somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধন্যবাদ মামুন ভাইকে আমার এই পোট্রেটের জন্য

২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উপরের এই যে ছবিডা দেখতাছেন, এইডা আমার


এই রকম চিত্কার দেওনের দরকার ক্যান হইলো?? ক্যান আমাকে আমার ছবি এই ভাবে টানাইয়া ঘোষণা করতে হইলো যে, এই ছবিটায় কৈশর উত্তির্ণ যে পোলাডা গিটার হাতে ঝানু/অঝানু- গিটারিষ্টের মত ভাব নিয়া হাজির হইতাছে, সে যে আমি, এই 'তারিক মাহমুদ'?

সম্ভবত এইটার একটা কারণ, এখন নাকি বাজারে এমন অনেক সফ্টওয়ার পাওন যায় যেইগুলি দিয়া আতি সহজেই - ইন্দুরের (মাউস) এক-দুই ক্লিকেই নাকি একটা নরমাল ছবিরে এমুন কইরা ফ্যালান যায়। যদিও এইডা শুইন্না আমার হায় হায় কইরা উঠতে ইচ্ছা করে নাই, তয় 'মামুন' ভাইর কথা ভাইবা কষ্ট হইছে।

এই যায়গায় একটা ঘটনা অথবা র্দুঘটনা বয়ান করা যাউক। আমার উয়াহু মেসেন্জারে কয়েকজন চ্যাট বন্ধুগো এ্যাড করা আছে। তো তোদের একজন আলী। তো একদিন ওর লগে চ্যাট করতে লইয়া দেহি যে ওর প্রফাইলের ছবিতে আমার এই ছবিটা ঝুলতাছে। আমারতো দেইখা বুকে টান লাগলো। আমার ছবি আর একজনের পারিচয় দিবো এইডাতো মানন যায়না! তাই আর দেরি না কইরা ডাইরেক জিগাইলাম, 'আমার ছবি তোমার প্রফাইলে ক্যান?' ও অবাক হইয়া আমারেই উল্টা জিগালো, 'এইডা তোমার ছবি?!' 'হু', জাবাবে আমি আরো বিস্তারিত ব্যাখা করলাম, 'এইডা আমারই ছবি, তয় এইডা হইলো একটা পোট্রেট। মামুন হোসাইন নামের এক বড় ভাই এইটা আকছে। বর্তমানে 'যুগান্তরে'র চিফ এডিটর র্কাটুনিষ্ট।' এই কথা শুইন্না ও কাইলো, 'ও আইচ্ছা। আমি ভাবছিলাম কোন সফ্টওয়ার দিয়া মনে হয় করছো। এহন তো এই রকম অনেক সফ্টওয়ার পাওয়া যায়।' তো আমি ওরে আরো কইলাম তুমি ভালো কইরা ছবিটা দেখ, 'মামুন' নামে সাইন করা আছে। পাঠক, আপনারাও দেখতে পারেন। গিটারের ফ্রেডর্বোড যেখানে বডির সাথে মিশেছে তার নিচের দিকে শিল্পীর নামের সাইন ও সন দেওয়া আছে।


এই পোট্রেটা করা হইছিল ২০০৫ এ। 'সমগীত সংস্কৃতি প্রঙ্গণ' এর অফিসে। আমি অবস্য জানতাম না এবং মামুন ভাইও মনে হয় জানতো না যে তিনি এই রকম একটা দুর্ধষ পোট্রেট আইকা ফালাইবো আর এর মইধ্যে দিয়া আমরা দুইজনে, একজন অন্যজনকে বিখ্যাত করার সুয়োগ-সম্ভাবোনা তৈরি কইরা ফালামু। সেইডা ক্যামনে?? আরে ধরনে, মামুন ভাই যদি ভবিষ্যতে দেশের বড়/বিখ্যাত র্কাটুনিষ্ট হইয়া যায়- সেই সম্ভবনা যে নাই তা কিন্তু না, তাইলে তার পোট্রেটের উছিলায় আমিওতো বিখ্যাতো হইয়া যাইতো পারি! কি কন, কথা কি ঠিক? আর আমারো যে বিখ্যাতো হওনের চান্স নাই, আমিও যে একদিন বিখ্যাতো হমুনা; হেইডা কেডা কইতে পারে?! আপনে পারেন কইতে?? উহু, পারেন না, বুকে হাত দিয়া তো দুরে থাউক, কানে হাত দিয়াও পারেন না। তয় সবাই সব কিছু পারবো এমন কোন কথা নাই। সবাইরে সব কিছু পারতে হইবো এমন কোন প্রয়োজনও নাই। তয় কেউ কেউ ব্যাবাক কিছু পারনের সম্ভাবনাও যে হিসাব-কিতাব কইরা দেখে না, তাও কিন্তু না। এই পারা-না পারা লইয়া, পারা-না পারার হিসাব-কিতাব করতে যাইয়া অনেক দিন আগে একটা গান লেখছিলাম -

যে পারে সে পারে সহজেই, যে পারে সে পার সব কিছু
আকাশ পকেটে পুরে হাটতে পারে মেঠো পথ
সূর্য লুকিয়ে রেখে বুকের মাঝে, হাসতে পারে সহজ
যে পারে সে পারে সহজেই........

