somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই তাহলে জাগো'র আসল রূপ!!!

০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন ধরে দেখতেসি "জাগো"র কর্মকান্ড নিয়ে ব্লগ, ফেসবুক পুরাই উত্তপ্ত। যাইহোক জাগো'র পক্ষে বিপক্ষে অনেকে অনেক কথাই বললেও আমার কাছে কোনভাবেই ভলান্টিয়ারদের পোশাক, ব্যাক্তিগত ছবি ইত্যাদি নিয়ে জাগো কে প্রশ্নবিদ্ধ করা টা উচিত মনে হয়নি। বরং প্রশ্নটা জাগো'র অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে তোলা টা অধিক যুক্তিসঙ্গত ছিল।

জাগো যে ধান্দাবাজ এইটা তো আগেই জানতাম, নতুন কিছু না। ওদের টাকা-পয়সার স্বচ্ছতার ব্যাপারে আগেই সন্দেহ ছিল সবার। কিন্তু আজকে যে ঘটনা শুনলাম তাতে পুরাই স্তব্ধ আমি। যারা জাগো'র ওয়ালে, ব্লগে, বিভিন্ন সামাজিক পেইজে জাগো'র নীতির সাথে তাদের কাজকর্মের অসামঞ্জস্যতা নিয়ে কথা বলা শুরু করেছিলো তাদের নাকি জাগো হুমকি, মামলার ভয়, লোভ ইত্যাদি দেখিয়ে কথা ফিরিয়ে নেবার জন্য চাপ দিচ্ছে যেখানে ওইসব অসামঞ্জস্যতার যুক্তিপুর্ণ ব্যাখ্যা দেয়াটাই উচিত ছিল।

এনজিওতে সার্ভিস করার খাতিরে স্বচক্ষে দেখেছি এনজিওরা কিভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রপরিপন্থী কাজ করে। ওই হিসাবে জাগো'র এইটা কোন অপরাধই না। কিন্তু এই মুহুর্তে জাগো কে আর ১০ টা সংস্থার কাতারে ফেললে চলবে না। স্কুল কলেজের অনেক অবুঝ ছেলেমেয়ে সরল বিশ্বাসে এই সংস্থার সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। তাদের চোখে জাগো মানেই বিশাল কিছু, জাগো মানেই সমাজ-দরদী অবতার। এখন জাগো'র এইসব কাজ, এইসব চোরামি-ভণ্ডামি কিন্তু এই ছেলেমেয়েদের মানসিকতা নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। অনেক ছেলেমেয়ে দেখসি যে বাসার ভয়ে বাইরে আধাঘণ্টাও থাকতে পারে না কিন্তু জাগোর এই কাজে তারা বাসা-সমাজ কিছুই কেয়ার করেনি। অনেকে ক্লাস ফাকি দিসে, অনেকে জরুরী কাজ বাদ দিয়ে এসে এই কাজে অংশ নিয়েছে। তাদের এই উৎসাহের প্রতি স্যালুট। কিন্তু জাগো'র ক্রমাগত দুর্নীতি আর অস্বচ্ছতায় কয়দিন এই উৎসাহ টিকবে বলা মুশকিল।

অনেকেই দেখলাম জাগোর ব্যাপারে তাদের কথা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গেছে। আমার কথা হল কি পরিমান ধান্দাবাজির প্ল্যান থাকলে একটা সংস্থা নিন্দুকের মুখ বন্ধ করার জন্য এইভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারে.. :-* তথ্যসুত্র শিওর না তবে অনেকবারই শুনেছি যে "জাগো" টাইটেলে যে চলচিত্রটি বেরিয়েছিল (ফুটবল খেলা নিয়ে স্টোরি), তা নাকি এই সংস্থারই প্রোপাগান্ডা পলিসির ফসল। মুভিটির অর্থায়ন ও নাকি এই সংস্থাটিই করেছে বেনামে। তাতে লাভটা কি তা এই ব্লগে অনেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিরাই বলতে পারবেন।

জাগো'র মত এইসব সংস্থার জন্য অনেক মানুষের নীতি, চিন্তাধারা নষ্ট হচ্ছে দিন দিন। একটা উদাহারন দেই.. গত বছর শীতে আড্ডা দিতে দিতে কয়েক বন্ধু মিলে ঠিক করলাম যে সবাই চাদাঁ দিয়ে কয়জন গরীব মানুষকে গরম কাপড় কিনে দিব। কিন্তু কয়েক বন্ধু দেখি এর ভিতরেও ধান্দা করতে চাইলো। পরে চাদাঁ বাদ দিয়ে পুরনো কাপড় কালেক্ট করে রাতভর মানুষরে দিলাম। পরে বন্ধুরা ঠিক করলাম যে সবাই মিলে চাদাঁ তুলে কোন গরীব ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করব, তার সম্পুর্ন পড়াশুনার দায়িত্ব নিব। ইয়া খোদা!! এর মধ্যেও ধান্দা খুজল কয়জন। কিছু বলতে গেলে জাগো'র উদাহারন দিল। বলে যে জাগোতে অমুক ভাই এত টাকা কামায়, তমুক মামা এত কামায়। শেষে মেজাজ খারাপ করে ঠিক করলাম যে এইসব বাদ, বইসা বইসা আড্ডা পিটাই তাই ভালো।

