somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজের সময়কার কথা ( পর্ব 2)

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজের সময়কার কথা ( পর্ব ১ )
বাদশাহ সৌদের সাথে দ্বন্দ্ব সেসময় নেপত্থে বাদশাহ সৌদের সাথে ফয়সালের দ্বন্দ্ব চলতে থাকে । বাদশাহ চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেলে তার অনুপস্থিতিতে ফয়সাল আরো বেশি ক্ষমতা লাভ করে । তিনি সৌদের অনেক অনুগতকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে অন্যদের নিয়োগ দিলেন । নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন তার ভাই ও ভবিষ্যত বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ যাকে সেসময় ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । বাদশাহ সৌদ ফিরে আসার পর ফয়সাল দাবি করেন যাতে তাকে দায়িত্ব দিয়ে সৌদ নিজে আনুষ্ঠানিক অবস্থান গ্রহণ করেন । সেসময় ফয়সালের পক্ষে উলামাদের সমর্থন ছিল । বাদশাহ সৌদ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন । ফয়সাল ন্যাশনাল গার্ডকে সৌদের প্রাসাদ ঘিরে ফেলার আদেশ দিলেন । শেষপর্যন্ত রাজপরিবারের সিদ্ধান্ত এবং উলামারা মত দেওয়ার কারনে সৌদ ক্ষমতা তার ফয়সালকে দিয়ে দিলেন । ১৯৬৪ সালের ২রা নভেম্বর ফয়সালকে বাদশাহ ঘোষণা করা হয় । তারপরে সৌদ বিন আবদুল আজিজ গ্রীসে নির্বাসনে চলে যান ।

ক্ষমতায় আসার পর ফয়সাল একটি ভাষণে বলেন আমি আপনাদের কাছে নিবেদন করছি ভাইয়েরা, আমাকে ভাই এবং সেবক হিসেবে আমার প্রতি লক্ষ্য রাখবেন । মহিমা ম্যাজেস্টি শুধু আল্লাহর জন্য সংরক্ষিত এবং মুকুট হল আসমান এবং জমিনের মুকুট । বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ রাজকীয় পদবির ব্যবহার শুরু করেছিলেন । ফয়সাল সেগুলোর বিস্তার ঘটায় । বাদশাহ আবদুল আজিজের সরাসরি বংশধরদেরকে হিজ রয়েল হাইনেস ও আবদুল আজিজের ভাই অথবা সেরূপ সম্পর্কিত হলে তাদের হিজ হাইনেস বলে সম্বোধন করার নিয়ম ছিল । আল সৌদের অন্য কোনো শাখার সদস্য হলে হিজ এক্সিলেন্সি বলার রীতি ছিল । ১৯৬৭ সালে ফয়সাল দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করেন এবং প্রিন্স ফাহাদকে সেই পদে নিয়োগ দেন।[

ক্ষমতারোহণের পর ফয়সাল দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারকে প্রধান কর্তব্য হিসেবে গুরুত্ব দিলেন । শাসনের প্রথমদিকে তিনি তার রক্ষণশীল অর্থনৈতিক নীতি চালু রাখেন এবং পরে দেশের বাজেটে ভারসাম্য রক্ষায় তার লক্ষ্যও সফল হয় এবং তেল উৎপাদনও বৃদ্ধি পায় ।শাসনের শুরুতে সকল সৌদি রাজপুত্রকে তাদের সন্তানদের বিদেশে পাঠানোর পরিবর্তে দেশের ভেতর লেখাপড়া শেখাতে হবে মর্মে আদেশ জারি করেন । ফলে দেশের উচ্চবিত্ত পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের দেশে এনে লেখাপড়া করাতে থাকেন । ফয়সাল দেশের তখনকার প্রশাসনিক অঞ্চলগুলোর প্রবর্তন করেন এবং আধুনিক কল্যাণ ব্যবস্থা চালু করেন । ১৯৭০ সালে তিনি বিচার মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দেশে প্রথমবার পাঁচ বছরব্যপী পরিকল্পনা শুরু করেন ।

১৯৬৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে টেলিভিশন প্রচার শুরু করা হয় । ১৯৬৬ সালে ফয়সাল নামে তার এক ভাইপো নতুন স্থাপিত টেলিভিশন হেডকোয়ার্টারে হামলা চালালে নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলিতে নিহত হয় । এই হামলাকারী ফয়সালের ভবিষ্যত হত্যাকারীর ভাই । ফয়সালের হত্যার জন্য এই ঘটনাকে মোটিভ হিসেবে ধরা হয় । দেশের রক্ষণশীল অংশ থেকে তার সংস্কারের বিষয়ে প্রশ্ন উঠলেও ফয়সাল তার আধুনিকীকরণ চালু রাখেন এবং তার নীতিকে ইসলামের সাথে সংগতিশীল রাখা নিশ্চিত করেন । ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে সেই অঞ্চলে কয়েকটি অভ্যুত্থান হয় । মুয়াম্মার গাদ্দাফির অভ্যুত্থানের ফলে ১৯৬৯ সালে তেলসমৃদ্ধ লিবিয়া থেকে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ হয় । তাই ফয়সাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন । তার শাসনের প্রথমদিকে লিখিত সংবিধানের ব্যাপারে দাবি উঠলে তিনি বলেন যে কুরআন আমাদের সংবিধান । ১৯৬৯ সালের গ্রীষ্মে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে জেনারেলসহ কয়েকশ সামরিক অফিসারকে গ্রেপ্তার করা হয় । অভ্যুত্থান মূলত বিমান বাহিনীর অফিসাররা পরিকল্পনা করে এবং তাদের লক্ষ্য ছিল রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করে নাসেরপন্থি সরকার প্রতিষ্ঠা করা । ধারণা করা হয় যে আমেরিকান গোয়েন্দাদের সহায়তায় পরিকল্পনা জানা যায় কিন্তু হুমকি কতটা গভীর ছিল তা স্পষ্ট ছিল না ।
তথ্য নেট
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×