somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ জার্নি বাই বাস(একটি চরম লুলীয় পোষ্ট)B-)B-););):P:P

২১ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাহারা বাংলাদেশে থাকেন তাহার জানেন বাস কি জিনিস! বাস শব্দটার কথা শুনিলেই চৌখের সম্মুখে ভাসিয়া উঠে এক গাদা মানুষ বানরের মতন ঝুলিতেছে।:|:| আর যেসকল লুল ভাই-ব্রাদাররা পুষ্টের টাইটেল দেখিয়া মনের আনন্দে উতলা হইয়া উঠিয়াছেন তাহাদের বলিতেছি নিরাশ হইবেন না। স্বয়ং ঈশ্বর আপনাদের নিরাশ না হইতে আহবান জানাইয়াছেন। যাহা হোক, লুলরা ঘটনাবলী শুনার জন্য প্রস্তুত হওন।;);)B-)B-)


দিন কয়েক আগে এগ-জাম থুক্কু এক্সাম দিতে গৃহ হইতে বাহির হইয়াছিলাম। সময় তখন প্রাতঃকাল। বাসা গন্তব্যস্থল বেশ দূরে বলিয়া বেশ সকালে রওনা দেওন লাগে। জনাকয়েক গার্মেন্টস কন্যা আর অফিসগামী মানুষ ছাড়া তেমন কেউ থাকে না। যাহা হোক, ব্যাগ লইয়া আর হাতে মটু একখান বই লইয়া বাহির হইলাম। লুল ভাইয়ারা আবার হাতের বই দেখিয়া ভাবিয়া বসিয়েন না আমি আলবার্ট আইন্সটাইনের ডিজিটাল ভার্সন অথবা ঈশ্বরচন্দ্রের “সানলাইট” ভার্সন।B-)B-) আসলে “খাইয়া খোদার কছম/ আমিই কেলাসের প্রথম।” অতি অবশ্যই সেটা পিছনের দিক হইতে।:|:|


বাসা হইতে বাহির হইয়া উদাস নয়নে হাটিয়া যাইতে লাগিলাম। আর মনে মনে ভবিষ্যত দূর্ভাগ্যের কথা চিন্তা করিয়া নিজেকে দেবদাস দেবদাস লাগিতে লাগিল।:|:| হাটিয়া যাইতে যাইতে হঠাত দেখি সামনে ছেপ!:-/:-/:-* উপ্রে তাকাইলাম। দেখিলাম বারান্দায় এক ললনা দন্ত ব্রাশ করিতেছে। যাহা বুঝিলাম তাহা অতীব ভয়াভহ। তয় দেখিলাম ললনা একখান গেঞ্জি পড়িয়া বারান্দায় দাড়াইয়া আছে এবং আমার হঠাত দাঁড়াইয়া থাকা দেখিয়া অবাক বদনে আমার দিকে তাকাইয়া আছে। ললনার চৌক্ষু যখন আমার চৌক্ষু বরাবরে পতিত হইল আমি পুরাই ইলেক্ট্রিক শক খাইলাম।:-/:-/ ফরীক্কা বাদ দিয়া এমনে দাড়াইয়া দাড়াইয়া ললনা দেখার কুনু মানে হয় না। তয় মনে মনে ললনারে একশ একুশটা অভিশাপ দিলাম। এত্তকাল জানতান দুনিয়াতে বেক্কল বলিয়া কেবল এবং কেবলমাত্র আমিই আছি। এই ললনারে দেখার পর ভুল ভাঙ্গিল।:-/:| এত্ত জায়গা থাকিতে দাত ব্রাশ করিয়া ছেপ ফালায় রাস্তার উপ্রে! আর এক হাত হইলেই আমার মাথায় পড়ত। তাও আবার এইটা দেইখা হেতি মুচকি হাসে।X((X( বুঝিলাম দেশ আগাইয়া গেছে।


