somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিকটিনের স্বপ্ন গুলো

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি প্রতিদিন অনেক স্বপ্ন দেখি ইদানিং, হয়তো একটু আলস্য লাগছে দেখা গেলো ঠাস করে ঘুমিয়ে পড়েছি, আর তারপরেই স্বপ্ন। কিছু স্বপ্ন মনে থাকে না, কিছু স্বপ্ন থাকে, কিছু স্বপ্ন ভয়ের কিছু আনন্দের, কিছু স্বপ্ন সব কিছুর মিশেল। আজ আমার দেখা কিছু অদ্ভুত স্বপ্ন শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।

১.এই স্বপ্ন আমি সব থেকে বেশি দেখেছি, আমি অনেক ছোট বেলায় ফিরে গিয়েছি, নানুর গ্রামের বাড়িতে শীতে সকাল। উঠানে মাদুর পাতা সেখানে আমি উপুড় হয়ে ক্লাস থ্রির বাংলা বইয়ের গল্প গুলো পড়ছি। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি আর আমার নানু এসে আমার পিঠে কুসুম গরম সর্ষে তেল লাগিয়ে দিচ্ছেন যাতে ঠাণ্ডা না লেগে যায়। হয়তো কিছুক্ষন পড় নিজের হাতে বানানো চিতই পিঠা নিয়ে আসছেন, আমি খাচ্ছি আর পড়ছি কিন্তু একটিবারের জন্যেও নানুর দিকে তাকাতে পারছি না।
আসলে আমার নানু মারা গিয়েছে তাই অবচেতন মন আমাকে বারবার এই প্রিয় মানুষটির কাছেই নিয়ে যায়। অনেক অনেক চেষ্টা করেছি স্বপ্নের মধ্যে আমার প্রিয় এই মানুষটির মুখ দেখার জন্যে কিন্তু এখনো পারি নাই আমি।

২. এই স্বপ্নটা খুব মজার ছিলো আমার জন্যে আবার উদ্বেগের বটে। স্বপ্নে আমি চলে যেতাম নিজের বাচ্চাবেলায়। একটা পেন্সিল দিয়ে খুব সুন্দর একটা মেয়ের ছবি এঁকেছি, যারা ছবি আকেন তারা জানেন যে শুধু রেখা একেও ছবি আকা যায় আর আমিও ওরকম একটা ছবি এঁকেছি শুধু রেখা এঁকে। ছবির মেয়েটা চুপ করে বসে আছে, হটাৎ একটা ইরেজার কোথা হতে এলো কে জানে, এসেই সে পুরো পেইজের উপর মুছতে শুরু করলো, ভয়ে পেন্সিলে আকা পরীটা উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো, ইরেজারটা চেয়ারকে মুছে ফেলল আর তখন পরী কাঁদতে শুরু করলো। ইরেজার পরীর অশ্রু দেখে খুব বিব্রত হলো, সে বলল পরী তুমি আমাকে নেচে দেখাও যদি তোমার নাচ আমার ভালো লাগে তাহলে তোমাকে মুছে ফেলবো না আমি, পরীটা এই কথা শুনে প্রাণপণ নাচতে লাগলো, অদ্ভুত সুন্দর সেই নাচ দেখে আমি নিজেই মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বেচারী একসময় হাপিয়ে গিয়ে নাচ থামিয়ে দিলো, নাচ আমার খুব পছন্দ হলেও ইরেজারের একদম পছন্দ হয় নাই। সে বলল দেখো পরী তুমি আসলে একটা অকর্মা তোমাকে রেখে কিছুই হবে না, তুমি বিদেয় হও, তোমাকে আমি মুছে ফেলবো। পরীটা খুব ভয় পেলো আর তার চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা লাল রঙের অশ্রু পড়তে লাগলো । আমার স্বপ্ন এখানেই শেষ।

৩. এই স্বপ্নটা আমি আর দেখতে চাইনা, কিন্তু তাও অনেকবার দেখেছি। আপনার চক্ষু বন্ধ করুন পাঠক, চিন্তা করুন একটি পাহাড়ি ঢাল, সেই সরু ঢালের উপরে একটি মেঠো পথ, যার একপাশে গ্রানাইটের পাথুরে দেয়াল পাহাড়ের যে খাড়া দেয়াল কোন পাহাড়ি ছাগলের পক্ষেও অতিক্রম করা দুঃসাধ্য কিংবা অসম্ভব বলা যেতে পারে, আর অন্যপাশে অনেক নিচে সমুদ্রের পানি ভেঙ্গে পড়ছে, নিচ থেকে তাকালে দেখতে পাবেন নীল জলরাশি কিভাবে ভেঙ্গে পড়ছে পাহাড়ের গায়ে আর সেগুলোর সফেদ সাদা ভেঙ্গে পড়া। পৃথিবীর সব থেকে বেরসিক মানুশটিও হয়তো রোম্যান্টিক হয়ে যাবে। আমি সেই পাথুরে পথ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি অনন্ত পথের শেষে, জানি না পথের শেষে কি আছে তবে আমার পিছনেই আছে একটা লরি যার উদ্দেশ্য আমাকে চাপা দিয়ে চলে যাওয়া তবে সেটা আস্তে আস্তে চলছে, আমি যখন হাপিয়ে যাবো, যখন আমার আর পালাবার শক্তি থাকবে না তখন সে আমাকে চাপা দিয়ে চলে যাবে অর্থাৎ একটা কিছুটা স্যাডিস্টিক মৃত্যু, আর পথ যেন শেষ হচ্ছে না, আমি বারবার আপ্রান চেষ্টা করছি লরির নাগালের বাহিরে চলে গিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে আবার দৌড়াতে কিন্তু কিছুতেই ওটার নাগালের বাহিরে যেতে পারছি না এদিকে আমি সাতারো
জানিনা। যখন আমার দম ফুরিয়ে যায় ঠিক তখন আমার স্বপ্নটা শেষ হয়ে যায়, আর রিয়েল আমি হাপ ছেড়ে বাচি।


