অনেকে নাস্তিক শব্দের এখনো সঠিক অর্থ বোঝেন না। আবার অনেকে এটিকে সাধারণ নীতি মনে করেন, কেউ আবার মনে করেন এটা ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
এবার আসুন ‘নাস্তিক’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, যে ব্যাক্তি সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাস করেনা। অন্য কথায় বলা যায় যে সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য স্বীকার করেনা।সংক্ষেপে ‘অবিশ্বাসী’
বিশ্লেষণ(মুসলমানদের জন্য); দয়াময় আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য। কিন্তু কেউ যদি বলে কিংবা মনে করে আল্লাহ বলে কেউ নেই(নাউযুবিল্লাহ), তবে সে নাস্তিক ও বেঈমান বলে গণ্য হবে। যার মানে অস্বীকারকারী।
“নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে(আল্লাহকে), আপনি তাদের সতর্ক করেন আর নাই করেন, উভয়ই তাদের জন্য সমান, তারা বিশ্বাস স্থাপণ করবে না।
আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহের উপর, তাদের কর্নসমূহের উপর মোহরাঙ্কিত করে দিয়েছেন এবং তাদের চক্ষুসমূহের উপর আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য রয়েছে গুরুতর শাস্তি।–বাকারাহ/৬,৭
যারা অবিশ্বাস করেছে, তুমি তাদেরকে বল অচিরেই তোমরা পরাভূত হবে এবং তোমাদেরকে জাহান্নামের দেকে একত্রিত করা হবে এবং ওটা ওদের নিকৃষ্টতর স্থান। (ইমরান১২)
সুতরাং এ আয়াত থেকে স্পষ্ট তাদের স্থান জাহান্নামে।
এমন আরও অনেক আয়াত আছে যেখানে সুস্পষ্ট কঠিন শাস্তির বিধান আছে। এবার আসুন ঈমান কি? ঈমান হল এক আল্লাহ ও তাঁর রসুল এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। ও একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, আসমানি কিতাব পবিত্র কোরআনের বিধি-বিধান মেনে চলা।
এগুলোর একটিও যদি কেউ অবিশ্বাস করে বা অস্বীকার করে, তবে সে আল্লাহর কাছে আর মুসলমান হিসেবে থাকবে না, মুশরিক(বেঈমান) বলে গণ্য হবে।
আর তেমনি মুসলমানদের সংবিধান হওয়া উচিত ইসলামের আলোকে,
“আর যে কেউ ইসলাম ব্যাতিত অন্য জীবন ব্যবস্থা অন্বেষন করে তা কক্ষনই তাঁর (আল্লাহর) নিকট পরিগৃহিত হবে না অতএব পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তভুক্ত হবে” -ইমরান৮৫
নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছে, তৎপরে অবিশ্বাসে তারা আরও বেড়ে গেছে। তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কখনই পরিগৃহীত হবে না-ইমরান/৯০
সুতরাং মুসলমানদের ঈমান রক্ষা করাটা এখন খুবই কঠিন, কেননা যখন আপনার মনে আল্লাহ অস্তিত্ব সম্পর্কে সামান্য সন্দেহ হবে, আর আপনার ঈমানের ভীত নড়বড়ে হয়ে যাবে। আর শয়তান সব সময়ই চায় যে মুমিনের ঈমান নষ্ট করতে।
তোমরা ঈমানদার দের সাথে থেকে শক্তি বৃদ্ধি করে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত ও অবিচল রাখো, আর যারা কাফের, আমি তাদের মনে ভীত সৃষ্ট করে দেব, অতএব তোমরা তাদের ঘাড়ে আঘাত হানো, আর আঘাত হানো তাদের অঙ্গুলির সমূহের প্রতিটি জোড়ায় জোড়ায়।
এটা এই কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর বিরোধীতা করে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর বিরোধিতা করে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর হস্ত।–আনফাল/১২,১৩
যারা ব্লগ লিখেন বা পড়েন, তারা নিশ্চিত জানেন যে নাস্তিক বা আল্লাহর সাথে কফুরী অথ্যাত বেইমানি করা লেখক কারা।
কেন আপনারা তাদের পক্ষপাতী করে তাদের অন্তভুক্ত হচ্ছেন?যদি না নিজেকে সত্যিকার ইমানদার মনে করে থাকেন।
কেউ যদি নাস্তিকদের সমর্থন করে, তবে তাকে নাস্তিক সমর্থনকারী বা পরোক্ষ ভাবে নাস্তিক বলা যেতে পারে। যেমন, কেউ আওয়ামীতে ভোট দিলে সে আওয়ামীলীগ, বি এন পি তে ভোট দিলে আমরা তাকে ওই দলের অন্তভুক্ত বলি।
আল্লাহ বলেন “আর ওই সব লোকের অন্তভুক্ত হইয়ো না, যারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, যেন তুমি ধ্বংস হয়ে না যাও” –ইউনুস/৯৫
