somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওহে খন্দকার, আমি তো তোমার কাছে হেলিকপ্টার সাহায্য চেয়েছিলাম

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মৃত্যুর পর কথা বলার কোনো সুযোগ থাকলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রশ্ন করতেন, ‘ওহে খন্দকার, ১৫ আগস্ট আমি তো তোমার কাছে হেলিকপ্টার সাহায্য চেয়েছিলাম, পাইনি। আমার মৃত্যুর পর থেকে তুমি তো সব সময় ক্ষমতার কাছে কাছেই ছিলে, আমার মেয়ে তোমাকে পরিকল্পনামন্ত্রীও বানিয়েছিল, এবার বাদ দিলো আর তুমি রেগে গেলে?’

বঙ্গবন্ধু হয়তো আরো বলতেন, ‘আমার মেয়ে যখন এবার ’৭২-এর সংবিধান পুনঃচালু করতে পারলো না তখন তুমি এমন একটা ভাব দেখালে যে পদত্যাগ করবে! ওরা তোমাকে চিনে না, আমার মেয়েও চিনেনি, চিনলে তোমাকে মন্ত্রী থেকে বাদ দিতো না। পঁচাত্তরের আগে আমিও তোমায় চিনিনি, এখন বুঝি, তুমি পদত্যাগে অভ্যস্ত নও, ’৭১-এও তুমি যখন দেখেছো পাকিরা তোমায় মেরে ফেলবে, কেবলমাত্র তখনই পক্ষ ত্যাগ করেছো এবং সরাসরি ওসমানীর পরের জায়গাটি দখল করে নিয়েছো। একেই বলে কপাল, পেতে পেতে তোমার অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে যে, তুমি দিতে ভুলে গেছো। আসলে তোমাদের রং বদল দেখতে দেখতে আমার ওই গানটি প্রায়শ মনে আসে, ৃতোমাদের কোনটি আসল, কোনটি নকল, কেউ তো জানে নাৃ
খন্দকার, তুমি কাদায় পড়েছো। কথায় বলে, হাতি কাদায় পড়লে চামচিকাওৃ। তোমাকে বাগে পেয়ে এখন এক একজন লাফিয়ে উঠছে! কতোজন কতো কথা কইছে, অথচ পঁচাত্তরের পর অনেকের ভূমিকাই তোমার মতো। অবশ্য কার কথা বলবো, সবই তো কম্বল চোর। দুঃখ একটাই আমার কন্যাকেও এদের নিয়ে চলতে হচ্ছে। ভয় হয়, কবে না এরা আমার মেয়ে দুটাকেও মেরে ফেলে!’
পাঠক, এতোক্ষণ আমার জবানিতে বঙ্গবন্ধুর কথা শুনছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কথার পর খন্দকারকে নিয়ে তো আর কোনো কথা সাজে না, তবু এ কথা বলবো যে, ‘মানী লোকের মান নাকিৃ।’ তবে বঙ্গবন্ধুর ভয়ের কথা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সদ্য পত্রিকায় সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের খবর দেখলাম। একই সঙ্গে আল-কায়েদার দক্ষিণ এশিয়ায় শাখা খোলার ঘোষণা, বিশেষত বাংলাদেশে তাদের তৎপরতা এবং রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে নতুন করে উৎপাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এসবই এন্টি বাংলাদেশ, এন্টি মহাজোট এবং এন্টি শেখ হাসিনা। এর মধ্যে গুজব শোনা যায়, শেখ হাসিনার ওপর আঘাত হানা হবে ও এর দায় বর্তাবে শেখ রেহানার ওপর এবং এ জন্যই কৌশলে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে যে, দুই বোনের মধ্যে ভেতরে ভেতরে গ-গোল হচ্ছে। মৌলবাদীদের প্রচারণা ‘গোয়েবলসীয়’ মিথ্যাকেও হার মানে বটে!
