তোমার সন্ধানে দেবাসুর তোলপাড় করেছিল অথৈ সমুদ্র!
আকাঙ্ক্ষার তীব্র মন্থনে উদ্ভূতা তুমি!
তোমার স্নিগ্ধতায় বিমোহিত হন দেবরাজ!
তাঁর আভিজাত্যর প্রতীক হয়ে স্বর্গকাননের শোভা বৃদ্ধি করো !
রানীর অহমিকাকে তোমার লাবণ্য দিয়ে সাজিয়ে তোলো!
আবার পুরুষোত্তমের হাত ধরে অনায়াসে নেমে আসো, এই ধরণীর ধূলোকাদায়!
আহত রাতকে ধারণ করো তুমি নিবিড় প্রেমে!
ভোরের শিশির তোমার সমস্ত রক্ত ধুয়ে দিয়ে যায়!
নিপুণ দক্ষতায় বিষাদকে ঢেকে রাখে তোমার শুভ্র পাপড়িগুলো!
মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা নিয়ে তুমি নির্নিমেষ তাকিয়ে দেখো প্রিয়কে!
তুমি সূর্য্যপ্রিয়া ! তুমি পয়োধি কন্যা পারিজাত!
সমুদ্রমন্থনের সময় অনেক কিছু জলের উপর ভেসে আসে! তারমধ্যে ছিল পারিজাত! দেবরাজ ইন্দ্র তাকে স্বর্গের নন্দন কাননে নিয়ে যান। এই ফুল ছিল ইন্দ্রাণীর প্রিয়! শ্রীকৃষ্ণ বলেন যেহেতু এই পারিজাত সমুদ্রজাতা, সেহেতু এর উপর পৃথিবীরও অধিকার আছে। তাই তিনি ইন্দ্রকে পরাজিত করে পারিজাতকে মাটিতে নিয়ে আসেন। আবার কথিত আছে পারিজাত সূর্যর প্রেমে পড়ে! তখন সূর্য্য বলেন একবার তিনি তাকে গ্রহণ করলে আর সে ফিরে যেতে পারবে না। তাই সে প্রচণ্ড দাবদাহ নীরবে সহ্য করে প্রায় ভস্মীভূত হয় তবু ফিরে যায় না । তা দেখে সূর্য মুগ্ধ হন ও তাকে বর দেন যে যখন তাঁর তেজ কম থাকবে তখন তিনি তার কাছে রাতে যাবেন। এজন্য পারিজাত শরৎকালে ফোটা শুরু করে গ্রীষ্মএর আগ পর্যন্ত। মন্থনে পারিজাতর পরেই দেবী জলের উপরে আসেন। মর্তেও পারিজাতফুল জানান দেয় দেবীর আসার সময় হয়েছে।
এতো গেলো পুরান কথা । তবে বিদ্রোহী কবিও আমাদের মাটির পারিজাতে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন' শিউলি তলায় ভোরবেলা...... '
সবাইকে শিউলি ফুলের শারদ শুভেচ্ছা । সবাই খুব ভালো থাকুন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