইখ মুহাম্মদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ এর দেয়া ফতোয়াটি আমি এখানে বংগানুবাদ করে তুলে দিচ্ছি আপনাদের সেবায়। আশা করি এ ব্যাপারে মুসলমানগণ ভালভাবে অবগত হবেন এবং অনুধাবণ করবেন।

আলহামদুলিল্লাহ !

যদি কোন ব্যক্তি মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করে এবং পরে সে নাস্তিক হয়ে যায়, ইসলাম ধর্মে আর বিশ্বাস না করে এবং সে অবস্থায় তার মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে যে ব্যক্তি তার এই অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞাত, তার জন্য সেই নাস্তিক ব্যক্তির জানাযার নামাজে অংশগ্রহণ করা বা তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা বা তাকে গোসল দেয়া, কাফনের কাপড় পড়ানো এবং মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা জায়েজ নয়।

কারণ আল্লাহ বলেছেনঃ

مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُواْ أَن يَسْتَغْفِرُواْ لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُواْ أُوْلِي قُرْبَى مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী।
(সূরা তওবা, আয়াত ১১৩)

وَلاَ تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِّنْهُم مَّاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَىَ قَبْرِهِ إِنَّهُمْ كَفَرُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُواْ وَهُمْ فَاسِقُونَ
আর তাদের মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও নামায পড়বেন না এবং তার কবরে দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও। বস্তুতঃ তারা না ফরমান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে।
(সূরা তওবা, আয়াত ৮৪)

মুসলিম শরীফের ৯৭৬ নাম্বার হাদীসে বর্ণিত আছে, হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন, "“আমি আল্লাহর কাছে আমার মায়ের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করার অনুমতি চেয়েছি কিন্তু তিনি তা দেননি। এবং আমি তার কাছে আমার মায়ের কবরের কাছে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছি, তিনি তা দিয়েছেন।“"

সুতরাং, এটা স্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি “শিরক” অথবা “কুফর” অবস্থায় মারা গেল, তার জন্য দোয়া করা কোন মুসলমানের জন্য জায়েজ হবে না।

এবং আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

=============================================
শেষ কথাঃ
একজন মৃত নাস্তিক বা অবিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে তার বিশ্বাসের প্রতিই কিন্তু অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হচ্ছে যেটা বেচে থাকলে তিনি নিজেই পছন্দ করতেন না। তাকে তার বিশ্বাস নিয়েই শান্তিতে থাকতে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২০
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×