somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শূন্য দু’গুণে শূন্য [ছোটগল্প ]

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চারদিকে মানুষ। মাঠে মানুষ। ঘরে মানুষ। রাস্তায় মানুষ। লাইনে মানুষ। আড্ডায় মানুষ। বাজারে মানুষ। অফিসে মানুষ। চায়ের দোকানেও মানুষ। নানা ধান্ধার মানুষ। নানা বর্ণের মানুষ। নানা বিত্তের মানুষ। রকমারি পেশার মানুষ। ‘পৃথিবীর সব স্বল্প জন্মহারের দেশের জন্ম পোষাতে আল্লাহর সুনজর এখন আমাদের দেশে’। কথাটা বলেই আঁতকে ওঠে রতন। আবার তাকায় তার দৃষ্টি সীমায়। রতন কথাটা ফিরিয়ে নিতে চায়। স্রষ্টার নামে বেয়াদবি করে ফেলেছে, এমন একটা অনুশোচনা নেমে আসে রতনের ভেতরে। অনুভবটা আরো গভীর হওয়ার আগেই তার সামনে উদয় হয় কাজল। ‘চুদির পুত কোমবালা থাইক্যা তোমারে বিচরাইতাছি! থাহো কই?’ বলেই থাপ্পর লাগায় রতনদের কনিষ্ঠ কাজের ছেলেটার গালে।

কাজলের আচরণে রতনের রাগ উঠার কথা। রাগ ওঠতেও চাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ওঠেনি। রতন ইদানিং রাগ হজম করার প্র্যাক্টিস করতেছে। বেশ ক’বছর ধরেই কাজল দেখছে রতনের মধ্যে মালিক মালিক কোন ভাব-সাব নাই। অথচ কাজল জানে “মালিকের পুলাপান শহরে পড়াশুনা করলে তাগোর দেমাগের কাছে মানুষ বইল্যা কিচ্ছু থাহে না।” রতনের ভেতর কেমন যেন একটা উদাসীন উদাসীন ভাব। তাজেলকে থাপ্পর দিয়েই সে রতনের দিকে তাকায়। কিছু নীতি কথা শুনবে এমনটাই আশা ছিল তার। রতন কিছু বলেনি দেখে কাজলই প্রশ্ন করে, ‘‘ছুডু ভাই তোমার মতিগতি তো বালা দেখতাছি না। ব্যাহারটা কিতা?”
- এসব তুমি বুঝবা না। যাও কামে যাও। ও আচ্ছা এত মানুষ কেন আজকে এই এলাকায়?

রতন জানে না এত এত মানুষের জমায়েতের কারণ কী। অথচ রতনের মত অনেক ছেলেকইে সে দেখছে চরম ব্যস্ত। তার ভেতরে কিছুটা হীনতা আসছে। কেন সে সবার মত না। কেন সে এসব সামাজিক বিষয়ে জানে না। তবে কি তার বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা তাকে আনসোস্যাল করে দিচ্ছে। আরো অনেক কথা তার মাথায় আসছিল। এমন সময় কাজল দাঁত কেলিয়ে বলে, “আরে আফনে তো দেখতাছি দরবেশ হয়ে যাইতেছেন। আজগোয়া গরীবগোরে চেয়ারম্যানে মাল দিবো। হেইল্লাইগ্যা এইহানো অত মানুষ। তয়, ছুডু ভাই! এইহানো গরীব মানুষ কমই আছে। এই দেহেন না আমি ও তাজেল মাল পামু না।” রতনের খুব ইচ্ছে হচ্ছিল জানতে, কেন কাজল মাল পাবে না। ইচ্ছেটা দমাতে হলো। নয়তো কাজল তাকে বোকা ভাবতে পারে। এইমনিতেই কাজের লোকেরা রতনকে কিছুটা হাবাগোবা ভাবে।