হাটিতে হাটিতে বাস কাউন্টারের সন্নিকটে উপস্থিত হইলাম। যেই বাসে উঠার কথা সেই বাস নেই। অন্যদিন একাধিক বাস থাকে আর আইজকা একটাও নাই। উল্লেখ্য, ওই বাসে উঠিলে ভীড় তুলনামূলক কম হয়। আসল কথা কিছু দূর গেলেই ভীড় হয় কিন্তু একটা না একটা সিট পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, এগজামের দিন বাসের একটা সীট আমার কাছে অতীব মূল্যবান। কারণ, সিটে বসিয়া বসিয়া একটু রিভাইজ দিয়া কুনুরকমে পাশ নাম্বার তুলি। হঠাত দেখি আমার আব্বা পাশে দাঁড়াইয়া এক আঙ্কেলের লগে গফ করিতেছেন। আমাকে দেখিয়া ডাক দিলেন। কথা বার্তা বলিয়া জানিলাম আঙ্কেলের মেয়ে এচএচচি দিয়া অলিক্রসে থুক্কু হলিক্রসে ভর্তি হইয়াছে। আঙ্কেল বলিলেন “বাবা, আমার মেয়েটাকে ম্যাথ আর ফিজিক্সটা একটু দেখাইয়া দিবা। তুমি যেমনে ইন্টারে এ+ পাইয়াছ আমার মেয়েকেও পাওয়াইয়া দিবা।” শুনিয়া মাথা ঘুড়িয়া পড়িয়া যাইতে যাইতেও যাই নাই।:-/:-/:-*:-* একবার ভাবিলাম কহি, আঙ্কেল সেই দিন গত হইয়াছে। এখুন আমার দূর্দিন চলিতেছে। এখন যা অবস্থা আমার নিজেরই পেরাইভেট পড়ন লাগব।:-*:-* কথাক্রমে আঙ্কেল বলিলেন যাও বাবা, তুমার দের হইয়া যাইতেছে। শিগগির যাও। সামনে একখান বাস খাড়াইয়া ছিল। ওইটাতেই উঠনের লাগিয়া আঙ্কেল পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। আব্বাও কহিলেন উঠিয়া পড়িতে। উনাদের আদেশে মন খ্রাপ করিয়া বাসে উঠিলাম। কারণ আগেই দেখিয়াছি বাসে কুনু সিট খালি নাই। বিশাল বিপদ আসন্ন। যা হোক, উঠিয়াই দেখিলাম মহিলা সিটের পিছনেও দুইটা মহিলা বসিয়া আছেন এবং একটা সিট খালি আছে। পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন পাগড়ির সহিত নীল পাঞ্জাবী পরিহিত এক বড় ভাই। উনাকে দেখিয়া মনে লইল উনি হয়ত কুনু বড় ভাই পাগলা পীর সাব হইবেন। :P:P তয় সীট থাকা সত্ত্বেও উনি কেন সীটে আসন গ্রহণ করেন নি তাহা আমি বুঝিলাম ক্ষণকাল পরে। দুই ললনার কুনু এক ললনার বয়ফ্রেণ্ড সম্ভবত পথিমধ্যে আসিতেছিল। তখনু আসিয়া পৌছায় নাই। ললনাদ্বয় উহার জন্যই ওয়েট করিতেছিল। :|:|:P

