somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেনাবাহিনী নিয়ে গুজবঃ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক দিন থেকেই রাজনৈতিক আন্দোলনে অপারগ ও জনগণের ভোটের কাছে হেরে যাওয়া জনবিচ্ছিন্ন একটি মহল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চাইছে। সাথে জুটেছে সুশীল নামধারী সুবিধা ভোগী একটি চক্র। নানা প্রহসন, বানোয়াট খবর দিয়ে দেশে অরাজগতা ও অস্থিতিশিল পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে নেমেছে। সাথে কাজ করেছে কিছু জঙ্গি সংগঠন।

আগেও সেনাবাহিনীতে ক্যু করার পরিকল্পনা, ব্লগার হত্যা এবং বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা থাকার অপপ্রচার চালানো হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সেনাবাহিনীতে ক্যুর চেষ্টাকারী বহুল আলোচিত মেজর জিয়াসহ বেশ কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। যারা প্রবর্তিতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন।

ব্লগার হত্যাকারীদের নেপথ্যের কারিগররাই বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা রয়েছে বলে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) তৎপরতা থাকার প্রমাণ মেলেনি। তবে কোন কোন জঙ্গী সংগঠনের তরফ থেকে আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আইএসের তরফ থেকে কোন সাড়া মেলেনি।

ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে প্রধান বিচারপতির সাথে সরকারের সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে আর্মি ক্যু এবং পাল্টা ক্যুয়ের মিথ্যা গল্প ছড়ানো হচ্ছে। এটি ষড়যন্ত্রেরই অংশ। সামনে নির্বাচন কেন্দ্র করে এ ধরনের ষড়যন্ত্র আরও হবে বলে আশংকা আছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর এজেন্ট বলে পরিচিত আদালত প্রাঙ্গণের একজন এই রায়ের নেপথ্যে ক্রীড়নকের ভূমিকায় ছিলেন। আইএসআইর ওই এজেন্ট কৌশলে রায়ের পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন বলেও সভায় মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনজীবী নেতারা। শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীতে ক্যু করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন এমন এক সামরিক কর্মকর্তার নিকটাত্মীয়ও রায়ের পক্ষে কাজ করেছেন বলে যোগ করেন ওই আইনজীবী নেতারা।

তবে ষড়যন্ত্র চললেও ঘাবড়াবার মত তেমন কিছু এখনও ঘটেনি। বিরোধী দল ও সুশীল সমাজের একটি অংশ ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে চায়, কিন্তু তারা নির্বাচনে জিততে পারে না। বরাবরের মত সামরিক বাহিনীর সহায়তাতেই তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। এজন্য তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে সামরিক হস্তক্ষেপের কথা বলে মিথ্যা খবর রটাচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ সামরিক অভ্যুত্থান বা প্রচেষ্টা মেনে নিবে না। আর সামরিক বাহিনী আগের থেকে অনেক বেশী শৃঙ্খলাবদ্ধ, অনুগত ও পেশাদার। তাই ক্যুএর গুজব ও পরিকল্পনা হাস্য কর।

