somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামহোয়ারনামা ৩

০৯ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিকবাজির একটা ধরনের কথা বলেছি আমি। বলাবাহুল্য এটাই একমাত্র ধরন নয়। নিকের চিরায়ত সাহিত্যিক ব্যবহারও দেখা যায় ব্লগে। দেখা যায় আমরা কোনো নিককে চিনি, এবং তার আড়ালে থাকা ব্যক্তিমানুষটিকেও। যেমন, এস্কিমো, কিংবা আকাশচুরি। এদের ক্ষেত্রে নিক হচ্ছে অর্নামেন্টাল। আবার এমন অনেকেই আছেন, থাকেন পাহাড়ে, কালেভদ্রে বাজারে আসেন। নিজের ব্লগে লেখেন, প্রথম পাতায় নিজেকে মেলে ধরতে অনীহা। তাদের প্রখর ধ্যান, এমন কি নিজেদের মন্তব্যের ঘরেও পায়ের ধুলা দেন না। বৃশ্চিক-এর কথা এ প্রসঙ্গে বলা যায়। "মৃত্যুর মন্থর রিহার্সাল" নামে একটা গল্প পড়েছিলাম তার, সেই স্বাদ ভুলবার নয়।

যেসব নিকের কথা এর আগের পোস্টে বলেছি, যাদের গালির তুবড়ি ফুটেছে আমার আগের পোস্টেও, এরা বড় দুঃখী। এদের আয়ু সীমিত। জননাঙ্গ নেই, শুধু দুধদাঁত দিয়ে এখানে ওখানে কামড় দিতে পারে। কখনো কখনো বাদুড়ের মত সন্ধ্যার আকাশে খানিক উড়াউড়ি করে। এতেই আনন্দ এদের। মাঝে মাঝে, বেশি বিরক্ত হলে আমি তাদের চিমটা দিয়ে ধরে মডারেশন প‌্যানেলে রেখে দিই। ছটফট করতে থাকে তারা, শ্বাস নিতে পারে না। নিজেকে তখন শিশুনির্যাতক মনে হয়। ছেড়ে দিই কাউকে কাউকে। কিন্তু ততক্ষণে আয়ু ফুরিয়ে এসেছে তার, কর্তৃপক্ষের সমন এসেছে ঘরে। ডানা কেটে দেয়া হয়েছে শিশুনিকের। ফলে ঐ বাধ্য শিশুভ্যাম্পায়ারকে মুক্ত করে দেয় ড্রাকুলা। আছর করে অন্য কোনো নিকে। রক্তশূন্য ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া ঐ নিকগুলোকে কেউ মনে রাখে না। আলাদা করে মনে রাখবার মত কোনো বৈশিষ্ট্যও থাকে না এদের।

পুরাকালে মিথিলা নামে একটা নিক ছিল। ঐ নারীনিকটির মৃত্যুতে শোকের তুফান উঠেছিল সামহোয়ারে। সেসময় আমি ছিলাম না এই ঘরে। শোকের মাতমের শব্দ কিছু শুনেছি সচলায়তনে বসে বসে।

নিক নিয়ে ইন্টারেস্টিং ঘটনা ঘটান কৌশিক। তিনি একবার কৌশিক নামে তার আইডিটাকে ওপেন করে দেন। এর অর্থ যে কোনো ব্লগার "কৌশিক" নিক নিয়ে মন্তব্য বা পোস্ট লিখতে পারবে। হলও তাই। কৌশিক নিকটি হয়ে উঠল একটা জ্বলজ্যান্ত পরস্পরবিরোধিতা, একটা অ্যাবসলিউট নন-ইউনিফর্মিটি! কখনো কৌশিক বলছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, কখনো বলছে জামাতের পক্ষে! কম্যুনিটি ব্লগে, যেখানে গোষ্ঠী মতাদর্শই ব্যক্তিপরিচয়ের স্মারক, সেখানে "কৌশিক" নিকটি কিছুদিনের জন্য হলেও একটা এনার্কি তৈরি করেছিল।

আলিফ দেওয়ান নিকটি এসেছিল মূলত আমাকে, মামো-কে এবং রাইসুকে উত্যক্ত করার জন্য। কিন্তু অন্যান্য নিক থেকে বিশিষ্ট হয়ে উঠে সে কিছুদিনের মধ্যেই। একটি বিশেষ ভাষাব্যবস্থা এবং আদব লেহাজের প্রচলন ঘটানোর কারণে। অনুসারী তৈরি হতে থাকে তার। অনুমান করি, এই শিশুভ্যাম্পায়ারটি যে পরিচয় অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিল তা হয়ত তার প্রভু ড্রাকুলার বিশেষ পছন্দ হয় নাই। বা আলিফ দেওয়ান তার প্রভু ড্রাকুলার মধ্যেও হয়তো পরিচয়-সংকট তৈরি করেছিল। এখন তাকে দেখা যায় না আর, কিন্তু ব্যান না-হয়ে থাকলে এই পোস্ট পড়ার পর আরেকবার উঁকি দেবে সে, মনে হয়।

সেই বিচারে লোকালটক নিকের প্রভু ড্রাকুলাটি অনেক বেশি লিবারাল। বাড়তে দিয়েছে সে এই নিকটিকে যথেচ্ছমত। অনুমান করি, লোকালটকের প্রভু নিজ নামে সামহোয়ারে নিশ্চয়ই ব্লগান, কিন্তু লোকালটককে দাঁড় করাতে গিয়ে তিনি নিজের আসল পাতায় হয়তো নিজের অনেক বৈশিষ্ট্য এবং কর্মকান্ডই হাজির রাখেন না। নিকের জন্য এতখানি "স্যাক্রিফাইস" অন্য প্রভুদের করতে দেখা যায় না। আমরা অনেক নিককে চিনি তাদের প্রভুদের পরিচয়ে, যেমন অপ বাক মানে রাসেল (.....), চোর মানে অচ্ছুৎ বলাই ইত্যাদি। মনোগ্যামাস তারা। একমুখে দুইকথা বলতে শিখেন নাই। কিন্তু লোকালটকের প্রভু সেটা ভালভাবেই পারেন। এভাবে শিশু ভ্যাম্পায়ার থেকে নিজেই ড্রাকুলা হয়ে উঠে এই নিকটি। এমন কি আছর করতে শুরু করে পরিচয় গোপন না-করা ব্লগারদের ওপর। যেমন কৌশিককে ভর করে লোকালটক "অপরবাস্তব" সম্পাদনা করেছে গত বইমেলায়। ভার্চুয়াল আইডেন্টিটি হিসাবে লোকালটককে তার পূর্ববর্তী নিক-ট্র্যাডিশন থেকে একটা পরিষ্কার ডিপার্চার মনে হয়েছে।


সামহোয়ারনামা ১
সামহোয়ারনামা ২
১১২টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×