উহাদের পাশ কাটাইয়া যাওয়ার সময় হঠাত দেখি পিছনে এক সিট খালি। আমি দৌড় দিলাম। এই দৌড় দেখিয়া বাসের যাত্রী সকল আমার দিকে হা করিয়া তাকাইয়া রইল। তবুও আমি থামিলাম না। যথাস্থানে পৌছাইয়া যাহা দেখিলাম তাহা বর্ণনাতীত। একটা মাত্র সীট। দুই পাশে দুই মেয়ে।:-/:-/:-* আমি এক মেয়েকে বললাম, আপু একটু চেপে বসেন। আপু আমার চৌক্ষু বরারর যেমন ভাবে তাকাইলেন নিজেকে পুরাই বেক্কল মনে হইতে লাগিল। :-*:-* যাহা হোক, দুই ললনার মাঝেই বসিয়া পড়িলাম না। কিছুক্ষণ ওয়েট করিতে লাগিলাম আর কুনু পেসেঞ্জার আসেন কি না! অবস্থা বেগতিক দেখিলে বসিয়া পড়িতেই হইবে, উফায় নাই। হঠাত মাথা ঘুড়াইতেই দেখি অতীব সুন্দরী এক ডিজুস টাইপ ললনা খোলা চুলে তাহার বয়ফ্রেণ্ডের কান্ধে মাথা দিয়া হেলাইয়া আছে।:P:P;);) উমা!!! ললনার চেহারা দেখনের পর থিকা আমি আর ঠিক থাকিতে পারিলাম না।:-*B-)B-););):P উল্লেখ্য, ললনা ডিজুস হইলে তাহার বয়ফ্রেণ্ড পেয়ারটেল। চুল টুল স্পাইক। হাতে জনাকয়েক চুড়ি থুক্কু ব্রেচলেট, এক হাতে রাবার ব্যাণ্ড। কানে দুলও আছে। বুঝিলাম এই টাইপ ডিজুস ললনারা পেয়ারাটেল বয়দের লগে ঘুড়িবে ইহাই বাইবেলের বাণীর মতন সইত্য।:P:P হঠাত খিয়াল করিলাম বাস পুরা ভর্তি হইয়া যাইতেছে এবং পিছন দিকেও লুকজন আসা শুরু করিয়াছে। অতঃপর আমি ডরাইয়া দুই ললনার মাঝে বসিয়া পড়িলাম। এমা!! এ কি অবস্থা!!!:|:|:| বাস ছাড়ল। আমি তো পুরাই রোবট অবস্থায় আছি। না পারি বামে তাকাইতে না ডানে। পুরাই রোবট। এদিকে দুইপাশে দুই ললনার উষ্ণ সংস্পর্শে পুরাই লুল অবস্থা।:P:PB-)B-););) না পারি ললনাদ্বয়কে কিছু কইতে না পারতেছি সইতে। একবার ভাবিলাম উইঠা দাঁড়াইয়া যাই। এমনে থাকন আর সম্ভব না। কিন্তু আসু ফেইলের কথা চিন্তা করিয়া সে চিন্তা বাদ দিলাম।;);)


বই বাহির করিলাম। দুই ললনার মাঝে বসিয়া পড়ার মজাই আলাদা!! সেই মজা উপুভুগ করিতে লাগিলাম।:|:| মজা থামিল হঠাত এক পাশের ললনা বইয়ের পৃষ্ঠার দিকে ক্ষণকাল তাকাইয়া কহিল “ভাইয়া, আপনি তো অনেক সিরিয়াস। এগুলো কি??” আমি মনে মনে কহিলাম এইগুলান যদি আমি বুঝতামই তাইলে এই দুই সিটের মাইঝে বসিয়া এইগুলান পড়িতাম না।X((X((X( হালকা স্বরে কহিলাম এক্সাম। ললনা আর ঘাটাইল না। ঘটনা শান্তশিষ্ট ভাবে আগাইতে লাগিল। প্যাচ খাইল একটু পরেই। লুল ভাইয়াদের ধাক্কা আর বাসের জণগণের ভীড়ে এক দম্পতি/ কপোত-কপোতি পেছনে আসিয়া পড়িল। উহারা যেসব বিষয় লইয়া আলুচনা করিতেছেন তাহা আরও ভয়ানক।:-/:-/:-/:-* সম্ভবত উহারা ভুলিয়া গেছিলেন এইটা বাস। উহারা ভুললেও সমস্যা ছিল না, আসুবিধা হইছে উহাদের লুমান্টিক লুমান্টিক কথার তোপে এক পৃষ্ঠায়ই পইড়া রইলাম। বাস গন্তব্যে আসিয়া পড়িল কিন্তু পাতা আর চেঞ্জ করিতে পারিলাম না। X((X((X((X(



অতঃপর মন খ্রাপ করিয়া বাস হইতে নামিয়া গেলাম।
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×