রতনের ভেতরে মানুষের প্রতি প্রবল ভালোবাসা কাজ করে। আবার সে প্রচণ্ড রাগী। সেই সঙ্গে সে অনেকটা ভীতু। ভয় পেলে কথা বলে তোতলাতে তোতলাতে। তাকে যখন কেউ তোতলা বলে ডাকে। তখন তার ইচ্ছে হয় রাজনীতি করার। দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট নিদেন পক্ষে একটা মন্ত্রী হবার প্রবল প্রেরণা সে অনুভব করে। স্বপ্ন দেখে সে মন্ত্রী হলে দেশে কেউ কাউকে তার দুর্বলতা নিয়ে খোটা দিতে পারবে না। কঠোর একটা আইন থাকবে। অন্ধকে অন্ধ, তোতলাকে তোতলা, বোবাকে আব্রা, পা হারাকে ল্যাংড়া, খাটো মানুষকে বাউনা ইত্যাদি বলে যারা- তাদেরকে ছোট করেতে চায়, তাদের এই আইনের আওতায় দুষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। যখনই এই ভাবনাটা ভাবে, তখনই রতন আবিষ্কার করে সে প্রচণ্ড বোকা। এদশে স্বপ্ন দেখার একটা নির্দিষ্ট যোগ্যতা লাগে। সেটা রতনের নেই। সে মনে করে বোকারাই নিজের যোগ্যতার পরিধি নিয়মিত ভুলে যায়। বইয়ের ভেতর বা পত্রিকার ভেতর মনযোগ দিয়ে খারাপ হওয়া মনটা ভাল করতে চায় রতন। না! আবারও তার মন খারাপ হয়। দেখতে পায় সে শুধু বোকাই নয়; অনেকটাই ব্যাকডেটেড। মানুষ মন ভালো করার জন্য কত রকমের আয়োজন করে। সে কিনা এমন মাল্টিআয়োজনের যুগে বই-পত্রিকায় মন ভাল করার দাওয়াই খোঁজে। রতন নিজেকে নিয়ে পজেটিভ ভাবনাটা একেবারেই ভাবতে পারে না।

০২.
রতনের ভেতর আবার মানুষ ভাবনাটা ফিরে আসছে। মুখ ফস্কে বেরিয়ে আসা আগের উক্তির জন্য এখন কোন ভয় পাচ্ছে না সে। তার ধারণা যিনি পরম দয়ালু তিনি তার এসব অপরিণত ভাবনাকে ক্ষমা করে দেবেন। ‘ক্ষমা’ শব্দটা মনে করেই সে আবার গভীর চিন্তায় আটকে গেল। এবার তার খুব কষ্ট হতে লাগলো। ‘ক্ষমা’ শব্দটার প্রতি তার অনেক লোভ ছিলো। কিন্তু তার জীবনে কখনই ‘ক্ষমা’ শব্দটি আসেনি। গত ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে নিজের বাবাকে ভোট দেয়নি সে। বাবাকে বলেছিল, তুমি তো কখনই মানুষের জন্য ভালো কোন চিন্তা করো না। তুমি কেন জনপ্রতিনিধি হবে? প্রতি রাতে মাকে মারধোর করো, আমদেরকে কখনই তুমি ভালোবেসে মানুষ হবার কথা বলোনি। তবে তুমি কীভাবে সমাজকে শাসন করবে? রতন ভাবছিলো সে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ে, বাবা তার কথা শুনে নতুন করে ভাবতে শিখবে। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নিজেকে সংশোধন করার চেষ্টা করেবে। কিন্তু হলো বিপরীতটা। বাবা তাকে ক্ষমা করেন নি। নিজ পিতাকে ভোট না দেওয়ায় পিতা ছেলেকে সমাজে ‘মাথার স্ক্রু ঢিলা’ বলে প্রতিষ্ঠিত করে দিলো। এতে অবশ্য তার বেশি মন খারাপ হতো না। মন খারাপ হলো তার প্রিয় স্যারকে এর মাশুল গুণতে হলো। রতনের বাবা পাশ করেই বললো, “পাশা মাষ্টর আমার পুলাকে আমার বিপক্ষে নিয়া গেছে। এই এলাকায় পাশার জায়গা নাই।” সেই থেকে পাশা স্যার স্কুল থেকে সাসপেন্ডে আছেন। আজ তিন বছর। এখানেও সেই ‘ক্ষমা’। রতন নিজেকে ক্ষমা করতে পারে না। সে ভাবে তার জন্যই পাশা স্যারের এমন দুর্দিন নেমে এসছে। অনেকবার সে পাশা স্যারের কাছে ক্ষমা চাইতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু সে কোনভাবেই স্যারের মুখোমুখি হতে পারেনি।