এই রকম আর কি। কোন একদিন হয়তো এই গাটা আপনাগো গাইয়াও শুনামু।



সত্যি কথা হইলো, আমি যা বুঝি- মানুষের সম্ভাবনার কোন শেষ নাই! এই শেষ না হওয়া সম্ভাবনাই মানুষের সত্যিকারের শক্তি। তয় কথা হইলো, এই শক্তি কয়জনে উপলব্ধি করে? কয়জনে এই শক্তিরে ধরণ করে অত্নায় ও শরীরে? খুব কম। এতে কোন সন্দেহ নাই। তাই, যখন আমাগো দেশের সম্পদ লুট-পাট হইতে দেখি; যখন নিরিহ নাগারিকগো ক্রসফায়ারে রাষ্ট্রীয় হত্যার শিকার হইতে দেখি; যখন দেখি ফতুল্লা ইস্টেশনে ১০ বছরের ‘বারেক’রে- বাপ মইরা যাওনের পর মায়েও ওরে ফালাইয়া গেছে আর টাইফয়েডে দুইটা পা-ই নষ্ট হইয়া যাওনের পর, ভিক্ষা করতে; যহন সব সম্ভাবন আর স্বপ্ন দাউদাউ পুরতে দেখি মিথ্যার আগুনে; তহন এমন একজনের কথাই মনে ভাসে যে কিনা সব পারে। যে কিনা মানুষের সকল সম্ভানার অন্তরনিহিত শক্তিরে ধরণ করে। কে সেই ‘নায়ক’?! যে কিনা আলোর স্বভাবে, আলোর নাচনে মাতে। যে কিনা, যুদ্ধে ফসল তোলে, যুদ্ধেই করে বপন। এমন তাড়নাতেই বুঝি ‘অরুপ রাহী’ লেখছিলো –

“আমি আলোর স্বভাব চাই, আলোর নাচন
যুদ্ধে ফসল তুলি যুদ্ধে বপন” (লীলার গান- নায়ক)


তো আমার ছবি উপড়ে ঝুলাইয়া এই সব প্যাচাল যে পারতাছি, তার সাথে আমার ছবির সর্ম্পক কি?? কেনই বা এই প্যাচালের দরকার হইলো??

মানুষরে নিয়া হইলো এই এক ঝামেলা- সব মানুষরে নিয়া হয়তো না, আমার মত মানুষ আর কি। এই ছবিটা আমার কাছে মেলা দিন পইরা ছিলো, আমি দেখি নাই। তো একদিন পুরান কাগজ-পত্র গুছাইতে গিয়া দেখলাম। দেখার পর আমার কেমন জানি লাগলো, ভালো এবং অদ্ভুত, দুইটাই। আর একটা প্রশ্নও জাগলো মনে, এইযে ছবির ভেতরে যেই আমাকে দেখা যাইতাছে, সেই আমি কি এই আমি? উত্তরের জন্য আমাকে অবস্য ভাবতে হয় নাই, না। এই ছবির ভেতরে যে আমাকে দেখা যাইতাছে, সেই আমি আর এই আমি না। আনেক সময় বইছে, আনেক গাছের পাতা ঝরছে, আনক জাল হিমালয় থিকা গঙ্গা হইয়া পদ্মায় পইরা পাড় ভংগছে, ভারাক্কা বাধেও অবস্য অনেকে ঢেউ আছড়াইয়া পইরা প্রতিবাদ করছে। এখন তো হুনি আরও একটা বাধ না কি দিবো। টিপাইমুখে। যাই হোক, এই সব কিছুর লগে আমিও বদলাইয়া গেছি। আমিও অনেক বার খুন হইছি, আবার বাইচাও উঠছি। নতুন নতুন প্রশ্ন করছি কত, উত্তরও খুজেছি। খুজতে গিয়া কবিতা লেখছি -

মৃত্যুর আগেই খুন হয়েছে এই স্তব্ধ মাঠে
কেন মৃত্যুর আগেই হয়েছি খুন?
পাইনা উত্তর খুজে জীবনের পাঠে
বয়ে বেড়াই বুকে দাউ-দাউ আগুন

(বহুদিন আগের লেখা একটা কবিতার প্রথম অংশ)

বুকের আগুন সব আগুনের চাইতে শক্তিশালী। এই ছবিটার ভেতরে আগুন নাই। কিন্তু আমার ভেতরে আছে। এই আগুন জ্বলুক।

এই লেখাটা লেখার মূল কারণ হইতাছে মামুন ভাইকে ধন্যবাদ দেওয়া। মামুন ভাই, আমার এই সুন্দর পোট্রেট টা কইরা দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বি: দ্র: যারা এই ভাষায় লেখাটি পড়ে বিরক্ত হয়েছেন, তাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্ষমা করে দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৩
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×