somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কথা গুলো হয়তো বলা হবেনা কখনও.............

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আস্থাহীনতার দিন, থেকে যায় অমলিন
ফিরে আসেনা সেই সোনালী সকাল
তবুও হাঁটছি পথ, এ শহর জনপদ
মুখরতা নেই শুধু আছে দাহকাল।”


গল্পের ছলে হয়তো অনেক কিছুই বলা যায়।বলা যায় কি পেয়েছি- কি পাইনি।জীবনের এতটা ক্ষন পেরিয়ে এসেও মনে না পাওয়ার ব্যাথা গুলো কুড়ে কুড়ে খায়।প্রিয় কিছুক্ষন, প্রিয় কিছু মানুষ যাদের পৃথিবীর সর্বোচ্চ প্রশংসা করলেও কম হয়ে যায়।পাইকপাড়া জন কল্যাণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তী হবার আগেও বুঝিনি আমার মত অযোগ্যকে কিভাবে এই বিদ্যাপিঠ ও এর সেবায় নিয়োজিত মানুষ গুলো যোগ্য করে তুলবে ।আমার জীবন যাপনে পরিবর্তন আনবে।

বাবার কাছে তিনার স্কুল জীবনের কথা শুনতাম। ভাবতাম কখন প্রাথমিকের গন্ডী পেড়িয়ে ওইখানে যেতে পারবো। কালের আবর্তে বাবার হাত ধরে এই বিদ্যাপিঠ এ ভর্তী হলাম।তখনও কোন শিক্ষককে চিনি না।তবে স্কুলজীবনের কথা বলতে গেলেই দুইজন প্রিয় মানুষ মোফাজ্জাল হোসেন ও আব্দুল কাদির স্যার এর কথা বলতেন।

তখনও ভাবতে শিখিনি একজন শিক্ষক কিভাবে অভিভাবক ও বন্ধুত্বের মায়াজালে ছাত্রদের আবদ্ধ করতে পারেন।আর তাদের শেখানো পথ কিভাবে আমার মত ছাত্রদের চলার পথকে মসৃন করতে পারে।ভর্তী হবার কিছুদিন পর আজিজুল ভাই এর কাছে ধরা খেলাম নারিকেল গাছের পাতা ছিড়ে।সোজা তলব প্রধান শিক্ষক এর রুমে। ভাগ্যগুনে তখন স্যার রুমে ছিলেন না। তবে অন্য একজন স্যার আমার বিচার করবেন শুনে আত্মারাম খাচা ছাড়ার দশা।ভয়ে ভয়ে হাজির হলাম স্যার এর সামনে।পরিচিত হলাম অসাধারন এক মানুষের সাথে, যার কথা বাবার কাছে আনেক শুনেছি। স্যার আমার নাম,বাবার নাম জানতে চাইলেন আমি বললাম শুনে হাসতে হাসতে বললেন “তুই তো আমার নাতী ছাত্র হয়ে গেলি তোর বাবা ও আমার ছাত্র ছিল ।” এরপর স্যার আমাকে বকা না দিয়ে সুন্দর করে বোঝালেন আর দোতলার কার্ণীশে যেতে নিশেধ করলেন। আমি এর পর থেকে আর কখনও কার্ণীশে যায় নি নারিকেল গাছের পাতা ছিড়িনি।


স্যার আমাকে শিখিয়েছেন কিভাবে কঠিন বিষয় গুলো সহজে মনে রাখা যায়।একদিন কোন একটি বিষয় নিয়ে তিনি বলেছিলেন “শোন জীবনে গুরুকে মানবি কিন্তু গুরুর খাছলত মানবি না।” আমি প্রশ্ন করেছিলাম স্যার যদি আপনি হন তবে, তিনি হেসে বলেছিলেন ”কথাটা আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তুই সবাইকে সম্মান করবি দেখবি তুইও সম্মান পাবি আমার থেকেও বড় হবি”।স্যার সময় বেধে দিতেন যে কোন বিষয়ের উপর কিছু লেখার জন্য আমরা লিখতাম । স্যার লেখালিখির উপর উৎসাহ দিতেন । আমার কবিতা পড়ে কবিতা লেখার জন্য খুব উৎসাহ দিতেন । আমি আজও না বলা সময়ের হাতে নিজেকে সমর্পন করে লিখতে চেষ্টা করি ।শুধু স্যার এর উৎসাহ পাইনা।তিনার জীবদ্দশায় কখনও কোন বিষয় নিয়ে স্যার এর কাছে গেলে তিনি সুন্দর ভাবে সমাধান করে দিতেন।আজ যখন ভাবি স্যার নেই তখন আমার পৃথিবীটা সংকুচিত হয়ে আসে।আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয় স্যার আমি আপনার স্পর্শ পেয়েছি আমার জীবন ধন্য হয়েছে। আমার সকল সংকটে আমি আপনাকে খুব মিসকরি।

মাওলানা স্যার আপনাকে আবার জ্বালাতন করতে খুব ইচ্ছা হয় ।ইচ্ছা হয় আবার শুনি আপনার দড়াজ কন্ঠের পবিত্র কোরআন তেলওয়াত শুনি।ইচ্ছা হয় আবার আপনার কাছে বকা শুনি, নুরুল ইসলাম স্যার এর কাছে কোন জীবন ঘনিষ্ঠ উপদেশ শুনি ।

মাঝে মাঝে নষ্টালজিক হয়ে পড়ি , মনে পড়ে রহমান স্যার এর ক্লাস শুরুর আগে পিঠের উপর আলতো করে মার,সায়েম স্যার এর বুক কাপানো হুংকার, আব্দুলাহেল বাকী স্যার এর ক্লাস, জমীর স্যার এর বাংলা পড়ানো,মাহফুজ স্যার, তৌহীদ স্যার,কাশেম স্যার,হুসেন স্যার এর ক্লাস। বার বার ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় সেই দিনগুলোর কাছে।তাই মহাকালের কাছে বারবার বলতে ইচ্ছে হয়...............


"আমার রঙীন কতোগুলো দিন
রয়েছে তোমার কাছে- ফিরিয়ে দাও
না হয় আমার হৃদয়ের যে ব্যথা
বুকের মাঝে জমে আছে- ফিরিয়ে নাও
এরপর যাও, চলে যাও, যেখানে যেতে চাও”



সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×