আমার কথা হলো জাগো যেভাবে খুশি তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করে করুক। তবে স্বচ্ছতা থাকা উচিত। জাগো'র পেইজে ঘুরে আসলাম। ওদের ভলান্টিয়ার নাকি টোটাল ৭০০০!! আর এরা নাকি প্রতি মাসে চাদাঁও দেয়। ভালো কথা। ৫০০ টাকা করে দিলে প্রতি মাসে টোটাল চাদাঁ আসে ৩৫ লাখ টাকা। আলহামদুলিল্লাহ!! এই টাকা দিয়ে কয়টা স্কুল করা যায় তা আমার চেয়ে আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। এ আবার প্রতি মাসের কথা। আরেক সুত্রে জানলাম যে এই চাঁদা নাকি ১৫০। তাও তো প্রতি মাসে সাড়ে ১০ লাখ তাকা আসে। কিন্তু এরা নাকি গত ৪-৫ বছরে মাত্র ৩ টা না ৪ টা স্কুল করসে। এর মধ্যে আমি জানি একটার খবর। বাকিগুলা সত্যতা সম্পর্কে তাদের ভলান্টিয়াররাও শিওর না। আর একটা ট্রেনিং সেন্টার বানাইসিলো ছাত্রদের বাবা মা যারা বেকার তাদের জন্য, যেটা এখন একটা লাভজনক ফ্যাশন হাউস। আর কর্পোরেট ফান্ডিং তো বাদই দিলাম। এখানে আর এখানে গেলেই দেখতে পাবেন তাদের পার্টনার আর স্পন্সরদের ঠিকুজি অ্যান্ড কুলুজি। আবার ব্যাকআপে আছে অ্যামেরিকান এমব্যাসি। ফান্ডের তো এত অভাব থাকার কথা না যে ছেলেমেয়েদের পথে নামাতে হবে ফান্ড-রাইজিং এর জন্য। আবার যে পরিমান স্পন্সর আর পার্টনার দেখলাম সে তুলনায় তাদের প্রজেক্ট কই??

হয়তো অনেকে ভাববেন যে এত এত ধান্দাবাজ সংস্থা ফেলে জাগো'র পিছনে লাগলাম কেন। আগেই তো বলেছি এদের সাথে কাউকে মেলালে চলবে না। এদের বিন্দুমাত্র অসততাই ৭০০০ ভলান্টিয়ারের পরিশ্রমকে কলুষিত করার জন্য যথেষ্ট। যারা এই ভলান্টিয়ারদের পোশাক বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আজেবাজে কথা বলছেন তাদের প্রতি ধিক্কার তথা এই স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি আবারও স্যালুট। তবে জাগো'র উচিত এদের লোক দেখানো অর্থহীন কাজে না জড়িয়ে সত্যিকারের সেবার সুযোগ দেয়া পাশাপাশি নিজেদের অনৈতিক কাজ থেকে দূরে রাখা।

নতুন তথ্যঃ জাগো'র প্রতিষ্ঠাতা নাকি স্বনামধন্য এক পলিটিশিয়ানের ছেলে। জাগো'র ভাবমুর্তি কাজে লাগিয়ে অলরেডি নাকি পলিটিক্সে পদধুলি দেওয়া শুরু হয়ে গেছে।

এই পোস্টটি পড়লাম। এখানেও লেখক কিছু ভাল পয়েন্ট ধরেছেন। জাগো'র সাথে অ্যামেরিকান সরকারের সখ্যতা আসলেই চিন্তার ব্যাপার, যেখানে তেল-গ্যাস নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ ও এদেশের তেল-গ্যাস রপ্তানিবিরোধী তরুনসমাজ তাদের চক্ষুশূল। পাশাপাশি এটা ভুললে চলবে না যে জাগো'র হাতে এখন তরুন প্রজন্মের একাংশ। হয়তো সন্দেহ ভুল আমাদের সবার, কিন্তু সাবধানের তো আর মার নেই। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কেই বা কয়জন সন্দেহের চোখে দেখেছিল, তাদের ইতিহাস তো সবারই জানা।

(কোন তথ্যে ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেবার জন্য ও নতুন তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ থাকলো সবার প্রতি)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ ভোর ৫:০১
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×