তাহলে মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কি অমানুষও বেড়ে যাচ্ছে। রতনের মনে এই প্রশ্নটা নতুন করে জেগে ওঠলো। প্রশ্নটা নিয়ে সে ভাবছে। ভাবতে ভাবতেই বলে, ‘দেশে কি মানুষ বাড়ছে না অমানুষ বাড়ছে?’ প্রশ্নটা করেই হেসে ওঠে! ‘নাহ আমি তো দেখছি ভালোই আনমনা হয়ে গেলাম।’ রতনের আশপাশে তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত কেউ নাই। তবুও তার প্রশ্নটা একজন শুনে ফেলে। সে বলে, রতন আমরা মুর্খ-সুর্খ মানুষ। এসব কইতে পারুম না। তবে এইডা অবশ্য জানি, কার কাছে গেলে কার্ড পামু, কার কাছে গেলে টিআর পামু, কারে কোন মামলায় আটকাইলে ফকির বানানো যাইবো, চেয়ারম্যানের লাইগ্যা কার মেয়েরে কোন দিন সপ্লাই দেওন যাইবো। রতন লোকটাকে কষে একটা ধমক দিতে পাশ ফিরে তাকায়। রতনের কলিজা শুকিয়ে যায় তাকিয়েই। চেয়ে দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে স্বয়ং তার বাবা! রতন লজ্জায় কুঁকড়ে যায়। হেসে ওঠে মহিবুল চেয়ারম্যান। ক্রম-নিলর্জ্জ পৃথিবীর একটা ট্রেইল যেন দেখতে পায় রতন। নিজেকেই প্রশ্ন করে, ‘কে পাগল; আমি না বাবা?’

রতনের মনে আবার সেই মানুষের চিন্তা। সে ভাবতে পারছে না, কেমনে একজন বাবা নিজ সন্তানকে সমাজের কাছে পাগল বানিয়ে দিতে পারে! অথচ তার সেই পাগল ছেলেটিই একমাত্র সভ্য। তার নামে কোন স্ক্যান্ডাল নেই। সামাজের কেউ কোনদিন তার নামে কোন কমপ্লেইন নিয়ে আসেনি। সেই একমাত্র ছেলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভাল বিষয়ে পড়ে। অন্য সবগুলো ছেলে মাধ্যমিকেই ফাইনাল!

“তাহলে, রাজার নীতি কি কেবল রাজাদের জন্যই তৈরি? নষ্ট মানুষের জন্য? এটা কি মানুষের জন্য নয়? রাজারা যেমন উদার হবার কথা; তাদের নীতিও তো এমন উদার হবারই কথা। কিন্তু কই! আমার বাবা তো রাজনীতির মোহে স্বজনের অধিকারটাও কেড়ে নিয়েছেন। নিজের সন্তানকে পর্যন্ত প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিব্যি পাগল সাজিয়ে দিয়েছেন!” তার ভাবনা আর সামনে যেতে পারে না। চোখ দুট ঝাপসা হয়ে ওঠে। ‘এখন আমাকে কিছুক্ষণ কাঁদতে হবে। কান্নার পর আবার না হয় মানুষ নিয়ে ভাবাবো।’ শুন্যের কাছেই বলে সে। স্তব্ধ শুন্যতা কোন উত্তর দিতে পারে না।

ইউনিয়ন অফিসের চারপাশে এখন মিছিল-মুখরতা। এই অঞ্চলে এত গরীব মানুষ রতনের কখনই মনে হয়নি। কিছুটা কৌতুহল নিয়ে সে এগিয়ে যায়। ঢুকে যায় মানুষের ভেতর। মাত্র কয়েক মিনিটেই ঘৃণায় তার পুরো শরীর গুলিয়ে ওঠে। রাগে সারা শরীরে কাপন শুরু হয়ে যায় তার।

