উপরের কথাগুলো যে প্রসঙ্গে আসলো তাহলে সেটাই বলি। কয়েকদিন অগে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার খবর ছিল একজন ৯০ বছরের বৃদ্ধের আত্মহত্যা।যিনি জনতা ব্যাংকের একজন সাবেক জি এম। এত বৃদ্ধ একজন মানুষ কি কারণে আত্মহত্যা করতে পারেন?যতদুর জেনেছি তিনি সন্তানদের উপর অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছেন। এই ভদ্রলোক উনার চাকুরী জীবনে উপার্জিত সকল অর্থ জমিজমা সারা জীবন যক্ষের ধনের মত আগলে রেখেছিলেন,শেষ বয়সে নিজের সব সম্পতি ব্যাংক ব্যালেন্স সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেন। এরপর থেকে ভদ্রলোক সন্তানদের কাছে মুল্যহীন হয়ে পড়েন। তখন থেকেই উনার ভাগ্যে জোটে অবহেলা। মুলত: সন্তানদের উপর অভিমান করেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
ঘটনাটি আমাকে ভিষনভাবে নাড়া দিয়েছে। তাই এইসব সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আমার কিছু কথা আছে(ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী)।
১।নিজের সম্পদ মৃত্যুর আগে ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিবেন না(তবে মৌখিক বণ্টন হতে পারে যাতে ছেলেমেয়েদের মধ্য দ্বন্দ্ব তৈরি না হয়)
২।প্রথমেই ভাববেন এই সম্পদের মালিক আমি নই তাই সম্পদের প্রতি মায়া দেখাবেন না। সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করুন। শারিরিক সামর্থ্য থাকতে থাকতে দেশ বিদেশ ঘুরে দেখুন। হজ্জ করুণ গরিবদের মধ্যে দান করুণ।
৩। সন্তানের জন্য অঢেল সম্পদ রেখে যাওয়া আপনার দায়িত্ব নয়। সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করুণ। সামর্থ্য থাকলে বিদেশে পাঠিয়ে পড়াশুনা করান। সন্তানের জন্য ভাল খাবার,ভাল পোশাকের ব্যবস্থা করুণ।
৪। নিজের এবং নিজের স্ত্রীর জন্যও ভাল পোশাক এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুণ।
৫।ছেলেমেয়ে,ছেলের বউ,জামাই, নাতিনাতনি, সবাইকে প্রচুর গিফট দিন।
এভাবে দুইহাতে টাকা খরচ করার কারণটা এবার বলি। আপনার মৃত্যু পর এমনিতেই এই সম্পাতির মালিক হবে আপনার সন্তানেরা। তাই আপনার সম্পদ নিজ হাতে খরচ করুণ, যদি আপনি কৃপণতা করেন তবে আপনার মৃত্যুর পর সন্তানরা বলবে বাবা আমাদের কোন শখই পুরণ করেননি। মৃত্যুর পরও আপনি কৃপণই রয়ে যাবেন। অথচ আপনার সব সম্পদ সন্তানদেরই দিয়ে গেছেন। আর যদি আপনি সন্তানদের চাহিদাগুলো পুরন করে যান তবে ফ্যামিলির সদস্যরা ওগুলো সারাজীবন মনে রাখবে। বিভিন্ন প্রসঙ্গ আসলেই বলবে বাবা আমাকে এটা দিয়েছিল ওটা দিয়েছিল। এখানে ওখানে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল। আপনার মৃত্যুর পর সন্তান ভুলেও একবার বলবে না এই সম্পদের মালিক আমার বাবা।
সব সন্তানই যে একরকম হবে তা নয়, তবে সমাজে খারাপ দৃষ্টান্তও কম নয়।
সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য অনেক ভালবাসা রইলো।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