somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আসিফ ইকবাল তােরক
সুন্দর চেহাড়া মানুষকে মুখোশ দেয় আর সুন্দর মন মানুষকে সুন্দর করে! কুৎসিত মনকে সুন্দর চেহারা দিয়ে স্বল্প সময় আড়াল করা যায় কিন্তু বেশিক্ষন লুকিয়ে রাখা যায় না।

আমার চোখে আমেরিকা (ভ্রমন ব্লগ- ১)

১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের প্রবাস জীবনের গল্প গুলো পড়তে ভালো লাগে। মানুষের গুলো পড়তে পড়তে নিজেরটাও মাঝে মাঝে শেয়ার করতে মন চায়। এজন্য আজকে ভাবলাম আপনাদের সাথে আমার প্রবাস জীবনের গল্পগুলো একটু শেয়ার করি। গল্প শুরুর আগে নিজের পরিচয়টা দিয়ে নেই।আমি আসিফ বর্তমানে আছি আমেরিকায়। আমি এখানে এসেছি গতবছর নভেম্বরে তাই সময়ের হিসেবে বেশিদিন হয়নি। যদিও আমি এর আগে সাত বছর ইউ.কে. তে ছিলাম। সেই হিসেবে অনেক লম্বা সময় ধরেই দেশের বাইরে। বিদেশে আসার পর প্রথম একটা বছর অনেক ক্রিটিক্যাল কারন এই সময়টায় কষ্ট সবচেয়ে বেশি লাগে। নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অনেক স্ট্রাগল করতে হয়। দেশের জন্য আপনজনদের জন্য কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। এই অনুভূতি শুধু মাত্র একজন প্রবাসীর পক্ষেই অনুভব করা সম্ভব! তবে এক বছর পর আস্তে আস্তে সব সহ্য হয়ে যায়, নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ আর নতুন মানুষদের সাথে একটা সখ্যতা গড়ে উঠে।



এখন একটু আমেরিকার গল্প করি। যেহেতু ইউকে তে ছিলাম সাত বছর তাই এখানে এসে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি। মোটামুটি সবকিছু একই রকম দুয়েকটা জিনিস বাদে। যেমন আমেরিকাতে গাড়ির চালকের সিট থাকে বাম দিকে। ইংরেজির পর দ্বিতীয় ভাষা হচ্ছে স্প্যানিশ। ইংল্যান্ডে তারিখ লেখে প্রথমে তারিখ তারপর মাস তারপর বছর আর আমেরিকাতে প্রথমে মাস তারপর তারিখ তারপর বছর। এরকম টুকটাক আর দুএকটা অমিল। এছারা বাদবাকি সব কিছু মোটামুটি একই রকম।



আমেরিকান পতাকার ৫০টা তারকা আমেরিকার ৫০টি স্টেটকে রিপ্রেজেন্ট করে। প্রত্যেকটি স্টেটের আবার আলাদা আলাদা ক্যাপিটাল রয়েছে। আমি বর্তমানে আছি মেরিল্যান্ড স্টেট এ যার রাজধানী হচ্ছে অ্যানাপলিস। ড্যামোক্রেটদের এরিয়া। সুন্দর জায়গা। প্রচুর গাছপালা, বড় বড় পার্ক, আর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট। বাড়িগুলো ছিমা ছাম। বেশিরভাগ বাসা ২তলা কিংবা একতলা। প্রত্যেক বাসায় বেসমেন্ট থাকে। সবাই মোটামুটি আইনকানুন মেনে চলে। অকারনে হর্ন দেয় না। রাত্র ২টা ৩টা বাজে রাস্তা সম্পূর্ন ফাকা থাকলেও রেড লাইটে কেউ গাড়ি টান দিয়ে চলে যায় না। অপেক্ষা করে সবুজ লাইটের জন্য। নির্দিষ্ট জায়গা ছারা মানুষজন যদি রাস্তা পার হয় এবং পুলিশ যদি দেখতে পারে তবে ডাক দিয়ে এনে হাতে টিকেট(জরিমানা) ধরিয়ে দিয়ে যাবে।



ঠান্ডার সময় প্রচুর ঠান্ডা পরে মেরিল্যান্ডে। টেম্পারেচার -৫ থেকে -১৫ পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। নভেম্বরে আসায় স্নো দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। একটি তথ্য জানিয়ে রাখা ভালো যে পৃথিবীর জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ মানুষ কখনো স্নো দেখেনি।

যখন স্নো পরে অসম্ভব সুন্দর লাগে কিন্তু পেইনটা শুরু হয় স্নো পরা শেষ হয়ে গেলে। কারন তখন যায়গায় যায়গায় স্নো বরফ হয়ে জমে থাকে। আর প্রচুর ঠান্ডা থাকে। নিজে গিয়ে ড্রাইভওয়ে পরিস্কার করতে হয়। স্নো বেশি পরলে অবশ্য সরকারি ভাবে ছুটি ঘোষনা করা হয়। সব কিছু বন্ধ থাকে। তাই মানুষ আগে থেকেই বাসায় পানি তানি খাবার টাবার এনে জমা করে রাখে। আর গাড়ির ফুল ট্যাংক তেল ভরে রাখে। বরফ গলার জন্য রাস্তায় লবন ছিটানো হয়।বড় বড় সরকারি লবনের গাড়ি এসে রাস্তায় লবন ছিটিয়ে দিয়ে যায়।
আমেরিকা হচ্ছে ফাস্টফুডের জনক। তাই এখানে অলিতে গলিতে হাজার হাজার বড় বড় কোম্পানির ফাস্টফুডের দোকান পাবেন। যেমন ম্যাকডোনাল্ড, বার্গারকিং, কেএফসি, টাকোবেল, উইন্ডিস, চিকফিলেট আরো কত শত কম্পানি।

একটা সময় আমার ফটোগ্রাফির নেশা ছিলো। সখের ফটোগ্রাফি আরকি এখনো আছে তবে এখন কোথাও গেলে ছবি তোলার সাথে সাথে ভিডিও ব্লগ বানাই। সময় পেলেই আমি আর আমার বউ মিলে ঘুরতে চলে যাই এখানে সেখানে। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু সুন্দর জায়গা দেখা হয়েছে, যেমন গ্রেটফলস, ল্যুরেকেভ, ন্যাশনাল হারবার, ওসেনসিটি. ঐসব জায়গার বর্ননা অন্য আরেক পোস্টে দিবো.... আমার একটা ট্রাভেলিং ভিডিও চ্যানেল আছে ইউটিউবে AIT Production(Link: https://www.youtube.com/user/asifitproduction) নামে চাইলে ঘুরে দেখে আসতে পারেন।



নিচে আমার তোলা কিছু ছবি তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম। ভালো লাগলে জানাবেন। আজকে তাহলে এতটুকুই থাক। অন্য আরেকদিন লিখব। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৭ সকাল ৯:১৩
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×