৪. এই স্বপ্নটা খুব সুন্দর, আমি হাত পা ভেঙ্গে হাঁসপাতালে পড়ে আছি, আমার সমস্ত স্মৃতি শক্তি হারিয়ে গেছে , এটা কিন্তু একধরনের অসুখ যদিও এই মুহূর্তে নাম মনে আসছে না। তো আমি তো কাউকেই মনে করতে পারছি না, কিভাবে হাত পায়ের এই অবস্থা তাও জানিনা, এর মাঝে দুইজন গ্রাম্য নারী পুরুষ আমার কেবিনে প্রবেশ করে, তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে আমার পরিচয় কি, আমি কই থাকি কি করি ইত্যাদি ইত্যাদি। খুব বিরক্ত হই তাদের কথায় আমি, এদিকে নিজের নাম নিজে মনে করতে পারছি না দেখে আরো বিরক্ত লাগে, সব কিছুর উপর বিরক্ত হয়ে পড়ি আমি, শেষে সেই কৃষক দম্পতি আমাকে তাদের ছেলে হিসেবে নিয়ে আসে। তারা আমার অনেক যত্ন নিচ্ছে, আর আমি পেলাম তিনটা ভাই দুইটা বোন। একটা ভাই আমার বয়েসী। বেশ কিছুদিন পর আমার হাত পা ভালো হয়ে যায়। আর আমি ওদের সাথে মিশতে শুরু করি, যদিও আমার শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা ওদের জন্যে একটু সমস্যা হয়ে দাড়ায়, ওরা সঙ্কোচবোধ করতে থাকে তাও এক সময় সঙ্কোচ শেষ হয়ে যায়। আমি আমার বয়েসী ছেলেটিকে নিয়ে প্রতিদিন নানান রকম দুস্টামীতে মেতে উঠতাম, কোনদিন যেতাম ঝাকি জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরতে কিংবা নৌকা নিয়ে চাঁদ রাতে ঘুরতে, আবার কোনদিন অন্যদের বাড়ির ফল চুরি, শীতে করতাম খেজুরের রস চুরি। এইসব করে বেড়াতাম। তো একদিন নৌকা নিয়ে ঘুরতে বের হলাম দুইজন আর হটাৎ করেই আমি নদীতে পড়ে গেলাম, যেহেতু সাতার জানিনা তাই আমার ভাই আমাকে বাচাবার জন্যে নদীতে লাফ দিলো, আমি শুনতে পাচ্ছি আমার ভাই আমাকে বাচাতে আসছে সাতার কেটে। আর আমার স্বপ্ন এখানেই শেষ হয়ে যায়।

৫. এই স্বপ্নটা অনেক রোম্যান্টিক। এই স্বপ্নে আমি বাস করি একটা গ্রামে। একদিন কি মনে করে একটা খুব সুন্দর ফড়িং ধরলাম। ফড়িঙের লেজে সুতো বেধে দিলাম, হটাৎ করে ফড়িং কথা বলতে শুরু করলো। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম তুমি ভূত নও তো? সে বলল সে ভূত নয়, সে হচ্ছে ফড়িং রাজপুত্র, আগামী বসন্তে সেই হবে সামনের খোলা মাঠের রাজা। সে আমাকে অনুনয় করে বলল যদি তুমি আমাকে ছেড়ে দাও আমি তোমাকে একটা বর দিবো। আমি বললাম দেখো আমার এনাফ সব কিছুই আছে, আর আমি ঘুষ নেইই না। তোমাকে আমি ছেড়ে দিচ্ছি কিন্তু আমাকে ঘুষ সেধো না। কিন্তু ফড়িঙটা সত্যি চলে গেলো। কয়েকদিন পর আরেক বিকেলে সেই ফড়িং এসে আবার হাজির। সে এসে আমাকে বলল তোমাকে আমি একটা জিনিস দিবো তোমাকে সেটি নিতেই হবে। আমি বললাম আমি নিবো না। সে বলল ঠিক আছে নিতে হবে তুমি শুধু আমার সাথে আসো। আমি অনেক কিউরিয়াস হয়ে ফড়িঙ্গের সাথে হাটতে লাগলাম। একসময় ফড়িং আমাকে একটি আধা পাকা বাড়ির উঠানে নিয়ে এলো। উঠানে ছোট ছোট বাচ্চা খেলা করছে। সে আমাকে সেই বাসার মধ্যেই নিয়ে গেলো একেবারে, বাড়ির মানুষগুলো একেবারে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, কেউ কিছু বলার আগেই আমি ঐ ঘরে প্রবেশ করলাম। হটাৎ করেই ফড়িং বলল এই রুমেই তোমার জন্যে একজন পরী আছে। আর তখনি বাসার চারপাশ থেকে ডাকাত ডাকাত শব্দে রব উঠলো, আমি বুঝলাম কথা গুলো আমাকেই বলা হচ্ছে। স্বপ্ন ওখানেই শেষ।


পাঠক আজকে মাত্র ৫টা স্বপ্ন শেয়ার করলাম। আপনাদের ভালো লাগলে আমি নাহয় আরো স্বপ্ন শেয়ার করবো।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×