সরকারের সফলতা এত ব্যাপক যে, তাতে দেশের জনগণ একটি বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে কোন প্রকার সেনা অভ্যুত্থানকে সমর্থন দেবে না। এই সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ মুহূর্তে সেনা অভ্যুত্থানের কোন সম্ভাবনা নেই, একটি অভ্যুত্থানের লজিস্টিকস দেখতে হবে। কারণ ঠিক এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর এমন কোন জেনারেল বা কর্মকর্তা নাই, যাদের অভ্যুত্থান করার কোনো আগ্রহ আছে।সুশৃঙ্খলা ও পুনর্গঠনের কারনে যেকোন অভ্যুত্থানের চেষ্টা খুবই রক্তক্ষয়ী হবে। পেশাদার দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তাদের কেউই এই ধরনের ঝুঁকি নেয়ার কথা চিন্তাও করেন না।
বিএনপি-জামাত জোট আবার ক্ষমতায় এলে বরাবরের মত এবারো ধ্বংসের রাজনিতিতে মেতে উঠবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে উন্নয়নের পথে। বিএনপি-জামাত জোটের কর্মী ছাড়া সকলেই তা সমস্বরে স্বীকার করেন। সেনাবাহিনী জনবিচ্ছিন্ন নয় বরং জনগণেরই অংশ। তারাও জনগণের মত দেশের উন্নতি লক্ষে একতাবদ্ধ ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। দেশমাতা রক্ষার শপথ নেয়া সেনাবাহিনীর দেশবিরোধী কোন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ অপপ্রচারনা রিতিমত অবিশ্বাস্য ও হাঁস্যকর।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া নেই তেমন, সেনা শাসনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনমত এখন আর বলিষ্ঠ নয়, গণমাধ্যমে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যক্তি গুলোর বিকল্প হিসেবে সেনা কর্মকর্তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে না। বরং অহিংসা গান্ধিবাদী এবং কবরে এক পা দিয়ে রাখা অবসরপ্রাপ্ত আমলা, শখের লেখক এবং কলাম লেখকদের সুশীল সংগঠন বানিয়ে এদের সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা নির্মাণের একটা নির্লজ্জ উদ্যোগ নিয়েছে। জনসম্পৃক্তিবিহীন এইসব কলাম লেখকদের সুশীল সংগঠন শক্তিশালী রাজনৈতিক বিকল্প হিসেবে কার্যকরী হয়ে উঠবে না। এদের দিয়ে মজলিসে শুরা ধাঁচের কোনো সর্বদলীয় নির্দলীয় পরিষদ তৈরি করে বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার কাজটি সাম্ভাব্যতা বিচারে অসম্ভব।

এইসব সুশীল নামধারী কলাম লেখক চলমান অসঙ্গতি বিষয়ে খুরধার করে কলাম লিখবেন, বিভিন্ন সেমিনারে দায়িত্বশীল বক্তব্য-প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশ করবেন, তবে তারা রাজনৈতিক দলের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবেন না। কমরুদ্দীন আহমেদ পাকিস্তান সেনাশাসনের সমাপ্তির সময়ে পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি গ্রন্থটি লিখেছিলেন, সেখানে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী কিংবা ঢাকাই বুদ্ধিজীবীদের চরিত্র সম্পর্কে খানিকটা আলোকপাত করেছেন, মাঝের ৪০ বছরে এদের অবস্থানও তেলাপোকার মতোই, তাদের তেমন মানসিক বিবর্তন ঘটেনি। তাদের চারিত্রিক অপরিবর্তনশীলতা একটি দিকই নিশ্চিত প্রকাশ করে, বাংলাদেশের সমাজে বুদ্ধিজীবী হিসেবে টিকে থাকতে হলে ক্ষমতাবানদের পকেটে গিয়ে তাদের আদর আহ্লাদ এবং মৃদু পিঠ থাবরানি খেয়ে আনন্দে গোঁ গো করা ছাড়া বুদ্ধিজীবীদের বিকল্প কিছু করনীয় নেই। তাই তারা ইনিয়ে বিনিয়ে সেনাবাহিনীতে ক্যু এর ধুয়া তুলে মাঠ গরমে নেমেছেন। আর তাঁদের উৎসাহে কিছু ক্ষমতা লোভী চক্র জোট বেধে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে।

এদের কথায় কান দেবার দরকার আছে বলে মনে করি না। ২০১৭ আর ১৯৭৫ এর পার্থক্য অনেক। ষড়যন্ত্রকারীদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ না ঘটলেও, জনগণ আজ অনেক বেশী সচেতন ও একতা বদ্ধ। তাঁর প্রমান বিরোধীদলের ৩ বছর ধরে চলা ব্যার্থ অবরোধ আর আন্দোলন চেষ্টা। আর সামরিক বাহিনীও আজ অনেক শৃঙ্খলা বদ্ধ, পেশাদার ও রাস্ট্রের প্রতি অনুগত।
তাই বলতেই হয়- আগের দিন আর নাইরে নাতি, বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় যাইতি।
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×