সে দেখতে পায় অতি দরিদ্রদের জন্য আসা চালের জন্য যারা আসছে তারা প্রায় ষাট পার্সেন্টের কেউই গরীব না। সবচেয়ে যেটা তাকে আহত করছে সেটা হলো। অনেক গরীব লোক তার কাছে অভিযোগ করেছে, “রতন, চাউল দিবে দশ কেজি। আমারটাইনতো তোমার বাইয়ে টেহা নিছে পাশশো। অহন কউ তো আমার লাভটা কীতা অইছে?” রতনের রাগ বাড়তেছে। তোতলামীও বাড়বে। দ্রুত সে বেড়িয়ে আসে। সিদ্ধান্ত নেয় আজই সে চলে যাবে। বন্ধুদের মেসে ক’দিন থেকে হল খোললে, হলে ওঠবে। এরপর ডাক্তারের কাছে গিয়ে রাগ কমানোর নতুন টিপস নিবে। এবার পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা, ছাত্র রাজনীতি, সমাজনীতি ইত্যাদির ওপর গিয়ে পড়লো তার রাগ। “ছাত্রদের কল্যানে যে রাজনীতি সেই রাজনীতির জন্য যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধই রাখতে হয়; তাহলে কোন বালের রাজনীতিটা তোমরা করছো!” আঞ্চলিক গালিটা অনেক দিন পর অজান্তেই মুখ ফষ্কে বেড়িয়ে আসায় ভেতরে ভেতরে কিছুটা লজ্জা অনুভব করে সে। অথচ দেশের বর্তমান ‘রাজনৈতিক গালি চর্চার সভ্যতায়’ এই গালিতে তার লজ্জা পাওয়ার কথা না।

০৩.
রতনকে বিদায় দিতে গিয়ে মা নুরেছা বেগম বলেন, বাবা! “পাগলের চোখে সবাই পাগল। চোরের দৃষ্টিতে সবাই চোর। দানবিক মানুষের সঙ্গে মানবিক মানুষের সংগ্রাম চলতে পারে না। মানুষের ভেতরের সুন্দর কোষগুলো মরে গেলে সেই মানুষ আর মানুষ থাকে না। এদেশের রাজনীতিতে সুন্দরের মড়ক লেগেছে। এই মড়ক-মহামারির ফানুসে যেই দেহ ডুবাবে তারই সুকুমার কোষ মরে যাবে। ক্ষমতার জটিল পথে প্রতিটা মানবাত্মা এক একটা কীটের চেয়ে কোন অংশেই ভালো হতে পারে না।” কথা বলতে বলতে কাঁদছেন তিনি।

নুরেছা বেগম একজন কলেজ শিক্ষিকা। মহিবুল আলমও ছিলেন স্থানীয় রাজনীতিতে একজন সৎ নেতা। নুরেছা বেগম যখন মুশুলী কলেজে চাকরীর ইন্টারভ্যূ দিতে আসেন, তখন মহিবুল আলম সেই কলেজের সভাপতি। নুরেছা বেগমকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় তার। তখন তিনি নুরেছা বেগমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যদি তারা বিয়েতে রাজী হয় তাহলে চাকরী হবে। অবশেষে মহিবুলের শর্ত মেনেই চাকরিতে জয়েন করেন নুরেছা বেগম। প্রথম দিকে মহিবুল টুকটাক রাজনীতি করতেন। পাশাপাশি রড-সিমেন্টের ব্যবসা করতেন। একসময় আপাদমস্তক পলিটিশিয়ান হয়ে যান তিনি। তখনই শুরু হয় তার ভেতরের বিবর্তন। সংসারে মনোযোগ কমে যায়। জুয়া ও নেশার সঙ্গে বহুগামী হয়ে ওঠেন তিনি। আচরণ হতে থাকে রুক্ষ। মানবিক বোধগুলো হয়ে ওঠে ভোঁতা।

