শিরোনাম দেখে যারা যৌনতার গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। এটি এন্টি পর্ণ, চটি পোস্ট। তাই সুড়সুড়ি পাবেন আশা করলে এখানে সময় নষ্ট না করাই ভাল।
সার্চ ইঞ্জিন গুগলে চটি যখন টপ:
কিছুদিন আগের কথা।গুগলে bbc এর একটি পেজ খোজার জন্য যখন b টাইপ করেছি তখন হঠাৎ করে suggested page এ নজর এলো। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ প্রথম suggested page হিসেবে এসেছে bangle choti.
আমি টেকনোলজি সম্পর্কে খুব একটা এক্সপার্ট নই। মোটামোটি কাজ চালানোর মত ঘিলু আছে। তারপরেও আমি যতদূর জানি যে শব্দ বেশি খোঁজা হয় তাই গুগলে টপে থাকে। তার মানে b দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে bangla choti!
বিষয়টি কিছুতেই মাথা থেকে নামাতে পারছিলাম না। কি করে এটি সম্ভব?????
চটি কি?
এককথায় চটি হল বিকৃত, বীভৎস, ডাস্টবিনের থেকেও দুর্গন্ধময়, নোংরা, চরম মাত্রার থেকেও বেশি অশ্লীল যৌন কাহিনী। তবে গল্প উপন্যাসের যৌন কাহিনীর সাথে বিশাল পার্থক্য বিদ্যমান। গল্প উপন্যাসে সাধারণত প্রেমিক প্রেমিকা কিংবা স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্কের কথা উল্লেখ থাকে। আর ঘনিষ্ঠতার বিবরণ তিন চার লাইনের বেশি থাকে না। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের কিছুটা শিল্পমানও থাকে। আর চটি তে পুরোটাই নোংরামিতে ভরপুর। আর এত বিশ্রী সম্পর্কের কথা থাকে যে পড়লে সুস্থ যে কারও বমির উদ্রেক হবে। তাহলে এ বস্তু নিয়ে কেন এত আগ্রহ???
কেন এই আগ্রহ???
যেখানে অশ্লীলতা ছাড়া কিছু নেই, নোংরামিতে ভরপুর সে লেখা কেন মানুষ পড়ে? এ ব্যাপারে অনেকের সাথে কথা বলেছি আমি।নেট ঘাটাঘাটিও করেছি। যাতে কিছু বিষয় উঠে এসেছে। যেমনঃ অধিকাংশ মানুষ (মানব-মানবী) স্কুল লাইফে চটি পরা শুরু করে। এবং যথারীতি তা বন্ধু বান্ধবদের পাল্লায় পড়ে। অধিকাংশ পরবর্তীতে পর্ণগ্রাফিতে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু কেও কেও চটি পড়া ছাড়ে না। তারা এটি কন্টিনিও করে। যেহেতু রাস্তা থেকে কেনার সাহস হয় না, তাই নেট ই ভরসা। এবং এটি তারা আসক্ত হয়ে যায়। এবং এ আসক্তি গাজা, ফেন্সিডিল থেকে কোন অংশে কম নয়।
সর্বনাশা
আমরা যখন টিভি দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্ক কিন্তু কাজ কম করে। যেহেতু আমাদের মনোনিবেশ টিভিতেই নিবদ্ধ থাকে। কিন্তু আমরা যখন বই পড়ি তখন আমাদের মস্তিষ্ক একটি কাল্পনিক ইমেজ দাড় করিয়ে নেই।
একি কারণে আমার ধারণা পর্ণ থেকে চটি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। কারণ যারা এটি পড়ে তাদের মস্তিষ্ক সে ঘটনার একটি ইমেজ দাড় করিয়ে নেয়। একিই ধরনের লেখা তারা বার বার পড়ে। ফলে একসময় তাদের সে বিকৃত গল্পকেই সত্যি বলে মনে হয়। এটির আসক্তিতে ডুবে থাকে তারা। এবং প্রতিনিয়ত তারা চটি পাঠ করে থাকে তারা
এ ধরণের লেখার আরেকটি কমন বৈশিষ্ট্য হচ্ছেঃ প্রচুর পরিমাণে অশ্লীল ব্যাবহার। ক্রমাগত পাঠের ফলে এ শব্দগুলো মস্তিস্কের ভেতর সেট হয়ে যায়। এবং সময় অসময়ে বের হয়ে আসে। অথচ পুরো ব্যাপার ভিক্টিমের সচেতন সত্তা জানতেও পারে না। পরবর্তীতে দেখা যায় যে, যে বাজে শব্দগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যাবহার করছে। কারণ সে শব্দ গুল আর তার কাছে মোটেও অশ্লীল মনে হয় না।
চটি যখন ফেবুতে
পৃথিবীতে দুই মেরু আছে, ভালর পাশে মন্দও আছে, সুন্দরের পাশে অনেক অসুন্দরও আছে। ফেবুর অনেক ইতিবাচকতার পাশে অনেক বেশি নেতিবাচকতাও আছে।
সেদিন এক ফেবু সেলেব্রেটি পেজে ঢুকে আমি তো তাজ্জব। তার প্রিয় বইঃ বাংলা.........কাহিনী। এককথায় চটিতে ভরপুর।
সেই অশ্লীল পেজ সূমুহে লাইকের সংখ্যা ৫০০০ এর কম নয়। তার মানে কি ফেবুতে চটি পাঠকের সংখ্যা অসংখ্য। অনেক সুশীলেরাও নাকি ফেইক পেজ খুলে সেগুল পাঠ করেন।
যদি চটি তে আসক্ত হয়ে থাকুনঃ
যারা চটি/পর্ণ এ আসক্ত, তাদের বলব আমি এই মুহূর্ত থেকে এ বাজে অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসুন। বুকে হাত দিয়ে বলুনঃ I will never ever read those kind of porn story. প্রথম প্রথম সমস্যা হতে পারে। পড়তে মন চাইতে পারে। কিন্তু মনকে নিয়ন্ত্রণ করুণ। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। পরিবার, সমাজ, দেশ সর্বোপরি নিজেকে ভালবাসুন। প্রথম দুই এক সপ্তাহ একটু কষ্ট হবে। মন বিদ্রোহ করে বসবে। মনে হবে আজকেই লাস্ট বারের মত পড়ি/দেখি। কিন্তু ভুলেও ওই কাজ টি করবেন না। কারণ একবার ওই ফাঁদে পা দিলে তার থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন না। সারা জীবন ওই গোলচক্করে ঘুরে মরবেন।
আস্তে আস্তে দেখবেন ওই নোংরা অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।
যাত্রা শুরু হোক আজ থেকেইঃ
বিশেষ কোন দিন ক্ষণ দেখে শুরু করার প্রয়োজন নেই। ভাল কাজ যে কোন সময় থেকেই শুরু করা যায়। তাই, আর নয় সময় নষ্ট। স্রষ্টার নাম নিয়ে নিজের মনের অন্ধকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করুন। এ যুদ্ধে আপনার জয় যে অনিবার্য।
এ রিলেটেড আরেকটি লেখা
মেয়ে, তোমার কষ্টের মাঝে আমরা খুজে পাই পৈশাচিক আনন্দ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৬