কোন মুসলমান যদি আল্লাহর একটি আয়াতও অস্বীকার বা অবিশ্বাস করবে, সে মুনাফিকদের অন্তভুক্ত হবে।
আজ হেফাজতে ইসলামের যে একটা দাবি অনেকে সমলোচনা করেছে নারী-পুরুষের অবাধ,বেয়াপনা বন্ধ করার সচেতনতা সৃষ্টি নিয়ে। এখানে অবাধ,বেয়াপনা দুটি শব্দ সব চেয়ে ভদ্র ভাষায় ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে প্রকৃত অর্থে অশ্লীলতা ও যৌনতা বোঝানো হয়েছে। আপনারা এখন রাস্তায়,পার্কে বের হলেই প্রেমের নামে যৌনতা ছড়ানো হচ্ছে। এটাকে কোন আধুনিকতা বলবেন? যারা এই যুক্তি বাদ দিয়ে মা-ছেলে, ভাই-বোনের প্রসঙ্গ টানছেন, তারা আসলেই ভণ্ডামি করছেন। যেমন করছে এটিএন টিভির মতো হলুদ মিডিয়াগুলো। যারা সত্য সংবাদ বিকৃত করে মিথ্যা রূপে প্রকাশ করে। ৭ তারিখে ATN এ মাননীয় স্বরাষ্ট মন্ত্রীর সাথে মুন্নী সাহার আলোচনায় দেখলাম,স্বরাষ্ট মন্ত্রীকে কিভাবে বিভ্রান্ত ও অযোক্তিক কথা বলাতে বাধ্য করাচ্ছেন। মন্ত্রীর একটা ভাল কথাকে সে খারাপ করার চেষ্টা করছেন।এবং বরাবরই মুন্নী কাফের,নাস্তিকের পক্ষ নিয়েছেন,যেখানে কিছু কথিত মুসলিম এটা করেছেন, সেখানে তিনি অমুসলিম হয়ে করতেই পারেন।
নাস্তিকের উদ্দেশ্যঃ নাস্তিকদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে দুনিয়াতে অশান্তি সৃষ্টি করা, এজন্য তাদের দল ভারি করা জরুরী, তাই তারা আপনার সাথে প্রথমে বন্ধু মতো মিশবে, তারপর এমন কিছু অযৌক্তিক প্রশ্ন করবে, যার উত্তর আপনার কাছে জানা নাই।কারন কোরআন,হাদিস সম্পর্কে আমরা ভাল ভাবে জানি না। কিন্তু এতে আপনার ঈমান অনেকটাই দুর্বল হতে পারে। যেমন, কেউ যদি নিজেকে নবী বলে দাবি করে আপনার মতামত চায় আপনি জবাবে কি বলবেন?
যদি আপনি তার কাছ থেকে প্রমাণ চান, তাহলে আপনার ঈমান চলে যেতে পারে। কারন আপনি জানেন শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) এর পরে আর কোন নবী আসবেন না। এখানে সন্দেহ করার কোন সুযোগ নাই। আপনি প্রমাণ চাওয়া মানে আপনার মনে সন্দেহ আছে কোরআনের আয়াত সম্পর্কে। আর একটা আয়াত সন্দেহ করলেও আপনি কাফের,মুরতাদ হয়ে যাবেন।
সুতরাং ঈমান দুর্বল হওয়ার সম্ভবনা থাকলে নাস্তিকের সঙ্গ ত্যাগ করাই শ্রেয়।
আর একজন ইমানদার মুসলিমের জন্য পৃথিবীর সব কিছুর উদ্ধে ইসলাম,আলকোরআনকে স্থান দিতে হবে। দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ, তাই একজন সত্যিকারের ইমানদার ব্যক্তির জন্য দেশপ্রেম বাধ্যতা হয়ে দ্বাড়ায়। ইমানদার হতে হলে দেশকে ভালবাসতেই হবে।আর যারা ইসলামের বিরোধীতা করে শুধু মাত্র মুখে জয় বাংলা বললেই দেশপ্রেম হয় না। এটা লোক দেখানো দেশপ্রেম। এটা ভণ্ডামি।
জামায়াত যেমন করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে, তারা তার দশ গুন করেছে। শাহাবাগ দেশের একবিন্দু কল্যাণ করেনি বরং ক্ষতি করেছে ঢের বেশী।
আসুন আমরা জামায়াত নয় শাহাবাগও নয়, সত্যিকারের ইমানদার হয়ে দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ হই। সে জন্য ইসলামকে জানার আগ্রহ থাকতে হবে, তার জন্য ভাল কোন আলেমের সাহায্য নিতে হবে, বা বাংলা কোরআন পড়তে পারেন। বর্তমানে ইসলাম বিষয়ে নিয়মিত পিস টিভি বাংলাতে ভাল ভাল অনুষ্টান প্রচার করে। নিয়মিত দেখতে পারেন।
অবশেষে দয়াময় আল্লাহ যেন আমাদের হেদায়েত দিন ও ক্ষমা করেন।
আল্লাহ বলেন ‘আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি, যে তওবা করে, ঈমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচল থাকে’ -ত্বা-হা/82
“আর কোরআনের মাধ্যমে এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তায়ালার আয়াত সমূহের উপর অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসাঙ্গান্তরে চলে যায়, তা না হলে তোমরা তাদের মতো হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযকের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদের একই জায়গায় সমবেত করবেন”- আননিসা/১৪০
ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



