somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চারটি সুন্দর হাদীস

১৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১.

অনুবাদঃ

হযরত নোমান ইবনে বশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,তুমি মুমিনদেরকে তাদের পারস্পরিক সহানুভূতি এবং বন্ধুত্ব ও দয়ার ক্ষেত্রে একটি দেহের মতো দেখবে।যখন দেহের কোন একটি অঙ্গ ব্যথা পায়,তখন শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর কারণে রাত জাগরণ ও জ্বরের মাধ্যমে তার ব্যথায় সমঅংশীদার হয়।(বুখারী ও মুসলিম)

ব্যাখ্যামূলক অনুবাদঃ

পৃথিবীতে সমগ্র মুসলিম জাতি একটি দেহের মতো।এ প্রসঙ্গে হযরত নোমান ইবনে বশীর (রাঃ) বলেন,নবী করীম (স) বলেছেন,পারস্পরিক সহানুভূতি,হৃদ্যতা,ভালোবাসা ও সহমর্মিতার দিক দিয়ে বিশ্বের সকল মুমিন-মুসলমান একটি দেহ সদৃশ।শরীরের কোন একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে যেমন দেহের সমস্ত অঙ্গই তার সাথে সাথে অসুস্থ হয়ে পড়ে,তেমনি এক মুসলমান বিপদের সম্মুখীন হলে অন্য মুসলমানও তার ব্যথায় ব্যথিত হবে।শুধু ব্যথাতুর অঙ্গই বিনিদ্র ও জাগ্রত থাকে না,কেবল সে নির্দিষ্ট অঙ্গই জ্বর-তাপে ভোগে না;বরং সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই তার অংশীদার হয়।মোট কথা,বিশ্বজগতের সকল মুসলিমকে সুখে-দুঃখে এক ও অভিন্ন থাকা এবং বিপদাপদে পারস্পরিক সাহায্য ও সহানুভূতিশীল থাকার জন্য হাদীসে উপদেশ প্রদান করা হয়েছে।

________________________________________

২.

অনুবাদঃ

হযরত নোমান ইবনে বশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,সকল মুমিন এক অখন্ড ব্যক্তির মতো।যদি কোন ব্যক্তির চক্ষু ব্যথিত হয়,তবে তার সর্বাঙ্গ ব্যথিত হয়,আর যদি মাথা ব্যথা হয়;তবে তার সারা শরীর ব্যথিত হয়।(মুসলিম)

ব্যাখ্যামূলক অনুবাদঃ

প্রত্যেক মুসলমান পরস্পর ভাই-ভাই।ঈমানী বন্ধনের কারণে তাদের মধ্যে কোনো হিংসা-বিদ্ধেষ থাকতে পারে না।তাদের ভ্রাতৃত্ববোধকে একটি দেহের সাথে তুলনা করত রাসূলুল্লাহ (স) বলেন,দেহের কোন অংশ ব্যথা পেলে যেমন সমগ্র দেহেই ব্যথা অনুভব হয়,তেমনি যে কোনো সময় যে কোনো মুসলমানের সুখ-দুঃখে অন্য মুসলমানের সুখ-দুঃখ হিসেবে পরিগণিত হবে,আর এটাই হলো মুসলিম ভ্রতৃত্ব।অন্যথায় তা মৌখিক দাবি ছাড়া আর কিছুই নয়।তাই বিশ্বের সর্বত্রই আজ যখন মুসলিম জাতি অত্যাচার ও নির্যাতনের স্বীকার তখন আলোচ্য হাদীসের শিক্ষাকে প্রতিষ্ঠিত করাই ঈমানের দাবি।

________________________________________

৩.

অনুবাদঃ

হযরত আবু মুসা (রাঃ) নবী করীম (স) হতে বর্ণনা করেন,তিনি বলেন,এক মুমিন অপর মুমিনের জন্য প্রাচীরের ন্যায়,যার এক অংশ অপর অংশকে সুদৃঢ় করে।অতঃপর তিনি এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করালেন।(বুখারী ও মুসলিম)

ব্যাখ্যামূলক অনুবাদঃ

মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি হলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি।তাই এ ঐক্য দুর্ভেদ্য প্রাচীরের ন্যায় সুদৃঢ়।রাসূলুল্লাহ (স)আলোচ্য হাদীসে সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদেরকে একটি প্রাচীর বা অট্টালিকার সাথে উপমা প্রদানপূর্বক বলেন,অট্টালিকার এক একটি ইট আরেকটির সাথে সংযুক্ত থাকায় তা সুদৃঢ় ও মজবুত হয়।যার জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় তার কোনো ক্ষতি করতে পারে না।একথা বলে তিনি নিজের এক হাতের আঙুল অপর হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে সুদৃঢ় ও মজবুতির বাস্তব দৃষ্টান্ত দেখালেন,যা মুমিনদের ঐক্যের চেতনাকে উজ্জীবিত করেছে।

________________________________________

৪.

অনুবাদঃ

হযরত আবু মুসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী করীম (স) হতে বর্ণনা করেন,যখন নবী করীম (স)এর নিকট কোনো ভিক্ষুক কিংবা অভাবী লোক আসত,তখন তিনি সাহাবায়ে কেরামকে বলতেন,তোমরা(এ ভিক্ষুকের ব্যাপারে) সুপারিশ কর।তবে তোমাদেরকে সুপারিশের সাওয়াব দেয়া হবে।আর আল্লাহ তায়ালা যা ফয়সালা করতে ইচ্ছা করেন,তা রাসূলুল্লাহ (স)-এর জবানীতে জারি করেন।(বুখারী ও মুসলিম)

ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ;

মানুষের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শনের বিভিন্ন পদ্ধতি হতে পারে।যেমন কোনো অভাবীকে কিছু প্রদান করে সাহায্য করা।এতে যে সহানুভূতি হলো এর বিনিময়ে মহান আল্লাহর নিকট সাওয়াব রয়েছে।অনুরূপ নিজে কিছু না দিতে পারলে অন্যের কাছে তার জন্য সুপারিশ করলেও অনুরূপ সাওয়াবের অধিকারী হবে।এ প্রসঙ্গে হযরত আবু মুসা (রাঃ)বলেন,রাসূলুল্লাহ (স) এর কাছে কোনো ভিক্ষুক এসে কিছু আবদার করলে তখন তিনি তাকে কিছু দিবেন কি দিবেন না তা পরের কথা;তবে তিনি আমাদেরকে বলতেন,তোমরা ঐ ভিক্ষুকের পক্ষ থেকে আমার কাছে সুপারিশ কর,কারণ এতে অবশ্যই তোমাদেরকে সাওয়াব দেয়া হবে।আর আল্লাহ তায়ালা যে আদেশ জারি করতে চান,তা তাঁর রাসূল (স)-এর কণ্ঠেই প্রকাশ করেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×