‘মা তুমি কাঁদছো! তোমার কান্না আমাকে অসহায় করে দেয়। তুমি কেঁদো না।’ বলেই রতন হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।
- বাবা রতন, তোমার বাবাও একসময় স্বপ্ন দেখতো একা একা সংগ্রাম করেই পৃথিবীটা বদলে দেবে। কিন্তু ক্ষমতা বড়ো খারাপ জিনিস! এর প্রভাবে মোমও ধারালো দা হয়ে যায়। আশিতিপর বৃদ্ধ নতুন যৌবনের স্বপ্ন দেখে। তোমার বাবাও নষ্ট হয়ে গেলো। সেই সঙ্গে তোমার মত একজন সন্তানকে নিয়ে ধ্বংসের খেলায় মেতে ওঠলো। সো, নিজেকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখো। এই দেশে, এই কালে রাজনীতি হলো মানুষের ভেতর মানুষটাকে হত্যা করার মেশিন।
- মা, তুমি আমার পাশে থাকলে আমি অবশ্যই একটা ইতবাচক পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাবো আমার পরিবারটাকে। দেখো একদিন বাবা তার ভুল বুঝতে পারবে।
- রতন, কুকুরে কুকুরে সঙ্গমে কুকুরই জন্ম নেয়। অন্ধকার কখনই আলোর কামনা করে না। গাধার গর্ভ থেকে গাধাই জন্ম নেবে। তুমি দেখবে, কয়েকজন অকর্মন্য ও ‘অলীক আশায় বসতি করা মানুষ’ এক সঙ্গে বসলে তাদের কথাগুলোও অলীক হবে। গ্রামের জমিক্রয় ফোবিয়া আক্রান্ত কয়েকজন কৃষক এক সঙ্গে বসে জমি ক্রয় ছাড়া কোন আলাপ করতে পারে খুব কমই। তেমনি রাজনীতিবিদ আর রাজনীতি মনষ্ক সমাজের মিথস্ক্রিয়ায় কখনই শান্তি ফিরে আসবে না। তুমি দেখবে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন পলিটিক্স। মেয়ে বিয়ে, জমির বিরোধ, মান-অভিমান, সামজিক ভুল বুঝাবুঝি সবই এখন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সমাধান হচ্ছে। প্রতিটা মহল্লার আড্ডাখানাগুলো এক একটা জাতিসংঘ হয়ে ওঠছে যেন। এমন একটা ক্রান্তিসময়ের উত্তরণ কেবল মহামানবের পক্ষেই সম্ভব। তোমার মত সেনসেটিভ মনের কোন বালকের কাজ নয় এটা। তাই বলছি, পড়াশুনা করে বড় হও, নির্বিকিল্প হও। তোমার বাবা যেন তার শেষ পতিত সময়ে তোমাকেই একমাত্র আশ্রয়স্থল ভাবতে পারে, গভীর বিশ্বাসে। সেই দিকেই পথ হাটো। হয়তো তোমার স্বপ্ন কিছুটা বাস্তবায়ন হতে পারে।

মায়ের কথায় রতনের হতাশা আরো বেড়ে ওঠে। অবাক হয়ে ভাবে এত বড় একটা সংসার সামলানো। বাবার অত্যাচার বকা-ঝকা সহ্য করা। নিজের চাকরি করা। এর পরও এতসব ভাবেন মা! ভাবতে ভাবতে তার চিন্তা-সূত্র খেই হারিয়ে ফেলে। আর ভাবতে পারে না। মেঝো ভাই মোটর বাইক নিয়ে হাঁক ছাড়ে, “আই রত্না, তাত্তাড়ি আয়। আমার মিটিং আছে। তরে আগায়া দিয়া আমি কিশোরগঞ্জে যামু।” চারটা ভাইয়ের মধ্যে এই মেঝোটাই সবার ছোট রতনকে কিছুটা পছন্দ করে।

রতন বেড়িয়ে যায় দ্রুত। বাস টার্মিনালে নামিয় দিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার আগে পকেটে গুঁজে দেয় কয়েকটা টাকা। বলে, “তুই আর বাড়ি আসিস না। যা লাগে আমারে জানাইস। বুঝলি!” রতনের উত্তরের অপেক্ষা না করেই সাঁই করে চলে যায় সে।

