ভিওআইপি নিয়া আবার তুলকালাম শুরু হৈসে । অবৈধ(!) এই ব্যবসাটা নিয়া লোকজনের কৌতুহলের যেমন শেষ নেই , তেমন ভুল জানার ও শেষ নেই । লোকে বলে সবজান্তারা আর নেতা সব ব্যাপারেই কথা বলতে পারেন ।
আমি ১২ বয়সে একসময় নিজেরে সবজান্তা দাবী করতাম --
পুরান সেই দাবীর লেজ ধইরা এখন এই পোষ্টের অবতারনা করতাসি !
এখন অবশ্য ভুলেও নিজেরে সবজান্তা বা নেতা ভাবি না । তবে কেউ কেউ
ভাবেন -- তাই ভুল লোকের হাতে ভুল প্রসংগ -- বান্দরের হাতে আয়নার কাম হৈতে পারে । এইকারনে ভিওআইপি খুব কাছ থেকে দেখার কারনে
আমার দুই পয়সা যোগ করলাম জ্ঞানের স্রোতে ।
ভিওআইপি কি?
একবারে নবীশ না হলে সবারই জানার কথা -- ভিওআইপি হলো ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল। ইন্টারেনেট প্রটোকল হলো নেটওয়ার্কের ভাষা ।
সব ভাষার যেমন শব্দ গঠন, গ্রামার ইত্যাদি নিয়ম আছে , তেমন নেটওয়ার্কও আর অনেক প্রটোকলের মতও এই বিশেষ প্রটোকলে অন্য নেটওয়ার্কের সাথে কথা বলে।
তো এই প্রটোকলে সব ডাটা প্যাকেট সেন্ড আর রিসিভ করা হয়।
ডেটা তো ভালো জিনিস -- মজা তখন শুরু হলো যখন ভয়েসকেও রিয়েলটাইমে প্রসেস করে প্যাকেট হিসাবে ইন্টারেনেট ছেড়ে দেয়া গেলো।
আগের সুইচসার্কিটে নেটওয়ার্কিং এ কল রেট ছিলো ঘি-মাখনের মতও দামি বস্তু । ইন্টারনেট সব জায়গায় সহজ লভ্য হবার কারনে ভিওআইপি প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠলো ।
আমি উইকি/নেট না ঘেটে স্মৃতি থেকেই বলছি -- সালটা মনে হয় ১৯৯৮
যখন ভিওআইপি আমেরিকাতে টেষ্ট বেসিসে চালু হয় ।
প্রথম প্রথম ব্যান্ডউইথ মেলা দামি ছিলো আর কল কোয়ালিটিও ভালো ছিলো না । তাই এই প্রযুক্তিটা জনপ্রিয় হতে একটু সময় লাগে।
** আমাদের না জানা জ্ঞান একটু সংশোধন করি এই ফাকে >
তার মানে আপনি যখন আপনার ঘরে একটি পিসি -- কিংবা একটা ভিওআইপি ফোন সেট নিয়ে আসেন সেই মূহুর্তে আপনি ভিওআইপির গ্রাহক
হলেন **
(ঘাবরাবার কিছু নেই -সরকার জানে আপনি ভালো মানুষ!)
কিভাবে -- আমি বা আপনি পিসির মাধ্যমেই এখন যে কোথাও কথা বলতে পারি । স্কাইপ বা আই এম গুলো তও ভিওআইপি সরাসরি সাপোর্ট করে ।
ভিওআইপি ব্যবসার খুটিনাটি
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ভিওআইপি একটা খুবই ভালো ব্যবসা । প্রধান কারন বাংলাদেশের ৮০ লক্ষ লোক দেশের বাইরে থাকেন ।
বর্তমানে এর রিটার্ন রেট কম । ১৯৯৯ - ২০০৭ পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যবসার সব মূলধন উঠে আসার নিশ্চয়তা ছিলো ।
বর্তামানে অনেক কম্পিটিশন বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসাতে তেমন লাভ নেই হয়তো । তারপরও গড়পড়তা অন্যান্য সেক্টর থেকে এই সেক্টরে প্রচুর লাভ।
ভিওআইপি ব্যবসা মূলত সার্ভিস বেজড বিজনেস । মূল ভোক্তারা দেশের বাইরে থাকেন । তারা কার্ড ফোন কিনে বা সরাসরি দেশে কল করেন ।
বিদেশের ছোট ছোট কার্ড ফোন কম্পানি গুলো বড় রিসেলার দের কাছ থেকে পোর্ট বা মিনিট কিনে । সেই মিনিট গুলো বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানী বা ছোট ছোট ভিওআইপি প্রভাইডারের হাত দিয়ে টার্মিনেট হয়।
ধরা যাক বিদেশে কেউ ৫ সেন্ট/ মিনিট দিয়ে কল করছে । এখানে কার্ডফোন কম্পানি সেই ৫ সেন্টের কিছু পায় । কিছু অংশ ব্যান্ডউইথের পিছনে যায় । কিছুটা যায় বাংলাদেশের যারা অপারেট করে তাদের পকেটে । মূল অংশটা যায় দেশের অবস্থিত মোবাইল/পিএসটিন অপারেটর দের পকেটে।
এক সেন্টের অল্প অংশ খুব ছোট মনে হচ্ছে আপাত দৃষ্টিতে -- কিন্তু কয়েকলাখ মিনিট বা কয়েককোটি মিনিটের এক সেন্টের অংশটুকুই হাজার হাজার ডলারের ব্যবসায় পরিনত হয়
(আপাতত সিরিজ করি )
মনমর্জি আর পাঠকের প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করে চলবে ...।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১০ সকাল ৭:৫৭