যদিও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের কাছে কি কোনো খবর নেই? থাকলে জনগণ কোনো পদক্ষেপ দেখে না কেন? বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ষড়যন্ত্রের কথা তাকে নাকি বারবার বলা হয়েছিল, কিন্তু তিনি গাও গাঁথেননি। শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রীও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা হেসে উড়িয়ে দেন। কিন্তু আমরা তো জানি সর্ষের মধ্যেও ভূত থাকে। আসলে এমনতর একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের ত্বরিত ও সঠিক তদন্ত হচ্ছে কিনা জনগণের তা জানার অধিকার আছে। এর আগে ‘সারদার’ টাকা আসার অভিযোগ উঠেছিল, তদন্ত হয়েছে কিনা জনগণ জানে না। আইএসআই, আল-কায়েদা বা আইএসআইএসকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এদের হাত অনেক লম্বা। বাংলাদেশে এদের সমর্থকেরও অভাব থাকার কথা নয়। আমরা একযুগ ধরে বলে আসছি যে, আইমান আল-জওহারি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, তার অনুসারী দেশে আছে। কোথাও নাকি বাংলাদেশে আল-কায়েদার শাখা গঠনের সংবাদও এসে গেছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে আর একটি ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়নি তো? মনে রাখতে হবে, কট্টর মৌলবাদী এই গোষ্ঠী অত্যন্ত শক্তিশালী, এদের দমনে আমেরিকাকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে; বাংলাদেশেও এরা দুর্বল তা মনে করার কোনো কারণ নেই। তাই যদি হতো তবে তারা একই দিন একই সময়ে সারাদেশে ৫শ বোমা ফাটাতে পারতো না।
প্রায় একই সময়ে সরকারকে ফেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র, আল-কায়েদার শাখা খোলা, সারদার টাকাÑ এসবের মধ্যে কোথায় যেন একটা মিল আছে। এর মধ্যে আইএসআই-এর নামও শোনা যাচ্ছে; বিএনপি-জামাত তো আছেই। আসলে দেশে হচ্ছেটা কী? রয়টার জানাচ্ছে, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানে ইতোমধ্যে ‘ইসলামিক স্টেট’-এর কার্যকলাপ শুরু হয়েছে। ভারতের কাশ্মিরসহ কটি অঞ্চলে আইএসআইএসের পতাকা নিয়ে মিছিল হয়েছে। পাকিস্তান তো এমনিতেই সন্ত্রাসীদের আস্তানা, তদুপরি ‘ইসলামিক স্টেট’ মৌলবাদীদের পালে হাওয়া লাগিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আইএসআইএস-এ যোগদানেচ্ছু যে ৪ জনকে ধরা হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশ হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। রয়টার জানাচ্ছে, বাংলাদেশেও ‘ইসলামিক স্টেট’-এর জন্য রিক্রুট চলছে। সবার মনে থাকার কথা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বিন-লাদেনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল! অর্থাৎ সন্ত্রাসীদেরও অন্যরকম ক্যারিশমা থাকতে পারে এবং কোমলমতি তরুণ-তরুণী তাতে আকৃষ্ট হতেও পারে। ‘ইসলামিক স্টেট’-এর ক্ষেত্রে ধর্মও সংযুক্ত, অন্তত সন্ত্রাসীরা ধর্মকে ব্যবহার করছে, সেক্ষেত্রে বিপথগামী হওয়া আরো সহজ। সন্ত্রাস দমনে মহাজোট সরকারের সাফল্য বহির্বিশ্বে স্বীকৃত। কিন্তু এখন মৌলবাদী চক্রের যে অপতৎপরতার কথা বিশ্ব শুনছে সেটা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ। ইরাক-সিরিয়া অঞ্চলে আবার যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। আমরা চাই বাংলাদেশ এর বাইরে থাকুক। সরকার মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন করুন। মনে রাখতে হবে, অতীত সাফল্য ভবিষ্যৎ সাফল্যের গ্যারান্টি দেয় না। এই সন্ত্রাসী গ্রুপের লক্ষ্য রাষ্ট্রক্ষমতা দখল, সঙ্গে অন্যরা তো আছেই। সুতরাং সরকারকে ফেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র, বিশেষত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেয়ার কাজ থেমে থাকবে না। কারণ সন্ত্রাসীরা জানে তিনি থাকতে তাদের সফল হবার সম্ভাবনা কম। আমাদের ভয়, যে কোনো ষড়যন্ত্রের গুজব উঠলেও যেন সরকার তটস্থ হয় এবং ব্যবস্থা নেয়। ‘অমঙ্গলকে হাসিয়া উড়াইয়া’ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কথায় বলে, ‘অমঙ্গলকে হাসিয়া উড়াইয়া দেয়ার চেষ্টা করলে মঙ্গলসমেত উড়িয়া যাইবে’। সুত্র
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×