রতন বাসে ওঠে বসে। রাজশাহীর বাস। হঠাৎ করেই তার মনে আবার মানুষ ভাবানাটা জেগে ওঠে। নিজের সঙ্গে নিজেই কথা বলে ওঠে সে। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ জন্মের সময় কত অসহায় হয়ে জন্মে। অথচ সময় পরিক্রমায় কেউ হয়ে ওঠে মানব, কেউ দানব, কেউ গলগ্রহ, কেউ দাতা, কেউ গ্রহীতা, কেউ অসহায়, কেউ ঔদ্ধত্য, কেউ দুর্বিনিত, কেউ ক্ষমতার কেন্দ্র, কেউ আদর্শের বাতিঘর, কেউ ধ্বংসের কারিগর, কেউ স্বাপ্নিক, কেউ নিথর বোধের জড় আরো কত শত ক্যাটাগরির হয়ে মানুষ জীবনের রাজপথ ধরে মৃত্যুর মিছিলে হেঁটে যায়! অথচ কেউ সেই মিছিলের স্লোগান ধরে না। সবাই নিজেরে ভেতের নিজেই ‘আমি’ হয়ে করে যায় আমিত্বের চাষবাস। অল্প ক’জন যারা আমিত্ব বিনাশ করে জাগতে চায় তাদেরকে পাগল বানিয়ে দেওয়া হয়। যেমনভাবে আমার বাবা আমাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছেন ক্রমাগত। কিন্তু কেন? পৃথিবীতে ইতিহাস বিষয়টার তাহলে কী প্রয়োজন? ইতিহাস পাঠে তাহলে কী লাভ হচ্ছে এই মানব জাতির? রতন জানে এসব প্রশ্নে উত্তর সবার কাছেই আছে। কিন্তু কেউ এসব উত্তরের ধারধারে না। এই সময়ে- চকচকে রঙ্গিন, ক্ষণিক বর্তমানের পুজারি সবাই ।

দূরপাল্লার বাস এগিয়ে চলেছে দ্রুত। বাসের গতির সঙ্গে রতনের মনোজগতেও চিন্তার উত্থান-পতন ঘটছে সুপারসনিক গতিতে। তার চিন্তার চারপাশে কেবল একটাই কীভাবে ফেরাবে নিজ বাবাকে? কীভাবে জাগাবে পিতার সুকুমার-কোষ? কীভাবে মানুষের ভেতর মনুষ্যত্বের বোধ ফিরে আসবে?

০৪.
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়নি এখনো। আজ পনের দিন হলো রতন রাজশাহীতে। খোলা হওয়ার কোন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। প্রচণ্ড রাগ দেখাতে ইচ্ছে করছে তার। দেখাচ্ছে না। তোতলামীটা সে ছাড়তে চায় জীবনের জন্য। রাগ ওঠলেই তার তোতলামী শুরু হয়। তখন একটা শব্দ উচ্চারণ করতে তার কখনো কখনো দশ মিনিট পর্যন্ত লেগে যায়। অথচ রাগহীন রতনকে দেখে কেউ কল্পনাই করতে পারবে না যে, তার এমন একটা সমস্যা আছে।

কী করা যায়! এই ভাবনা থেকেই একজন স্যারে সঙ্গে ফোন দিয়ে দেখা করে সে। স্যার তাকে বাড়ি না গিয়ে ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দেন। একটা চিঠিও লিখে দেন স্যারের একজন আইনজীবি বন্ধুর কাছে। বলেন সেই বন্ধুর সঙ্গে থেকে কিছুদিন আইনের বাস্তব শিক্ষা নিতে। আইনের ছাত্র হিসেবে রতনের জন্য এটা একটা বিরাট পাওয়া। রতন স্যারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ঢাকার পথ ধরে।

