somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানান রঙের স্মৃতির পালক, যখন আমি ছোট্ট বালক! -০৫

২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যাপারগুলো আমাদের ই তৈরি। আমি কিংবা আমাদের উন্নাসিক জেনারেশন এর জন্য দায়ী!

ছোট্ট আমার কথাই ধরেন! লাল রঙের হাফ প্যান্ট, লাল গেঞ্জী, টেরী ছাটেঁর চুলে জবজবে হাঁস মার্কা নারিকেল তেল, ভীতু, আতঙ্কিত চাউনির হ্যাংলা পাতলা ছেলেটা, রসগোল্লার জন্য যে জীবন বাজি রাখতে পারে, নেহায়েত ই নাড়ু গোপাল!


আমার পাতায় পড়া প্রথম স্কুল ছেড়ে আমি তখন কোন এক সরকারী স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে ঢুকেছি! সরকারী চাকুরে পিতার সরকারী সুবিধা থাকার পরেও ভর্তি পরীক্ষা দিতে হল, পরীক্ষা দিতে দিতে খেয়াল করলাম আমার প্যান্ট ভিজে যাচ্ছে, অজানা আশঙ্কা! যদি খারাপ করি, যদি না পারি!


আমি টিকে যাই, বাবা-মার প্রচন্ড খেয়ালে বড় হই। সরকারী কোয়ার্টারে থাকি, হেঁটে যাওয়া যেত স্কুলে, এরকম এই বর্ষার দিনে কদম ফুল ফুটত আমাদের স্কুলের সামনের গাছটায়। তারিফ, তোমার কি মনে আছে? নীল রঙের হাফ পেন্টুল-শাদা রঙের শার্ট পড়া আমরা সেই কদম ফুলের অপেক্ষায় থাকতাম। মাত্র দুই-তিন বছর আমি সেই স্কুলে পড়েছি, এর মাঝে সেই কদম ফুলের গাছটা আমি কিভাবে মনে রেখেছি জানিনা! ক্লাস ওয়ান টু তে ছেলে মেয়ে একিসাথে ক্লাস হত! ক্লাস ক্যাপ্টেন মেয়ে, আমাকে বলদ পেয়ে বেধড়ক মার খাওয়ালো একদিন , সেই অপমানের শোধ নিতে তাকে এরকম এক বৃষ্টির দিন, ঝুম ঝুম বর্ষায়, তার একটি কদম ফুল চাওয়া, আমার না দেয়ার মাঝে লুকিয়েছিল অভিমান, তাই কি?


মায়েরা খুব যত্ন নিতেন, আমার কিংবা আমাদের। পরীক্ষা আসলেই ভীতু ছেলেটির জ্বর আসত, কত যে কম্পিটিশান! বাবা তেমন কিছু বলতেন না, বাবারা বটগাছ হয়ে থাকেন, তাদের দীর্ঘ নিঃ শ্বাস ছাড়া তেমন কথা হয় না। আমার পরীক্ষা ছাড়া অসুখ বিসুখ তেমন হত না! আমার ধারণা প্রতি পরীক্ষায় ভাল করতে হবে এরকম কোন আশঙ্কা থেকে সাইকোলজিকাল এবং পরে ফিজিকাল টেম্পারেচার বাড়া শুরু হত আমার! আমার একবার ম্যালেরিয়া হল, যমে-মানুষে টানাটানি! মায়ের সে কী কান্না! বাবার হাসিমুখ গম্ভীর হয়ে গেল! ধানমন্ডির এক হাস্পাতালে দীর্ঘ সময় অবচেতন হয়ে পড়ে থাকা!


বাবা বলতেন, দৌড়ুতে হবে, মা বলতেন পড়াশুনায় এটা করতে হবে, ঐটে তাদের সবার ই চাই! আমি মেডিকেল কলেজের থার্ড ইয়ারের আগে তাদের চাওয়ার অপূর্ণতা রাখিনি! সেবার আমার খুব জন্ডিস! বিলিরুবিন বেড়ে ২৬! বাবার দীর্ঘশ্বাস আবার ঘণ হল, মা মানত টানত করে ফেললেন! আমি আবারো বিজয়ী!


এরি মাঝে অনেক গুলো বর্ষা পার হয়ে গেছে, বাবা আগে থাকতেন ঢাকার বাইরে বাইরে, এখন দেশের বাইরে। মা থাকেন পাশের রুমে। বড় হওয়া রোগে ধরায় কখনো বুঝিনি সম্পর্কগুলোতে এভাবে দূরত্ব চলে আসছে...ঈদের নামাযের পর শয্যা নিয়েছি, আজো আমি অফিস করেছি, মা হঠাত একদিন জিজ্ঞেস করেছিলেন, বাবু তোর কি শরীর খারাপ? ওভাবে শুয়ে থাকিস ক্যান?

এই দূরত্ব গুলো ক্যান তৈরি হয়? মা কে গিয়ে ক্যান হাউমাউ করে বলতে পারিনা, মা আমার বড্ড জ্বর, আমার মাথায় পানি ঢেলে দাও! মা, আমি স্যরি! এক্সট্রিমলি স্যরি!

নানান রঙের স্মৃতির পালক, যখন আমি ছোট্ট বালক! -০৫
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×