somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তারেক_মাহমুদ
আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

একজন প্রান্তির গল্প

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই যদি কোন মেয়েকে আশপাশের মানুষগুলোর কাছ থেকে বার বার শুনতে হয় 'তুমি সুন্দর' তবে সেই মেয়ের অহংকার একটু বেশি হবে সেটাই স্বাভাবিক। আজকে এমনি একজন অসাধারণ সুন্দরী মেয়ের গল্প বলবো। মেয়েটির নাম দিলাম প্রান্তি। প্রান্তি আমার খুব কাছের বন্ধু।

বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির একসপ্তাহের মধ্যেই বুঝলাম ক্লাশে একজন অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে আছে। অনেক ছেলেরাই তার দৃষ্টি আকর্শনের চেষ্টা করছে। কেউ চাইছে তার বন্ধুত্ব আবার কেউ ভালবাসা। ভর্তির কয়েকদিনের মধ্যে ভর্তি সংক্রান্ত কিছু ফর্মালিটিজ বাকী থাকায় আমার নতুন বন্ধু মিলনকে বললাম
- চল আমরা প্রশাসনিক ভবনে যাই। হঠাৎ একটি মেয়ে কষ্ঠ বলে উঠলো 'আমিও যেতে চাই'। তাকিয়ে দেখি ক্লাশের সেই সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটি, কোন দ্বিধা না করে হাত বাড়িয়ে দিল, ---আমি প্রান্তি, আমরা বন্ধু হতে পারি? এমন সুন্দর একটা মেয়ের বন্ধুত্ব পাওয়াতো ভাগ্যের ব্যাপার। আমরা সাদরে গ্রহণ করলাম আমাদের এই নতুন বন্ধুকে।

কিছুদিনের মধ্যে আমাদের এক বন্ধু সায়েম প্রান্তির প্রেমে হাবুডুবু খেতে লাগলো। প্রান্তিও দেখলাম ওর সাথে একটু বেশিই মিশছে। আমরা ধরে নিলাম সায়েমের সাথে প্রান্তির কিছু একটা চলছে। ভ্যালেন্টাইন ডের দিনে প্রান্তি জানালো তার কাছে বিশাল সাইজের একটা কুরিয়ার এসেছে। যাতে ৫০টা গোলাপ ফুল, এক ডজন গল্পের বই, একটা ভ্যালেন্টাইন কার্ড,একটা টেডিবিয়ার আছে। শুধুমাত্র প্রেরকের নাম লেখা আছে নিহাল, আর কোন ঠিকানা দেওয়া নেই। ভাবলাম সুন্দরী মেয়েদের কতই সুবিধা, এত এত গিফট! বন্ধু সায়েমের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর মুখে কালো মেঘ,প্রান্তিকে হারানোর বেদনা ফুটে উঠেছে।

একদিন সন্ধ্যায় হলের এক খালা জোরে জোরে চিৎকার করছে
-৩০২ প্রান্তি খালা আপনার ফোন(তখন মোবাইলের যুগ না হওয়ায় হলের টি এন্ড টি ফোনে ছাত্রীদের কল আসতো)। প্রান্তি অবাক হল, হলের টি এন্ড টি ফোনে কল করার মততো কেউ নেই তার? ফোন ধরতেই অপর প্রান্ত থেকে একটা ছেলে কন্ঠ,
-আমি নিহাল আমার গিফটটা কি আপনার ভাল লেগেছে?প্রান্তি বুঝলো এটাই সেই ছেলে যে তাকে ওই বিশাল সাইজের গিফট পাঠিয়েছে। প্রান্তি রেগে গিয়ে বললো
-কাজটা আপনি মোটেই ভাল করেননি, কালই এসে আপনার গিফট ফেরত নিয়ে যান। ছেলেটি বললো,
-গিফটগুলো আপনার, ফেরত নেওয়ার জন্যতো দেইনি।
প্রান্তি তখন বললো আপনি ফেরত না নিলে আমি ওগুলো ছিড়ে কুটিকুটি করে, ডাস্টবিনে ফেলে দেবো। নিহাল বললো
-গিফটগুলো আপনি গিফটগুলো গ্রহণ করলে আমি খুব খুশি হবো।
-আপনাকে চিনি না জানি না আপনার গিফট কেন নিবো?
নিহাল বললো
-চেনাজানা হতেইতো চাই, সেজন্যই এই গিফট।
নিহালের পাঠানো গিফটগুলোর মধ্যে একডজনই হুমায়ুন আহম্মেদের বই। বইগুলোর মধ্যে দুইটা আগে পড়া থাকলেও বাকীগুলো নতুন তাই পড়ার লোভ সামলাতে পারেনি প্রান্তি । ভেবেছে বইগুলোতো ফেরতই দিয়ে দিবো তাই তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলি। ৩দিনের মধ্যেই দশটা বই পড়া শেষ।

ফুল কিংবা টেডিবিয়ারের চেয়ে বইগুলো পেয়েই বেশি খুশি হয়েছে প্রান্তি। কিছুদিনের মধ্যেই বুঝলাম নিহাল নামের ছেলেটির সাথে প্রান্তির প্রেমের তরি বেশ ভালই চলছে। আমাদের বন্ধু সায়েমকে শান্তনা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকলো না আমাদের। প্রথমদিকে ক্লাশের ফাঁকেফাঁকে এবং বিকেলবেলা আমি প্রান্তিসহ অন্য বন্ধুরা একসাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিলেও ইদানীং প্রান্তি বিকেলবেলা আমাদেরকে আর সময় দিচ্ছে না। এখন আর বিকেলবেলা প্রান্তির রান্নাকরা নুড়ুলস আমরা খেতে পাচ্ছি না। বুঝলাম আমাদের ভাগের নুড়ুলসটা নিহাল নামের ছেলেটি খেয়ে নিচ্ছে।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৩
৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×