০৫.
ঢাকায় আসার পর থেকে রতনের মনটা বেশ ভাল। যে ব্যারিস্টারের সঙ্গে সে কাজ করছে, তার প্রতি রতন মুগ্ধ। তার প্রতিটি কথায়, কাজে ও আচরণে রতনের মুগ্ধতা যেন কাটতেই চায় না। রতন একজন সত্যিকারের মানুষের সন্ধান পায়। যখনই এই মানুষটার কর্ম ও চরিত্রের সঙ্গে তার পিতাকে মিলাতে যায় তখনই তার মনটা খারাপ হয়ে যায়। অবশ্য, রতনের থাকার জায়গাটা হয়েছে সেই ব্যারিস্টারের অফিসে। পাশের একটা মেসে খাওয়া দাওয়া করে সে। এক সকালে রতন বসে আছে অফিসের বারান্দায়। কিছুটা আনমনা হয়েই বসে ছিল সে। এমন সময় কাঁধে একটা হাতের স্পর্শ পায় রতন। পাশ ফিরতেই দেখে ব্যারিস্টার সোবহান সাহেব হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। রতন তখনই বলে ওঠে আহ! আমার বাবা যদি এমন করে কখনও হাসতেন!
- কেন তোমার বাবা হাসেন না?
- না স্যার। আমার এই ক’বছর জীবনে বাবাকে হাসতে দেখিনি। মা বলেছেন এক সময় তিনি হাসতেন। যখন থেকে তিনি আপদমস্তক রাজনীতিবীদ হয়ে গেছেন তখন থেকে তার মুখের হাসি থেমে গেছে। এখন তার হাসিকে হায়েনার উৎসব মনে হয়! তিনি যখন হাসেন তখন অবধারিতভাবে কাউকে না কাউকে উপহাস করার জন্যই হাসবেন!
- বলো কি নিজেরে বাবাকে নিয়ে তোমার এমন মূল্যায়ন! আমি সত্যি একজন বাবা হিসেবে চরমভাবে লজ্জিত হচ্ছি। হুমায়ুন আহমেদ বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে একজনও খারাপ বাবা নেই’। কিন্তু আজ আমি কী শুনলাম! স্যার বেঁচে থাকলে আমি তাকে এই বাবা সম্পর্কে প্রশ্ন করতাম। বলতে বলতে সোবহান সাহেব কিছুটা হয়রান হয়ে যান। তার সব কথা থেমে যায়।

রতনের দু’চোখ দিয়ে অঝোরে করে ঝরছে নোনাজল। কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না নিজেকে। খেলনা হারানো শিশুর মত ডুকরে ওঠে নিমিষেই। সোবহান সাহেব অপ্রস্তুত হয়ে যান। রতনকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। হঠাৎ করেই সোবহান সাহেবের মনে পড়ে যায় তার কোন ছেলে সন্তান নেই। একটা ছেলে সন্তানের আশায় এক এক করে পাঁচটা মেয়ে সন্তান নিয়েছেন তিনি। ভাবানায় পড়ে যান তিনি রতনকে কি বলা যায়! ভাবতে ভাবতেই তিনি রতনকে বলেন- “বাবা, রতন তুই কাঁদিস না। আজ থেকে আমিই তোর বাবা। তোর দুঃখ কষ্ট আমার কাছেই বলবি।” সোবহান সাহেব আশা করছিলেন রতন কিছুটা শান্ত হবে। কিন্তু রতনের কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন বর্ষার নদীর বাঁধ কেটে দিয়েছে। রতনকে শান্ত করাটা এখন বড্ড হ্যাপা হয়ে ওঠছে।
- স্যার, আপনি আমার পিতৃত্বের অধিকার দিতে চেয়েছেন। আমি খুব আনন্দিত। সেই সঙ্গে গর্বিতও। কিন্তু আমার একজন পিতা আছেন। তিনি সভ্য জগতের বাসিন্দা হয়েও একজন অসভ্যের মত জীবন-যাপন করবেন, সেটা আমি একজন সচেতন মানুষ হিসেবে কীভাবে মেনে নেব? কীভাবে মেনে নেব পিতা হয়ে সন্তানকে তার কুকর্মের সহযোগী না পেয়ে তাকে পাগল বলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া। বলতে বলতে রতন পিতার পুরো কাহিনী বর্ণনা করে।

