somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কমান্ডো স্টাইলে এক মিনিটে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা - প্রত্যক্ষদর্শী

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাজীবের মেজ মামা খুররম হায়দার ঢাকা মেডিক্যালে সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনের পর থেকে পলাশনগরের টিনশেড বাসায় ফিরত না সে। শাহবাগেই থাকত। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ভাগ্নের সঙ্গে শেষ কথা হয়। কী কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, "তেমন কথা হয়নি। তবে তাদের আন্দোলন নিয়ে প্রায়ই কথা হত তার সঙ্গে। রাজীব বলত, মামা আমরা একটি আন্দোলন শুরু করে দিয়েছি, এখন তরুণরা এ আন্দোলনকে লক্ষ্যে নিয়ে যাবে। রাজীব প্রায়ই বলতো, মামা আমি ইসলামবিরোধী নই, তবে জামায়াত ইসলামের বিরোধী।" সুত্র

জামায়াত ইসলামের বিরোধীতার কারনেই হত্যা?
রাজীব হত্যার জন্য পলাশনগরবাসী এক বাক্যে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছে। এলাকাবাসী এ হত্যাকা-কে পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করেছে। এমনকি শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকসন্তপ্ত পরিবারকে দেখতে গেলে তাঁকেও একই ধারণা দেয়া হয়েছে। এলাকার আবালবৃদ্ধবণিতা এক বাক্যে শোভনকে মেধাবী স্থপতি হিসেবে উল্লেখ বলেছেন, তার কোন শত্রু ছিল না। তিনি অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ও সাইবারের কাজ করায় সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকসহ তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ প্রিয়পাত্র ছিলেন।

তাঁর পারিবারিক সূত্র জানায়, শাহবাগের যে ১২ জন সংগঠক ছিলেন তার অন্যতম ছিলেন শোভন। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শোভন দিবারাত্রির বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন প্রজন্ম চত্বরে। শুক্রবার দুপুরে মামার বাসায় ভাত খেয়ে বের হয়ে যান। সন্ধ্যায় তিনি শাহবাগ থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু সেটাই হয়ে পড়ে চিরবিদায়। বাসায় ফেরার সৌভাগ্য আর হয়নি। বাসার গেটে পৌঁছার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তাঁকে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হয়।

শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়- সেখানে এখনও তাজা রক্তের দাগ। বিপুলসংখ্যক কৌতূহলী মানুষের ভিড় ঠেলে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশকে সেখানে তদন্ত কাজ করতে দেখা যায়। সেখানেই দশ বছরের এক বালক জনকণ্ঠকে জানায়, পাশেই তার বাসা। শুক্রবার রাতে যখন তাঁকে কোপানো হয়, তখনও শোভন জোরে চিৎকার করতে পারছিলেন না। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার অনেক পরও সেখানে কেউ যেতে সাহস পাননি।

পাশের একটি বহুতল ভবনের বাসিন্দা যিনি নিজেকে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে বলেন, শোভনকে হত্যা করা হয়েছে তাঁর বাসার মূল গেটের খুব কাছেই। তাঁকে হামলা করার আগে থেকেই সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে দু’যুবককে। শোভন সেখানে পৌঁছার পর পরই যুবকরা তাঁর সঙ্গে কথা বলার ভান করে। এরপরই যুবকরা প্যান্টের পকেট থেকে ছোট কুড়াল বের করে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালায়। দুজন দু’পাশ থেকে শোভনের গলায় কোপাতে থাকে। মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ে উপর্যুপরি তিনটে কোপ দিয়ে তারা মুহূর্তেই দৌড়ে সামনের দিকে চলে যায়। তারপর বেশ সময় শোভন রাস্তায় পড়ে গড়াগড়ি দিয়েছে। পরে মানুষ একে একে আশপাশের বাসা থেকে বের হয়ে এসে শোভনের নিথর দেহ দেখতে থাকে। তখনও কেউ চিনতে পারেনি। কারণ ঘটনাস্থল অন্ধকার থাকায় কেউ ভাল করে দেখার সুযোগ পায়নি। কৌতূহলী মানুষের মতোই শোভনের বাসার এক কাজের মেয়ে এসে তাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এ ব্যাপারে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শোভনকে বেশ দূর থেকেই অনুসরণ করতে করতে ঘাতকরা বাসা পর্যন্ত পৌঁছে। শাহবাগ থেকে ফেরার পথে সাধারণত মিরপুর দশ নম্বর গোলচক্কর থেকে রিক্সায় বা হেঁটে পলাশনগরের বাসায় আসা যাওয়া করতেন। শুক্রবার রাতেও শোভন বাসার পেছনের রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছেন। ঘাতকরা তাঁকে গোলচক্কর থেকেই অনুসরণ করে তাঁর বাসা পর্যন্ত আসে।

শোভনের বাসার পারিপার্শি¦ক অবস্থাও নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার উপযোগী বলে প্রতিবেশীরা জানায়। পলাশনগরের এ মহল্লাটি এমনিতেই সন্ধ্যার পর বেশ নিরবিলি থাকে। তাদের বাসা ঘেঁষেই পেছনে রয়েছে বাইশটেকীর বিল। চার দেয়াল ঘেরা বিশাল জায়গার এক কোণে একটি ছোট্ট টিন শেড ঘর। তাতেই থাকতেন শোভন। বাসার তিন পাশে রয়েছে সারি সারি বিশালাকৃতির সেগুনগাছ। দিনের বেলাতেও যে কারোর গা শিউরে ওঠার মতো পরিবেশ। ঘাতকরা এসব বিষয় আগে থেকেই রেকি করে ছিল বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

কেন এ হত্যাকা- জানতে চাইলে এলাকার সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা জনকণ্ঠকে বলেন, পলাশনগর হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি। বিএনপির যে কোন কর্মসূচীতে এখানকার শিবিরের ক্যাডাররা মুহূর্তেই বিশালাকার সশস্ত্র মিছিল বের করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। শোভনের হত্যাকা- এদেরই কাজ। সুত্র
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×