এসেছে নতুন শিশু তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান!
হুমায়ুন আহমেদ চলে গেছেন। খবরটা পুরনো হয়ে গেছে। আর বলার কিছু নেই? হয়তো বলার অনেক কিছুই থাকে। আমি নিজেকে সামলে নিতে পারিনি সময়মত। সব চ্যানেলে চ্যানেলে তার স্মৃতিচারণ দেখে আমার চোখে পানি চলে আসছিলো। বার বার মনে হচ্ছিল, এ যেন সত্য নয়। সবাই মিথ্যা বলছে।
কিন্তু বাস্তবতায় কিছু অমোঘ সত্য থাকে। যা কখনই অস্বীকার করা যায় না। হুমায়ুন আহমেদ অনেক দূরের একটি দেশে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। চলে গেছে পৃথিবীর অন্য পাড়ে।
হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা উক্তি শুনে রীতিমত চমকে উঠলাম। তিনি বললেন, "আমি হুমায়ুনকে বলেছিলাম, তুমি শরৎচন্দ্রকেও ছাড়িয়ে গেছো"।
শরৎচন্দ্র আমার পড়া, হুমায়ুনও আমার পড়া। অথচ, কখনও ভেবে দেখিনি, তাইতো! আশ্চর্য অবলোকন ক্ষমতা সুনীলের। তিনি যে চরম সত্য কথাটি বলেছেন, তা বলার সাহস ক'জনের আছে আমার জানা নেই।
শ্রীকান্ত, দেবদাস, গফুর, মৃত্যুঞ্জয়ের মত চরিত্র আমাদের বাঙালি জীবনকে আন্দোলিত করে আজও! কি অদ্ভুতভাবে তারই ভেতর আমরা হিমু, মিসির আলী, শুভ্র, রূপার মধ্যে তলিয়ে গেছি!
আমার জীবনে পড়া হুমায়ুন আহমেদের প্রথম বই ছিলো "বোতল ভূত"। বোতল ভূতের কাহিনী অত্যন্ত সাদামাটা, কিন্তু হৃদয়গ্রাহি। বোতল ভূত থাকে বোতলের মধ্যে। সে আবার আলো বাতাস খেয়ে বেচে থাকে। কি অদ্ভুত স্বাদ পেয়েছিলাম তাঁর লেখায়!
তারপর পরই পড়েছিলাম হিমু উপন্যাসটি। হিমু চরিত্রটি একটি বারও কাউকে ছোয়নি, একথাটা বলা যাবে না। বরং হিমু বাংলাদেশে প্রত্যেকটি ভবঘুরে ছেলের দর্পণ!