সোবহান সাহেব কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও সহজেই সামলে নেন। এমন অসংখ্য ঘটানাই তিনি জানেন। কিন্তু তিনি যেটা জানেন না। সেটা হলো, এমন পিতাদের বিপক্ষে সন্তানের ক্ষেপে ওঠার কোন ঘটনা। তিনি ভাবতে থাকেন এমন করে যদি সমাজের কিছু মানুষ ভাবতো তাহলে সমাজটা বদলে যেতো। রতনকে প্রশ্ন করেন, তুমি কী ভাবছো তোমার বাবাকে নিয়ে?
- আমি ভাবছি আমার পিতার বিপক্ষে আমি নিজেই রাজসাক্ষী হবো। সব কিছু বলে দিয়ে মামলা করবো। আমি নিজেই পুরো দেশকে দেখিয়ে দেবো; অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া নয়। অন্যায়ের প্রতিবাদই হোক প্রতিটি শিক্ষিত ও সৎ মানুষের লক্ষ্য।
- চমৎকার একটা বিষয় হবে। মিডিয়া কভারেজও পাবে ভালো। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবে, তোমার জেতার সম্ভাবনা খুবই কম। দেখা যাবে তোমাকে পাগল বলে প্রমাণ করে তোমার পিতা জিতে যাবেন। কারণ, মনে রেখ! অসার চিন্তা আর অলিক আশায় চলছে আমাদের এই দেশের প্রতিটি নাগরিক। যে দেশের নাগরিক যেমন সে দেশের রাজনীতিও তেমন। যেখানে নাগরিকদের ধান্ধা থাকে সবসময় জিতে জাওয়া। চিন্তা থাকে রাষ্ট্র ও নিকটজনকে ঠকানো। সেখানে রাজনীতিবিদরাও তেমনই হবে। যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা থাকে কেবল ভোগ আর বিলাস। সেখানে রাজনীতিবীদরাও সেই সুযোগ নিবে। সেটাই চূড়ান্ত। দেখো আরবদেরকে পরিকল্পিতভাবে বিলাসী ও ভোগী বানিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাশীনরা। জনতাও সেই ভোগ আর বিলাসে ডুবে গেছে। তারা রাষ্ট্র ও রাজনীতি নিয়ে ভাবে না। তাই আরব রাজারা সমগ্র পৃথিবীর মুসলমানের প্রত্যাশার সঙ্গে প্রতারণা করে যচ্ছে নিয়মিত।

আমাদের এই দেশে মানুষের জন্য কেউ রাজনীতি করে না। রাজনীতি করে নিজের জন্য। আবার এইদেশের মানুষও দেশের জন্য তাদের মেন্ডেট দেয় না। দেয় দল অথবা পয়সাওলা দেখে। কখনো নির্বাচনপূর্ব নিজের প্রাপ্তির অনুপাতে রায় প্রদান করে। এখানে রাজনীতিবিদরে ভেতরেও শূন্যতা জনতার ভেতরেও শূন্যতা। এবার বলো শুন্য দু’গুণে কী হতে পারে?
- স্যার আমার মাও বলেন একই কথা। তিনিও বলেছেন ‘শূন্য দুগুণে শূন্যই হয়’। তাহলে আমি এখন কী করবো স্যার? আমি চাই যিনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন, তিনি একজন মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে বসবাস করুন। মানুষ হয়েইে পরজগতে সফর করুন।
- তুমি নিজে তোমার বাবার চেয়ে বেশি পাওয়ারফুল হও। নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ দিসেবে গড়ে তোল। ঈর্ষনীয় পার্সোনালিটি নিয়ে তুমি তোমার বাবার সামনে দাঁড়াও। দেখবে একদিন তিনি তোমার চিন্তার কাছে হারবেন। আশা করি ফাইনাল দিয়েই তুমি একজন ভাল আইনজীবি হিসেবে সুনাম করবে।

০৬.
সোবহান সাহেব কিছুটা বিমর্ষ হয়ে বাসার দিকে চলে গেলেন। নিজেকে নিজেই জিজ্ঞেস করেন, মানুষের ভেতরের মানুষ এতটা সুন্দর হতে পারে? রতনের মত। যেখানে মানুষের মনোজগত প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে নেতিবাচকভাবে; সেখানে এমন ইতিবাচক ধারণার যুবকদের ঠাঁই কোথায়? ভাববনাটা তিনি এখন এড়িয়ে যেতে চাচ্ছেন। আজকে বেশ ক’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলা আছে। তাই, তিনি মামলা নিয়ে ভাবাতে থাকেন।

অপর দিকে রতন চুপসে যাওয়া বেলুনের মত আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে বিরবির করতে লাগল, শূন্য দু’গুনে শূন্য! শূন্য দু’গুনে শূন্য!! শূন্য দু’গুনে শূন্য!!!

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮
৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×